উৎসবের দিনে বাইক এক্সিডেন্ট রোধে আমাদের সকলের যা করনীয়
This page was last updated on 30-Jul-2024 09:56am , By Ashik Mahmud Bangla
উৎসবের দিনে বাইক এক্সিডেন্ট আমাদের দেশে অনেক বড় একটা ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি পদ্মা সেতুতে ঘটে যাওয়া বাইক এক্সিডেন্ট সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। ঠিক তেমনি ঈদের সময়ে বাইক এক্সিডেন্ট অনেক বেশি হয়। আমরা যারা বাইক ব্যবহার করি এদের মধ্যে হাতেগোনা কিছু মানুষের জন্য আমাদের সব বাইকারের গাঁয়ে বদনামের ছাপ লেগে যায়। কিন্তু আপনি যদি ভালোভাবে খোজ নেন তাহলে দেখতে পাবেন উৎসবের দিনে এমন অনেক মানুষ বাইক নিয়ে রাস্তায় নামে যাদের নিজেদের কোন বাইক ই নাই , তারা তাদের বন্ধু, মামা, চাচা,খালু বা অন্য কারও বাইক নিয়ে কয়েক ঘন্টার জন্য ঘুরতে এসেছে। এই সব মানুষ যখন উৎসবের ব্যস্ত রাস্তায় বাইক চালানোর জন্য নামে তখন তাদের অনভিজ্ঞতা সড়কে এক্সিডেন্টের সংখ্যা অনেক বাড়িয়ে দেয়। এখন কথা হচ্ছে উৎসবের দিনে বাইক এক্সিডেন্ট রোধে আমাদের সকলের কি করনীয় ? অবশ্যই আমাদের প্রত্যেকের নিজ নিজ অবস্থান থেকে অনেক কিছু করার সুযোগ আছে। আজ আমি আপনাদের সাথে এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
উৎসবের দিনে বাইক এক্সিডেন্ট রোধে আমাদের সকলের যা করনীয়ঃ
১- পারিবারিক সচেতনতাঃ
উৎসবের দিনে বাইক এক্সিডেন্ট রোধে পারিবারিক সচেতনতা এর বিকল্প কিছুই নেই। ঈদের সময় অথবা বিশেষ দিনগুলোতে আপনার বাসার ছোট সদস্য যারা আছে , যারা ভালোভাবে বাইক চালাতে পারে না, ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই এদের হাতে যাতে মোটরসাইকেল না যায় সেদিকে আমাদের সবার খেয়াল রাখতে হবে। একদিনের আনন্দ যেনো কোন পরিবারের সারা জীবনের কান্নার কারন হয়ে না যায়। প্রতিটা পরিবার যদি এই দিকে বিশেষভাবে নজর রাখে তাহলে আমাদের দেশে বাইক এক্সিডেন্টের হার অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব। আমাদের দেশের রাস্তায় অনভিজ্ঞ বাইকারদের জন্য আমরা বর্তমান সময়ে সাধারণ বাইকাররা অনেক বিপদে আছি। তাই দায়িত্বটা আমাদের সবার নিতে হবে আগামীর দিনে হাতে গোনা কিছু মানুষের জন্য আমাদের সবার যাতে বিপদে পরতে না হয়।
২- বাইকিং গ্রুপগুলোর এগিয়ে আসাঃ
উৎসবের দিনে বাইক এক্সিডেন্ট রোধে আমাদের দেশের বাইকিং গ্রুপগুলো অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে। অলরেডি আমাদের দেশের বাইকিং গ্রুপগুলো বর্তমান সময়ে অনেক বেশি সচেতন। ভালো মানের হেলমেট ব্যবহার করা এবং বাইকারের নিরাপত্তা নিয়ে কম বেশি সব বাইকিং গ্রুপ বর্তমানে কাজ করে থাকে। আর বর্তমান সময়ে বাইকিং গ্রুপের মধ্যে হেলমেট ছাড়া বাইকার খুজে পাওয়া যায় না খুব একটা। এই সচেতনতা যদি সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিয়া যায় তাহলে আমাদের দেশে উৎসবের দিনে বাইক এক্সিডেন্ট অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বিশেষ দিনগুলোতে বাইকিং গ্রুপগুলো বাংলাদেশ পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচী করতে পারে এতে করে সড়ক দূর্ঘটনা অনেক কমানো সম্ভব।
৩- ভিডিওর মাধ্যমে ভূল বিষয়গুলোকে প্রমোট করা থেকে বিরত থাকাঃ
সোশ্যাল মিডিয়া বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে অনেক বড় একটা ভূমিকা পালন করছে, ভালো কিছুর প্রচার অথবা খারাপ কিছু প্রচার সব বর্তমানে এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে হয়ে থাকে। আমরা প্রায় ইউটিউব এবং ফেসবুকে সড়কে রেস, রাফ বাইক চালানোর বিভিন্ন ভিডিও দেখে থাকি আর একজনেরটা ভিডিও দেখে আরেকজন সেই একই ভুলটা করি। কোন উৎসবের দিনে হাতে গোনা অল্প কিছু মানুষ তাদের ভিডিওর মাধ্যমে এই রকম ভূল বিষয়গুলোকে যাতে প্রমোট করতে না পারে সেদিকে আমাদের সবার খেয়াল রাখতে হবে। কারন ভূল করবে হাতেগোনা অল্প কিছু মানুষ আর বিপদে পরবে সব বাইকার। যারা সামান্য কিছু ভিউ আর ফলোয়ার পাওয়ার আশায় ভূল বিষয়গুলোকে প্রমোট করছেন তাদের এই কাজগুলো থেকে বিরত থাকা উচিৎ।
৪- ঢাকার মতো আইনের কঠোরতাঃ
হ্যা এই কথাটা বলার পর অনেকেই হয়তো আমাকে অনেক কিছু বলবেন কিন্তু এর বিকল্প আর কিছু নেই। আপনি যদি ভালোভাবে খেয়াল করেন তাহলে দেখতে পাবেন ঢাকার মতো যানজটের নগরী বাংলাদেশের মধ্যে আর নেই। এতো গাড়ি এতো বাইক তবুও ঢাকা সিটির মধ্যে সিরিয়াস বাইক এক্সিডেন্টের সংখ্যা খুব কম এর কারন কি জানেন , আইনের কঠোরতা। ঢাকার মধ্যে হেলমেট ছাড়া , ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া বাইকার আপনি খুজে পাবেন না। উৎসবের দিনগুলোতে মহাসড়কগুলোতে যদি আশেপাশের থেকে হেলমেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া ,অনভিজ্ঞ রাইডাররা যেনো রাইড করতে না পারে সেদিকে বিশেষ নজর দেয়া উচিৎ।
৫- অতিরিক্ত গতি পরিহার করাঃ
আমাদের দেশের রাস্তার সার্বিক দিক বিবেচনা করলে গতি আমাদের দেশের রাস্তার জন্য না। তাই আমাদের সবার উচিৎ বাইকের গতির দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখা , নিজেরা নিরাপদে থাকা এবং অন্যকে নিরাপদে রাখা। হাইওয়ে রাইড অথবা শহরে রাইড , আপনি যেটাই করেন না কেনো বাইক নিজের নিয়ন্ত্রনের মধ্যে রাখুন।
বর্তমান সময়ে হাতেগোনা অল্প কিছু মানুষের জন্য আমাদের বাইকারদের নাম অনেক খারাপ হচ্ছে, প্রতিনিয়ত আমরা নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। তাই আমাদের সবার সাবধান হতে হবে, নিজ নিজ অবস্থান থেকে যতটা সম্ভব দূর্ঘটনা এড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। নিরাপদ থাকতে বাইক চালানোর সময় অবশ্যই ভালোমানের হেলমেট এবং রাইডিং গিয়ার ব্যবহার করতে হবে।