Honda CBR 150R Repsol ABS ৪০০০ কিলোমিটার রাইড - খান মোঃ সোহাগ

This page was last updated on 25-Jul-2024 04:36pm , By Raihan Opu Bangla

আমি খান মোঃ সোহাগ। আমি ঢাকা কামরাংগীর চরে বসবাস করি। বর্তমানে আমি Honda CBR 150R Repsol ABS বাইকটি রাইড করছি। বাইকটি এখন ৪০০০ কিলোমিটার + রানিং । আজ আমি আমার এই প্রিয় বাইকটির ব্যাপারে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো । চলুন দেখে নেওয়া যাক All Honda bike price in Bangladesh  রিভিউটির পাশাপাশি।

honda cbr 150r repsol abs front tire 

Honda CBR 150R Repsol ABS ৪০০০ কিলোমিটার রাইড - খান মোঃ সোহাগ

বাইকের প্রতি আগ্রহ সবসময় ছিলো। কিন্তু পড়াশোনা অবস্থায় বাইক কেনাটা যৌক্তিক মনে করিনি আর পরিবার থেকে টাকা নেয়ার ইচ্ছে ছিলো না। ইচ্ছে ছিল একদিন বাইক কিনবো নিজের অর্জিত টাকায়। অবশেষে ২০১৫সালের নভেম্বরে সেই স্বপ্ন পূরন হলো । শুরুটা হয়েছিল TVS Metro ES দিয়ে এর পরে TVS Apache RTR 150, Honda CB Hornet 160R, Yamaha Fazer এবং বর্তমানে আমি Honda CBR 150R Repsol ABS (Indo) বাইকটি রাইড করছি। আমার বাইকটি নিয়ে মাত্র ৪০০০ কিলোমিটার রাইড করেছি। এই রাইডের থেকে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা আপনাদের কাছে শেয়ার করবো । বাইকের প্রতি ভালবাসার শুরু সেই এসএসসি পরীক্ষার পর থেকেই। তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতাম একটা বাইক কেনার। অবশেষে ২০১৫ সালে সেই স্বপ্নটা সত্যি হয়। আমার জীবনের প্রথম বাইক TVS Metro ES দিয়েই আমার জীবনের বাইক চালানো শেখা ও হাতেখড়ি। বাইক কেনার আগে আমি আসলে বাইক চলাতেই পারতাম না। 

cbr user in bangladesh 

এরপর বেশ কয়েকটি ব্রান্ড এর বাইক ব্যবহার করি । তবে একটি ড্রিম বাইক ছিল আর সেটি হচ্ছে Honda CBR 150R Repsol । বাইকটি না চালিয়েই বাইকটি পছন্দের তালিকায় প্রথম স্থানে ছিল । প্রথম Honda CBR 150R Repsol বাইকটি টেস্ট রাইড দেই বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেড এর একটি প্রোগ্রামে ।

বাইকটি না চালিয়ে যেভাবে বাইকটি পছন্দের তালিকায় প্রথম স্থানে ছিল চালানোর পর ইচ্ছেটা খুব বেশি বেড়ে গেল । এরপর হঠাৎ করেই স্বপ্নের বাইকটি কেনা হয়ে গেল। আসলে মন থেকে ইচ্ছে থাকলে, লক্ষ সঠিক থাকলে কোন না কোন ভাবে আল্লাহ্ সেটা পূরন করে দেয় । আমার বাইকটি হচ্ছে Honda CBR 150R Repsol ABS ইন্দোনেশিয়ান ভার্শন। এর ফিচার নিয়ে কথা বলতে গেলে Honda CBR 150R Repsol একটি রেসিং বাইক। অসাধারন লুকস, এছাড়াও এই বাইকটিতে আছে শক্তিশালী ইঞ্জিন (16.87 BHP, 14.4 NM Torque ) চমৎকার ব্যালেন্স, এরোডায়নামিক ডিজাইন, ডিজিটাল স্পিডোমিটার এবং গিয়ার ইন্ডিকেটর, টুইন এলইডি হেডলাইট এবং LED টেল লাইট। ৬ স্পিড গিয়ার বক্স । ডুয়াল চ্যানেল ABS (anti-lock braking system) সিস্টেম

honda cbr 150r repsol abs engine

 

বাইকটি অনেক স্মুথ । রেডি পিকাপ অসাধারন । বাইকটিতে এখনো পর্যন্ত ইঞ্জিনে কোন প্রকার ভাইব্রেশন ফিল করিনি । বাইকটির ওজন ১৪০ কেজি এবং ফুয়েল ধারণ ক্ষমতা ১২ লিটার। বাইকটির সামনের দিকে ১০০/৮০- ১৭ এবং পিছনে ১৩০/৭০- ১৭ সাইজের টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে। আমি টায়ার পরিবর্তন করে সামনের দিকে পিরেলি ১০০/৮০ এবং পিছনে পিরেলি দিয়াবলো রস্বো (২) ১৪০/৮০ টায়ার লাগিয়েছি। এরপর পার্ফরমেন্স আরো বেশি ভালো মনে হয়েছে এবং কন্ট্রোলিং ও কর্নারিং এ বেশ কনফিডেন্স পাচ্ছি । যতটা সম্ভব বাইকটি যত্নের সাথে রাইড করছি । শুরু থেকেই মটুল 7100 10w40 গ্রেডের ফুল সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করছি। পার্ফরমেন্স অসাধারন । নিয়মিত টায়ার প্রেশার চেক, চেইন লুব, কুলেন্ট টপ আপ এ গুলো সঠিক সময়ে করেছি । আর এর জন্য বাইকটি আমাকে যে পার্ফরমেন্স দিচ্ছে তাতে আমি মুগ্ধ । 

honda cbr 150r repsol abs user review

বাইক নিয়ে বেশ কয়েকবার ঢাকার বাইরে গিয়েছি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে – জামালপুর, মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর, গাজীপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা ,কুয়াকাটা। বাইকটি নিয়ে কুয়াকাটা ভ্রমন অসাধারন ছিল। ঢাকা-মাওয়া রোডে প্রথমবারের মতো টপ স্পিড তুলেছিলাম ১২৮ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। বাইকটির কিছু ভালো দিক -

  • কন্ট্রোলিং
  • এক্সসেলারেশন
  • এগ্রেসিভ লুক
  • সিটিং পজিশন
  • স্মুদ গিয়ার সিফটিং
  • লং রানে খুব ভালো পার্ফরমেন্স দেয়

cbr tail light

বাইকটির কিছু খারাপ দিক -

  • ইঞ্জিন কিল সুইচ নেই
  • হর্নের সুইচ পজিশন আমার ভালো লাগেনি
  • পিলিয়ন গ্রাবরেইল থাকলে ভালো হত
  • সিটি রাইডে অতিরিক্ত গরম হয়
  • LED হেডলাইট হলেও হাইওয়েতে কিছুটা আলো স্বল্পতা অনুভব করি
  • চেইনে কিছুটা শব্দ করে যেটা এই স্মুথ বাইকের সাথে মানায়না

আলহামদুলিল্লাহ আমি প্রায় হাইওয়েতে মাইলেজ ৪২-৪৩ কিলোমিটার প্রতি লিটার আর সিটিতে ৩৮-৩৯ কিলোমিটার প্রতি লিটার পেয়েছি । যে পরিমান থ্রটল রেস্পন্স ইঞ্জিন পাওয়ার সেই হিসেবে মাইলেজ প্রশংসা করার মত । সর্বশেষে বলতে হয় Honda CBR 150R Repsol ABS (indo) বাইকটি আমার রাইড করা সবচেয়ে ভালো এবং প্রিয় বাইক এবং যতদিন হোক না কেনো এই বাইকটা কোনভাবেই বিক্রি করার ইচ্ছা নাই। আমি এই বাইকটার পার্ফরমেন্স এ মুগ্ধ । ধন্যবাদ।

লিখেছেন - খান মোঃ সোহাগ 

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।