মোটরসাইকেলের টার্বোচার্জার : এটি কীভাবে কাজ করে?

This page was last updated on 03-Jul-2024 08:59am , By Shuvo Bangla

মোটরসাইকেলের টার্বোচার্জার ব্যবহার করা হয় ইঞ্জিনে অধিক চাপে বায়ু প্রবেশ করিয়ে ইঞ্জিনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য। টার্বোচার্জার মূলত এয়ার পাম্প, যেটি ইঞ্জিনের এক্সজস্ট প্রবাহকে কাজে লাগিয়ে বায়ু পাম্প করে। এক্সজস্ট গ্যাসের তাপ ও চাপ ওই পাম্পের টারবাইন (যেটিই টার্বোচার্জার) ঘুরায়। টারবাইনটি একটি কম্প্রেসর হুইলের সঙ্গে সংযুক্ত। ফলে টারবাইন ঘুরলেই ওই কম্প্রেসর হুইলও ঘুরে। আর এক্সজস্ট গ্যাসের চাপে টারবাইন খুব জোরে ঘুরে এবং কম্প্রেসরও প্রচণ্ড চাপে বায়ু ইঞ্জিনে প্রবেশ করায়।

তারপর ওই অধিক চাপসম্পন্ন বায়ু সিলিন্ডারে পাঠানো হয়। আর যেহেতু এক্সজস্ট গ্যাস এমনিতেই নষ্ট হয়, সেহেতু সেই গ্যাসকে কাজে লাগিয়ে টারবাইন ঘুরিয়ে বায়ু চাপ বাড়াতে যে শক্তি দরকার পড়ে তা উৎপাদনের জন্য ইঞ্জিনকে আলাদা করে কোনো শক্তি খরচ করতে হয় না, অর্থাৎ এই সুবিধাটি মুফতেই পাওয়া যায়!

গ্যাসোলিন ও ডিজেল—উভয় ইঞ্জিনেই টার্বোচার্জার ব্যবহার করা হয়। এটা ব্যবহারের প্রধান সুবিধা হলো, জ্বালানি খরচ না বাড়িয়েই ইঞ্জিনে অধিক শক্তি উৎপাদন করা যায়। কারণ এটা শুধু ত

খনই ইঞ্জিনের শক্তি উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়, যখন অধিক শক্তির দরকার পড়ে। কম শক্তির ইঞ্জিনগুলো ব্যবহার করা হয় জ্বালানি সাশ্রয় ও বায়ু দূষণ কমানোর জন্য। আর সেসব ইঞ্জিনে যখন অধিক শক্তি দরকার পড়ে, তখনই টার্বোচার্জার চালু করা হয়।

প্রস্তুতকরণ

সাধারণত এক্সজস্টর মেনিফোল্ডের কাছাকাছিই টার্বোচার্জার লাগানো হয়। আর এক্সজস্ট মেনিফোল্ড থেকে টারবাইনের মাঝ দিয়ে এক্সজস্ট পাইপ চলে যায়, যাতে এক্সজস্ট থেকে গ্যাসের প্রবাহ টারবাইন হুইল ঘুরাতে পারে (চিত্র টি১)। আর অন্য আরেকটি পাইপ কম্প্রেসরের সঙ্গে ইনটেক মেনিফোল্ড সংযুক্ত করে।

যেকোনো টার্বোচার্জার, যেটাকে সাধারণত টার্বো বলা হয়, তাতে নিম্নোক্ত যন্ত্রাংশগুলো থাকে (চিত্র টি২) :

■ টারবাইন বা হট হুইল

■ শ্যাফট

■ কম্প্রেসর বা কোল্ড হুইল

■ সেন্টার হাউজিং অ্যান্ড রোটেটিং অ্যাসেম্বলি (সিএইচআরএ)

■ ওয়েস্টেজ ভাল্ব

■ অ্যাকচুয়েটর

টার্বোচার্জারের ভিতরে টারবাইন হুইল ও কম্প্রেসর হুইল একই শ্যাফটে অবস্থিত। শ্যাফট, শ্যাফট বিয়ারিং, টারবাইন সিল অ্যাসেম্বলি ও কম্প্রেসর অ্যাসেম্বলি থাকে সিএইচআরএ-এর ভিতরে । হাউজিংয়ের ভিতরে প্রত্যেকটি হুইল কাঁটাযুক্ত শেষপ্রান্ত দ্বারা আটকে থাকে এবং এক্সজস্ট প্রবাহ ও বায়ুর প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে।

আর টারবাইন হুইলটি এক্সজস্ট বাতাসের মধ্যে থাকায় সেটি খুব গরম হয়ে পড়ে। তাছাড়া এটি অনেক দ্রুত ঘুরে থাকে। সেজন্য তাপ প্রতিরোধী কাস্ট আয়রন দিয়ে টারবাইন হুইল বানানো হয়। আর টার্বোচার্জারের থাকে ওয়েস্টগেট, এর মধ্য দিয়ে কম্প্রেসর হুইলটি (দেখতে টারবাইন হুইলের উল্টো) ঘুরতে থাকে। কম্প্রেসর হুইল ঘুরলে বাইরের শীতল বাতাস হাউজিংয়ের ভিতর ঢুকে এবং সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্সের কারণে তা নিক্ষিপ্ত হয়। সেখান থেকে উচ্চ চাপে বাতাস ইনটেক মেনিফোল্ড ও অন্যান্য সিলিন্ডারে ঢুকে যায়।

টার্বোচার্জার লাগানো ইয়ামাহা এন্টিসারের মালিকানা রিভিউ পড়ুন

সাধারণত বায়ুমণ্ডলের চাপ ও ইঞ্জিনের ভিতর বায়ুর চাপের তারতম্যের কারণেই বাতাস ভিতরে ঢুকতে পারে। কিন্ত টার্বোচার্জার আরো অধিক উচ্চ চাপে ইঞ্জিনে বাতাস ঢুকতে দেয়। আর মোটরসাইকেলে টার্বোচার্জার ব্যবহার করে ইঞ্জিনে চাপ বৃদ্ধিকে বলা হয় টার্বো বুস্ট। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, ১০ পিএসআই বুস্ট মানে হলো ইঞ্জিনে বায়ুর চাপ ২৪.৭ পিএসআই (১৪.৭ পিএসআই বায়ুমণ্ডলের চাপ সঙ্গে ১০ পিএসআই বুস্ট)।