New Suzuki Gixxer বাইক নিয়ে ৯০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - হৃদয়
This page was last updated on 01-Aug-2024 02:22am , By Shuvo Bangla
আমি মো: নাহিদুজ্জামান হৃদয় । আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমার New Suzuki Gixxer বাইকের মালিকানা রিভিউ । আমার বাইকটি বর্তমানে ৮৮৩৪ কিলোমিটার রানিং। আমার বাসা ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায় এবং আমি বাইক চালানো শিখেছি ২০১২ সালে । ছোট থেকেই বাইকের প্রতি ভালোবাসা জন্মায়, বাইকে উঠলেই খুব মনোযোগ দিয়ে দেখতাম কিভাবে বাইক চালাতে হয় তারপর নিজে নিজে ছোট কাকার বাইক দিয়ে বাইক চালানো শিখা হয়েছিলো। ছোট থেকে স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে বাইক দিয়ে দেশ-বিদেশ ঘুরবো।
বাইক হল আমার সবচেয়ে পছন্দের একটা জিনিস যেটা ছাড়া চলা অসম্ভব। বাংলাদেশের প্রায় সব ব্রান্ডের বাইকই চালানো হয়েছে তারমধ্যে Suzuki আমার অনেক পছন্দের। আমি আমার জীবনে সবচেয়ে বেশি Suzuki বাইক চালিয়েছি যেটা হলো Gixxer sf ২০১৬ মডেল, বাইকটি ছিল আমার কাকার। এই বাইকটি পছন্দ করার মূল কারণ হচ্ছে বাইকের লুক্স, এছাড়াও এই বাইকের ব্যালান্সিং টা আমার খুবই ভালো লেগেছে ।এই বাইকের হেডলাইটে রয়েছে অনেক আলো যেটা আমি আর কোন বাইকে দেখিনি। মোস্ট ইম্পোর্টেন্ট বাইকের ইঞ্জিন, এই বাইকটির ইঞ্জিন খুবই স্মুথ। সুজুকির শোরুম থেকে আমার বাইকটির দাম নেওয়া হয়েছিলো ২ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা। এই বাইকটি আমি ভোলা সদর সুজুকি শোরুম থেকে নিয়েছি। বাইকটি কিনার আগে ইউটিউব এ অনেক রিভিউ দেখতাম।
আমার জীবনে প্রথম বাইক কেনার জন্য আমি অনেক অপেক্ষা করেছি। টাকা ম্যানেজ হওয়ার সাথে সাথেই শো-রুমে চলে যাই এবং বাইকটি কিনে ফেলি। যখন বাইকটি রেডি করা হচ্ছিলো, তখন মনে হচ্ছিলো কখন উঠবো কখন উঠবো। আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না আমি বাইকটি কিনে ফেলেছি। বাইকটি প্রথমবার চালানোর অনুভূতি বলার মতো ছিলো না।
এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। এই বাইকটির ফিচার হলো ডুয়েল ডিক্স, এলইডি হেড লাইট, টিউবলেস টায়ার, ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট কনসোল, পাওয়ারফুল ইঞ্জিন, এবং বেস্ট লুকিং বাইক ইন বাংলাদেশ। প্রতিদিন বাইক টি আমাকে খুব ভালো সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে, এই বাইকটির ড্রাইভ করতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। সুজুকি শোরুম থেকে ৪ বার সার্ভিস করিয়েছি। সার্ভিসের সময় এয়ার ফিল্টার, ব্রেকপ্যাড, চেন ক্লিনিং ইত্যাদি সার্ভিস করে থাকে।
আমার বাইকে ২৫০০ কিলোমিটার এর আগে ৩৫ এর মত মাইলেজ পেতাম আখন ৩৮/৪০ এর মতো মাইলেজ পাচ্ছি। বাইকটি সবসময় পরিস্কার রাখার চেস্টা করি, মাসে ২ বার বাইকটি ওয়াস করি। বাইকের ইঞ্জিন অয়েল হিসেবে ইউজ করি Motul 10w40 ফুল সিন্থেটি দাম ১২০০ টাকা। বাইকের অয়েল ফিল্টার এবং এয়ার ফিল্টার ছাড়া তেমন কিছুই পরিবর্তন করা হয়নি। বাইকের কোন অংশ মোডিফাই করা হয় নাই শুধু কয়েকটি স্টিকার লাগিয়েছি। বাইকটি দিয়ে আমার তোলা সর্বোচ্চ স্পীড ছিলো ১১৮। লং টুর হিসেবে চরফ্যাশন টু ভোলা আপ ডাউনে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার এই রাস্তায় প্রায়ই যাওয়া আশা করা হয়। লং রুটে সিঙ্গেল ড্রাইভ করলে আপনি খুব স্বাচ্ছন্দে চালাতে পারবেন।
এই বাইকটা আমার খুবই পছন্দের, আমার চালাতেও খুবই ভালো লাগে । এই বাইকটি চালানোর জন্য হাইট হিসেবে আমি মনে করি ৫ ফুট ৪ থেকে ৬ ফিট পর্যন্ত যে কেউ খুব স্বাচ্ছন্দ্য চালাতে পারবে।New Suzuki Gixxer বাইকটির কিছু ভালো দিক -
- বাইকটির ইনিশিয়াল পাওয়ার খুবই ভালো।
- এবিএস না থাকা সত্ত্বেও বাইকের ব্রেকিং কনফিডেন্স ভালো পাওয়া যায়।
- এই ক্যাটাগরির মধ্যে এই বাইকের মাইলেজ টা অনেক ভালো।
- এই বাইকের হেডলাইটে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো রয়েছে যার ফলে কোন ফগ লাইট প্রয়োজন হয় না।
New Suzuki Gixxer বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
- সাসপেনশন একটু হার্ড।
- গিয়ার লিভার টা একটু হার্ড।
- কালার কোয়ালিটি অত ভালো না।
- সিঙ্গেল হর্ন ইউজ করা হয়েছে তাই এটার সাউন্ড কম হয়।
- ক্লাসপ্লেট খুব তাড়াতাড়ি দুর্বল হয়ে গেছে।
এই ছিল বাইকটি নিয়ে আমার রাইডিং অভিজ্ঞতা । ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ মো: নাহিদুজ্জামান হৃদয়