Honda Dream Neo 110cc ২০,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - অশ্রু বিশ্বাস
This page was last updated on 16-Jul-2024 11:41pm , By Ashik Mahmud Bangla
হ্যালো বাইকার্স! আমি অশ্রু বিশ্বাস। আমার স্থায়ী ঠিকানা বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি জেলায়। বর্তমানে আমি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়াতে থাকি। বর্তমানে আমি রাইড করছি Honda Dream Neo 110cc । আজ আপনাদের সাথে বাইকটি নিয়ে আমার কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
Honda Dream Neo 110cc ২০,০০০ কি.মি. রাইড অভিজ্ঞতা
আমার জীবনের প্রথম বাইক একটা চায়না মডিফাই করা সেকেন্ড হ্যান্ড বাইক যেটা, আমি 19 হাজার টাকা দিয়ে কিনেছিলাম। কিন্তু বাইকটির মূল্য তৎকালীন বাজারে পাঁচ হাজার টাকাও ছিল না যা আমাকে পরবর্তীতে অনেক হতাশ করে। সেই বাইকটা দিয়েই আমি আমার রাইডিং অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি করেছি । বাইকটি এতটাই মডিফাই করা ছিল যে কোম্পানির নামটা পর্যন্ত আমার জানা ছিল না বা জানার কোন উপায় ছিল না।
আমি কেন বাইকিং ভালোবাসিঃ
আমি বাইকিং ভালোবাসি এর পিছনে অনেক গুলো কারণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম কারণ ছোটবেলা থেকেই মোটরসাইকেলের প্রতি একটা অন্যরকম নেশা কাজ করতো। তখন রাস্তা দিয়ে কোন মোটরসাইকেল গেলে তাকিয়ে থাকতাম আর চিন্তা করতাম মানুষ হেলমেট কেন পরে। এটা নিশ্চয়ই যারা বদমাশ চুরি ডাকাতি করে তারা হেলমেট পড়ে কিন্তু যখন হেলমেট এর কার্যকারিতা জানতে পারলাম তখনই ইচ্ছে হল যে হ্যাঁ আমি বাইক রাইড করব। সুন্দর একটা হেলমেট পরব। এই থেকে বাইকের প্রতি একটা অন্যরকম ভালোবাসা তৈরি হয়ে গেছে। তাই বাইকিং আমি ভালোবাসি ।
বাইকিং আরো ভালোবাসি এই কারণে যে বাইকে একমাত্র যানবাহন যেটা নিয়ে স্বাধীনভাবে এবং নিরপেক্ষ ভাবে নিজের মতন করে সমস্ত জায়গায় ঘোরা যায়। বাইক নিয়ে ঘোরার সবথেকে বড় সুবিধা হলো যেটা অনেক খরচ বাঁচিয়ে দেয় সাধারণত একটা বাসে করে ভ্রমণ করতে গেলে যে খরচ হবে তার তিন ভাগের এক ভাগ খরচ শুধুমাত্র বাইকের ক্ষেত্রে হয়।
আমি যেভাবে আমার Honda Dream Neo 110cc বাইকটি বেছে নিলামঃ
আমি যেহেতু হোন্ডাতে জব করি, তাই হোন্ডাকেই ভালোবাসি। এর জন্য ইচ্ছা ছিল যে হোন্ডার বাইক ব্যবহার করবো যতদিন হোন্ডার সাথে জড়িত আছি। এই চিন্তা থেকেই আমার বাইক বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত আসলো এবং আমার বাজেট অনুসারে আমি Honda Dream Neo 110cc বাইকটি বেছে নিলাম।
আমি কেন Honda Dream Neo 110cc বাইকটি বেছে নিলামঃ
আমি স্বল্প বাজেটের ভিতর ভালো মাইলেজ পাবো এই ধরনের একটা বাইক খুজছিলাম। বাজেট কম থাকায় চিন্তা করছিলাম এই বাজেটের ভিতর একটু ভালো ব্র্যান্ড বেস্ট কোয়ালিটি হবে, ভাল মাইলেজ পাব, মেইনটেনেন্স খরচ কম পরবে, দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে পারব।
ঠিক এই সকল চিন্তাভাবনা যখনই করলাম তখনই দেখলাম যে এই বাজেটের ভিতর এবং ভাল ব্র্যান্ড, ভালো কোয়ালিটির ভিতর Honda Dream Neo 110cc আমার জন্য পারফেক্ট, এই জন্য আমি এই বাইকটি বেছে নিলাম ।
Honda Dream Neo 110cc বাইকটির দাম এবং বাইকটি কোথা থেকে নিয়েছিঃ
এই বাইকটির বর্তমান বাজারমূল্য ৯৭ হাজার টাকা মাত্র। আমি বাইকটি সরাসরি হোন্ডার ফ্যাক্টরি থেকে নিয়েছি যেহেতু আমি একজন কোম্পানির কর্মচারী এই কোম্পানি থেকে যেকোনো সময় যেকোনো বাইক কেনার অধিকার আমার আছে তাই বাইকটি কিনতে আমাকে কোথাও যেতে হয়নি আমি ফ্যাক্টরি থেকে বাইকটি হাতে পেয়েছি ।
বাইক কিনতে যাবার ঘটনাবলীঃ
যেহেতু বাইকটা আমি কোম্পানির ফ্যাক্টরি থেকে নিয়েছি সেহেতু বাইকটা কিনতে যাওয়ার আমার কোন ঘটনাবলী নেই। তবে বাইকটি সম্পর্কে তার থেকে ভালো ঘটনা আমার সাথে হয়েছে সেটা হলো আমি কোয়ালিটি কন্ট্রোল জব করি একটা বাইক কমপ্লিট হওয়ার পরে তার পরেই আমার হাতে আসবে।
সেই বাইকটা আমি চেক করে দেখব যে বাইকটা একশভাগ ঠিক আছে কি ঠিক নেই। কিন্তু যখন আমি বাইকটা কেনার সিদ্ধান্ত নিলাম তখন এই বাইকটা প্রতিটা ডিপার্টমেন্টে গিয়ে বাইকের প্রতিটা কাজ আমি নিজের হাতে করেছি এবং নিজের মতো করে করেছি।
সবথেকে ভালো লাগার ঘটনাবলী বা অনুভূতি হচ্ছে আমার নিজের হাতে বলতে গেলে তৈরি করা একটা বাইক আমি নিজেই ব্যবহার করছি। তো এইখানে আসলে যে ঘটনাটা আছে বাইকটা কেনার পেছনে সেটা অনেক বেশি রোমাঞ্চকর বলতে পারেন । আবার অনেক বেশি স্মৃতিবিজড়িত বলতে পারেন খুব কম মানুষের ভাগ্য হয় নিজের হাতে একটা বাইক তৈরি করে নিজে ব্যবহার করার। নিজের হাতে একটা তৈরি বাইক ব্যবহার করার যে কি শান্তি কি আনন্দের সেটা একজন বাইকারই বুঝতে পারবে ।
Honda Dream Neo 110cc বাইকটি প্রথমবার চালানোর অনুভূতিঃ
এই বাইকটি প্রথমবার চালানোর অনুভূতিটাও অন্যান্য বাইকারদের থেকে আলাদা কারণ বাইকটা আমি হাতে পাওয়ার আগেই চালানোর সুযোগ আমার হয়েছে। এই বাইকটা তৈরি করার পরে বাইকটি কোয়ালিটি কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্টে আসে আর আমি কোয়ালিটি কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্টে আছি বিধায় বাইকটি টেস্ট ড্রাইভ আমি দিয়েছি তো সেখানে আরো বেশি আনন্দ কাজ করছিল।
যে মাত্র আমি বাইকটি নিজের হাতে অ্যাসেম্বল করলাম সেই বাইকটা আমি এখন টেস্ট ড্রাইভ দিচ্ছি এবং এই বাইকটা আমি নিজে ব্যবহার করব ওই দিনের পর থেকে। আসলে সত্য কথা বলতে সাধারণত প্রতিদিন আমার বাইক ড্রাইভ দিতে হয়। কিন্তু কেন জানি না নিজের অজান্তে আমার যত অভিজ্ঞতা ছিল একটা বাইক ড্রাইভ দিতে যে কোন কোন বিষয় গুলো দেখতে হয় আমার সমস্ত ইন্দ্রিয় গুলো আরো বেশি সচল হয়ে গিয়েছিল। এই বাইকটাতে যেন কোন প্রবলেম না হয় কারণ এই বাইকটা মালিক হব আমি এবং অতি যত্নের সাথে আমি টেস্ট ড্রাইভ দিয়েছি এবং কোন সমস্যা বাইকটিতে পাইনি অসাধারণ একটা অনুভূতি ছিল।
Honda Dream Neo 110cc বাইকটি রাইড করার মূল কারণঃ
বাইকটি চালানের মূল কারণ বলতে গেলে একটি বিষয় চলে আসছে পুরনো সব স্মৃতি বিজড়িত বিষয়গুলোই বলতে হবে যে সমস্ত দিক বিবেচনা করলে বা একত্রিত করলে আমার বাইক চালাতে অসাধারণ ভালো লাগে তাই আমি বাইক রাইড করি ।
Honda Dream Neo 110cc বাইকটির ফিচারঃ
- বাইকটি ২০১৯ সালের আপডেট বাইক এটিতে রয়েছে BS4 ইঞ্জিন
- দুটি চাকাই টিউবলেস টায়ার
- এটিতে রয়েছে AHO অর্থাৎ অলওয়েজ হেডলাইট অন প্রযুক্তি
- সামনে এবং পিছনে দুটি ব্রেকই ড্রাম ব্রেক
- বরাবরের মতো এর সব লাইট গুলোই হ্যালোজেন লাইট
- এনালগ স্পিডোমিটার
প্রতিদিন বাইক চালানোর সময় আমার মনের অনুভূতিঃ
যেহেতু বাইকটা নিজের কষ্টের টাকায় নিজের পছন্দমত সাধ্যের মধ্যে, নির্দিষ্ট সেগমেন্টের, একটি বাইক আমি কিনেছি। বাইক চালানোর অনুভূতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তারপরও যেটুকু না বললেই নয়। যেহেতু বাইকিং ভালোবাসি আর সেই থেকেই এই বাইকটা কেনা সেহেতু ভালোবাসা জড়িয়ে রাইড করি । আমি যথেষ্ট সন্তুষ্ট বাইকটি রাইডিং করে। বাইকটি রাইড করার সময় একটা কথাই বারবার স্মরণে আসে। যে বাইক চালানো এতটাই পছন্দ করতাম যে একটা স্বপ্নের মতন ছিল। নিজের একটা বাইক থাকবে আর সেই বাইকটা নিয়ে আমি রাস্তায় নিজের মতো করে রাইড করে বেড়াবো। আসলে সে অনুভূতিটা এখন বুঝতে পারছি স্বপ্নটা সত্যি হলে মানুষের জীবনে যে অনুভূতি আসে। হোক সেটা যে কোন স্বপ্ন ঠিক সেই অনুভূতি আমার বাইকটা রাইড করার সময় আমি পাই ।
আমার বাইক আমি যতবার সার্ভিস করিয়েছিঃ
এখানে একটা মজার বিষয় যে আমি নিজে একজন টেকনিক্যাল পার্সন। আমার বাইক আসলে আমি কখনো কোন সার্ভিস সেন্টার দিয়ে করাইনি। আমি আমার বাইক নিজেই সার্ভিস করিয়ে থাকি। সেটা নিয়ম মেনে করিয়ে থাকি। নির্দিষ্ট কিছু টুলস আমি বাসায় কিনে রেখেছি। যা দিয়ে আমি সময় মতো সার্ভিস করি যেমন সার্ভিস সেন্টারে কিছু মেনুয়াল রয়েছে। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে সার্ভিস একটু অন্যরকম। আমি প্রতি মাসেই একটা স্পেশাল সার্ভিস দিয়ে থাকি যেটা টাকা দিয়ে এই সেবা কখনো আপনি কোন সার্ভিস সেন্টারে নিতে পারবেন না। কারণ আমার বাইক তারপরে আমি সার্ভিস করতে পারি সে ক্ষেত্রে কতটা যত্ন নিয়ে আমি বাইকটা সার্ভিস করি সেটা অবশ্যই আপনারা এখন বুঝতে পারছেন । বাইকটা আমি টোটাল ২০ হাজার কিলোমিটার চালিয়েছি এবং এই ২০,০০০ কিলোমিটারে আমি পাঁচটি মাস্টার সার্ভিস নিজেই নিজের বাসায় করেছি। প্রতিমাসে বা বলতে গেলে প্রতি এক হাজারে একটা স্পেশাল সার্ভিস আমি বাইকটিতে দিয়েছি । যার কারণে আমার বাইকটিতে কখনো কোন প্রবলেম দেখা দেয়নি। কারন আমি প্রতিটা পার্টস সময় মত মেইনটেইনেন্স করেছি। যখন যেখানে সার্ভিস প্রয়োজন সাথে সাথে সেই জায়গাটা সার্ভিস করে ফেলেছি । হোক সেটা বাইকের বডি, ওয়ার হার্নেস, অথবা ইঞ্জিন ।
মোট ২৫০০ কিলোমিটার আগে এবং পরে বাইকের মাইলেজঃ
এই বাইকটি নতুন কেনার পর থেকে ২৫০০ কিলোমিটার চালানোর পূর্বে আমার বাইকটির মাইলেজ পেতাম ৫০ থেকে ৫৫ কিলোমিটার প্রতি লিটারে। কিন্তু ২৫০০ কিলোমিটার চালানোর পরবর্তী সময় থেকে বা একটু আগে থেকেই মাইলেজ বাড়তে থাকে অর্থাৎ তখন আমি প্রতি লিটারে সিটি এবং হাইওয়েতে বাইকটি রাইড করে মাইলেজ পেয়েছি বা পাচ্ছি ৬৫ কিলোমিটার প্রতি লিটারে।
কিভাবে বাইকটির যত্ন নেইঃ
আগেই বলেছি আমি একজন টেকনিক্যাল পার্সন সেক্ষেত্রে আমার বাইকের যত্নটা সবার থেকে আলাদা আমি বাইকের স্পার্ক প্লাগে ময়লা জমে যাওয়া, এয়ার প্রেসার সঠিক রাখা, সবসময় ফুয়েল চেক করে ব্যবহার করা, ব্যাটারির সঠিক মেইনটেনেন্স, ময়লা পরিষ্কার করা, রোদে গেলে বাইকটি ঢেকে রাখা,পানি দিয়ে পরিষ্কার করলে সাথে সাথে পানি গুলো শুকিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করা, ক্লাচ কেবল, ব্রেক কেবল, থ্রটল ক্যাবল, চেইন এগুলো সব সময় ধুলোবালিমুক্ত রাখা, চেক করা এবং পিচ্ছল করার জন্য সময় মতো অয়েল দেওয়া, সহ প্রতিটা ক্যাবলের ফ্রি পেলে সব সময় সঠিক পরিমাণে রাখা। এই ধরনের সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম আরও অনেক বিষয় সবসময় আমি মেনটেনেন্স করে থাকি ।
আমার বাইকে ব্যবহৃত ইঞ্জিন অয়েলঃ
আমি ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবসময় সর্তকতা অবলম্বন করেছি। সবসময় হোন্ডার নির্ধারিত অথরাইজড ডিলার পয়েন্ট থেকে ইঞ্জিন অয়েল সংগ্রহ করেছি। আমি হোন্ডা 10W 30 গ্রেড এর ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি।
বাইকটির কি কি পার্টস পরিবর্তন করেছিঃ
আমি অনেক বেশি লং ড্রাইভ করেছি বাইকটি দিয়ে এবং একটু ওভার স্পিডে রাইডিং করি এর জন্য বাইকটিতে অনেক পার্টস আমাকে পরিবর্তন করতে হয়েছে। পার্টস গুলো আমি নিজের হাতেই পরিবর্তন করেছি। তার ভিতরে অন্যতম ছিল -
- চেইন স্প্রোকেট ( একবার)
- সামনের এবং পিছনের ব্রেক সু (একবার )
- মিটার কেবল ( তিনবার )
- অয়েল স্কিন (একবার )
- টাইমিং চেন (একবার )
- রকার আর্ম (একবার)
এই পার্টস গুলো মূলত পরিবর্তন করার প্রয়োজন ছিল। কারণ অতিরিক্ত লং ড্রাইভ করা হয়েছিল বাইকটি দিয়ে। একটা এয়ারকুল্ড ১১০ সিসির ইঞ্জিন দিয়ে আমি ৩০ টির বেশি জেলা ভ্রমণ করেছি এবং পাহাড়ি অঞ্চলে বেশ কয়েকবার ভ্রমণ করেছি। তার ভিতরে সব থেকে উঁচু পাহাড় ছিল বান্দরবানের ডিম পাহাড়।
বাইকটি থেকে আমার তোলা সর্বোচ্চ স্পিডঃ
আমি একটু স্পিডে বাইক রাইড করি কিন্তু টপ স্পিডে কখনোই রাইড করি না। তারপরও এ বাইকটির টপ স্পিড আমি চেক করেছিলাম ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়েতে এবং যার স্পিড পেয়েছিলাম ৯৭ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা ।
Honda Dream Neo 110cc বাইকটির পাঁচটি ভালো দিকঃ
- বাইকটির মাইলেজ তুলনামূলক অন্যান্য বাইকের থেকে অনেক ভালো
- বাইকটির সিট প্রশস্ত এবং লম্বা হওয়ায় পিলিয়ন নিয়ে চালাতে বেশ আরামদায়ক
- বাইকটি মোটামুটি ছোট হওয়ায় ঢাকা সিটি জ্যামের ভেতরে কন্ট্রোল করতে অনেক সুবিধা
- ছোট সেগমেন্টের বাইক হওয়া সত্ত্বেও এর দুটি চাকাই টিউবলেস দিয়েছে। যার কারণে আমাকে টিউব টায়ার লিক হওয়ার মতন ঝামেলায় কখনো পড়িনি ।
- বাইকটি সবথেকে বড় সুবিধা বাইকটি অনেক লো মেনটেনেন্স একটি বাইক যার জন্য পকেটের অনেক টাকা বেঁচে যায়
Honda Dream Neo 110cc বাইকটির পাঁচটি অসুবিধাঃ
- বাইকটির প্রথম অসুবিধা পিলিয়ন সহ সাসপেনশন খুব একটা আরামদায়ক নয়
- ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার উপরে স্পিড তুললে বাইকটি একটু বেশি ভাইব্রেশন করে
- দীর্ঘ সময় ধরে বাইকটা রাইড করলে ইঞ্জিনটা অন্যান্য বাইকের থেকে একটু বেশি হিট হয়ে যায়
- বাইকটির মিটার অ্যানালগ মিটার এবং এর স্পিডোমিটার কেবলটা বারবার নষ্ট হয়ে যায় আমি সর্ব মোট তিনবার এটা পরিবর্তন করেছি ।
- বাইকের হেডলাইট এর আলো হাইওয়েতে চলার জন্য নয় খুবই কম আলো
বাইকটি নিয়ে আমার লম্বা ভ্রমনঃ
আগেই বলেছি আমি ভ্রমণপিপাসু আমি এই বাইকটা দিয়ে প্রচুর পরিমাণে লং ড্রাইভ করেছি। যদিও এই বাইকটি লং রাইড এর জন্য নয়। আমি এই বাইকটা দিয়ে বাংলাদেশের ত্রিশটিরও বেশি জেলা ভ্রমণ করেছি। তার ভিতর উল্লেখযোগ্য এবং ও দর্শনীয় কিছু স্থান ছিল, যেমন বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ,খাগড়াছড়ি ,চট্টগ্রাম ,সিলেট, ডিম পাহাড় , কক্সবাজার, টেকনাফ উল্লেখযোগ্য ।
এর ভিতর সবথেকে স্মরণীয় ছিল কক্সবাজার ট্যুর। আমি সব সময় একাই লং রাইড দিয়ে থাকি এবং একা ভ্রমণ করতে ভালবাসি । ঠিক তেমনি একদিন ভ্রমণের নেশা নিয়ে রওনা হয়েছিলাম কক্সবাজার এর উদ্দেশ্যে। মুন্সিগঞ্জ গজারিয়া থেকে আমি কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। সকাল ছয়টা থেকে শুরু করি প্রতি ঘন্টায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট এর রেস্ট দেই । দুপুর দুইটায় আমি কক্সবাজার পৌঁছাই। দুপুর দুইটা থেকে চারটা পর্যন্ত কক্সবাজার এবং মেরিন ড্রাইভ এ বাইক নিয়ে ঘুরাঘুরি করি। অবশেষে সমুদ্র স্নান শেষ করে ৪ঃ৩০ এ আমি আবার গজারিয়া মুন্সিগঞ্জ এর উদ্দেশ্যে রওনা করি । রাত তিনটার সময় আমি মুন্সীগঞ্জে এসে পৌঁছাই । আমার জীবনের একটি স্মরণীয় রাইডিং অভিজ্ঞতা ছিল এবং সারারাত বলতে গেলে ঢাকা চট্টগ্রাম হাইওয়েতে রাইড করার এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হয়েছিল আমার। আসলে যে অনুভূতি বা অভিজ্ঞতা লিখে বোঝানো সম্ভব নয়। যে ঘটনা আমার স্মৃতিকথায় গেঁথে থাকবে সারা জীবন ।
Honda Dream Neo 110cc বাইকটি নিয়ে চূড়ান্ত মন্তব্যঃ
এক কথায় আমার সাধ্যের মধ্যে ১১০সিসি বাইকের তুলনায় আমি এটি প্রয়োজনের অধিক উপায় ব্যবহার করেছি। যা আমাকে আসলেই অবাক করেছে। পাশাপাশি সন্তুষ্ট করেছে। হোন্ডা আসলে একটা নামিদামি ব্র্যান্ড সে তার পরিচয় ধরে রেখেছে। আশা করি অদূর ভবিষ্যতে তার ভ্যালু তার কোয়ালিটি সব সময় ধরে রাখবে। আমি বলব বাংলাদেশের বাজারে 110cc সেগমেন্টের তুলনায় এবং দামের তুলনায় Honda Dream Neo 110cc পারফেক্ট একটা বাইক। যেটা আসলেই গ্রাহককে সম্পূর্ণরূপে সন্তুষ্ট করতে সক্ষম । এর বেশি কিছু বলার নেই আমি হোন্ডাতে জব করি তাই বলছি না একজন গ্রাহক হিসেবে এবং একজন হোন্ডার মোটরসাইকেল ব্যবহারকারী হিসেবে আমার নিজের অভিজ্ঞতা এই ছোট রিভিউটা মাঝে শেয়ার করার চেষ্টা করলাম আশাকরি সকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ভুলত্রুটি যদি থেকে থাকে । ধন্যবাদ সবাইকে।
লিখেছেনঃ অশ্রু বিশ্বাস
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।