বার বার বাইক স্টার্ট না হলে কি করনীয়? সমস্যা এবং সমাধান
This page was last updated on 31-Jul-2024 09:45am , By Ashik Mahmud Bangla
আমরা যারা বাইক ব্যবহার করি বাইক নিয়ে ছোট ছোট কিছু সমস্যার সম্মুখীন আমাদের অনেকেরই হতে হয়। বার বার বাইকের স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাওয়া এর মধ্যে অন্যতম। বার বার বাইক স্টার্ট না হলে কি করনীয়? চলন্ত অবস্থায় বার বার বাইকের স্টার্ট বেশ কিছু কারনে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আজ আমরা এই সম্পর্কেই আলোচনা করবো।
১/ স্পার্ক প্লাগ ময়লা অথবা নষ্ট হয়ে গেলেঃ
বাইকের স্পার্ক প্লাগ যদি ময়লা হয়ে যায় অথবা নষ্ট হয়ে যায় তাহলে চলন্ত আবস্থায় বার বার বাইক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কিভাবে বুঝবেন স্পার্ক প্লাগ ময়লা হয়ে গেছে? যদি দেখেন স্পার্ক প্লাগ টি পুরো কালো হয়ে গেছে এবং অঙ্গুল দিলে হাতে কালি পড়ে, যদি এমনটা হয় সেক্ষেত্রে আপনার বুঝতে হবে স্পার্ক প্লাগ নষ্ট হয়ে গেছে । এজন্য সব সময় চেষ্টা করুন ভালো ফুয়েল এবং আসল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করতে। নির্দিষ্ট সময় পর পর স্পার্ক প্লাগ চেঞ্জ করে নিতে।
২/ এয়ার ফিল্টার ময়লা অথবা নষ্ট হয়ে গেলেঃ
আমরা যারা সিটিতে রাইড করি অথবা বিভিন্ন জায়গায় অফরোডিং করতে যায় অথবা লং ট্যুরে যায় তাদের বাইকের এয়ার ফিল্টার খুব সহজে ময়লা হয়ে যায়। এয়ার ফিল্টার ময়লা হয়ে গেলে চেষ্টা করুন পরিষ্কার করে নিতে। আর এয়ার ফিল্টার যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে সাথে সাথে এয়ার ফিল্টার চেঞ্জ করে ফেলুন। আপনি যদি না বুঝতে পারেন এয়ার ফিল্টার ভালো আছে কিনা, সেক্ষেত্রে অভিজ্ঞ কাউকে দিয়ে আপনি আপনার বাইকের এয়ার ফিল্টার চেক করাতে পারেন। সাধারণত প্রতি ৫০০-৮০০ কি মি পর পর এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার করে নেয়া উচিত। স্বাভাবিক ভাবে একটা এয়ার ফিল্টার দিয়ে ৩০০০ থেকে ৩৫০০ কি মি চালানো যায়।
৩/ RPM সঠিক না থাকা:
বার বার চলন্ত অবস্থায় বাইকের স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রধান কারন হচ্ছে RPM সঠিক না থাকা। বেশ কিছু কারনে অনেক সময় আমাদের বাইকের আরপিএম চেঞ্জ হয়ে যায়, এর অর্থ হচ্ছে বাইকে যে RPM থাকার কথা সেটা কমে যায়। সাধারণরত একটি বাইকের RPM থাকে ১৩০০ থেকে ১৫০০ এর মধ্যে। যদি কোণ কারনে RPM এর কম হয়ে যায়, তাহলে চালু অবস্থায় বাইকের ক্লাচ ধরলে স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাবে। আবার যদি RPM বেশি হয়ে যায় তাহলে বাইকের মাইলেজও কমে যাবে।
৪/ কার্বুরেটর টিউনিং সঠিক না থাকলেঃ
কার্বুরেটর বাইকগুলোতে কার্বুরেটর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা অনেকেই মনে করি কার্বুরেট থেকে তেল কমিয়ে রাখলে অনেক ভালো মাইলেজ পাওয়া যায়। কিন্তু এই ধারনাটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। মোটরসাইকেলে ভালো পারফরমেন্স পেতে হলে কার্বুরেট টিউনিং সঠিক ভাবে করতে হবে।
অনেক সময় কার্বুরেটরে ময়লা জমে গেলেও বাইকের স্টার্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যদি এমনটা আপনার মনে হয় তাহলে কার্বুরেটর পরিষ্কার করিয়ে নিন। ঠিক তেমনি ফুয়েল ইনজেকটর যদি ময়লা হয়ে যায় তাহলেও আপনি এই সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
৫/ কুলেন্ট ঠিক না থাকলেঃ
আমরা যারা কুলেন্টযুক্ত বাইক ব্যবহার করি আমরা সবাই জানি বাইকের কুলেন্ট যদি কমে যায় অথবা শেষ হয়ে যায় তাহলে বাইকের ইঞ্জিন ওভার হিট হয়ে যায়। বাইক স্টার্ট না হলে এই দিকে লক্ষ্য করুন। যে কোন বাইকের ইঞ্জিন যদি ওভার হিট হয় সে ক্ষেত্রে বাইক একটা সময় গিয়ে স্টার্ট ছেড়ে দিবে। সেজন্য আপনার বাইকে যদি কুলেন্ট থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন, কুলেন্ট কমে গেলে অথবা শেষ হয়ে গেলে বাইকে কুলেন্ট রিফিল করুণ।
৬/ ভালব এডজাস্ট না থাকলেঃ
অনেক সময় আমাদের বাইকের ভালব ক্ষয় হয়ে যায়, অথবা কোন কারনে এডজাস্ট নষ্ট হয়ে যায়। যদি আপনার বাইকে এমনটা হয়ে থাকে তাহলে আপনার বাইক চলন্ত অবস্থায় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেজন্য ভালবের দিকে লক্ষ্য রাখাও জরুরি। তবে একটা কথা বলে রাখা ভালো এই কাজগুলো সব সময় অভিজ্ঞ কোন মেকানিক দিয়ে কারানোর চেষ্টা করুন। কারন এক কাজে যদি কোন ভুল হয় সেটি আপনার বাইকের ইঞ্জিনে বেশ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। সাধারনত এই কারণগুলোর জন্য বার বার বাইকের স্টার্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আপনি যদি এই বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখেন আশাকরি আপনি এই সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পাবেন। কিন্তু তারপরও যদি আপনার বাইকে এই সমস্যা থেকে যায় তাহলে ভালো অভিজ্ঞ কোন মেকানিকের সাথে যোগাযোগ করুন।