ঢাকা থেকে কুমিল্লা গিয়ে New Suzuki Gixxer বাইকটি কিনলাম -রাজ
This page was last updated on 30-Jul-2024 06:55am , By Shuvo Bangla
আমি হৃদয় আহমেদ রাজ। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বর্তমানে New Suzuki Gixxer বাইকটি ব্যবহার করছি। এটি আমার জীবনের প্রথম বাইক।
ঢাকা থেকে কুমিল্লা গিয়ে New Suzuki Gixxer বাইকটি কিনলাম
বাইকটি এখন পর্যন্ত ৪০০০ কিলোমিটার চালানো হয়েছে। আজকে আমার এই বাইকটি নিয়ে আপনাদের সাথে আমার এই ৪০০০ কিলোমিটার রাইডের অভিজ্ঞতা তুলে ধরার চেষ্টা করব।
প্রথমত আমি বাইক নিয়ে ট্যুর করতে অনেক ভালোবাসি। কোথাও যদি ট্যুরের কথা মনে হয় সবার প্রথম বাইক নিয়ে ট্যুর করার কথা মাথায় আসে। আর সেই ভাবনা থেকেই ২০১৩ সালে আমি ওয়ালটন ফিউশন বাইকটি দিয়ে বাইক চালানো শিখি। আর তখন থেকেই মনে মনে ভাবতে থাকি আমি একদিন নিজের বাইক নিয়ে লং ট্যুরে যাব। বাইক চালানো শেখার পর থেকে আমার বাইকের প্রতি ভালোবাসা আরো বেড়ে যায়। তখনই মনে মনে ভাবি যে আমার যদি নিজের একটা বাইক থাকতো তাহলে অনেক ভালো হত।
New Suzuki Gixxer SF First Impression Review In Bangla – Team BikeBD
তখন আমার কাছে এত টাকা ছিলনা যে আমি বাইক কিনবো। বাইক কেনার জন্য টাকা জমাতে শুরু করি। বেশ কিছু টাকা জমলেে এবং কিছু টাকা আমার ফুপির কাছ থেকে ধার নিয়ে ২০২০ সালের আগষ্ট মাসে আমি New Suzuki Gixxer বাইকটি ক্রয় করি। আমি আমার বাইকটি কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের পাশে যে সুজুকি শোরুম সেখান থেকে ক্রয় করি। New Suzuki Gixxer বাইকটি আমার প্রথম থেকেই অনেক পছন্দের ছিল। আর চার থেকে পাঁচ বছর পর যেহেতু নতুন মডেল বাজারে এনেছে, নিশ্চই বাইকটিকে অনেক রিফাইন করেছে।
এই বাইকের অনেক রিভিউ আমি ইউটিউবে দেখি এবং ইউজারদের কাছ থেকে ধারণা নেই বাইকটি সম্পর্কে। তারপর ফাইনাল করি আমি এই New Suzuki Gixxer বাইকটিই কিনব।
অনেকের কাছে শুনেছি New Suzuki Gixxer এর রেডি পিকআপ অনেক ভালো। আর রেডি পিকাপের প্রতি একটা ভালোলাগা আগে থেকেই কাজ করতো আমার। কারণ আমি স্পিডিং ভালোবাসি। বাইকটি কেনার দিনের কথা কোনদিন ভুলবোনা। আমি ঢাকা থাকি, কিন্তু ঢাকার কোন শোরুমে এই বাইক এভেইলেবেল ছিল না। তখন আমি খোঁজ নিতে থাকি কোথায় বাইকটি পাওয়া যাবে। তারপর খোঁজ পাই যে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের পাশের সুজুকি শোরুমে New Suzuki Gixxer মডেলের একটি বাইক এভেইলেবেল আছে। খোজ পেয়ে তখনই আমি বুকিং দিয়ে রাখি।
আমার নানা বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। তাই New Suzuki Gixxer বাইকটি কিনতে যাওয়ার একদিন আগে আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া চলে যাই। ওখান থেকেই পরের দিন আমি শোরুমে যাই। আমার লাইফের প্রথম বাইক চোখের সামনে দেখেইে এতটা খুশি হয়ে গিয়েছিলাম যা বলে বোঝানোর মত নয়। বাইক কেনার সব ফর্মালিটিজ কমপ্লিট করে শোরুম কর্তৃপক্ষ বাইকের চাবি আমার হাতে দেয়। আমি তখনো বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে বাইকটি এখন আমার।
বাইকের চাবি দিয়ে যখন আমি সেল্ফ দেই কেমন যেন একটা অনুভূতি হয় আমার ভিতর যা বলে বোঝানো সম্ভব না। আমার New Suzuki Gixxer বাইকটা FI ভার্সন, তাই কিক স্টার্ট এর কোন অপশন নেই। এটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।
বাইকটির সব থেকে ভালো একটি দিক হচ্ছে, এটার রাইডিং পজিশন যথেষ্ট ভালো। রাইডিং সিটটিও কম্ফোর্টেবল। কিন্তু পিলিয়ন সিট আমার কাছে পছন্দ হয়নি। কেননা, লং রাইডে পিলিয়নের ব্যক পেইন হয়। পিলিয়ন সিটটি আরেকটু আরামদায়ক হলে ভাল হত। আমার New Suzuki Gixxer বাইকটিতে আমি বর্তমানে Motul 20W40 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করছি। আমি আমার বাইকটি কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এরিয়াতে সুজুকি অথোরাইজড সার্ভিস সেন্টার থেকে সার্ভিস করাই। এখন পর্যন্ত বাইকটি দুইবার সার্ভিস করানো হয়েছে।
ওই সার্ভিস সেন্টারে মোটামুটি ভাল সার্ভিস পেয়েছি। কিন্তু তারপরও সার্ভিস সেন্টারগুলোর আরো ভালো সার্ভিস দেয়া উচিত। আমি এখন পর্যন্ত আমার বাইকের কোন পার্টস পরিবর্তন করিনি। তেমন কোন মডিফিকেশন করিনি বাইকটিতে। শুধুমাত্র দুটি ফগ লাইট ইনস্টল করেছি। আমি সব সময় চেয়েছি আমার বাইকের সব কিছুই স্টক থাকুক। কারণ কোম্পানি থেকে যা দেয়া আছে সেটাই আমার কাছে বেস্ট মনে হয় সবসময়।
আমি আমার New Suzuki Gixxer বাইকটি নিয়ে একবার সাজেক গিয়েছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সাজেক গিয়েছিলাম। আসা-যাওয়া মিলিয়ে আমার প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার রাইড হয়েছিল। সেটাই ছিল বাইক নিয়ে আমার সবচেয়ে বড় লং ট্যুর।
সাজেক ট্যুরেই আমি আমার বাইকের টপ স্পিড তুলেছিলাম। পিলিয়ন সহ ১১৩ টপ স্পিড পেয়েছি বাইকটিতে। যদিও আরো স্পিড তোলা যেত কিন্তু আমি আর চেষ্টা করিনি। New Suzuki Gixxer বাইকটিতে হাইওয়েতে ৩৫ প্লাস মাইলেজ পেয়েছি। আর সিটি রাইডি এ ৩০-৩২ মাইলেজ পাই। হয়ত নতুন রাইডার বলে মাইলেজ কিছুটা কম পাচ্ছি। আশা করি স্কিল বাড়লে আরো বেশি মাইলেজ পাব New Suzuki Gixxer বাইকটিতে।
New Suzuki Gixxer বাইকের কিছু ভাল দিক -
- বাইকটির স্পিডোমিটার আমার খুব ভালো লেগেছে।
- বাইকের রাইডিং পজিশন যথেষ্ট আরামদায়ক।
- রাইডিং সিটটি খুব কম্ফোর্টেবল মনে হয়েছে আমার কাছে।
- বাইকের লুকিং অসাধারণ।
- হেডলাইটের ডিজাইন খুব সুন্দর।
- ইঞ্জিন সাউন্ড অনেক স্মুথ।
- এর ইঞ্জিন কোয়ালিটি যথেষ্ট ভাল মনে হয়েছে আমার কাছে।
New Suzuki Gixxer বাইকের কিছু খারাপ দিক -
- বাইকটির পেছনের সিট অনেকটা আনকম্ফোর্টেবল।
- এলইডি হেডলাইট হলেও আলো কিছুটা কম মনে হয়েছে।
- যেহেতু FI ইঞ্জিন তাই মাইলেজ 40 প্লাস হওয়া উচিত ছিল।
- পিছনের ব্রেক একটু দূর্বল মনে হয়।
- ডুয়েল চ্যানেল ABS হলে ব্রেকিং এর সময় আরো ভালো কনফিডেন্স পাওয়া যেত।
সর্বোপরি আমার New Suzuki Gixxer বাইকটি নিয়ে আমি শতভাগ সন্তুষ্ট। বাইকটি নিয়ে স্বাচ্ছন্দে আরো অনেক পথ চলতে চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। ধন্যবাদ । Lets See Suzuki Gixxer price in Bangladesh here.
সুজুকির সব বাইকের দাম এবং সুজুকির শো-রুম সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ঘুরে আসুন। নতুন নতুন মোটরসাইকেল এর বিষয়ে খবর জানতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ সবাইকে।
লিখেছেনঃ হৃদয় আহমেদ রাজ
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।