KTM Duke 250 – ক্ষীপ্রগতির ন্যাকেড স্ট্রিটফাইটার

This page was last updated on 24-Nov-2024 05:04pm , By Badhan Roy

বিশ্ববিখ্যাত অস্ট্রিয়ান ব্র্যান্ড KTM নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তরুণ প্রজন্মকে টার্গেট করে বানানো Motogp এর অন্যতম সেরা কম্পিটিটর ব্র্যান্ড টি তাদের বাইকগুলো এক্সেলারেশন, টপ স্পিড ও ইনিশিয়াল পাওয়ারের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে বহুল জনপ্রিয়। এই কারনের তাদের ব্র্যান্ড ট্যাগলাইন Ready to Race. 

বাংলাদেশে যদিও KTM এর ১২৫ সিসি লাইনআপের বাইকগুলো এন্থুসিয়াস্ট দের কাছে দেখতে পাওয়া যায়, তবে আন্তর্জাতিকভাবে তাদের বহুল জনপ্রিয় লাইনআপ গুলো শুরু হয় ২০০ সিসির উপর থেকে। সিসি লিমিট বৃদ্ধি করার ফলে অনেকের মধ্যেই পার্শ্ববর্তী ভারত সহ অনেক দেশে KTM এর বহুল জনপ্রিয় ন্যাকেড স্ট্রিটফাইটার DUKE 250 নিয়ে বাংলাদেশি বাইকারদের আগ্রহ যে আকাশচুম্বী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তো আজকের লেখায় আমরা KTM DUKE 250 এর সামগ্রিক ধারণা নিয়ে আলোচনা করব।

 

KTM Duke 250 – ডিজাইন

শুরুতেই বলে রাখা ভাল, আন্তর্জাতিক মার্কেটে অস্ট্রিয়ান ও ভারতীয় দুই ভ্যারিয়েন্টের KTM বাইক গুলো পাওয়া যায়। বিগত বছরের মডেল গুলোতে ডিজাইন, টিএফটি ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার এবং ফিচারস এ বেশ কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা গেলেও বর্তমানে ডিজাইন ল্যাঙ্গুয়েজ এবং ফিচারস এ তেমন কোন পার্থক্য দৃশ্যমান নয়। 

ন্যাকেড বাইক হিসাবে KTM DUKE 250 বাইকটির লুক অত্যান্ত এগ্রেসিভ ও স্পোর্টি। ফুয়েল ট্যাংক এর বডিকিট এরোডায়নামিক শেপের যা বেশ প্রিমিয়াম ও ওভারঅল বাইকটিকে দেখতে বেশ বড়সড় বা বাল্কি ফিল দেয়। Trellis Frame with sub frame যেমন দৃশমান তেমনি এর ডিউরাবিলিটি এর ও পরিচয় দেয়। 

বাইকটির ডুয়াল হেডলাইট ও টেইল লাইট বেশ ফিউচারস্টিক ও এগ্রেসিভ। সিটিং পজিশন আপরাইট হ্যান্ডেলবারের সাথে বেশ কম্ফোর্টেবল এবং লুকিং গ্লাসের প্লেসমেন্ট যথেষ্ট প্র্যাক্টিকাল এবং ওয়াইড। । Blue Black, Ceramic white ও Electric Orange নামের তিনটি ভিন্ন ভিন্ন কালার কম্বিনেশনে বাইকটি আন্তর্জাতিক বাজারে পাওয়া যায়, যা বেশ আকর্ষণীয়। 

KTM Duke 250 – ইঞ্জিন স্পেসিফিকেশন

KTM Duke 250 বাইকটিতে রয়েছে আলাদা আলাদা ভেরিয়েন্ট অনুযায়ী ইউরো ৫ ও BS7 স্ট্যান্ডার্ডের LC4C প্রযুক্তির ইলেক্ট্রনিক এফ আই (EFI) লিকুইড কুলড সিঙ্গেল সিলিন্ডার, DOHC ২৪৯.০৭ সিসির ৪ ভাল্ভ ৪ স্ট্রোক ইঞ্জিন যা ৯২৫০ আরপিএম এ সর্বোচ্চ ৩১ হর্সপাওয়ার শক্তি ও ২৫ নিউটন মিটার টর্ক উৎপন্ন করে ৭২৫০ আরপিএম এ। এসিস্ট এন্ড স্লিপার ক্লাচ, কুইকশিফটার এবং ৬ স্পিড গিয়ারবক্স একটি স্মুথ এবং কুইক রেসপন্স দিতে সক্ষম। বাইকটির সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১৪০-১৪৫ কিমি প্রতি ঘন্টায়। 

KTM Duke 250 – ফিচারস

KTM Duke 250 এর কিছু উল্লেখযোগ্য ফিচারস হলো:

সিট হাইট, ওজন ও গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স- ৮০০ মি.মি এর সিট হাইটের সাথে ১৭৬ মি.মি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স রয়েছে বাইকটিতে। ১৬৫ কেজি ওজনের কার্ব ওয়েট হওয়া স্বত্বেও বাইকটির ওয়েট ব্যালান্স খুবই সুন্দর।

ইগনিশন সিস্টেম- সেলফ ইলেক্ট্রিক ইগনিশন।

ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার: ৫ ইঞ্চির বিশাল স্মার্ট টিএফটি স্ক্রিন টি দেখে প্রথম দেখায় একটি স্মার্টফোন মনে হতে পারে। অত্যান্ত চমৎকার এই ডিজিটাল ক্লাস্টারটিতে রাইডার নিজের পছন্দ মত স্ক্রিন থিম সেট করতে পারবেন। বিভিন্ন সাধারণ তথ্যের পাশাপাশি এটা আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদর্শন করে যেমন তাপমাত্রা, ম্যাপ নেভিগেশন, একাধিক ট্রিপ মিটার, স্পিডোমিটার, ট্যাকোমিটার, গিয়ার, সার্ভিস ইন্ডিকেটর, এবিএস ইন্ডিকেটর, সাইড স্ট্যান্ড ইন্ডিকেটর, ঘড়ি ইত্যাদি।

 এর সাথেও এতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার দেওয়া হয়েছে যা হচ্ছে হেডসেট কানেক্টিভিটি। KTM এর অ্যাপ এর সাথে ক্লাস্টারটি সিংক করানোর সাথে রাইডার তার কম্যুনিকেটর বা ইন্টারকম ও বাইকের সাথে কানেক্ট করাতে পারবেন যা একটি সময়োপযোগী ফিচার। 

আন্ডারবেলি এক্সহস্ট- বাইকটির এক্সহস্ট সিস্টেম আন্ডারবেলি হওয়ার কারনে বেটার বেজ এর সাউন্ডের পাশাপাশি বাড়তি ওজন হ্রাস করা হয়েছে।

টিউবলেস টায়ার: বাইকটির টায়ার সাইজ- সামনের টায়ার 110/70-17, পিছনের টায়ার: 1৫0/60-17. টিউবলেস টায়ার ও ডিউরেবল এলয় রিম একটি সুন্দর রাইডের অভিজ্ঞতা দিবে বলে আশা করা যায়। 

ব্রেক: KTM Duke 250 বাইকটিতে ৩২০ মি.মি এর বিশাল ফ্রন্ট ও ২৪০ মি.মি এর রিয়ার ডিস্ক ব্রেক ব্যাবহার করা হয়েছে। বাইকটির মাস্টার সিলিন্ডারে DOT 4 টাইপ অয়েল ব্যাবহার করা হয়েছে। KTM এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে KTM Duke 250 বাইকে বিশ্বখ্যাত Bosch কোম্পানির ডুয়াল চ্যানেল সুপারমটো এবিএস ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা যায়। স্টান্ট রাইডারদের জন্য এবিএস অন অফ এবং এবিএস এর ইন্টেনসিটি কমানো বাড়ানোর অপশন ও থাকছে বাইকটিতে। তাই বুঝতেই পারছেন বাইকের ব্রেকিং সিস্টেম কতটা উন্নত করা হয়েছে যা সচরাচর বাইকে দেখা যায় না।

কর্ণারিং ABS: দুই চাকার যান হওাতে মোটরসাইকেলের অনেক দূর্ঘটনা ঘটে থাকে লিন অবস্থায় স্লিপ করার কারনে। লিন হওয়া অবস্থায় ব্যালান্স ও ব্রেকিং নিশ্চিতে বাইকটিতে দেওয়া হয়েছে কর্ণারিং ABS যা একটি লাইফ সেভিং ফিচার। 

সাসপেনশন সিস্টেম: বাইকটির সামনে WP Apex আপসাইড ডাউন ফর্ক (USD) ও পিছনে মাল্টি এডজাস্টেবল মনোশক অ্যাবজর্বার ব্যাবহার করা হয়েছে যা ১০ স্টেপ এডজাস্টেবল এবং এটি রাইডিং আরামদায়ক করবে বলে ধারণা করা যায়।

মাইলেজঃ ১৫ লিটারের ফুয়েল ক্যাপাসিটির সাথে প্রতি লিটার জ্বালানী তেলে বাইকটি ৩০-৩২ কিলোমিটারের মাইলেজ দিতে সক্ষম। ২৫০ সিসির ইঞ্জিন বিবেচনায় এই মাইলেজ অনেক ভাল বলা চলে। তবে জ্বালানীর মান ও রাইডিং স্টাইলের উপরে মাইলেজ কম বেশি হতে পারে।   

এই ছিল এক নজরে KTM Duke 250 এর এক নজরে বিস্তারিত। যেহেতু তরুণ প্রজন্মকে টার্গেট করে বাইকটির ম্যানুফেকচারিং ও মার্কেটিং করা হয়ে থাকে আন্তর্জাতিক বাজারে সুতরাং ধারণা করা যায় পার্শ্ববর্তী দেশের মত বাংলাদেশেও এটি আসা মাত্র ব্যাপক সাড়া ফেলবে ও জনপ্রিয়তা লাভ করবে। 

এই সেগমেন্টে বর্তমানে এর পারফর্মেন্স ও ফিচারস গুলোর সাথে বাংলাদেশের প্রচলিত বাইকগুলোর সাথে এটা বেশ ভাল প্রতিদ্বন্দি হয়ে উঠবে এমনটা আশা করা যায়। তবে আন্তর্জাতিক মূল্য বিবেচনায় বাংলাদেশেও বাইকটির প্রাইস অনেক বেশি হতে পারে। তারপরেও বাইকটি বাইকারদের কথা মাথায় রেখে রিজনেবল মূল্য ও স্পেয়ার পার্টস এর পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করবে বলে আমরা আশাবাদী। 

বাইকের লঞ্চিং, মূল্য ও প্রি বুকিং, বিষয়ক তথ্য সবার আগে পেতে বাইকবিডির সাথেই থাকুন।