Honda Livo 110 ৫,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - সাদমান সায়ের
This page was last updated on 16-Jul-2024 02:43am , By Ashik Mahmud Bangla
আমি ডা: সাদমান সায়ের। বাড়ি ঢাকা তবে পড়াশুনার জন্যে রংপুর এ আছি। আমার প্রথম বাইক Honda Livo 110 এবং এটাই আমার বর্তমান বাইক।
Honda Livo 110 ৫,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ
সত্যি বলতে কি। বাইক আমার আগে খুব রিস্কি লাগতো। এতদিন সাইকেল ইউজ করছি। তবে দিন দিন রাস্তা ঘাটের জ্যাম দেখে বুঝছি বাইক ছাড়া চলবে না। কার আছে বাসায়। তবে বেশি ভাগ সময় বাইক নিয়েই বের হওয়া হয়। কারন বাংলাদেশের যানজট এ বাইক সবচেয়ে বেস্ট ফর ডে টু ডে ইউজ। লম্বা সিগন্যাল জ্যাম? বাম পাশ দিয়ে আপনি সুন্দর মত এগিয়ে যেতে পারবেন। বলতে গেলে কার নিয়ে যেতে যত সময় লাগে তার অর্ধেক সময় এ চলে যাওয়া যায়।
Honda Livo 110 নেওয়ার পিছনে কিছু কারন ছিল। লিভো আমার জীবনের প্রথম বাইক। এমন কি এর আগে বাইক চালাতেও পারতাম না। লিভো কিনে তারপর চালানো শিখেছি। প্রথম বাইক যেহেতু, তাই কমের মধ্যে বাইক খুজতেছিলাম। কারন চালানো শিখতে গিয়ে পরে গেলে বা কোন সমস্যা হলে যাতে কম খরচের মধ্যে ঠিক করা সম্ভব হয়। কিন্তু কম দামের মধ্যে যেগুলা পাচ্ছিলাম সুজুকি হায়াতে, বাজাজ ডিস্কভার, এগুলোর ফুয়েল ট্যাংক ছোট, তাই আমার কাছে পছন্দ হয়নি একদম।
যখন লিভো দেখলাম। দেখে বিশ্বাস হয়নি যে এটা ১১০সিসি বাইক। সাথে অসাধারন মাইলেজ। সব মিলিয়ে কোন কনফিউশন না করেই, কিনে ফেললাম লিভো। আজ ৮ মাস পর বলতে পারি, আমি ওইদিন ঠিক ডিসিশন নিয়েছিলাম। ডিসিশন নিয়ে রংপুর এ খোজ নিলাম হোন্ডা শোরুম এ। তখন স্টকে ছিল না। পরে দিনাজপুরে খবর পেলাম নীল কালার আছে। সাথে সাথে বাসে উঠে রওনা দিলাম। কিনে রেডি করতে করতে রাত ৯টা বেজে গেছিল। অই রাত মিনি ট্রাক ভাড়া করে নিয়ে আসলাম রংপুর।
আমার বাইকটির দাম ছিল ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। হলে এনেই ওই রাতেই চালানো শিখেছি। মজার ব্যাপার হল একবার ও না পরে চালানো শিখেছি। ৭ দিন ক্যাম্পাসে প্র্যাক্টিস করে তারপর রাস্তায় উঠছি। বিগিনার বাইক হিসেবে যথেষ্ঠ ভাল বলা যায় বাইকটি।চলুন হোন্ডা বাইক দাম গুলো দেখে আসি বিস্তারিতভাবে।
বাইকটিতে আছে ১১০ সিসির একটি ইঞ্জিন, টিউবলেস টায়ার,একটি ডিক্স ব্রেক একটি ড্রাম ব্রেক,৯.০৯ NM টর্ক এবং ৮.৩১ BHP ,৪ টি গিয়ার,৮.৫ লিটার আয়তন বিশিষ্ট ফুয়েল ট্যাংক।
Honda Livo 110 ৫ টি ভালো দিক-
- মাইলেজ
- কম্ফোর্ট
- লুকস
- ব্রেকিং সিস্টেম
- টিউবলেস টায়ার
Honda Livo 110 ৫ টি খারাপ দিক-
- হেড লাইটের আলো খুব কম
- রেডি পিকাপ স্বল্পতা ফিল করি
- টপ স্পিড কম
- রেয়ার চাকা খুব চিকন
- ৪ নং গিয়ারে রেস্পন্স কম
Honda Livo 110 বেস্ট দিক হলো এর মাইলেজ। আমি নতুন চালক। তাও মাইলেজ ৫৫-৫৮ কিলোমিটার প্রতি লিটার পর্যন্ত পেয়েছি। আর এর লুক এই সেগমেন্টে অসাধারন। তারপর এর কন্ট্রোল আমার ভাল লেগেছে। ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত স্পীড খুব স্মুথলি উঠে। নেগেটিভ সাইড এটাই, ৬০ এর উপর উঠতে খুব বেশি সময় নেয়। যার কারণে লং রুটে চালাতে প্রব্লেম হয়, টপ স্পীড কম। আমি সর্বোচ্চ ৮৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা স্পিড তুলেছি। এর উপর পারিনি। এখন ৮ মাস হয়েছে। ৫০০০ কিলোমিটার চালিয়েছি। ৩৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হোন্ডার 10w30 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করেছি। এরপর মতুল এর 5100 10w30 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি। আর লুক এবং ব্যালেন্স ভাল করার জন্যে পেছনের চাকা ১০০/৯০ সেকশন এর টায়ার লাগিয়েছি। আর কোন চেঞ্জ তেমন করতে হয়নি।
মোট কথা, বিগিনার ইউজ আর লো সেগমেন্ট এর জন্যে বাইকটি খুব এ ভাল বলে আমি মনে করি। কিন্তু ট্যুর বা লং জার্নি করতে হলে আরেকটু আপগ্রেড সেগমেন্টে যাওয়া উচিত বলব। কারন ছোট বাইক। বড় রাস্তায় রাইড করার সময় বড় বাস ট্রাক গেলে তখন কন্ট্রোল করতে কষ্ট হয়। কিন্তু নরমালি অফিস, কলেজ যাওয়া আসার জন্যে এটা দারূন। লূক ভাল, মাইলেজ ভাল। আপনি যদি কম বাজাটে ভালো লুক ভালো মাইলেজ এবং ভালো কম্ফোর্টের একটি বাইক চান তাহলে অবশ্যই Honda Livo 110 বাইকটি আপনার জন্য । ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃ সাদমান সায়ের
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।