Suzuki GSX-R150 ABS বাইক নিয়ে মালিকানা রিভিউ - তপু
This page was last updated on 01-Aug-2024 03:28am , By Shuvo Bangla
আমি মো: তপু আহমেদ । ঠিকানা দেবিদ্বার , কুমিল্লা। আপনাদের সাথে আমার Suzuki GSX-R150 ABS বাইক নিয়ে রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো । আমার জীবনের প্রথম বাইকটি কিনেছিলাম আমার এক ফুফাতো ভাইয়ের কাছ থেকে। বাইকটি ছিলো পালসার ১৫০সিসি ।
বাইকটি কিনেছিলাম ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে। আমার বাইকটি আমার খুব পছন্দের ছিলো ৷ কিন্তু বেশিদিন বাইকটি ব্যবহার করতে পারিনি ৷ আমার এক বড় ভাই বাইকটি নিয়েছিলেন ব্রাক্ষনপারা নির্বাচনী কাজে। দুর্ভাগ্যক্রমে বাইকটি সেখানকার লোকেরা পুরিয়ে ফেলে ৷ তারপর কিছুদিন পরে একই মডেলের আরেকটি বাইক কিনি শো রুমে গিয়ে।
তারপর বাইকটি অনেকদিন ব্যবহার করেছিলাম ৷ এটি ছিলো আমার প্রথম বাইকের অভিজ্ঞতা। ছোটবেলা থেকেই আমার বাইক পছন্দ ছিলো । ছোট বেলা দেখতাম আব্বুকে বাইক রাইডিং করতে ৷ সেখান থেকেই আমার বাইক রাইডিং এর নেশা জাগে। যেটা এখনো অব্দি আছে। আমার দ্বিতীয় বাইকটির পরে আমি পালসার এন এস ১৬০ কিনি ৷
কিছু দিন চালানোর পরে আমি বিদেশে চলে যাই ৷ পাচ বছর বিদেশে থাকার পরে এসে নতুন বাইক কিনি ৷ যেহেতু বাইকিংয়ের নেশা আছে সেহেতু দেশে এসেই ড্রাইভিং লাইসেন্স করি এবং এই বাইকটি কিনি। বাইকটি প্রথম দেখেই প্রেমে পরে যাই। বাইকটির রঙ কালো- হলুদ। সিসি ১৫০, ডুয়াল চ্যানেল এবি এস, বাইকটির টপ স্পিড খুব ভালো । বাইকটির কালার, ডাবল এবি এস, টপ স্পীড, লুকস ইত্যাদি দেখে বাইকটি কিনতে আগ্রহী হই।
বাইকটি কিনেছি হোমনা থানা তিতাস থেকে। বাইকটি পুরাতন কিনেছি। বাইকটির জন্য আমাকে খরচ করতে হয়েছে ৩,২৫,০০০ টাকা। বাইকটি সম্পর্কে আমি ফেইসবুকের মাধ্যমে জানতে পারি ৷ তারপর আমি আমার এক বন্ধুকে সাথে নিয়া বাইকটি আনার জন্য যাই ৷ বাইকটিতে উঠার পরে যখন এক্টু রাইড করে আসি তখনই বাইকটির প্রেমে পরে যাই।
তারপর আর দেরি করিনি বাইকটি নিয়ে সোজা দুই বন্ধু বাসার দিকে রওনা হই। বাইকটি যেহেতু খুব পছন্দের সেহেতু বাইকটিতে উঠলেই এক অন্যরকম অনুভূতির সৃষ্টি হয়। যা কিনা কোন শব্দে প্রকাশ করা যাবেনা। বাইকটি কিনেই আমি পরের দিন কুমিল্লা কেন্টনমেন্ট এর সুজুকির অফিসিয়াল শোরুম এস এস মটোর্স এ সার্ভিস করিয়ে আনি। তারপর এখনো কোন সার্ভিস করাইনি।
সার্ভিস সেন্টারের মেকানিক এর পরামর্শে Motul 10w30 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি। যেহেতু আমার বাইকে ১৩০০ মিলি ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করা লাগে সেহেতু আমাকে দুইটি ইঞ্জিন ওয়েলের বোতল কিনতে হয়। প্রতিটি বোতল আমাকে কিনতে হয় ১১৫০ টাকা করে। বাইকটি ২৫০০ কিলোমিটার রাইড করার আগে ৪৮ মাইলেজ পেতাম ৷
এখন ৯০০০+ হওয়ার পরেও আমি প্রায় ৪৫+ মাইলেজ পাচ্ছি। আমি আমার বাইকটি প্রতিদিন খুব যত্ন সহকারে পরিষ্কার করি। প্রতি সপ্তাহে একবার বা ১০ দিন পর পর আমি বাইকটি ওয়াস করি। আর প্রতিবার বড় কোন জায়গায় ঘুরার আগে ও পরে ওয়াস করি এবং ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি। আমি আমার বাইকের তেমন কোন পার্টস পরিবর্তন করিনি। শুধু মাত্র সামনে পিছনের ব্রেক সু , এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন করেছিলাম।
খোলা তেলের ব্যবহারের কারনে ফিল্টার পরিবর্তন করতে হয়েছে। বাইকের মধ্যে তেমন কোন মডিফাইড করা হয়নি ৷ শুধু মাত্র বাইকে কিছু স্টিকার করিয়েছি। বাইকটি দিয়ে আমি 110 স্পিড তুলেছিলাম ৷ আমি তেমন স্পীডে বাইক রাইড করিনা ৷
Suzuki GSX-R150 ABS বাইকটির কিছু ভালো দিক -
- বাইকটি দেখতে খুব সুন্দর
- কন্ট্রোলিং খুব ভালো
- খুব ভালো মাইলেজ পাওয়া যায়
- টপ স্পীডে বাংলাদেশে সবার থেকে এগিয়ে আছে
- ডুয়াল চেনেল এবি এস
Suzuki GSX-R150 ABS বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
- পার্সের দাম অনেক বেশি
- লং রাইড করতে গেলে শারিরীক দিক থেকে এক্টু ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়
- পেছনের পিলিয়ন সিটটি অনেক ছোট
- ফুয়েল টাংকির ধারণ ক্ষমতা কম
- হেডলাইটের আলো অন্য বাইকের তুলনায় অনেক কম
সাম্প্রতিক সময়ে বাইকটি নিয়ে আমি আমার এক বন্ধুকে নিয়ে সিলেটের কিছু অংশ ঘুরতে যাই ৷ প্রায় উল্লেখযোগ্য কিছু যায়গায় ঘুরে আসি ৷ ৭০০ কিলোমিটার রাইড করেছিলাম ৷ আমার বাসা থেকে সিলেটের জাফলং, কুলাউড়া,শ্রীমংগল মৌলভিবাজার, শাহজালাল, শাহপরান মাজার জিয়ারত করে এসেছি ৷ অসম্ভব সুন্দরের জায়গা সিলেট।
বাইকটির ব্যাপারে চুড়ান্তভাবে কিছু লিখতে গেলে বলা যায় আলহামদুলিল্লাহ বাইকটি রাইডিং এর ক্ষেত্রে অনেক উপযোগী। আলহামদুলিল্লাহ রেডি পিকআপ থাকার কারনে বাইকটি যেকোন পরিস্থিতিতে চালিয়ে মজা পাওয়া যায়। বাইকটি নিয়ে অনায়াসে লং টুর দেয়া যায় ৷ পরিশেষে বলা যায় বাইকটি সব দিক থেকেই সেরা। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ মো: তপু আহমেদ