Honda CB200X – বাজেট এডভেঞ্চার ট্যুরার?

This page was last updated on 07-Oct-2024 07:10pm , By Badhan Roy

বিশ্বখ্যাত জাপানী ব্র্যান্ড হোন্ডা বাংলাদেশেও অনেক জনপ্রিয়। বাংলাদেশে এডভেঞ্চার ট্যুরার বা ADV লাভারদের মধ্যে অন্যতম পছন্দের নাম Honda CB150x যা অফিশিয়ালি এভেইলেবেল না। আনঅফিশিয়ালি গ্রে মার্কেটে বাইকটি একদিকে যেমন অনেক দাম দিয়ে কিনতে হয় অপরদিকে স্পেয়ার পার্টস এভেইলেবিলিটি নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। 

আন্তর্জাতিক বাজারে হোন্ডা লাইনআপের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় ADV বাইক Honda CB200x. Explore Life With Every Ride – স্লোগান দ্বারাই এর ট্যুরিং পারফর্মেন্স হাইলাইট করা হয়ে থাকে। যদিও বাইকটি খুব শীঘ্রই বাংলাদেশে আসবে কিনা এমন কোন আপডেট এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয়, তবে সদ্য লঞ্চ হওয়া নতুন ক্রেজ Hornet 2.0 এর সাথে এর বেশ সাদৃশ্যতা থাকার কারনে দেশের ADV লাভারদের অনেকেই CB200x নিয়ে বেশ আগ্রহী হয়েছেন। তো হোন্ডার এই এডভেঞ্চার ট্যুরার বাইকটির এক নজরে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। 

Honda CB200X – ডিজাইন 

এডভেঞ্চার ট্যুরার ক্যাটাগরির ডিজাইন Honda CB200x বাইকে লক্ষ করা যায়। Hornet 2.0 এর সাথে এর লুকে লক্ষণীয় পরিবর্তন এর মধ্যে এর ADV শেপের এক্সটেন্ডেড বডিকিট লক্ষণীয়। এজন্য অনেকে একে Hornet এর ফেয়ারড ভার্শন ও বলে থাকেন। USD সাসপেনশন, স্প্লিট সিট, মাসকুলারি ট্যাংক ডিজাইন ও অল এলইডি লাইটস, সাথে ইন্ডিকেটর সহ নকেল গার্ডস ও বড় উইন্ড ভাইজর থাকায় এর লুক অনেক বেশি এগ্রেসিভ এবং যুগোপযোগী বটে। সাথে Hornet 2.0 এর সেম এরোডায়নামিক আন্ডারকাউল একদিকে যেমন প্র্যাক্টিকাল অপরদিকে স্পোর্টি তা নিয়ে কোন সন্দেহ নাই। আন্তর্জাতিক বাজারে ৩ টি আকর্ষণীয় কালার কম্বিনেশনের সাথে ডুয়াল টোন গ্রাফিক্স বাইকটির সাথে বেশ ভালভাবে মানিয়ে সুন্দর রোড প্রেজেন্স দেয় যা আন্তর্জাতিক রিভিউগুলো তে প্রশংসনীয়। 

Honda CB200X – ইঞ্জিন স্পেসিফিকেশন

আন্তর্জাতিক স্পেসিফিকেশন পর্যালোচনা করলে দেখা যায় Honda CB200x বাইকটিতে রয়েছে Hornet 2.0 এর একই BS VI প্রযুক্তির প্রোগ্রামড ফুয়েল ইঞ্জেক্টেড (PGM-FI) এয়ার কুলড সিঙ্গেল সিলিন্ডার, 184.40 সিসির ৪ স্ট্রোক ইঞ্জিন যা ৮৫০০ আরপিএম এ সর্বোচ্চ ১৬.৬ হর্সপাওয়ার শক্তি ও ৬০০০ আরপিএম এ সর্বোচ্চ ১৫.৫ নিউটন মিটার টর্ক উৎপন্ন করে। ওয়েট মাল্টিপ্লেট এসিস্ট এন্ড স্লিপার ক্লাচ এবং ৫ স্পিড গিয়ারবক্স স্মুথ এবং প্রতি গিয়ারেই কুইক রেসপন্স দিতে সক্ষম। বাইকটির সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১২৫-১৩৫ কিমি প্রতি ঘন্টায়।

Honda CB200X – ফিচারস

Hornet 2.0 এর কিছু উল্লেখযোগ্য ফিচারস হলো:

সিট হাইট, ওজন ও গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স- ৮১০ মি.মি এর সিট হাইটের সাথে ১৬৭ মি.মি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স রয়েছে বাইকটিতে। ১৪৭ কেজি ওজনের কার্ব ওয়েট থাকায় বাইকটি বডিকিট থাকার পরেও বেশ ওয়েট ব্যালান্স এর পরিচয় দেয়। 

ইগনিশন সিস্টেম- সেলফ ইলেক্ট্রিক ইগনিশন। 

নতুন ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার: সম্পূর্ণ ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টারটিও Hornet 2.0 এর মতই। এতে ফুয়েল লেভেল, একাধিক ট্রিপ মিটার, স্পিডোমিটার, ট্যাকোমিটার, গিয়ার, সার্ভিস ইন্ডিকেটর, ব্যাটারি ভোল্টেজ ইন্ডিকেটর, টার্ন বাই টার্ন নেভিগেশন, এবিএস ইন্ডিকেটর, সাইড স্ট্যান্ড ইন্ডিকেটর, রাইডিং মোড, ঘড়ি ইত্যাদি রয়েছে। পাশাপাশি ক্লাস্টারটিতে অন বোর্ড ডায়াগনাইসিস বা OBD ফিচারটি দেওয়া হয়েছে। এর দ্বারা ক্লাস্টারটি নিজে থেকেই বাইকের সম্ভাব্য সমস্যা সম্পর্কে বাইকারকে জানাতে পারবে। একই সাথে ক্লাস্টারটির ব্রাইটনেস ৫ লেভেলে এডজাস্ট করা যায়। 

এলইডি হেডল্যাম্প- বাইকটির ডিআরএল এবং হেডল্যাম্প যেমন এগ্রেসিভ তেমন প্র্যাক্টিকাল, বেশ ভাল লাইট আউটপুট বাইকটি দিতে সক্ষম। 

শর্ট স্পোর্টি মাফলার এক্সহস্ট- বাইকটির এক্সহস্ট সিস্টেম শর্ট স্পোর্টি মাফলার হওয়ার কারনে বেটার বেজ এর সাউন্ডের পাশাপাশি বেটার রাইডিং এক্সপিরিয়েন্স নিশ্চিত করে এবং বাইকের প্রিমিয়ামনেস ফুটিয়ে তোলে। 

আপরাইট হ্যান্ডেলবার পজিশন- এডিভি শেপের হওয়ার কারনে বাইকটির হ্যান্ডেল্বার আপরাইট করা হয়েছে, যা বেশ আরামদায়ক রাইডিং ফিল দেয়। 

নকেল গার্ড উইথ এলইডি ইন্ডিকেটর- বাইকটিতে নকেল গার্ড দেওয়া হয়েছে যা রাইডিং এর সময় অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘটনায় বাইকারের কবজি রক্ষা করার পাশাপাশি বাতাসের বাধাও কিছু টা কমায়। নকেল গার্ড এর সাথে এলইডি ইন্ডিকেটর থাকায় একদিকে যেমন এটি প্র্যাক্টিকাল অপরদিকে বাইকের লুক ও আকর্ষণীয় করে তোলে। 

টিউবলেস টায়ার: বাইকটির টায়ার সাইজ- সামনের টায়ার 110/70-17, পিছনের টায়ার: 140/70-17. টিউবলেস টাফ থ্রেড প্যাটার্নের মাল্টিপারপাস টায়ার বাইকটিতে দেওয়া হয়েছে যা সহজে সব রকম রাস্তায় পাড়ি দেওয়ার সাথে পাংচার বা লিক হওয়ার ঝুঁকি কম ও বেটার পারফর্মেন্স দিতে সক্ষম।

ব্রেক: বাইকটিতে ২৭৬ মি.মি এর ফ্রন্ট ও ২২০ মি.মি এর রিয়ার ডিস্ক ব্রেক ব্যাবহার করা হয়েছে। বাইকটিতে সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস ব্যবহার করা হয়েছে যা বৃষ্টি ও অনাকাঙ্খিত সিচুয়েশনে ব্রেকিং এর ক্ষেত্রে যথেষ্ট হেল্পফুল।  

সাসপেনশন সিস্টেম: বাইকটির সামনে আপসাইড ডাউন ফর্ক (USD) ও পিছনে মাল্টি এডজাস্টেবল মনোশক অ্যাবজর্বার ব্যাবহার করা হয়েছে যা রাইডিং আরামদায়ক করে তোলে।

ইঞ্জিন কিল সুইচ ও হ্যাজার্ড ইন্ডিকেটর: Hornet 2.0 এর মত CB200x বাইকটিতেও তারা ইঞ্জিন কিল সুইচ ফিচারটি দিয়েছে। পাশাপাশি, হ্যাজার্ড ইন্ডিকেটর বিভিন্ন ইমার্জেন্সি সিচুয়েশন ও কুয়াশাচ্ছন্ন রাস্তায় সিগনাল দিতে সহায়তা করবে। 

মাইলেজঃ মোট ১২ লিটারের ফুয়েল ক্যাপাসিটির সাথে প্রতি লিটার জ্বালানী তেলে বাইকটি ৫০ কিলোমিটারের আশেপাশে মাইলেজ দিতে সক্ষম। হায়ার সিসির বাইক বিবেচনায় এই মাইলেজ যথেষ্ট ভাল বলা বাহুল্য, অনেক ১৫০ সিসি বাইকের মাইলেজ ও এর থেকে অনেক কম হয়ে থাকে সাধারণত। তবে জ্বালানীর মান ও রাইডিং স্টাইলের উপরে মাইলেজ কম বেশি হতে পারে।   

এই ছিল এক নজরে Honda Cb200x এর এক নজরে বিস্তারিত। স্পেসিফিকেশন পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্তে আসা যায় Hornet 2.0 এবং CB200x একেবারেই কাছাকাছি বাইক। রাইডার তার প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোন বাইক বেছে নিতে পারেন। হায়ার সিসি এবং আকর্ষণীয় ফিচারস এর কারনে Hornet 2.0 বাংলাদেশের বাজারে ইতিমধ্যে সাড়া ফেলেছে। আমরা আশাবাদী, ভারতে ম্যানুফ্যাকচারিং হওয়ার কারনে বাংলাদেশেও হয়তোবা অদূর ভবিষ্যৎ এ বাইকটি আসতে পারে এবং রিজনেবল প্রাইস দ্বারা ADV সেগমেন্টে নিজের অন্যতম শক্ত অবস্থান তৈরী করবে হোন্ডা বাংলাদেশ প্রাইভেট লিঃ এর হাত ধরে।  

বাইক বিষয়ক সকল তথ্য সবার আগে পেতে বাইকবিডির সাথেই থাকুন।