KTM RC 125 ১১,০০০ কিলোমিটার রাইড - প্রিন্স মাহামুদুল ইসলাম
This page was last updated on 28-Jul-2024 11:03pm , By Raihan Opu Bangla
আমি প্রিন্স মাহামুদুল ইসলাম । আমি ঢাকা থাকি, করনার কারনে বর্তমানে গ্রামের বাড়ি রাজশাহীতে আছি। আজ আমি বর্তমানে আমার ব্যবহার করা KTM RC 125 বাইকটি নিয়ে ১১ হাজার কিলোমিটার রাইড করার কিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের শেয়ার করবো।
KTM RC 125 ১১,০০০ কিলোমিটার রাইড
আমার জীবনের প্রথম বাইক ছিল Yamaha CD Deluxe ২০০৪ সালে যখন ক্লাস ৬ এ ছিলাম । ওটা দিয়েই বাইক চালানো শিখা । ২য় বাইক ছিল Honda CD 80। KTM RC 125 বাইকটি আমি বর্তমানে রাইড করছি। বাইক ভালো লাগে কারন, নতুন নতুন জায়গা ঘুরে দেখা যায়, নতুন নতুন মানুষ এর সাথে পরিচয় হয়, বাইক ছাড়া এত জায়গা ট্যুর করা আমার জন্য সম্ভব ছিলনা । যেমন - ডিম পাহাড়, আলি কদম, থানচি, সাজেক, লামা, কেওক্রাডং এই গুলোতে বাইক ছাড়া যাওয়া অনেক কষ্টকর ।
আমি ছোট থেকেই ঘুরতে যাওয়া অনেক পছন্দ করি । আর বাইকের কারনে বাংলাদেশ এর ৬৪ জেলা ভ্রমন করা শেষ করেছি ২০১৮ সালে । বাইকের কারনে অনেক নতুন ভাই ব্রাদার পেয়েছি । প্রতিটা জায়গার বাইকার অনেক হেল্পফুল । এখন প্রায় প্রতিটা জেলাতেই ভাই ব্রাদার পরিচিত আছে । এটা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে । বাইকারদের সাথে আড্ডা দিতে অনেক ভালো লাগে ।
আমি অনেক আগে থেকে KTM, Ducati & BMW এর ভক্ত । Ducati & BMW তো পেলাম না তাই RC দিয়ে শখ পূরন করলাম । প্রধানত এই বাইকের লুকস আমার খুব পছন্দ । আর এটা একটি ইন্টারনেশনাল ব্র্যান্ড তাই আমি এটি খুব পছন্দ করি । আর তাছাড়া বাংলাদেশ এ যত স্পোর্টস বাইক ছিল সবই কিনেছি।
সবই রাইড করেছি তাই নতুন কিছুর ফিল নেওয়ার জন্য KTM RC 125 বাইকটা পছন্দ করি। বাইকটি কিনেছিলাম হাফসা মার্ট থেকে । রেজিস্ট্রেশন সহ ৪ লক্ষ ৩০ হাজার টাকায়। বাসা থেকে ভাইয়ার কার নিয়ে ইস্কাটন চলে গেলাম । KTM আমার ড্রিম বাইক । অনেক বাইক চালিয়েছি তাই KTM পাওয়ার পর মনে হয়েছে আর কিছু অপূর্ন থাকলোনা । স্বপ্ন পূরন হয়ে গেল । বাইকটির ফিচার অন্যসব বাইকের মত । তবে এর অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে এটাতে ৩৭টা সেন্সর আছে । এন্ডিকেটর লাইট অনেক সুন্দর। Underbelly Exhaust এর কারনে অনেক প্রিমিয়াম লুকস মনে হয় ।
বাইকটি পছন্দ করার পিছনে কারন লুকস, কন্ট্রোলিং, এবং ১২৫ সিসি বাইক। টপ স্পিডের নেশায় অনেক বন্ধু আপনজনকে মরতে দেখেছি। নিজেও আগে প্রচুর স্পিডিং করতাম। ১২৫ সিসি নিলে স্পিডিং টা তেমন করতে পারবোনা যার কারনে এটা নেওয়া। আর এটার ব্রেকিং এবং সাসপেনশন আমার কাছে অনেক বেশি ভালো মনে হয়েছে । এই বাইকের মেইন্টেনেন্স খরচ একটু বেশি তবুও আমি এই বাইকটি পছন্দ করি। সার্ভিস করিয়েছি অনেক বার । কত বার তা ঠিক বলতে পারবোনা । ঢাকায় থাকলে প্রতি সপ্তাহে সার্ভিস করাতাম । ট্যুরে যাওয়ার আগে ফুল চেক করাতাম । গিয়ার আপ এবং বাইক হেড কোয়াটার এ বেশি কাজ করাই ।
Also Read: KTM RC 125 price in BD বাইক নিউজ বাংলাদেশ
মাইলেজ খুব খারাপ । প্রথম ২৫০০ কিলোমিটারে ২৩-২৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার পেতাম। এখনও ৩০ কিলোমিটার প্রতি লিটার এর নিচে পাই। বাইকটিতে MotoRex 20w50 Synthetic ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি । আগে Motul 7100 ব্যবহার করতাম ।
এখন পর্যন্ত কোন পার্টস পরিবর্তন করিনি । অনেক কিছু পরিবর্তন করেছি কিন্তু অরিজিনালটা পরিবর্তন না করে । গ্রাফিক্স , স্টিকার, কিছু লাইটিং করিয়েছি । টপ স্পিড পেয়েছি ১২৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বাংলা বান্ধা রোড এ ।
বাইকটির কিছু ভালো দিক -
- লুকস
- কম্ফোর্ট
- কন্ট্রোলিং
- ব্র্যান্ড ভেলু
- বিল্ড কোয়ালিটি
বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
- এক্সেলারেশন কম
- টপ স্পিড কম
- মাইলেজ খুব কম
- পার্টস এভেইলেভেল না
- পার্টস এর দাম অনেক বেশি
বাইকটি নিয়ে লং ট্যুর এ Yamaha Riding Fiesta তে রাজশাহী থেকে কক্সবাজার গিয়েছিলাম মাঝে ২ ঘন্টার মত রেস্ট নিয়েছি । এটা আমার জীবনে একটি স্মরণীয় ট্যুর ছিল । টপ স্পিড, মাইলেজ, এক্সিলারেশন এবং পার্টস এভেইলেভিলিটি এর কারনে এই বাইকটি আমি বাংলাদেশ এর জন্য ব্যক্তিগত ভাবে রিকমেন্ড করবোনা । কিন্তু যাদের এসব ব্যাপার নিয়ে সমস্যা নাই তারা লুকস এবং কন্ট্রোল এর জন্য এই বাইকটা নিতে পারেন । ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ প্রিন্স মাহমুদুল ইসলাম
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।