100cc সেরা পাচটি মোটরসাইকেল বাংলাদেশে ২০১৭
This page was last updated on 28-Jul-2024 10:32am , By Saleh Bangla
আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে 100cc বাইক দেখা যায়। অনেক কোম্পানী রয়েছে যারা ভাল মানের 100cc বাইক তৈরী করছে। সাধারণত তারা সে সকল বাইক ভাল পরিমাণে তৈরী করে এবং বাজারে রাখে যার ফলে বাইকগুলো সবসময়ই সহজলভ্য হয়।
এত বিকল্প থাকার দরুণ প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী বাইক বাছাই করাটা কঠিন হয়ে যায়। আমরা আজকে আপনাদের কাছে বাংলাদেশের অন্যতম ৫ টি 100cc সিসি বাইক নিয়ে আলোচনার জন্য উপস্থিত হয়েছি। যার মাধ্যমে আপনারা আর সহজে আপনাদের ব্যক্তিগত প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী বাইক পছন্দ করতে পারবেন।
১) Honda Livo
আমরা সকলেই হোন্ডা কোম্পানি সম্পর্কে জানি এবং আমাদের দেশের বাইক মার্কেটের একদম উচ্চপর্যায়ের কোম্পানিগুলোর মধ্যে এর অবস্থান। আমাদের দেশের বাইক মার্কেটের শুরুর সময় থেকেই হোন্ডা কোম্পানি তাদের ক্রেতাদেরকে সন্তুষ্টি প্রদান করে আসছেন। তারই ধারাবাহিকতায় হোন্ডা আমাদের দেশে তাদের কোম্পানির নতুন বাইক Honda Livo ১১০ সিসি নিয়ে এসেছে।
এই বাইকটি আক্রমণাত্মক লুক এবং পুরুষালি ডিজাইনে তৈরি করা হয়েছে। এর তেলের ট্যাঙ্কটি অনেক সুন্দরভাবে পুরুষালি ডিজাইনে তৈরি করা হয়েছে যার বিভিন্ন দিক কিছুটা তীক্ষ্ণ রাখা হয়েছে যার ফলে এর সৌন্দর্য একটি অন্য মাত্রা ধারণ করেছে।
বাইকের হেড লাইট এবং টেইল লাইটও আকর্ষণীয় যা খুব সহজেই সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে। এর হ্যাণ্ডেল বারটি এমনভাবে স্থাপিত হয়েছে যে বাইকটির নিয়ন্ত্রণ খুব সহজ হয়ে যায়। এর লম্বা সিট রাইডারকে দিবে আরামদায়ক ভ্রমণের অভিজ্ঞতা।
বাইকটিতে ৮.৫ লিটার জ্বালানী বহনক্ষমতা রয়েছে। এর সামনের দিকে টেলিস্কোপিক ফোর্ক সাসপেনশন এবং পিছনে স্প্রিং লোডেড হাইড্রোলিক সাসপেনশন রয়েছে। এই সাসপেনশনগুলো রাইডারকে ভ্রমণের সময় ঝাঁকির অনুভূতি থেকে অনেকাংশে রেহাই দিবে যা ভ্রমণের আনন্দ আরো অনেক বাড়িয়ে দিবে।
বাইকের সামনে ও পিছনে ৮০/১০০-১৮ সাইজের টায়ার রয়েছে যার উভয়ই এলয় চাকা এবং টিউব্লেস টায়ার। 100cc এর বাইকের মধ্যে কোম্পানীর দেয়া তথ্যানুযায়ী হোন্ডা লিভোই সর্বোচ্চ মাইলেজ প্রদানকারী বাইক। এতে এয়ার কুলড, ফোর স্ট্রোক এবং এস আই ফর্মুলেটেড ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এতে চার স্টেপ বিশিষ্ট গিয়ারবক্স রয়েছে। এই ইঞ্জিন এবং সর্বসাকুল্যে বাইকটি অসাধারণ পার্ফরম্যান্স, ভাল গতি উতপাদন ও মানসম্মত থ্রটল রেস্পন্স সরবরাহ করে।
বাইকটি প্রধানত তাদের জন্যে যারা একটি উন্নত মানের এবং ব্র্যান্ডের 100cc বাইক খুঁজছেন যাতে ভাল সাশ্রয়ী মাইলেজ, আরামদায়কতা, গতি উৎপাদন ক্ষমতা এবং সুন্দর লুক থাকবে। এই বাইকটি আমাদের দেশে হোন্ডার সবচেয়ে নতুন সংযুক্ত পণ্য।
২) TVS Metro Plus (ES)
টিভিএস মেট্রো সিরিজ বাংলাদেশের 100cc বাইক শ্রেণীর আরেকটি জনপ্রিয় বাইক সিরিজ। এই সিরিজের বাইকগুলোও আমাদের দেশের বাইক ব্যবহারকারীদের মন জয় করে ফেলেছে বিশ্বস্ততা, দীর্ঘস্থায়ীত্ব, লম্বা মাইলেজ, আরামদায়কতা এবং সহজলভ্য পার্টস এর মাধ্যমে। টিভিএস মেট্রো প্লাস (ইএস) এই সিরিজেরই আরেকটি ভাল বাইক। এতেও ভাল পরিমাণে জ্বালানী সাশ্রয়ীতা, আরামদায়কতা, সুন্দর লুক, ভাল পার্ফরম্যান্স এবং দীর্ঘস্থায়ীত্বের উপস্থিতি রয়েছে। বাইকটিতে এরই সাথে রয়েছে সুন্দর হেডলাইট , স্ট্যান্ডার্ড জ্বালানী ট্যাংক এবং সুন্দর রিয়ার লাইট যা এর সৌন্দর্যকে একটি ভাল অবস্থানে রেখেছে।
বাইকের সামনের দিকে টেলিস্কোপিক অয়েল ডাম্পড ফ্রন্ট সাসপেনশন এবং পিছনে ৫ স্টেপ এডজাস্টেবল হাইড্রোলিক শক এবসরবার রয়েছে। এই সাসপেনশনগুলো রাইডারকে ঝামেলাবিহীন ভ্রমণ অভিজ্ঞতা অরজনে সহায়তা করে। এর সিট যথেষ্ট আরামদায়ক যাতে রাইডার ও পিলিয়ন উভয়েরই ভ্রমণের আনন্দ ও সুখমুখরতা বাড়িয়ে দেয়। বাইকটি যথেষ্ট পরিমাণে জ্বালানী সাশ্রয়ী এবং এতে ৪ টি স্টেপ বিশিষ্ট্য গিয়ারবক্স রয়েছে।
বাইকটির ১০ লিটার ফুএল বহন করার ক্ষমতা রয়েছে যাতে এর রিসার্ভ সেক্টরও অন্তর্ভূক্ত। বাইকটির ওজন ১০৯ কিলোগ্রাম। এর দুই সাইডেই রয়েছে ড্রাম ব্রেক। এর হ্যান্ডেল বারের পজিশন কম্যুটিং বাইকারদের জন্যে খুব ভাল। এতে ইলেকট্রিক স্টার্টার রয়েছে যার পরিপ্রেক্ষিতে এর নামের সাথে বন্দনীর ভিতরে ইএস কথাতি লিখা থাকে। এর পাশাপাশি এতে কিক স্টার্টারও রয়েছে।
যারা একটি স্ট্যান্ডার্ড মানের 100cc বাইক কিনতে চান যাতে সাশ্রয়ী মাইলেজ থাকবে এবং ঝামেলামুক্ত ভ্রমণ অভিজ্ঞতা অর্জনে সাহায্য করবে তারা নির্দ্বিধায় এই বাইকই পছন্দ করতে পারেন।
৩) Hero Splendor Plus
বাংলাদেশের আরো একটি বিশ্বস্ত 100cc বাইক সিরিজের নাম হচ্ছে হিরো স্প্লেন্ডর। হিরো কোম্পানীর এই সিরিজের বাইকগুলো আমাদের দেশে হিরো কোম্পানীর সর্বোচ্চ পরিমাণে বিক্রি করা বাইক। এই সিরিজের বাইকগুলোর সুন্দর লুক রয়েছে এবং এই সিরিজের সকল বাইকগুলোর লুকের মাঝেই একতা ধারাবাহিক মিল রয়েছে।
এই সিরিজের বাইকগুলো উচ্চ পরিমাণে জ্বালানী সাশ্রয়ী, আরামদায়কতা, স্ট্যান্ডার্ড লুক, দীর্ঘস্থায়ীত্ব এবং পার্টস সহজলভ্যতার জন্য অধিক পরিমাণে গ্রহণযোগ্য, বিশ্বাসযোগ্য ও ভরসাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাইকটিতে সুন্দর হেডলাইট, স্ট্যান্ডার্ড ডিজাইনের ফুয়েল ট্যাংক, লম্বা আরামদায়ক সিট এবং ভাল রিয়ার লাইট রয়েছে।
এর দুই সাইডেই এলয় চাকা ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফুয়েল ট্যাংক ও সিটের নিচে স্প্লেন্ডর নামটির লোগো রয়েছে। এতে ৪ স্টেপ বিশিষ্ট গিয়ারবক্স রয়েছে। বাইকটির সামনের দিকে টেলিস্কোপিক হাইড্রোলিক শক এবসরবার এবং এবং পিছনের দিকে সাইড সুইং আর্ম উইথ হাইড্রোলিক শক এবসরবার সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে যা রাইডারের ভ্রমণ অনেক বেশি আরামদায়ক ও ঝামেলামুক্ত করে দেয়।
৪) Keeway RKS 100
অন্যতম ৫ টি ১০০ সিসি বাইকের মধ্যে আরেকটি বাইক হচ্ছে এই কিওয়ে আর কে এস ১০০। এর আকর্ষণীয় হেড লাইট, পুরুষালি জ্বালানী ট্যাংক এবং ব্যতিক্রমী রিয়ার লাইট এর সৌন্দর্যকে নিয়ে গেছে অন্য এক মাত্রায়। এর ফুয়েল ট্যাঙ্কে এই বাইকের মডেলের নাম সুন্দর ডিজাইন করে লিখা রয়েছে। এছাড়া পুরো বাইকটি রাঙাতে গ্লোসি রঙ ব্যবহার করা হয় যা বাইকটির চাকচিক্যতা বৃদ্ধি করে।
বাইকের স্পীডমিটারটিও যথেষ্ট পরিমানে আকর্ষণীয় ও সুন্দর। বাইকটি একই সাথে ভাল গতি উৎপাদন ক্ষমতা এবং স্ট্যান্ডার্ড মাইলেজ প্রদানে সক্ষম, সাথে আরামদায়কতা এবং স্টাইল তো থাকছেই। এর এক্সহস্ট পাইপের উপরে মাফলার রয়েছে যা বাইকের সৌন্দর্য বর্ধনে ভূমিকা রাখে। বাইকটিতে ৪ স্টেপ বিশিষ্ট গিয়ারবক্স রয়েছে।
এতে ৪ স্ট্রোক, এয়ার কুলড ও সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। বাইকটি ইলেকট্রিক এবং কিক উভয়ভাবেই স্টার্ট করার ব্যবস্থা রয়েছে। এর সামনের দিকে টেলিস্কোপিক ফর্ক সাসপেনশগন রয়েছে। বাইকতির সামনের দিকে ডিস্ক ব্রেক এবং পিছনের দিকে ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে । দুই পাশে এলয় চাকা তো রয়েছেই নতুন ট্রেন্ড অনুযায়ী।
যারা স্টাইলিশ ১০০ সিসি যা ভাল গতি উৎপাদনে সক্ষম, আরামদায়ক এবং স্ট্যান্ডার্ড মাইলেজ প্রদানকারী বাইক খুজছেন বা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা এই বাইকটি বাছাই করতে পারেন নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী।
৫) Bajaj Platina 100
যদিও এই বাইকটি ঢাকা সিটিতে অতটা কমন বাইক নয় কিন্তু ঢাকার বাইরে এর বিশাল পরিমাণে উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। ঢাকার বাইরে বাজাজ প্লাটিনা প্রচুর পরিমাণে বিক্রয় হয়েছে এবং হচ্ছে। বাইকটি রাফ ব্যবহারের জন্যে খুবই ভাল একটি বাইক। বিশেষত এর ভার বহন ক্ষমতা এবং সে অবস্থায় পার্ফর্ম করার দৃষ্টান্তও অসাধারণ। বাইকটিতে স্ট্যান্ডার্ড লুক রয়েছে।
সাধারণের চেয়ে একটু বেশি লম্বা আরামদায়ক সিট রয়েছে। যার ফলে ঢাকার বাইরে ৪ জন নিয়েও স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে দেখা যায় এই বাইকে।গ্রামাঞ্চলে বা মফঃস্বল এলাকায় এই ধরনের বাইক পাবলিক ট্রান্সপোর্ট হিসেবেই বেশি ব্যবহার হতে দেখা যায়।
বাইকের সামনের দিকে হাইড্রোলিক টেলিস্কোপিক ফর্ক রয়েছে এবং পিছনে রয়েছে হাইড্রোলিক এস এন এস টাইপ সাসপেনশন। এতে ১৩ লিটার জ্বালানী ধারণক্ষমতা রয়েছে যা অন্যান্য অনেক বাইকের চেয়ে পরিমাণে বেশি যা বাইকটিকে অনেক লম্বা সময় ধরে বা লম্বা রাস্তা ধরে চলার সক্ষমতা প্রদান করেছে। বাইকটি অনেক বেশি জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং ঝামেলাবিহীন মেইনটেন্যান্সের অধিকারী।
যারা রাফ ব্যবহারের জন্য 100cc খুজছেন যার বহনক্ষমতা এবং অনেক জ্বালানী সাশ্রয়ী বৈশিষ্ট থাকা দরকার তারা বাজাজ প্লাটিনা বাইকটি চোখ বন্ধ করে নির্দ্বিধায় বাছাই করে নিতে পারেন।