ইয়ামাহা স্যালুটো টেষ্টরাইড রিভিউ - টীম বাইকবিডি
This page was last updated on 11-Jul-2024 10:47pm , By Shuvo Bangla
একটি ১৫০সিসি ওয়াটার কুলড ইএফআই বাইকের সমান্তরালে একটি ১২৫সিসি কমিউটার বাইক টেষ্টরাইডের ফলে টেষ্টবাইকটির সক্ষমতার যাচাই আর মূল্যায়ন তুলনামূলকভাবে আরো সহজ হয়। এবং, এবার আমরা সেরকমই একটি সুযোগ পেয়েছিলাম। যাইহোক, ইয়ামাহা স্যালুটো ফিচার রিভিউ এর পর আজ আমরা হাজির হয়েছি আমাদের ইয়ামাহা স্যালুটো টেষ্টরাইড রিভিউ নিয়ে। আমাদের টিম বাইকবিডি সদ্য ইয়ামাহা স্যালুটো বাইকটির টেষ্টরাইড সম্পন্ন করেছে। সুতরাং চলুন দেখা যাক বাইকটির টেষ্টরাইড থেকে আমরা কি পেলাম।
ইয়ামাহা স্যালুটো টেষ্টরাইড রিভিউ - টীম বাইকবিডি
Yamaha Saluto এর রিভিউ
ইয়ামাহা স্যালুটো টেষ্টরাইড রিভিউ - ওভারভিউ
ইয়ামাহা স্যালুটো ফিচার রিভিউয়ের পর আমরা বাইকবিডি এই বাইকটির ফিচার নিয়ে বেশ উৎসাহী ছিলাম। কেননা স্যালুটো ১২৫সিসি কমিউটার মোটরসাইকেল মার্কেট সেগমেন্টে নবাগত যা কিনা চমৎকার সব কমিউটিং ফিচার সমৃদ্ধ।
বিশেষ করে এর পাওয়ার, কম্ফোর্ট আর অনন্য মাইলেজ; এই অসাধারন সমন্বয়টাই আমাদের তাড়িত করেছে বাইকটির সবিস্তার টেষ্টরাইডের জন্যে। আর আমাদের প্রায় ২৫০০ কিলোমিটারের টেষ্টরাইডের শেষের দিকে অন্য আরেকটি ১৫০সিসি স্পোর্টস বাইকের সাথে যগোপৎ প্রায় ১২০০ কিলোমিটারের টানা হাইওয়ে রাইডের পর আমরা এখন এই বাইকটির সক্ষমতা নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী।
এছাড়াও আমাদের পাহাড়ী এলাকায় কমিউটার মোটরসাইকেলের রয়েছে প্রচুর চাহিদা। আর সেসব এলাকায় কেবল সাধারন কমিউটার হলেই চলেনা বরং প্রয়োজন সক্ষম কমিউটার বাইকের। সুতরাং এই বিষয়টিও ছিল আমাদের যাচাইয়ের তালিকায়।
Also Read: ইয়ামাহা স্যালুটো ১২৫ এর ৫০০০ কিলোমিটার রাইডিং রিভিউ
আর সেকারনেই আমরা বেশ ভারী পিলিওন নিয়ে পাহাড়ী পথে স্যালুটোর সক্ষমতা ও মাইলেজ টেষ্ট করেছি। আর এই সময়টাতেই আমাদের হাতে আরেকটি ১৫০সিসি টেষ্ট বাইক ছিল আমরা আগেই উল্লেখ করেছি। সুতরাং যুগোপৎ সেই টেষ্টরাইডে স্যালুটোর সক্ষমতা যাচাইয়ের পরীক্ষাটি আসলেই এক অন্য মাত্রা পেয়েছিল।
ইয়ামাহা স্যালুটো টেষ্টরাইড রিভিউ – বিল্ড কোয়ালিটি
কমিউটার বাইক হিসেবে ইয়ামাহা স্যালুটো বাইকটির টেষ্টিংয়ে বাইকটির পাওয়ার, কম্ফোর্ট আর মাইলেজ এই তিনটি ফিচার আমাদের বিশেষ বিবেচনায় ছিল। এছাড়াও বিল্ড কোয়ালিটি ও ফিনিশিং বিশেষত যেকোন বাইকের আবেদন, বিশ্বস্ততা ও দীর্ঘস্থায়িত্বের নিয়ামক হিসেবে কাজ করে যা এড়িয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই। আর যেহেতু এই বাইকটা ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের একটি প্রডাক্ট সুতরাং এর কোন কিছুই তাদের গুনগত মানের স্ট্যান্ডার্ডের বাইরে নয়।
এই বাইকটির প্লাস্টিক ও মেটালের প্যানেলগুলো সাধারন ভাবেই খুব ভালো মানের। এছাড়াও সাধারন বাড়তি অংশগুলো যেমন চেইনকভার, শাড়ি-গার্ড, লেগ-গার্ড এগুলোও বেশ যত্নের সাথে তৈরি।
তাই আমাদের টেষ্টরাইড পিরিয়ডে এর নি:শব্দ স্মুথ রাইড আমরা বেশ উপভোগ করেছি। এমনকি পাহাড়ে ও ভাঙ্গা রাস্তায় দ্রুত গতিতে ধেয়ে চলার সময়ও বিন্দুমাত্র বাজে শব্দ পাইনি।
বাইকটির প্লাষ্টিক প্যানেলের রং ও স্টিকারের কাজ বেশ মানসম্পন্ন। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ ধাতব অংশগুলি যেমন এর ইঞ্জিনের ব্লক ও কেসিং প্রভৃতি অত্যন্ত মানসম্পন্ন। আর এর সুইচ ও মিটার প্যানেলেও রয়েছে গুনগত মান ও ফিনিশিং এর যত্নের ছোয়া।
Also Read: মোটরসাইকেল সার্ভিস সেন্টার বাংলাদেশ - থ্রিএস সেন্টার
আর আমাদের টেষ্টরাইডের এই সময়টাতে আমরা যথেষ্ট সময় পেয়েছিলাম এই বাইকটিকে বাইরে থেকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষন করার। আর ইয়ামাহা স্যালুটো বিল্ড কোয়ালিটির বিচারে চমৎকার ফিনিশিংয়ের একটি বাইক।
ইয়ামাহা স্যালুটো টেষ্টরাইড রিভিউ – কন্ট্রোল ও কম্ফোর্ট
কমিউটার সেগমেন্টের মোটরসাইকেল মূলত ডিজাইন করা হয় মোটামুটি সব ধরনের সব বয়সের চালকদের কথা বিবেচনা করে। সুতরাং সহজ নিয়ন্ত্রনযোগ্যতা এর সাধারন আর অত্যাবশ্যকীয় চরিত্র। আর আরামপ্রদতাও এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কেননা কমিউটার ব্যবহার করা হয় শহর-গ্রামের সব ধরনের রাস্তাতেই চলার জন্যে।
সুতরাং কমিউটার মোটরসাইকেলে কন্ট্রোল ও কম্ফোর্ট ফিচারের সমন্বয় থাকা অত্যাবশ্যকীয়। আর সেকারনেই আমাদের টেষ্টরাইডে এই ফিচারগুলির দিকে আমরা বিশেষভাবে নজর দিয়েছিলাম।
ইয়ামাহা স্যালুটো বাইকটির নিয়ে শহরের ব্যস্ত রাস্তায় তুলনামুলক সহজে ও আয়াস ছাড়াই চলার অভিজ্ঞতাটা ছিল চমৎকার। বাইকটির হ্যান্ডেলবার ঘোরার রেডিয়াস অনেক বিস্তৃত হওয়ায় চাপা ও ভিড়বহুল স্থানে বাইকটি খুব সহজেই ঘোরানো যায়।
আর এর আপ-রাইট রাইডিং পজিশন, সিট, হ্যান্ডেলবার ও কন্ট্রোল লিভারগুলির অবস্থান সবমিলিয়ে একটা চমৎকার সমন্বয় নিশ্চিত করা হয়েছে। সুতরাং দীর্ঘসময় ধরে হাইওয়েতে চলার পরও অবসাদ অথবা কব্জি, কাঁধে বা মেরূদন্ডেও ব্যাথা অনুভুত হয়না। আর সিটটা যথেষ্ট প্রসারিত আর আরামদায়ক হবার কারনে বাইকটি চালানোও বেশ আরামের।
স্যালুটোর সামনে ও পেছনের দুজোড়া সাসপেনশনই বেশ ভালো আর যথেষ্ট সংবেদনশীল। তবে ব্রেক-ইন পিরিয়ডের বিরক্তিকর সময়টা পেড়িয়ে আমরা যখন স্ট্রেসফুল হাইওয়ে আর পাহাড়ের পথে ছুটে গেছি তখন এর সাসপেনশন জড়তা ছাড়িয়ে সম্পুর্ণ সংবেদনশীলভাবে কাজ করছিল। এটা খুবই সাবলীলভাবে দ্রুত ভাঙ্গা ও উচু-নিচু পথে সাড়া দিচ্ছিল।
স্যালুটো বাইকটির ব্রেকগুলোও প্রথম থেকেই খুবই ভলোভাবে কাজ করেছে। এর সামনের ব্রেক এ্যাসেমব্লী নিশিনের সিঙ্গেল পিষ্টন ক্লিপারের হাইড্রলিক ডিস্ক ব্রেক, আর পেছনেরটা ড্রাম ব্রেক। দুটো ব্রেকই সিটি, হাইওয়ে আর হিল-ট্র্যাকে চলার মতো উপযোগী। তবে তুলনামুলকভাবে পেছনের ব্রেকটি একটু কম সংবেদনশীল। তবে সার্বিকভাবে ব্রেকগুলোর কার্যকারীতা খুবই ভালো।
স্যালুটোর দুটো চাকাতেই রয়েছে টিউবলেস টায়ার । তবে টায়ারগুলো পরিসরে বেশ চিকন কিন্তু এর ওয়েট ও ড্রাই সারফেসে গ্রিপ খুবই ভালো। আমরা আমাদের টেষ্টরাইডের সময়টাতে ভারী পিলিয়ন নিয়ে টাইট কর্নারগুলোতেও ধেয়ে চলার সময় একবারের জন্যেও স্কিড করিনি। সুতরাং টায়ারগুলোর মান নিয়ে আমরা প্রশ্ন তোলার সুযোগ পাইনি।
ইয়ামাহা স্যালুটো টেষ্টরাইড রিভিউ – পাওয়ার ও এক্সিলারেশন
পাওয়ার, কম্ফোর্ট আর মাইলেজ হলো যেকোন কমিউটার বাইকের কোর ফিচার। আর তাই ইয়ামাহা স্যালুটো বাইকটির টেষ্টরাইডে এই বিষয়গুলোতে আমাদের বিশেষ নজর ছিল। স্যালুটোর ১২৫সিসি এয়ার-কুল্ড এসওএইচসি ইঞ্জিনটি সহজেই ৮.৩পিএস পাওয়ার আর ১০.১এনএম টর্ক উৎপন্ন করে। কমিউটার ইঞ্জিন বিচারে এই রেটিং গতানুগুতিক হলেও বলতে হয় এই পাওয়ার রেটিঙ যথেষ্ট।
তবে গুরুত্বপূর্ন উপভোগ্য বিষয়টা হলো এই ব্লু-কোর ইঞ্জিনটির পওয়ার ডেলিভারি আর এক্সিলাশেন দেবার ক্ষমতাটা। এর পাওয়ার ডেলিভারী খুবই স্মুথ, স্বমন্বিত আর বলা যায় কড়কড়ে। এর পাওয়ার ডেলিভারী রেঞ্জে বেশখানিকটা থ্রাস্ট অনুভব করা যায়।
স্যালুটো বাইকটিতে আমরা টপ-স্পিড পেয়েছিলাম সর্ব্বোচ্চ ১০৫কিমি/ঘন্টা যা তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম। তবে বিশেষভাবে উল্লেখ করার বিষয় হলো এত খুব সহজে কোন আয়াস ছাড়াই ৯৫কিমি/ঘন্টা গতি তোলা যায়। আর তা এমনকি হাইওয়ের প্রবল ও তির্যক বাতাসের চাপের মধ্যেও। আর এর ৮৫কিমি/ঘন্টা গতি পর্যন্ত একাধারে এক্সিলারেশন পাওয়া যায় পেছনে ভারী পিলিয়ন নিয়েও।
আর আমরা আমাদের হিলট্র্যাকে টেষ্টিংয়েও পিলিয়ন নিয়ে চালানোর সময়েও এতে একবারো পাওয়ার ডেলিভারীর ঘাটতি পাইনি। সুতরাং একটি ভালো কমিউটার থেকে এর বেশি আমরা আর কি আশা করতে পারি। আর তাই এই বাইকটির পারফর্মেন্স নিয়ে আমরা যথেষ্ট খুশি।
তবে নির্দিষ্ট করে বললে স্যালুটো বাইকটির ব্রেক-ইন পিরিয়ডে এর রাইডিং ছিল যথেষ্ট জড়তাযুক্ত। এটা ছিল আর অন্যসব কমিউটার বাইকের মতোই সাধারন আর বেশ বিরক্তিকর। তবে প্রথমবার এর ইঞ্জিন ওয়েল ড্রেন দেবার পর এর চরিত্র বদলাতে শুরূ করে। এইসময়টাতে এর লোয়ার আরপিএম ও গিয়ার অপারেশনে জড়তা ও ঝাকুনি থাকলেও হাইয়ার আরপিএম ও গিয়ারে ইঞ্জিন অপারেশন বেশ স্মুথ হয়ে গিয়েছিল।
Also Read: Motorcycle Riding Training ইভেন্ট আয়োজন করতে যাচ্ছে ইয়ামাহা
আর দ্বিতীয়বার ১২০০কিমি বয়সে এর ইঞ্জিন ওয়েল ড্রেন ও এয়ার ফিল্টার পরিস্কার করে নেবার পর এর পারফর্মেন্স এককথায় আমুল বদলে গিয়েছিল। আমরা আসলেই অবাক হয়ে গিয়েছি সব গিয়ার ও আরপিএম এ এর নাটকীয় পরিবর্তনে। আর তারপর থেকেই খুব রাফ রাইডিং মোডেও বাইকটি থেকে কোন ভাইব্রেশন বা জড়তা আমরা পাইনি। এটা আসলেই শান্ত, নি:শব্দ আর সাবলীল ছিল।
ইয়ামাহা স্যালুটো টেষ্টরাইড রিভিউ – মাইলেজ
তাত্বিকভাবে বলতে গেলে বলা যায় একটি ১২৫সিসি ইঞ্জিন সহজেই যথেষ্ট পারিমান শক্তি উৎপন্ন করতে পারে। তবে সেই তুলনায় মাইলেজ কতটা দিতে পারে? হ্যাঁ ইয়ামাহা স্যালুটো বাইকটির অন্যতম ফিচার এর উল্লেখ করার মতো মাইলেজ।
ইয়ামাহা স্যালুটো বাইকটিতে কোম্পানী ক্লেইম করে ৭৮কিমি/লিটার যা কিনা নিশ্চিত হয় নিয়ন্ত্রিত স্ট্যান্ডার্ড রাইডিং কন্ডিশনে। তাই এই মাইলেজ কিং ট্যাগের বাইকটিকে টেষ্ট করার সময় আমরা দ্বায়িত্ব অনুভব করেছি এই বাইকটির প্রকৃত মাইলেজ বের করতে। আর একারনে আমরা তিনটি আলাদা রোড কন্ডিশনে বাইকটির মাইলেজ টেস্ট করেছি।
আমরা সিটি রোড, স্ট্রেইট হাইওয়ে আর হেভি পিলিয়ন সহ পাহাড়ী পথে রাফ থ্রটলিঙ করে স্যালুটোর মাইলেজ টেষ্ট করেছি। আর তিনটি আলাদা রাইডিং আর রোড কন্ডিশনে মাইলেজ ফিগারও ছিল ভিন্ন।
স্ট্রেইট হাইওয়ের স্মুথ রাইডিংয়ে আমরা পেয়েছি প্রায় ৭০কিমি/লিটার। ব্যস্ত শহরের রাস্ততায় পেয়েছি প্রায় ৬০কিমি/লিটারের ওপরে। আর পাহাড়ী পথে ভারী পিলিয়ন নিয়ে বাজেভাবে চালিয়ে পেয়েছি সবচেয়ে কম, আর সেটা ছিল ৫২কিমি/লিটার। সুতরাং আপনারা বুঝতেই পারছেন স্যালুটো মাইলেজের পারফর্মেন্সে কতটা ডেডিকেটেড।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে আমরা যখন ২৫০মিলি ফুয়েল ভরা বোতল নিয়ে স্যালুটোর মাইলেজ টেষ্ট করছিলাম তখন বেশ কিছু বিষয় আমরা লক্ষ করেছি। বাইকটি প্রথম কয়েক কিলোমিটার যেমন ৪-৬কিমি পর্যন্ত বেশ দ্রুত ফুয়েল খরচ করছিল। আর তারপর ক্রমান্বয়ে এর ফুয়েল খরচের পরিমান কমে আসছিল।
সুতরাং আমাদের ধারনা, যদি আমরা উপযুক্ত গরম আর প্রস্তুত অবস্থার ইঞ্জিনে পুরো এক লিটার ফুয়েল নিয়ে মাইলেজ টেষ্ট করতাম তবে মাইলেজ ফিগার আরো বেশি হতে পারতো। তবে যেটাই হোক আমাদের মাইলেজ টেষ্ট এর বিস্তারিত আপনারা আমাদের ভিডিও রিভিউয়ে পাবেন, ধৈর্য্য ধরুন।
ইয়ামাহা স্যালুটো টেষ্টরাইড রিভিউ – ভালো ও দুর্বল দিক
ইয়ামাহা স্যালুটো বাইকটি টেষ্ট রাইডের সুবাদে আমাদের বাইকটিকে ভালোভাবে লক্ষ্য করার সুযোগ হয়েছে। ফলে বাইকটির ভালো ও দুর্বল দিক গুলো আমরা মোটামুটি বের করতে পেরেছি। আমাদের ২৫০০কিমি টেষ্টরাইডের সাপেক্ষে আমরা এর ভালো ও দুর্বল দিকগুলো নোট করেছি। আপনারা নিচের বুলেট পয়েন্ট থেকে তালিকাটি দেখে নিতে পারেন।
ইয়ামাহা স্যালুটোর ভালো দিক
- অপারেটিং রেঞ্জের মধ্যে মোটামুটি সব আরপিএম এ পাওয়ারফুল ও স্মুথ ইঞ্জিন অপারেশন।
- এর স্পিড রেঞ্জের মধ্যে এক্সিলারেশনের একটি চমৎকার থ্রাস্ট পাওয়া যায়।
- উল্লেখ করার মতোই ভালো মাইলেজ; এমনকি পাহাড়ী পথেও।
- পাওয়ার, মাইলেজ আর কম্ফোর্ট এর খুব স্বমন্বিত একটি প্যাকেজ।
- বিল্ড কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো। এমনকি সাধারন বাহ্যিক অংশগুলোও ভালো মানের।
- স্লিক ও স্মার্ট ডিজাইন।
- খুবই ভালো আর প্রতিক্রিয়াশীল সাসপেনশন, ব্রেক ও টায়ার।
- লম্বা, প্রসারিত আর আরামদায়ক সিট।
- ভালো গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স।
- স্ট্রেসফুল রাইডিং কন্ডিশনেও বাইকটি স্টেবল।
- ওয়াইড এ্যাঙ্গেল স্টিয়ারিং মুভমেন্ট।
- ওয়াইড ফোকাসড আর শক্তিশালী হেডলাইট।
ইয়ামাহা স্যালুটোর দুর্বল দিক
- হ্যান্ডেলবারটি বেশ চাপা যদিও সিটি রাইডের জন্যে এটা ভালো।
- ব্রেক-ইন পিরিয়ডে এর ইঞ্জিন, সাসপেনশনের জড়তা সবমিলিয়ে স্যালুটোর রাইডিং অনেকটাই বিরক্তিকর। ব্রেক-ইন পিরিয়ডে এটা আকেটাই ভারী আচরন করে।
- হেডলাইটের হাই আর লো বিমের পার্থক্যটা বেশখানিকটা বেশি ও সুস্বমন্বিত নয়।
- হেডলাইটটি এসি অপারেটেড।
- ওডোমিটারের সামনের উইন্ড শীল্ডটি বেশ ছোট; এটা হাইওযেতে বাতাসের চাপ প্রতিরোধ করতে পারেনা।
- পেছনের ব্রেকটা তুলনামুলকভাবে কম সংবেদনশীল।
- ফুয়েল ট্যাংক ক্যাপাসিটি কম।
- ১২৫সিসি ইঞ্জিনের তুলনায় টপ স্পিড একটু কম।
- ওডোমিটারে কোন রেভ কাউন্টার নাই।
- ফুয়েল গজের রিডিং সঠিক নয়।
- দুই হ্যান্ডেলবারের সুইচগুলো ভালো মানের তবে ওগুলো সঠিক সিকোয়েন্সে বসানো নেই। সুইচগুলো সাইজেও ছোট আর আনেকসময়ই রাইডারকে চালানোর সময় হাতড়াতে হয়। এতে অভ্যস্ত হতে একটু সময় লাগে।
ইযামাহা স্যালুটো টেষ্টরাইড রিভিউ – শেষ কথা
তো বন্ধুরা ইয়ামাহা স্যালুটো বাইকটির টেষ্টরাইডের প্রাপ্ত ফলাফল এখানে প্রকাশ করার পর আমরা এখন শেষের দিকে। আমাদের ফলাফলগুলো ভালোভাবে বিবেচনা করলে আপনারা দেখবেন যে স্যালুটো আসলেই একটি সুস্বমন্বিত ও বৈশিষ্ট্যপূর্ন কমিউটার।
আমরা এর ফলাফলে অত্যন্ত অবাক হয়েছি, আর বার বারই খুজে দেখেছি যে আমাদের মধ্যে কোন পক্ষপাতীত্ব কাজ করছে কিনা। তবে বার বার যাচাই করে নিশ্চিত হয়েছি যে এটা আসলেই একটি সক্ষম বাইক, বলা যায় যার সামান্য কিছু দুর্বলতা রয়েছে। আর আমরা নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি এটা এই সেগমেন্টে একটা ভালো মানের কমিউটার যাতে আপনি ভরসা রাখতে পারেন।
তো বন্ধুরা এই ছিল আমাদের ইযামাহা স্যালুটো বাইকবিডি টেষ্টরাইড রিভিউ। স্যালুটো নিয়ে আপনাদের যেকোন প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় করতে পারেন। আর বাইকটি নিয়ে আপনি যদি আরো খানিকটা যাচাই করে দেখতে চান তবে অবশ্যই এসিআই মোটরস এর টেষ্ট রাইড সুবিধাটি নিতে পারেন। আমরা নিশ্চিত আপনি আরো নির্ভরতা খুজে পাবেন। সুতরাং আমাদের সাথে থাকুন; আমরা শীঘ্রই আরো নতুন কিছু নিয়ে আসছি। ধন্যবাদ সবাইকে।