দ্বি-চক্র যানে চড়ে স্বর্গ মোরা এলাম ঘুরে (১ম পর্ব)

This page was last updated on 04-Jul-2024 04:17am , By Shuvo Bangla

প্রিয় পাঠকের ভ্রু কিছুটা কুঞ্চিত হচ্ছে বোধ হয়। এ আবার কেমন শিরোনাম ? কিন্তু বন্ধুগণ আমার এহেন শিরোনাম দেওয়া ছাড়া যে আর কোনো উপায় নেই। যেভাবে যেখানে আমরা ঘুরে এলাম; যা আমরা দেখলাম যা সমস্ত ইন্দ্রিয় দিয়ে অনুভব করলাম এ স্বর্গ নয়তো কি? হতে পারে এ আমাদেরই দেশের মাটি, রাস্তা, প্রকৃতি; কিন্তু এ যে স্বর্গীয় এতে কোন সন্দেহ নেই। গাড়িতে চড়ে রাঙ্গামাটি আর খাগড়াছড়ি বেড়িয়ে ভূ-স্বর্গ একে অনেকেই বলে; কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতা যে এর চেয়েও বেশি কিছু। যে কাহিনী আপনারা পড়তে যাচ্ছেন সেটি একটি ভ্রমণ কাহিনী তো বটেই, একই সাথে এ কাহিনী ছয়জন অচেনা তরুণদের একসাথে গড়ে উঠা বন্ধুত্বের ও রোমাঞ্চের।

দ্বি-চক্র যানে চড়ে স্বর্গ মোরা এলাম ঘুরে (১ম পর্ব)

 travel stories bangladesh

কাহিনী শুরুর আগে যেই ক্লাবের মাধ্যমে আমরা পরিচিত হই তার একটু পরিচয় না দিলে একটু বোধ হয় অপরাধীই মনে হবে নিজেকে। বিডি রাইডার্জ ক্লাব (BD RIDERZ CLUB) নামের একটি মোটর সাইকেল ফ্রেন্ডশীপ ও ট্যুরিং ক্লাবের মাধ্যমে আমাদের পরিচয়। এই ক্লাবটির মূল লক্ষ্যই হল বাংলাদেশের মোটর সাইকেল চালক ও প্রেমিকদের একসাথে বন্ধুত্ব করিয়ে পরস্পরের সাথে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ে তোলা। নানারকম কর্মসূচী যেমন একসাথে কোথাও গিটার নিয়ে গান গাওয়া, হয়ত কোন সময় গ্যাংগাম স্টাইলে গ্রুপ ড্যান্স করা, নিয়মিত ডিজে পার্টি, নিরাপদে বাইক চালানোর সচেতনতা তৈরী করা; পাশাপাশি ছোট ও বড় মোটরসাইকেল ভ্রমণ নিয়ে রয়েছে এর কার্যকলাপ। মোটর সাইকেল ভ্রমণের মাধ্যমে এ তরুণেরা তুলে ধরে দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ সব ফটোগ্রাফির মাধ্যমে।

প্রতিটি ভ্রমণে আনন্দের পাশাপাশি নিজের দেশের সৌন্দর্যকে ব্র্যান্ডিং করার এক মহৎ উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়ে নিরাপদে ভ্রমণ কার্য পরিচালনা করে আসছে এই তরুণেরা। মজার ব্যাপার হলো এই ক্লাবের গিটারিস্ট, ফটোগ্রাফার সবাই মোটর সাইকেল চালক ও প্রেমিক। ছাত্র/ছাত্রী থেকে শুরু করে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকার, শিল্প উদ্যোক্তা, টেলিভিশন তারকা কে নেই এই ক্লাবে ? মোটর সাইকেল চালক ও প্রেমিকদের এক অভূতপূর্ব ভ্রাতৃত্বের মিলনমেলা এটি। পেশা যাই হোক না কেন, এই ক্লাবের সকলেই মোটরসাইকেল প্রেমিক হিসেবে মিশে যান এক বন্ধুত্বের বন্ধনে। মোটর সাইকেল সম্পর্কিত সব ধরণের সাহায্যই পাওয়া যাবে এ তরুণদের কাছে। মোটর সাইকেল চালক প্রেমিক যে কোন ছেলে মেয়ে হতে পারেন এর সদস্য।

তো যা বলছিলাম, অক্টোবর মাসের শেষের দিকের এক মিটিং থেকেই হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত হল চট্টগ্রাম যাবার, সিদ্ধান্তের কারণগুলোও বেশ মজার। হঠাৎ করেই আমাদের মেম্বার নৌবাহিনীর লেঃ মাসুম ভাই বদলি হয়ে যান চট্টগ্রামে। এদিকে আরেকজন মেম্বার ইউসুফ এর হৃদয় ঘটিত ব্যাপার ঘটে যায় চট্টগ্রামের এক ললনার সাথে। ওদিকে মাসুম ভাই এর ক্রমাগত ফোন আর ইউসুফের প্রেমিকার সাথে দেখা করতে যাওয়ার তাড়া ঘটিয়ে দেয় আমাদের চট্টগ্রাম ভ্রমণের বারুদ।

পাহাড়ি রাস্তায় মোটর সাইকেল চালানোর টান টান উত্তেজনা নিয়ে শুরু হয় আমাদের পরিকল্পনা। সে এক মহাপরিকল্পনা। আমরা কবে যাব, কয়জন যাব, কোন কোন জায়গায় যাব, কোথায় থাকব, কত খরচ, কে কে যাচ্ছে, বুকিং কারা দিবে, বুকিং পাওয়া যাবে কিনা, আমাদের প্রিয় বাইকগুলো নিরাপদে থাকবে কিনা ইত্যাদি, ইত্যাদি.. যাই হোক, যেহেতু মাসুম ভাই থাকেন চট্টগ্রামে, তার কাছে থেকে ৫দিন ভ্রমণের একটা ভ্রমণসূচী নিয়ে আমরা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে ইভেন্ট ঘোষণা করলাম। ইভেন্টে সারা দিল প্রায় ২০ জনের মত আগ্রহী মটরসাইকেল চালক।

আর এখানেই শুরু হল আমাদের প্রথম বিপত্তি। শুরু হল বাছাইপর্ব। আমাদের টিম হওয়ার কথা মোট ৫ জনের। যেহেতু এই রুটটা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ির পাহাড়ি সরু, আঁকাবাঁকা সর্পিল পথ মিলিয়ে দেশের সবচেয়ে বিপজ্জনক পথ; তাই বেশিজন যাওয়া সম্ভব ছিলনা। যাই হোক অনেক চিন্তাভাবনা ও বাছাইপর্বের পর বাইক চালকদের অভিজ্ঞতা ও তাদের অভিভাবকের অনুমোদনের ভিত্তিতে আমরা মোট ৬ জনের একটি টীম হলাম। হাসিব ভাই, নৌ বাহিনীর মাসুম ভাই, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ, রাবিব, সৈকত এবং আমি নিজে মোট ছয়জনের একটি টীম গঠন করলাম। ২৫ সেপ্টেম্বর কাকডাকা ভোরে যাত্রার তারিখ ও সময় নির্ধারিত হল।

যাত্রা শুরুর আগে:

যেহেতু আমাদের ভ্রমণসূচী আগে থেকেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল, মাসুম ভাইকেই দেয়া হলো চট্টগ্রামে আমাদের থাকার স্থান বুকিং দেয়ার গুরুদায়িত্ব। মাসুম ভাইও কোন অংশে কম যান না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রিসোর্ট ও কোয়ার্টার এক নিমিষেই ব্যবস্থা করে ফেললেন আমাদের থাকার ব্যবস্থা। চট্টগ্রাম, কাপ্তাই আর খাগড়াছড়ির সেনাবাহিনীর অসাধারণ সব রিসোর্ট এবং কোয়ার্টার মিলে ঠিক করা হলো আমাদের থাকার ও বাইক পার্কিং এর ব্যবস্থা। আর এদিকে ঢাকায় মহাসমারোহে চলতে লাগল আমাদের ৫ জনের প্রস্তুতি। যার যার অফিস আর ভার্সিটির ব্যস্ততা শেষ করে বৃহস্পতিবার দুপুরে আমরা সকলে একসাথে হলাম। আর ভ্রমণের আনন্দ ও প্রস্তুতির শুরু এখানেই। যখন আমরা দুপুরের লাঞ্চ শেষ করলাম, বাংলার আকাশে তখন দুর্যোগের ঘনঘটা। তুমুল মেঘ আর বৃষ্টি। আমাদের সবার চেহারা তখন দেখার মত। একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করছি। কেউ কিছুক্ষণ কোন কথা না বললেও আমরা সবাই বুঝতে পারছি যে আমাদের এ মোটরসাইকেল ভ্রমণের ভবিষ্যত কতটা চ্যালেঞ্জিং! যেহেতু আমাদের হৃদয়ে আছে মোটরসাইকেল ভ্রমণের স্পিরিট, দমে যাওয়ার পাত্র নই আমরা। বৃষ্টি নামের কোন মেয়েকে সাথে না পেলেও রাস্তায় যে আকাশ থেকে নামা বৃষ্টি আমাদের সঙ্গী হতে চলেছে, এটা এক রকম নিশ্চিতই হয়ে গেলাম আমরা। এমনিতেই পাহাড়ী রাস্তা বেশ বিপজ্জনক।

তার ওপর আবার বৃষ্টির শতভাগ সম্ভাবনা। কিন্তু তারিখ পেছানোর কোন উপায় না দেখে আমরা বিধাতাকে স্মরণ করে যাত্রার পরিকল্পনা অব্যাহত রাখলাম। আমাদের মোটরসাইকেলগুলি এক সপ্তাহ আগে থেকেই পুরোপুরি সার্ভিসিং করা ছিল তবুও যাবার আগের দিন শেষ বিকেলে করা হলো শেষ মুহূর্তের চেকআপ। আমাদের সকলের রেইনকোট, বাইকের টুলকিট, রেইন কভার এবং আরও কিছু আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র নিয়ে আমরা সবাই পৌছে গেলাম ইউসুফ এর বাসায়। রাতে আন্টির হাতের মোরগ পোলাও দিয়ে পেটপূজা করে শুরু হল শোবার প্রস্তুতি। কারণ পরের দিন ভোরে আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করব। আধো আধো চোখে কিছুটা ঘুমিয়ে নিলেও ইউসুফ এর সারারাত ফোনে চট্টগ্রাম কন্যার সাথে গল্প আমাদের কারোরই কান এড়াল না। আধো জাগরণ, আধো ঘুমেই সকলে আমরা চলে এলাম চট্টগ্রামে। ঘুম ভেঙ্গে গেল পাঁচ পাঁচটি মোবাইল এর বিকট অ্যালার্মে। একটু করে যখন আলসেমি করছি হঠাৎ আন্টি এসে বললেন আমাদের মর্নিং টি রেডি।

যেহেতু মোটরসাইকেল চালিয়ে যাব সেহেতু ঘুম কাটানোটা খুব বেশী জরুরী। হাতেমুখে পানির ঝাপটা দিয়ে আর চা-বিস্কুট খেয়ে আমাদের ব্যাকপ্যাকগুলো নিয়ে গ্যারেজে গিয়ে পাঁচটি বাইক স্টার্ট দিয়ে ভোরের নিস্তব্দতা চিরে ছুটে চললাম। বাইরে তখন ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। ভোরের আলো তখনও পুরোপুরি ফোটেনি। মিরপুর রোডের রাস্তায় তখনও ল্যাম্পপোস্টের আলো। রাতের শেষ অন্ধকারটুকুও আস্তে আস্তে ফিকে হতে লাগল, আর সূর্যের আলো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি রূপোলী ধারা সাথে নিয়ে স্বাগত জানাল আমাদের যাত্রাকে।

দিন ১: ঢাকা- চট্টগ্রাম

ভোর তখন পাঁচটা কি সাড়ে পাঁচটা। আমরা যাত্রাবাড়ি বাসস্ট্যান্ড পার হচ্ছি। বৃষ্টি তখন কিছুটা কমে এসেছে। ঢাকা-কুমিল্লার ভেজা চকচকে হাইওয়ে দিয়ে উড়িয়ে নিয়ে চলেছি আমরা পাঁচটা বাইক। ৬ নম্বর বাইকটি মাসুম ভাইয়ের সাথে অধীর আগ্রহে চট্টগ্রামে অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। যেহেতু রাস্তা ভেজা আমরা ৬০ কি.মি./ঘন্টার বেশি স্পীড দিতে পারছি না। আস্তে আস্তে আমরা পার করে ফেললাম প্রায় ৮০ কি.মি. পথ। রাবিবের নির্দেশে আমাদের ২০ মিনিটের চা-বিরতি দিতে হল। চিপস জাতীয় হালকা খাবার খেয়ে নিলাম। ইতোমধ্যে কারও কারও আবার ছোট বাথরুম পাওয়াতে তাও সেরে নিলাম। ঘড়িতে তখন প্রায় ৮টার মত  বাজে। আমরা ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডের বিখ্যাত রোড সাইড রেস্টুরেন্ট হাইওয়ে-ইন এ নাস্তা করার সিদ্ধান্ত নিলাম।

হেলমেটে থাকা ব্লুটুথের মাধ্যমে আমরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে চলেছি। এতে করে আমাদের বাইক নিয়ন্ত্রণ ও নির্দেশনা পেতে অনেক সুবিধা হচ্ছিল। এছাড়া কারও কোন অসুবিধা হলেও তৎক্ষণাৎ জানা যাচ্ছিল। এতক্ষণ আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও সূর্যমামা রোদের ঝলক দিতে শুরু করলেন। একটু আগে চা-সিগারেট খাওয়ায় আর আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় আমরা বেশ দুরন্ত গতিতেই আগাচ্ছিলাম। প্রায় ৪০ মিনিট পর আরও ৫০ কি.মি. পথ ছাড়িয়ে আমরা আমাদের যাত্রা বিরতি দিলাম হোটেলের হাইওয়ে-ইন এ। ক্ষিধেয় আমাদের পেট তখন চোঁ চোঁ করছে।

রোস্তোরায় ঢোকার পর পেট পুরে গরম গরম খিচুড়ি, ইলিশ আর গরুর মাংসের ভুনা সাবার করলাম। এরপর ধোঁয়া উঠা কফিতে চুমুক আর বেনসনে টান দিয়ে পুরোপুরি চাঙ্গা হতে আমরা প্রায় পৌনে এক ঘন্টার মত সময় নিয়ে নিলাম। আমাদের পোশাক পরিচ্ছদ, হেলমেট, মোটরসাইকেল দেখে অনেক আগন্তুকই কৌতুহল নিয়ে দেখছিল ও প্রশ্ন করছিল আমাদের। নিজেদেরকে সত্যিই তারকা বলে মনে হচ্ছিল। ইতোমধ্যে মাসুম ভাইকে ফোন দেয়া হলো।

তিনি জানালেন তিনি আমাদের জন্য নৌ-বাহিনীর যুদ্ধজাহাজে লাঞ্চ এর ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আর দেরি কেন? ভরপেট নাস্তা শেষে আমাদের মোটরসাইকেলগুলো আবার গর্জন তুলল ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়েতে। কিছুদূর এগিয়েই আমরা দেখতে পেলাম দীর্ঘ জ্যামে সামনের প্রায় ১৩ কি.মি. রাস্তা যানবাহন আটকে আছে। আমরা মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তার পাশ দিয়ে একরকম বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে পার হয়ে গেলাম। দেখতে পেলাম একটি ট্রাক দুর্ঘটনার কারণেই এমন জ্যাম। যাই হোক, বেলা তখন বেড়ে চলেছে, রোদের তাপও বেড়ে চলেছে। দূরন্ত বেগে আমরা ছুটে চললাম চট্টগ্রামের দিকে। দুপুর তখন প্রায় ১২ টা। প্রায় ১২.১৫ মিঃ এর দিকে আমরা পৌছলাম সীতাকুন্ড ঝর্নায়।

 travel stories bangladesh

 চট্টগ্রাম শহর তখন আমাদের থেকে আর প্রায় ৩০ কি.মি. দূরে। প্রচন্ড গরমে আমরা তখন প্রায়  তৃষ্ণার্ত আর ক্লান্ত বেদুইনের মত। সীতাকুন্ড ঝর্নাতে গোসলটা সেড়ে নেবার লোভটা আর সামলাতে পারলাম না। প্রবেশ পথের টিকিট কেটে মোটর সাইকেল নিয়ে ছোট একটি পাহাড়ের উচু আঁকাবাঁকা সর্পিল পথ বেয়ে আমরা চলে এলাম সীতাকুন্ত পাহাড়ে। মোটর সাইকেল নির্ধারিত স্থানে পার্ক করে রাবিবকে ফটোগ্রাফির গুরুদায়িত্ব দিয়ে আমরা চারজন নেমে পড়লাম ঝরণার মিষ্টি শীতল পানিতে স্নান করতে। স্নান শেষে যখন পাহাড়ি উঁচুউঁচু সিড়ি বেযে উঠে এলাম কারও শরীরে আর একবিন্দু শক্তিও অবশিষ্ট নেই। সকালের খিচুড়ি হজম হয়ে গেছে অনেক আগেই। উদ্ধার করলেন মাসুম ভাই। খবর পেয়ে গেছিলেন আগেই। সীতাকুন্ড এসে আমাদের রিসিভ করে নিয়ে গেলেন নৌ-বাহিনীর কোয়ার্টারে। শহর বাইপাস করে নৌবাহিনীর দিকে যে রাস্তা দিয়ে আমরা গেলাম সে এক অসাধারণ রাস্তা। আপনি বলবেন না যে এটা বাংলাদেশের কোন রাস্তা। এতটাই অসাধারণ সেই রাস্তা। যাই হোক প্রায় ২:৩০ মিঃ এর দিকে আমরা ফ্রেশ হয়ে চলে গেলাম নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজের কেবিনে লাঞ্চ করতে।

 travel stories bangladesh

জিভে জল আনা অপূর্ব স্বাদে নানা রকম ভর্তা, ডাল, ভাজি ও মুরগীর কোর্মা দিয়ে দুপুরের লাঞ্চ সেরে আমরা বেরিয়ে পড়লাম পতেঙ্গার দিকে। সূর্যিমামা যখন যাই যাই করছে তখন আমরা পতেঙ্গাতে বসে সেখানকার বিখ্যাত কাঁকড়া ভাজি খাচ্ছি। আড্ডা দিতে দিতে সন্ধ্যে হয়ে এলে আবার আমরা ফিরে যায় নৌবাহিনীর কোয়ার্টারে।

 travel stories bangladesh

 ইসমাইল ভাই নামে আরেকজন আগে থেকেই তৈরী ছিলেন আমাদের যুদ্ধজাহাজ ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য। যুদ্ধজাহাজ দেখে মুগ্ধ ও বিস্মিত হৃদয়ে আমরা সে রাতে যে যার মত ঘুমাতে গেলাম। প্রচন্ড ঘুম কাতুরে নয়নে ছিল অপার আনন্দ আর বিস্ময়।

এর পরের পর্বে আপনাদের সামনে তুলে ধরবো কাপ্তাই ও রাঙ্গামাটির গল্প। আজ এটুকুই......

লেখকঃ রাসেল রাইডার