Hero Splendor ismart - ভিজুয়াল রিভিউ লিখেছেন স্বজন
This page was last updated on 06-Jul-2024 04:32pm , By Ashik Mahmud Bangla
স্প্লেন্ডার বাইক বর্তমানে আমাদের দেশের জন্য কিংবদন্তিরুপে পরিনত হয়েছে। বহু বছর ধরে এই বাইকের বিভিন্ন ভার্শন আমাদের দেশের মধ্যবিত্ত মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। দেশের চাকুরীজীবী মানুষের প্রথম পছন্দ হচ্ছে এই বাইক। ২০১৪ সালেও এই সুনাম ও পারফরমেন্স অব্যাহত রয়েছে।
Hero Splendor Ismart - ভিজুয়াল রিভিউ লিখেছেন স্বজন
এই বাইকের বহু ভার্শন থাকলেও এর সর্বশেষ ভার্শন হলো ২০১৪ মডেলের Hero Splendor ismart. প্রথমত, একটি বাইকের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তার চেহারা। First Impression Is The Best Impression. একটা বাইক যদি আপনার প্রথম দেখাতেই ভালো না লাগে, তবে সেটা যত ভালোই হোক না কেন, আপনি সেটা কেনার জন্য মন থেকে উৎসাহী হবেন না।
যদিও এই বিষয়টি আপেক্ষিক, তবুও সকলের ও আমাদের মতে, Hero Splendor ismart বাইকটি দেখতে অত্যান্ত স্টাইলিশ। Splendor সিরিজের আগের বাইকগুলো থেকে এটা দেখতে বহুগুনে বেটার। এর চেহারা দেখে অনেকেই এটাকে ১২৫ সিসির বাইক বলে ভুল করতে পারে। এর অত্যান্ত সুন্দর কালার স্কীম ও অনেকগুলো রঙের অপশন থেকে ক্রেতা সহজেই নিজের পছন্দের রঙের বাইক বেছে নিতে পারবেন।
Also Read: Hero Splendor iSmart 110 2016 – শীঘ্রই আসছে বাংলাদেশে
এছাড়া, এর সিটিং পজিশন ভালো। দীর্ঘক্ষণ চালালেও ব্যাকপেইন হওয়ার সম্ভাবনা কম। এর মিটারটা যদিও এনালগ, তারপরও দেখতে সুন্দর। এই বাইকটি মূলত একটি সুপার কম্যুটার বাইক। এতে রয়েছে ২ ভালভবিশিষ্ট ৯৭.২ সিসির একটি এয়ার কুলড সিংগেল সিলিন্ডার ইঞ্জিন। তবে, সিসি কম হলেও এর শক্তি মোটেও কম না। এর Max Power হলো 5.74 Kw ( 7.4 PS ) @ 7500 rpm , আর, Max Torque = 8.04 Nm @ 4500 rpm.
এতে রয়েছে ৪ স্পীড গিয়ারবক্স। এবার আসা যাক, এর কমফোর্ট ও সেফটি প্রসঙ্গে। এর ব্রেকিং সিস্টেম অতি আধুনিক না হলেও এই বাইকের আনুমানিক এক্সেলেরেশন ওচটপ স্পীডের কথা বিবেচনা করলে এর ব্রেকিং সিস্টেম মোটামুটি ঠিক আছে। এর সামনে রয়েছে ১৩০ মি.মি. সাইডের ড্রাম ব্রেক ও পিছনে রয়েছে ১১০ মি.মি. সাইজের ড্রাম ব্রেক।
আমার মতে, সামনে একটা ডিস্ক ব্রেকের অনেক প্রয়োজন ছিলো। এই ব্রেকিংকে সঙ্গ দিতে ও যাত্রাকে আরামদায়ক করার জন্য এর সামনে রয়েছে টেলিস্কোপিক ফর্ক আর পেছনে রয়েছে আরামদায়ক ডুয়েল স্প্রিং সাসপেনশন। Splendor সিরিজের ওপর মানুষের একমাত্র এর কমফোর্ট নিয়ে, কিন্তু এই বাইকটার সাসপেনশন দেখে মনে হচ্ছে যে এই অভিযোগ আর থাকবে না।
এর সামনে ও পেছনে রয়েছে ১০০/৮০ সাইজের টিউবলেস টায়ার, যা রাস্তায় চলার সময় অত্যান্ত ভালো গ্রিপ দেবে। মাইলেজ সম্পর্কে কোম্পানির ক্লেইম হলো ৮১ কিমি/লিটার, যা বেসম্ভব। কয়েকজন ইউজারের মতামত অনুসারে, এই বাইকে আমাদের দেশের ফুয়েল দিয়ে আপনি প্রায় ৬০-৬৫ কিমি/লিটার মাইলেজ পেতে পারেন। ( সকল নিয়ম মেনে চললে।)
আমার মতে, আগের Splendor এর মতো এটারও এক্সেলেরেশন ভালো। আর, টপ স্পীড আপনি মিটারে৯০+ উঠাতে পারেন। তবে আমার ধারনা, অন্যান্য ১০০ সিসি বাইকের মতো এটাও ৭০+ স্পীডে কিছুটা কাঁপবে। তবে এটা স্বাভাবিক। এবার আসি সবচেয়ে আলোচিত বিষয়, এর i3 টেকনোলোজির ব্যাপারে। একদম সহজ ভাষায়, এই টেকনোলোজি সমৃদ্ধ বাইকে একটা সুইচ থাকবে।
ওই সুইচ চালু করা অবস্থায়, আপনার বাইক যদি ইঞ্জিন চালু অবস্থায় স্থির থাকে, তবে নির্দিষ্ট কয়েক সেকেন্ড পর ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাবে। আবার, ক্লাচ চেপে ধরলেই ইঞ্জিন চালু হয়ে যাবে। উদাহরন : আপনি বাইক চালাচ্ছেন। হঠাৎ পড়লেন সিগনালে। ৮-১০ মিনিট সময় স্থির থাকবেন। এখন, যদি আপনি বাইকের i3 এর সুইচ চালু করে রাখেন, তবে আপনি স্থির হওয়ার কয়েক সেকেন্ড পরেই ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাবে।
আবার, আপনার যখনই ইঞ্জিন চালু করার প্রয়োজন হবে, তখন আপনি জাস্ট ক্লাচে একটা চাপ দিলেই ইঞ্জিন চালু হয়ে যাবে। কিক দেয়ার সময়টুকু নষ্ট হবে না। উপকার : ইঞ্জিন বন্ধ থাকার ফলে জ্বালানী অপচয় কম হবে, ফলে টাকার সাশ্রয় হবে।
পরিশেষে, আপনি যদি হন মধ্যবিত্ত একজন মানুষ, বা একজন চাকুরীজীবী, যিনি যাতায়াতের সহজ মাধ্যম হিসেবে একটি মটরসাইকেল কিনতে চান, মাইলেজ, কমফোর্ট, স্থায়িত্ব ও লুক যদি হয় আপনার চাহিদা, তবে বর্তমান বাজারে আপনার জন্য পারফেক্ট বাইকগুলোর মধ্যে একটা হলো Hero Splendor ismart. নতুন ক্রয়মূল্য : ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা। রেজ: ২৫ হাজার টাকা। প্রতিটি বাইকে Hero Bike কোম্পানি দিচ্ছে ৫ বছর বা ৭০,০০০ কিমি এর ইঞ্জিন ওয়ারেন্টি এবং তিনটি ফ্রি সার্ভিসিং। আপনাদের মতামত জানাতে ভুলবেন না কিন্তু !!
লিখেছেন ঃ আহমেদ স্বজন