ইয়ামাহা আর ১৫ ভার্সন১ বনাম ইয়ামাহা আর ১৫ ভার্সন২

This page was last updated on 03-Jul-2024 06:10pm , By Shuvo Bangla

বাইকগুলো যদি উৎপাদনের পর সরাসরি আপনার কাছে চলে আসত তাহলে ইয়ামাহা আর১৫ ভার্সন১ ও ইয়ামাহা আর১৫ ভার্সন২ (Yamaha R15 v.1 vs Yamaha R15 V.2)  বাইকগুলো সম্পর্কে আপনি কিছু বলতে পারতেন । পেছন থেকে যদিওবা বাইক দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি গল্প । আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন যে বাইক দুটি আসলে সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি বাইক । সবচেয়ে সহজ ও চোখে পড়ার মত পার্থক্য হল নতুন আর১৫ এর টেইল যেটা আর৬ এর অনুকরনে বানানো হয়েছে । নতুন ইয়ামাহা আর১৫ ভার্সন২ তে রয়েছে আলাদা ডিজাইনের দুটি সিট  অর্থাৎ পেছনে রয়েছে যাত্রী বহনের জন্য আলাদা  ডিজাইনের সিট যেটা চালকের সিট হতে উচু । পেছনের যাত্রীর জন্য রয়েছে নিরাপদে বসার ব্যবস্থা এবং সাথে রয়েছে এর পেশীবহুল টায়ার যেটা ক্রেতাদের অনেক দিনের চাহিদা ছিল । নতুন আর১৫ বাইকটি দেখতে এখন একটি সম্পূর্ণ স্পোর্টস বাইকের মত মনে হয়।  

ইয়ামাহা আর ১৫ ভার্সন১ বনাম ইয়ামাহা আর ১৫ ভার্সন২

Yamaha R15 V.1 vs Yamaha R15 V.2

টেইলের বাতিগুলো এখন এলইডি যা প্রচুর আলো তৈরীর পাশাপাশি অত্যন্ত এনার্জি সাশ্রয়ী এবং  এটা ত্রিকোণাকারভাবে স্থাপন করা হয়েছে । পেছনের প্লেট লাগানোর জায়গা ও মাডগার্ড (ময়লা আটকানোর প্লেট) টেইল লাইটের নিচেই স্থাপন করা হয়েছে যা একটি অ্যালুমিনিয়ামের বন্ধনির মাধ্যমে যুক্ত । রাস্তায় লেগে গেলে এটিকে খোলার প্রক্রিয়া খুবই সহজ ।

লুক ও চালানোর অনুভূতিঃ    

সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন যেটা লোকজন আর১৫ এ আশা করেছিল সেটা হল মোটা টায়ারের পরিবর্তন। সামনে আমাদের রয়েছে  ৮০/৯০-১৭ এর পরিবর্তে  ৯০/৮০-১৭ এমআরএফ জ্যপার- এফ ওয়াই১ টায়ার । পেছনে আমাদের রয়েছে এমআরএফ রেভস-এস ১৩০/৭০- আর ১৭,  এখানে  আর মানে হল রেডিয়াল  অর্থাৎ টায়ারটি তৈরীতে রেডিয়াল প্লাই কর্ড ও স্টিলের বেল্ট ব্যবহার করা হয়েছে । উভয় টায়ারই নরম উপাদান দ্বারা তৈরী করা হয়েছে এবং রাস্তায় এগুলো অসাধারন গ্রিপ দেয় ।

Yamaha R15 V.1 vs Yamaha R15 V.2

এগুলো তৈরী করা হয়েছে ১৭ ইঞ্চির অ্যালয় দ্বারা যেখানে অতিরিক্ত ধাতুর মিশ্রণ পরিহার করা হয়েছে যাতে ওজন সর্বনিন্ম রাখা যায় । পেছনের টায়ারে একটি বিশেষ টায়ার-আবরণ রয়েছে যাতে রয়েছে শাড়ির জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা । ইয়মাহা এতে নিরাপত্তার জন্য বেশকিছু ভালো কাজ করেছে ।

আপনি যখন ইয়ামাহা আর ১৫ ভার্সন২ তে বসবেন সহজেই লক্ষ্য করবেন যে এর সিটের উচ্চতা কিছুটা বাড়ানো হয়েছে কিন্তু আপনার মনোযোগ দ্রুত সিটের উপরের অংশের উপর চলে যাবে যেটা আপনাকে পাছার নিচে অনেক গ্রিপি অনুভূতি দেবে । এটা সিটের উপর অনাকাঙ্ক্ষিত পিছলে যাওয়া রোধ করবে আপনার মনোযোগের ব্যাঘাত না ঘটিয়ে । তাই আপনি শুধুমাত্র নরম উপাদানে তৈরী টায়ার হতে নয় সিট হতেও প্রচুর গ্রিপ পাবেন ! এটা শুধুমাত্র আপনাকে নয় আপনার পিছনের যাত্রীকেও সাহায্য করবে এবং আপনার ধরার জন্য যা রয়েছে তা হল সিটের সামনে থাকা আধাইঞ্চি প্রস্থের ফিতা ।

হাতল ও ফুট-প্যাগের অবস্থান অপরিবর্তনীয় মনে হতে পারে কিন্তু যেহেতু সিটের উচ্চতা বাড়ানো হয়েছে সেহেতু চড়ার সময় এটা একটা আক্রমণাত্মক অনুভূতি দেবে বিশেষ করে উচ্চ গতিতে । যেহেতু আর১৫ এর পূর্বের ভার্সনগুলোতে মোটা টায়ার ও কম মানের টর্ক ব্যবহার করা হয়েছিল আমরা আশা করেছিলাম কাগজে কলমে এর টর্কের উচ্চমান ও দ্রুত গতি তোলার ক্ষমতার কথা বলা হলেও এগুলো হয়ত পূর্বের মতই অপরিবর্তিত থাকবে । কিন্তু আমরা কিছুটা বিস্মিত হয়েছি । প্রথম ৫ কিলোমিটার বাদ দিলে নতুন ইয়ামাহা আর ১৫ ভার্সন২ আরও শক্তিশালীভাবে ছোটে । এছাড়াও এটি কম গতিতেও ভালোভাবে চলে যে কারণে একে সহজেই থামানো যায় এবং ব্যস্ত রাস্তায়ও কোন সমস্যা ছাড়াই চালানো যায় । এটা সম্ভব হয়েছে সেকেন্ডারি গিয়ারের অনুপাত ৩.১৩৩ হতে ৩.০০ তে কমিয়ে আনার কারণে । এছাড়াও সামনের ও পিছনের স্প্রকেটের(চেইনে বিদ্যমান চাকার দাত) ১৪/৪২ হতে ১৫/৪৭ করা হয়েছে যে কারণে আপনি প্রত্যেক গিয়ারে আরও বেশী টর্ক পাবেন ।

গিয়ারের কথা বাদ দিলে ইঞ্জিনটি ঠিক পূর্বেরটির মতই । এগজস্টের আওয়াজ আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। সাইলেন্সারটির সাথে একটি প্লাস্টিকের তাপ প্রতিরোধক আবরণী যুক্ত করার মাধ্যমে একে আরও উন্নত করা হয়েছে । সাইলেন্সারটিতে একটি নামের ট্যাগ জুড়ে দেয়া হয়েছে যাতে যে কেউ এটি কি ধরনের বাইক সেটা দেখে বিস্মিত হয় ।

Also read: Yamaha FZS V2 Hurricane Gray মাইলেজ পাচ্ছি ৪৫+ - শরিফ

নিয়ন্ত্রণ ও ব্রেকিং :

নতুন অ্যালুমিনিয়ামের সুইং-আরম (ঘূর্ণায়মান আবরণ) যেটা আর ১৫ এর বড় ভাইয়ের তুলনায় ছোট ভাইয়ের হুইলবেইস বাড়িয়ে ৫৫ মিলিমিটার করে দিয়েছে যেটা বাইকটিকে উচ্চ গতির নিশ্চয়তা দেয় । এতে ঝাঁকুনি কিছুটা কম অনুভূত হয় । একজায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছুটে চলার জন্য এর ক্ষমতা আর১৫ এর আগের মডেলটির তুলনায় আরও বাড়ানো উচিত ছিল । বাইকের জগতে যারা নতুন তারা হয়ত আগের মডেলটির পৌরষিক লুককেই বেশী গুরুত্ব দেবে কিন্তু বাইকের জগতের পুরান যোদ্ধারা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গাই উচ্চ গতিতে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নতুন মডেলটিকেই বেছে নেবেন । সামগ্রিকভাবে বলা যায় বাইকটিতে চড়ার অনুভূতি অসাধারণ এবং আপনি যদি এটিতে একবার বসে পড়েন তাহলে পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় যাওয়ার জন্য আপনি এ বাইকটিকেই চাইবেন ।

Yamaha R15 V.1 vs Yamaha R15 V.2

এর নিসিন ব্রেক ক্যালিপারগুলো অপরিবর্তিত রাখা হয়ছে যদিও এতে রঙের পরিবর্তন আছে যেটা এখন প্লেইন ব্লেক । ডিস্ক রোটরও উন্নত করা হয়েছে সামনেরটি আগের মতই আছে কিন্তু পেছনেরটি ২২০ মিলিমিটার করা হয়েছে ।

যে সকল পরিবর্তন করা হয়েছে সেগুলোর তালিকাঃ 

১. হুইলবেইস ১২৯০ মি.মি থেকে বাড়িয়ে ১৩৪৫ মি.মি করা হয়েছে ।

২.সিটের উচ্চতা ৭৯০ মি.মি থেকে বাড়িয়ে ৮০০ মি.মি করা হয়েছে ।

৩.এর সম্পূর্ণ দৈর্ঘ্য ১৯৯৫ মি.মি থেকে কমিয়ে ১৯৭০ মি.মি করা হয়েছে ।

৪. পেছনের ডিস্ক প্রায় ২২০ মি.মি এবং পেছনের টায়ার ১৩০/৭০ এবং সামনের টায়ার ৯০/৮০ যেটা ৫ কেজি ওজন বাড়িয়েছে । আর১৫ ভার্সন২ এর মত ওজন ১৩৬ কেজি ।

৫. এর ইসিইউ প্রোগ্রামিং এ  পরিবর্তন আনা হয়েছে ।

৬. নতুন স্প্রকেট ব্যবহার করা হয়েছে ।

৭. এলইডি টেইল লাইট ব্যবহার করা হয়েছে ।

৮. সামনের অংশ ও টেইলের অংশের পরিবর্তন করা হয়েছে এবং ক্লাচেরও অনেক উন্নতি করা হয়েছে ।

৯. নতুন ডিজাইনের অ্যালয় হুইল ব্যবহার করা হয়েছে ।

১০. নতুন ধরনের এগজস্ট পাইপ ব্যবহার করা হয়েছে ।

১১. উচ্চ শব্দের টুইন-টোন হর্ন ব্যবহার করা হয়েছে ।

আঠার মত সিট চালককে একদিকে হেলে পড়ার সময় বিশেষ সুবিধা দেবে ।

বাইকটির সামনের দিকের উন্নত লুক এর সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এবং এর হেডলাইট ও মাডগার্ড এর মধ্যবর্তী দূরত্ব চমৎকার এসেম্বলিং  এর কারণে খুব একটা বুঝা যায় না । এবং এটা কে দেখে মনে হয় যেন এটা সবসময় ছুটে চলার জন্য মুখিয়ে আছে ।

অন্যদিকে স্পোর্টিং বাইক হিসেবে বাইকটিতে আশা করা হয়েছিল যে এতে ল্যাপ টাইমার বা সর্বোচ্চ গতি রেকর্ডার থাকবে কিন্তু বাইকটিতে এগুলো নেই। একটি ঘড়ি অন্তত দেয়া যেত !

আর১৫ যন্ত্র হিসেবে খুবই ভালো কিন্তু ব্যবহারের কারণে কিছু সমস্যা থাকেই । সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল দুর্বল টর্ক । যেখানে বাইকটি দেখতে খুবই সুন্দর সেখানে এর টায়ারগুলো চোখের কাটার মত ।

ইয়ানাহা আর১৫ ভার্সন২ এর পরিবর্তিত গিয়ার রেসিওর মাধ্যমে এ সকল সমস্যা কাটিয়ে উঠেছে । এর বডিতে নতুন ধরনের কাজ, সুচালো টেইল, পেশীবহুল সুইং আর্ম, টায়ার এবং লম্বা এগজস্ট নল এতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে । সাধারনভাবে ১৫০ সিসি বাইকগুলোর মধ্যে এর রয়েছে সেরা লুক ।

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Upcoming Bikes

Zontes 703 RR

Zontes 703 RR

Price: 0.00

I-am RAPID

I-am RAPID

Price: 0.00

Salida ZL 9

Salida ZL 9

Price: 0.00

View all Upcoming Bikes