Suzuki Gixxer 155 বাইকের লুকস সহজেই আকর্ষিত করে - রাফি

This page was last updated on 31-Jul-2024 05:43pm , By Shuvo Bangla

আমি রাফি। বর্তমানে আমি সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমা এলাকায় বসবাস করি । Suzuki Gixxer 155 বাইকটি আমার জীবনের প্রথম বাইক। এর বিস্তারিত নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করবো আজ । 

Suzuki Gixxer 155

বাইকিং পছন্দ করার মূল কারণ হচ্ছে সময় সংক্ষিপ্ত করে চলা। দেখা যায় বাইকের কারনে কম সময়ে যাতায়াত করতে পারছি। যে কোন দরকারে,  বিপদে অথবা আনন্দে কোথাও যাওয়ার জন্য গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে হয় না।

বর্তমান যুগে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এর সমস্যা তো আছেই। অনেক দিন ধরে ভালো একটা বাইক খুঁজছিলাম। বাজেট ও ফিচার দুটোই মাথায় ছিলো। হঠাৎ Suzuki Gixxer 155 বাইকের মডেলটি চোখে পড়ল। অনলাইন অফলাইন সব ঘেটে পড়ে বাইকটি ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিলাম। ফিচার ও বাজেট দুটো কথা মাথায় রেখে বাইকটি বেছে নিলাম। বর্তমানে বাইকটির বাজার মূল্য ২,৩৯,৯৫০ টাকা। তখন আমি অফারে নিয়েছিলাম ১,৮০,০০০ টাকায় । বাইক কিনতে যাওয়ার দিনের এক্সাইটমেন্টই অন্যরকম ছিল । ৪-৫ বছর ধরে বাইকের জন্য হাহাকার ছিলো। কিন্তু বাসার কথা ছিলো ডিপ্লোমা শেষ না করে বাইকের কথা বলা যাবে না। অবশেষে কাঙ্খিত ডিপ্লোমা শেষ করার পরে বাইক ক্রয় করার সুযোগ হলো । বাইক ক্রয় করার জন্য আমার সাথে বাবা ভাইয়া এবং মামা গেলেন। খুব আনন্দের ছিল দিনটি । বাইক ক্রয় করার মূল কারন হলো সময় বাঁচানো আর সাথে যাতায়াত এর খরচ তো কমে যাচ্ছেই ।

Suzuki Gixxer 155 বাইকের লুকস আমার মতে খুব সুন্দর এবং সহজেই তরুন বাইকারদের আকর্ষিত করতে পারে। তাছাড়া বাইকটিতে বসে ও সামনের দিকে একটা সুন্দর লুকস পাওয়া যায়।  অনেকেই জিক্সারের সুন্দর লুকস দেখেই প্রথমে এটা কিনেছেন। ইঞ্জিন পারফর্মেন্স এবং সাউন্ড - Suzuki Gixxer 155 এর ইঞ্জিন অনেক বেশি রিফাইন এবং শক্তিশালী। ১০০+ স্পিডে চালালেও  এই বাইকের ইঞ্জিনে কোন ভাইব্রেশন হয়না। একেবারে অবাক করার মত ঘটনা। আর এর সাথে স্মুথনেস তো আছেই । সুজুকি জিক্সারের রয়েছে ১৫৪.৯ সিসির একটি ইঞ্জিন। ১৪.৮ হর্স পাওয়ারের সাথে রয়েছে ১৪ নিউটন মিটার  টর্ক যা মোটরসাইকেলটিকে করেছে অনেক বেশি শক্তিশালী। সুজুকি জিক্সারের রয়েছে ৮৫০ এম এল ইঞ্জিন অয়েল ধারন করার ক্ষমতা। এর একটি স্বচ্ছ গ্লাস উইন্ডো রয়েছে যা ইঞ্জিন ওয়েল এর লেভেল দেখায় এবং এটি ইঞ্জিন ওয়েলের পার্ফেক্ট রিডিং পাওয়ার জন্য খুব উপকারী।

ইঞ্জিনের সাউন্ড খুব ভালো , হাই আর পি এম এ থাকা অবস্থায় ইঞ্জিনে চমৎকার সাউন্ড দেয়। আপনি যখন জিক্সার স্টার্ট দিয়ে এর সাউন্ড শুনবেন তখনি  বুঝতে পারবেন এটা কতটা পাওয়ারফুল বাইক।

Suzuki Gixxer 155

আর যখন থ্রটল ঘুরাবেন তখন দেখবেন মুহূর্তেই স্পীড ৬০কিমি +। প্রথম প্রথম আপনি এক স্পীড দেখে অবাক হবেন এই বাইক কিভাবে এত দ্রুত স্পীড তোলে!! রাইডিং কম্ফোর্ট- সুজুকি জিক্সার সত্যি সত্যিই অনেক কম্ফোর্টেবল একটি বাইক। আপনি একবারের জন্যও ডিসকম্ফোর্টেবল ফিল করবেন না। ব্যাক পেইন,আর্ম পেইন এগুলো কোনদিন আপনার ধারে কাছেও ভিড়বেনা। এটার ইঞ্জিন ভাইব্রেশন অনেক কম হওয়ায় কারণে এটি সবচেয়ে কম্ফোর্টেবল একটি বাইক। মাইলেজ-  সুজুকি জিক্সারের মাইলেজ হাইওয়েতে গড়ে প্রায় ৫০কিলোমিটার/লিটার। এছাড়া সিটি রাইডিং এ ৩৮-৪০ কিলোমিটার/লিটার অনায়াসে পাওয়া যায়। এটা অনেক সন্তুস্ট হওয়ার মতই একটি ব্যপার। স্পিড এবং এক্সালারেশন- আমার পরিচিত অনেকেই জিক্সারের  টপ স্পিড ১২৮ কিলোমিটার/ঘন্টা তুলতে সক্ষম হয়েছে। এটার এক্সেলারেশন চমৎকার ও খুব দ্রুত গতি তুলতে পারে। ব্রেকিং- একটা বাইকের সবথেকে বড় গুন হলো এটার ব্রেকিং সিস্টেম। কেননা আপনি যত দ্রুত গতিতে ছুটবেন আপনার ব্রেকিং ক্ষমতা তত ভালো মানের হতে হবে। আর সুজুকি জিক্সারের ব্রেকিং সিস্টেম যঠেষ্ঠ ভালো। বাইকটি অনেক দ্রুত গতি নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম। ভালোব্রেকিং এর জন্য ভালোমানের ফ্রন্ট শক এবজর্বার, ডিস্ক, টায়ার, পেছনে মনোশক, মোটা রিয়ার টায়ার ইত্যাদি এটিকে সমৃদ্ধ করেছে।প্যানিক ব্রেকিং এর সময়ও এটি অনেক ভালো সাপোর্ট দেয়। সাস্পেনশন- এই বাইকের সামনে দুটি টেলিস্কোপিক সাস্পেনশন রয়েছে আর পিছনে রয়েছে এডজাস্টেবল মনোশক সাস্পেনশন। এর কারণে হাইওয়ে রাইডিংয়ে এটি অনেক কম্ফোর্ট।

টায়ার- ১০০/৮০ ফ্রন্ট এবং ১৪০/৮০ ব্যাক টায়ার রাইডিং এ আপনাকে দিবে অসাধারন স্টাবিলিটি এবং কর্নারিং পাওয়া যাবে আলাদা কনফিডেন্স।আমার অনূভুতি!! বাইকটি পেয়ে আমার অনূভুতি "I am the king of the world. Alhamdulillah for this happiness."

Suzuki Gixxer 155

বাইকটিতে ২ বার সার্ভিসিং করিয়েছি, সিলেটের উপশহর এলাকার "খান মটরস" থেকে সার্ভিসিং করিয়েছি। বাইকটি আমি রেগুলার পরিষ্কার রাখি আর সপ্তাহে একবার ওয়াস করি । খুব ভালো পার্ফরমেন্স পাচ্ছি । বাইকটিতে আমি অকটেন ব্যবহার করি। ইঞ্জিন অয়েল হিসেবে shell advance premium Mineral motorcycle oil ব্যবহার করি। shell advance ইঞ্জিন অয়েলটি ৪০০ টাকায় ক্রয় করি । ১০০০ কিলোমিটার রাইড করে আবার পরিবর্তন করি । Suzuki Gixxer 155 বাইকটির কিছু ভালো দিক -

  • বাজেট ফ্রেন্ডলি।
  • স্মুথ ।
  • স্টাইলিশ।
  • ব্যালেন্সিং ভালো।
  • মাইলেজ ।

Suzuki Gixxer 155 বাইকের কিছু খারাপ দিক -

  • পিলিয়ন সিট ভালো না ।
  • হেডলাইটের আলো হাইওয়ের জন্য পার্ফেক্ট না ।
  • এই মডেলের হ্যান্ডেলবারটি ভালো লাগেনি ।

Suzuki Gixxer 155

ট্যুরের কথা বলতে গেলে সিলেট থেকে হবিগঞ্জ গিয়েছি । লম্বা দূরত্বে যাওয়ার জন্য ফিজিক্যালি এন্ড মেন্টালি প্রিপেয়ার্ড থাকতে হয়। যেটা ছিলাম আর সবারই থাকতে হয়। রাস্তা ভালো ছিলো,আমি কেয়ারফুল ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ ঠিকঠাক চলে এসিছি। বাজেট ফ্রেন্ডলি স্টাইলিশ বাইকের কথা চিন্তা করে থাকলে Suzuki Gixxer 155 বাইকটি আপনার সঙ্গী হতেই পারে। এতক্ষন ধরে আমার রিভিউটি পরার জন্য ধন্যবাদ ।   

লিখেছেন - রাফি  

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।