TVS Apache RTR 160 4V বাইক নিয়ে মালিকানা রিভিউ - জয়

This page was last updated on 01-Aug-2024 07:50am , By Shuvo Bangla

আমি আসিকুর রহমান জয় , আমি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ( সিইসি ) ৪র্থ বর্ষের ছাত্র । আমি যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার বাসিন্দা । বাইকের প্রতি ছোটবেলা থেকেই আবেগপ্রবণ । আমি আমার প্রথম বাইক Bajaj Discover 125 এবং পরবর্তীতে ২০২০ সালে আমার পছন্দের বাইক TVS Apache RTR 160 4V নেই আজ আমি আমার বাইক নিয়ে রিভিও করবো ।

TVS Apache RTR 160 4V বাইক নিয়ে মালিকানা রিভিউ

TVS Apache RTR 160 4V বাইক নিয়ে মালিকানা রিভিউ - জয়

আজ আমি রিভিও করতে যাচ্ছি বাংলাদেশে অনুমোদিত ইম্পোর্টেড লঞ্চ হওয়া সবচাইতে dashing & aggressive look এর একটা বাইক নিয়ে । অনেকের মনে হয়ত ধারণা আছে যে এই বাইক স্কিড করে , ব্রেক ভালো না তেল বেশী খায়। আমি একজন জ্ঞ্যান পিপাসু মানুষ, বাংলাদেশে লঞ্চ হওয়া সব বাইক সম্পর্কে আমার নুন্যতম ধারনা আছে। আমি সকল গুজব, মানুষের কথাবার্তার উর্ধে গিয়ে বাইকটি কিনে আনলাম । 

আমি বাইকটা কিনেছিলাম খুলনা চুকনগর এর এস এম মটরস টিভিএস এর শোরুম থেকে । নানান মানুষের নানান কমেন্ট শুনলাম , এবং তাদের কিছু জবাব ও দিলাম , আমি বাইকটি চালিয়েছি ২২,০০০ কিলোমিটারের মত । এই বাইক চালিয়ে আমি অনেক কমফোর্ট পাই , আমি পালসার, হর্নেট, হান্ক, সুজুকি সব বাইকই চালাইছি কিন্তু এই বাইকটি আমার কাছে সব থেকে ভালো লাগছে । 

আমার হাইট ৫'১১" সো পালসার বা শর্ট বাইক চালালে পেইন হত সো অনেক কিছু ভেবে আমি আমার নীল পরীকেই নিলাম। বাইকটি নেয়ার আগে Bikbd এর সব রিভিউ ভিডিও দেখছি সব কিছু মাথায় রেখে ভেবে দেখলাম এটাই আমার জন্য বেস্ট ।


TVS Apache RTR 160 4V বাইকের কিছু কথা -

  • বাইকটি ন্যাকেড স্পোর্ট বাইক
  • বাইকটি মজবুত
  • ১২ লিটার ফুয়েল ট্যাংক
  • বেশ শক্ত মজবুত প্লাস্টিক বডি
  • এটার ইঞ্জিন লুক ম্যাসিভ
  • খুবই গতিশীল বাইক
  • LED হেডলাইট 
  • Smart X-Connect 
  • Radial Tyre 
  • প্রয়োজন অনুযায়ী পাওয়ার ডেলিভারি করে
  • বাইকের  আনকমন ড্যাসিং একটা লুক রয়েছে
  • ইঞ্জিন সাউন্ড অসাধারণ
  • কন্ট্রোলিং , চমৎকার ব্যালেন্স আছে বাইকটাতে

ব্যাক্তিগত কিছু কথা আমি যখন বাইকটাতে উঠি আমি কম্ফোর্ট  অনুভব করি , আমি আমার বাইক নিরাপদে রাইড করি, আমার বয়সি ছেলেরা হয়তো একটু উগ্র রাইডে অভ্যস্ত তবে আমি সব সময় ইন্টারন্যাশনাল রাইডিং টেকনিক ফলো করার চেষ্টা করি।

আমার মাঝে মাঝে ক্লাসে যেতে দেড়ি হয় তবুও আমি তাড়াহুড়ো করি না কারণ আজ হয়তো ১০ মিনিট পরে গেলাম । কিন্তু যদি আর জীবনে ভার্সিটি না যেতে পারি তখন কি হবে ! আমি হেলমেট ছাড়া কখনো বাইকে উঠি না হোক সেটা ২ কিলোমিটার রাস্তা।

আমি আমার মেশিনটাকে ভালোবাসি এর যত্ন করি , এটাও আমাকে হতাশ করে না। আমি কোন মোডিফাই করি নাই। আমি সব সময় ফোম ওয়াশ করাই ২/৩ সপ্তাহ পর পর। স্প্রে পালিশ ইউজ করি চেইন লুব্রিকেন্ট দেই । সবসময় চেষ্টা করি অকটেন দিয়ে চালানোর ।

সুবিধার কথা হলো কোন বাইকই স্বয়ংসম্পূর্ণ না অসুবিধার কথা বলি বাইকের Engine oil পাওয়া যায় না লোকালে ১২০০ মিলি হওয়ায় কিন্তু এটা নিয়ে আমার কোনো কমপ্লেন নাই। অনেকে বলে তেল বেশী যায় , যদি ৪ সেকেন্ডে ৬০ কিমি তে স্পিড ওঠে তেল তো যাবেই। তুমি যেমন দৌড়াবে তেমনই ক্যালরি বার্ন হবে হোক মানুষ বা মেশিন। তবে টায়ার ১০০/৭০ ও ১৪০/৭০ দিলে ভালো হত। 

TVS Apache RTR 160 4V বাইক নিয়ে মালিকানা

বাইকটি প্রথমবার চালানোর কথা বললে বলবো আমি যখন স্টার্ট দেই আমি সেই মুহুর্তটা লিখে বুঝাতে পারবো না। এতো সুন্দর সাউন্ড স্মুথ এক্সিলারেশন নরম সিট সব কিছু মিলিয়ে কম্ফোর্ট পাচ্ছি । বাইকের ফিচার বাইকবিডি ওয়েবসাইটে দেওয়াই আছে তারপর আরো কিছু বলি । হেডলাইটের আলো অতুলনীয় বাট পার্কিং লাইট সবচেয়ে সুন্দর। 

আমি বাইক কেনার মূল উদ্দেশ্য খুলনাতে পড়াশুনা করি যাওয়া আসা যদিও রেগুলার না তাছাড়া আমার শখ ছিলো আর আমাদের পারিবারিক নানান কাজে বাইক লাগেই।সবদিক বিবেচনা করেই বাইক নেয়া । আমি ঘুরতে খুবই ভালোবাসি, কোথাও যাওয়ার জন্য  বাস, রিক্সা এসব এর জন্য ওয়েট করা খুবই বোরিং। 

একটা লং ট্যুর দিয়েছিলাম মাগুরা থেকে খুলনা । টোটাল জার্নিতে কোন প্রকার পেইন পাইনি খুবই স্মুথ চলে পিলিয়ন ছিট অনেক কমফোর্ট। রাতের বেলার কথা না বললেই নয় বাইকের হেডলাইট বাইকের মত অসাধারণ। হাইওয়েতে কোন ঝামেলা হয় না দেখতে এর পাস লাইট মারলে যেকোনো গাড়ির আলো নিচে করতে বাধ্য। আমি সর্বোচ্চ ১২২ কিমি গতি তুলছি তাছাড়া আমি সবসময়ই নরমাল ই চালাই ৬০-৭০ এর ভিতর এই চলি।

TVS Apache RTR 160 4V রিভিউ - জয়

তবে বাইকে X-Connect থাকায় মিটারে Navigation দেখা যায় কে কল দিলো সেটা, কল কেটে দেওয়াও যায় কত দুরে ফুয়েল পাম্প সেটাও দেখা যায়। এই ফিচার বাংলাদেশের কোন বাইকে নাই। বাইকটার সব গুলো সার্ভিস করানো শেষ, খুলনা যশোর দুইজায়গা থেকেই বাইকটি সার্ভিসিং করাই । 

যারা মনে করেন এই বাইক ভলো না তেল বেশি যায় , ব্রেক ভালো হয়না নানান কথা তারা এই বাইকটি ইউজ করেন নিয়ম মেনে চালান কোন অভিযোগ থাকবে না আশা করি। সবার প্রতি ভালোবাসা রইলো আমার মতামতকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ। ধন্যবাদ টিম বাইকবিডিকে এরকম , সুন্দর একটি প্ল্যাটফর্ম গঠনের জন্য । ধন্যবাদ ।


লিখেছেনঃ আসিকুর রহমান জয়

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।