Hero Xtreme 150 মালিকানা রিভিউ - ইমরান খান
This page was last updated on 13-Jan-2025 05:01pm , By Saleh Bangla
হ্যালো , কেমন আছেন সবাই। আমি ইমরান খান, আমি একজন চাকুরীজীবী। আমি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করি। কাজের এবং ঘুরাঘুরির প্রয়োজনে বাইক চালাই। মূলত আমি একজন বাইক পাগল ছেলে। আমি Hero Xtreme 150 সিসি বাইক চালাই। আজ আমি আপনাদের সাথে এই বাইকটির অভিজ্ঞতা শেয়ার করব।
Hero Xtreme 150 বাইকটি চালানোর অভিজ্ঞতা

লুকিংঃ আসলে Hero Xtreme 150 সিসি বাইকটি Hero CBZ 150 সিসি ২০০৭ এর আপডেট ভার্সন। কিন্তু Xtreme এর ফ্রন্ট সাইড আর ব্যাক সাইডের ডিজাইনের অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে যা এই বাইকটিকে অনেক বেশি এগ্রেসিভ এবং আকর্ষণীয় করে তুলেছে। গাড়িটি অনেক লম্বা এবং উঁচা। আমার কাছে গাড়িটির ফ্রন্ট সাইডের থেকে ব্যাক সাইডটা বেশি ভালো লাগে। গাড়ির অয়েল ট্যাঙ্ক টা অনেক চিকন আর লম্বা।
Also Read: Hero Bike Showroom in Shibganj: Deen Enterprise (Bogra)
ইঞ্জিনঃXtreme এ এয়ারকুল্ড ১৫০ সিসি ইঞ্জিন আছে যা আপনাকে ১৪.৪ পিএস আর ১২.৮ টর্ক শক্তি উৎপন্ন করে যা আপনাকে দিবে একটি দুর্দান্ত পারফরমেন্স। এই গাড়ীটিতে আপনি রেডি পিকাপ পাবেন যা দিয়ে আপনি ০-৬০ কিমি মাত্র ৫ সেকেন্ডেই তুলতে পারবেন। এটি দিয়ে আমি ১০,০০০ আরপিএম এও চালিয়েছি আবার লো আরপিএমে লো গিয়ারে চালালেও আপনি কোন প্রবলেম ফেস করবেন না যা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।
আমি এখন পর্যন্ত ১২৮ কিমি প্রতি ঘন্টায় চালিয়েছি, তখনও আমি কোন ভাইব্রেশন ফিল করিনি।আর আমি জানি এইটা দিয়ে আরও স্পীড তোলা সম্ভব। এই গাড়িটি দিয়ে আমি পিলিয়ন নিয়ে খুব সহজেই সাজেক, ডিম পাহাড়ে উঠে গিয়েছি আবার অনেক ভাঙ্গা রাস্তায়ও খুব আরামে চালিয়েছি। এই গাড়িটি একটি শব্দ বিহীন গাড়ি। আমার মতে Xtreme লং জার্নি এবং দীর্ঘ স্থায়ীত্তের জন্য খুবই আদর্শ একটি বাইক। আর আমি এখন পর্যন্ত ২.৮ বছরে ৫২০০০+ কিমি চালিয়েছি কোন রকম বড় সমস্যা ছাড়া, এমনকি এখন পর্যন্ত ক্লাচ প্লেট চেঞ্জ করিনি।

Also Read: Hero 100cc Price in Bangladesh At A Glance | BikeBD
ফুয়েল এবং ইঞ্জিন অয়েলঃ আমি প্রথম থেকেই পেট্রোল ব্যাবহার করি। আর ইঞ্জিন অয়েল হিসেবে পারটামিনা ১০ ডাব্লিউ ৩০ গ্রেড সেমি সিনথেটিক অয়েল ব্যবহার করছি । যার জন্য গাড়ির সাউন্ড খুবই সুন্দর এবং স্মুথ এবং এখন পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে কোন প্রবলেম এর সম্মুখিন হইনি।
মাইলেজঃ আমি ঢাকাতে সবসময় ৪৫+ কিমি প্রতি লিটার, আর হাইওয়েতে ৫০+ কিমি প্রতি লিটার পাই। এছাড়া গাড়িটি যদি ইকনমিতে চালালে সবসময়ই ৫০+ কিমি লিটার পাওয়া সম্ভব।
কন্ট্রোলিং এবং ব্রেকিং সিস্টেমঃ আমি মনে করি বাইকটির সেন্টার অব গ্রাভিটি একেবারেই বাইকারের সিটের নিচে দেয়া, যার কারণে গাড়ির কন্ট্রোলিং আমি এখন পর্যন্ত খুবই ভালো পাচ্ছি । এর সিটিং পজিশন লং ড্রাইভ এর জন্য খুবই ভালো যার জন্য আমি একদিনে ১৭ ঘণ্টা ড্রাইভ করেও কোন ক্লান্তি অনুভব করিনি। এটি দিয়ে আমি ৩৪ মাসে প্রায় ৫৩০০০ কিমি ঢাকা, হাইওয়ে, সি-বিচে, পাহাড়ে, সেই রকমের ভাঙ্গা রাস্তায় পিলিয়ন নিয়ে চালিয়েছি।
Also Read: Hero Passion X Pro price in BD
বিশেষ করে সাজেক এবং ডিম পাহাড়ে পিলিয়ন নিয়ে সেইরকমের করনারিং করেছি এবং ব্রেকিং করেছি। এই গাড়িটির সামনে ডাবল ক্যালিপার হাইড্রোলিক ব্রেক এবং পিছনে ড্রাম ব্রেক সিস্টেম। এটির ব্রেকিং সিস্টেম খুবি ভালো যা নির্দিষ্ট স্থানে, নির্দিষ্ট সময়ে থামাতে সক্ষম বিশেষ করে হাইওয়ে এবং পাহাড়ে আমি পিলিওন সহ খুবই ভালো ব্রেকিং পারফর্মেন্স পেয়েছি।
সাস্পেন্সনঃ এর সাস্পেন্সন খুবই চমৎকার। বিশেষ করে পিলিয়ন নিয়ে চালালে অনেক মজা পাবেন। আর সিঙ্গেল চালালেও বিশেষ করে অফ রোডে অনেক মজা ভালো পারফর্ম করে। আর এই সাস্পেন্সন টি গাড়ির ওজন বহন করার জন্য যথেষ্ট। এটির কারনে আপনি সব ধরনের রাস্তায় এমনকি হাই স্পীডেও খুব ভালো পারফর্মেন্স পাবেন।
রিম এবং টায়ারঃ দুটি চাকাই ১৮ সাইজের টিউবলেস টায়ার। যার কারনে গাড়ির হাইট অনেক বেশি। সামনে ৯০-১০০/১৮ আর পিছে ১১০-৯০/১৮ সাইজের টায়ার। আমি মনে করি স্টক টায়ারটাই এই গাড়ির সব কিছুর জন্য পারফেক্ট।
Hero Xtreme Sports এর ভিডিও রিভিউ
লাইটিং সিস্টেমঃ গাড়িটি এসি টাইপের জন্য রাতে একটু প্রবলেম ফেস করবেন। যার জন্য আপনাকে ডিসি টাইপ করে ভালো মানের এলইডি লাগিয়ে চালাতে হবে। এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় হল টেইল লাইট যা কোন গাড়ির সাথে আপনি মিল পাবেন না। যখন পার্কিং এ থাকে তখন একটি লাইট জলে থাকে আর ব্রেক করলে আরেকটি লাইট জলে যা অন্য কোন বাইকে নেই। এটি আপনাকে অন্য বাইকের থেকে আলাদা করে রাখবে।
Also Read: Hero Bike Showroom in Jashore: Axion Motors (Jashore Sadar)
ওয়েট এবং ভাইব্রেশনঃ গাড়িটির ওজন ১৪৭ কেজি হওয়াতে আমি ১২৮ কিমি বেগে চালিয়েও তেমন কোন ভাইব্রেশন অনুভব করিনি।
মিটার এবং অন্যান্য ফিচারসঃ বাইকটিতে ডিজিটাল এবং এনালগ স্পিডোমিটার আছে। আছে আলাদা আলাদা মাইলেজ মিটার যা দিয়ে আপনি টোটাল মাইলেজ, ফুয়েল গজ, ইঞ্জিন অয়েলের পরিমাণ জানতে পারবেন। আর একটি কি ইন্ডিকেটর আছে যা রাতে অন্ধকারে আপনাকে চাবি ঢুকানোর জায়গা দেখাবে। এটি গাড়ি বন্ধ করা থেকে ২৪ ঘণ্টা জলে।
আর গাড়ির পিলিয়ন সিটের নিচে একটি মোবাইল চার্জার পয়েন্ট আছে যা আপনার প্রয়োজনীয় মুহূর্তে কাজে আসবে। অসুবিধাঃ এই গাড়িটির প্রধান সমস্যা এর হাইট এবং ওজন যা কম হাইটের লোকদের ভোগাবে। আরেকটি সমস্যা হল অনেকক্ষণ হাই স্পীডে বৃষ্টিতে এবং গরমে চালালে মাঝের মধ্যে পিকআপ ছেড়ে দেয়। এছাড়া আর তেমন কোন প্রবলেম আমি এখন পর্যন্ত পাইনি।
সর্বোপরি , আমার কাছে Hero Xtreme 150 বাইকটি খুবই ভালো লেগেছে বিশেষ করে এর স্মুথনেস আর সাউন্ড। এর বিল্ড কোয়ালিটিও অসাধারণ। এক কথায় গাড়িটির হাইট প্রবলেম না থাকলে বাংলাদেশে হাংকের মত মার্কেট তৈরি করতে পারত। আর গাড়িটি এক হাতে যত্ন সহকারে চালালে ১৫-২০ বছরেও কিছু হবে না বলে আমি বিশ্বাস করি। আমার এই লেখা একান্তই আমার অভিজ্ঞতা থেকে লেখা, যদি কোন ভুল হয়ে থাকে আমাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর সবসময় সাবধানে গাড়ি চালাবেন আর ভালো মানের হেলমেট এবং সেফটি গিয়ার ব্যবহার করবেন। ধন্যবাদ।
Also Read: Hero Bike Showroom in Niamatpur: Nissan Motors (Naogaon)
লিখেছেনঃ ইমরান খান
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।
