Hero Thriller 160R XSens Technology নিয়ে বিস্তারিত

This page was last updated on 31-Jul-2024 06:40am , By Raihan Opu Bangla

Hero Thriller 160R বাইকের রয়েছে এমন কিছু টেকনোলোজি যা এই বাইকটিকে করেছে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত এবং অন্যদের থেকে আলাদা । Hero Thriller 160R বাইকে রয়েছে ১০ টি সেন্সর এবং ৫ টি অ্যাকচুয়েটর । এই ১০ টি সেন্সর এবং ৫ টি এক্সচুয়েটর কে বলা হয় XSens Technology

Hero Thriller 160R XSens Technology

  

সেন্সর কিছু সনাক্ত করে এবং ECU তে পাঠায়, ECU সিদ্ধান্ত নেয় এবং Actuator এর মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন করে । Hero Thriller 160R বাইকটিতে মূলত 2 টি ECU আছে। একটি ইঞ্জিন ECU এবং অন্যটি ABS ECU। যে ১০ টি সেন্সর এর কথা বললাম তার মধ্যে ৮ টি সেন্সর নিয়ে কাজ করে ইঞ্জিন ECU বাকি 2 টি সেন্সরের সাথে কাজ করে ABS ECU ।

এবার আসি XSens Technology গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় -


1- Intake Air Temperature sensor

আমরা কার্বোরেটর বাইকে একটা নির্দিষ্ট টিউনিং রেখে বাইক চালাই । যেই টিউনিং এ আপনি বাইকটা সমতল ভূমিতে চালাচ্ছেন , পাহাড়ে চালাচ্ছেন আবার সমূদ্রের পাড়ে চালাচ্ছেন , ৩ টি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় বাতাসের তাপ অথবা চপের পরিবর্তন হয় কিন্তু টিউনিং এর কোন পরিবর্তন হয়না ।

এই Intake Air Temperature sensor বাতাসের তাপকে মাপে এবং Manifold Absolute Pressure Sensor যে বাতাসটা ইঞ্জিনে প্রবেশ করবে সেই বাতাসকে ডিটেক্ট করবে । যাতে করে তাপ এবং চাপ যখনই পরিবর্তন হবে তখন একই সাথে এই ২ টি সেন্সর ইসিইউকে সিগ্নাল দিতে থাকবে যে বাতাসের তাপ কত এবং চাপ কত । সেই অনুযায়ী ইসিউ ফুয়েল ইঞ্জেক্টর এবং ইগ্নেশন কয়েলকে সিগ্নাল দিবে যে পরিমান বাতাসের তাপ এবং চাপ আছে তার জন্য কি পরিমান ফুয়েল ইঞ্জিনের দরকার ।

2.Manifold Absolute Pressure Sensor (MAP)

আমরা সাধারণত কার্বুরেটর টাইপ বাইকে টিউনিং করি । টিউনিং মানে বায়ু এবং জ্বালানির অনুপাত সমন্বয় করা । বাতাসের তাপ এবং চাপ সব জায়গায় এক নয়। ফলস্বরূপ, একই টিউনিংয়ে গাড়ি চালালে বায়ু ও জ্বালানির অনুপাত (14: 1) ঠিক হবে না। এতে জ্বালানি খরচ বাড়বে। Manifold Absolute Pressure Sensor বাইকে বায়ু এবং জ্বালানি অনুপাত (14: 1) সবসময় বাতাসের তাপ এবং চাপ অনুযায়ী রাখে ।

Hero Thriller 160R XSens Technology Explained (থ্রিলারের সেন্সর কি ভাবে কাজ করে) By Team BikeBD


3-Bank angle sensor

বাইক এক্সিডেন্ট হয়ে পরে গেলে বাইক যদি স্টার্ট অবস্থায় থাকে তাহলে বাইকের স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাবে । বাইক পরে গেলে যদি গিয়ারে থাকে বাইকের চাকা ঘুরতে থাকবে স্কার্চ পরার সম্ভাবনা থাকে আবার বাইক পরে গেলে মাঝে মাঝে বাইক থকে ফুয়েল বের হয়ে আগুন লাগার মত মারাত্তক দূর্ঘটনাও হতে পারে । এই সেন্সরের মাধ্যমে বাইক পরে গেলে সাথে সাথে বাইকের স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাবে ।

 

4-Throttle position sensor

আপনি বাইকটির থ্রটল বাড়াচ্ছেন কমাচ্ছেন হঠাৎ থ্রটল বাড়িয়ে দিচ্ছেন আবার হঠাৎ কমিয়ে দিচ্ছেন Throttle position sensor এই সিগ্নালকে ইসিউ তে পাঠায় এবং ইসিউ সেই অনুযায়ী বাইকের আরপিএম ঠিক রাখে এবং ফুয়েল সাপ্লাই করে ।

5 & 6 . Vehicle speed sensor & Wheel speed sensor

এবিএস কে একটিভ করার জন্য এখানে ২ টি সেন্সর কাজ করে একটি চাকার সাথে অন্যটি ইঞ্জিনের সাথে । হুইল স্পিড সেন্সরটি চাকার স্পিডকে ডিটেক্ট করে এবং Vehicle speed sensor ইঞ্জিন এর পাওয়ার কে নির্নয় করে ।

যখন আপনি ব্রেক প্রেস করবেন মাস্টার সিলিন্ডার থেকে যখন প্রেশার এবিএস ইসিইউ তে চলে আসে তখন ইসিইউ সিদ্ধান্ত নিবে ১ সেকেন্ডে কত বার ডিক্স কে ধরবে এবং ছাড়বে । এবিএস এর মাধ্যমে ডিক্স লক হচ্ছে কিন্তু সেটা অল্প সময় এর জন্য ছেড়ে দিয়ে আবার লক করতেছে যাতে করে চাকা স্কিড না করে ।

7- Crank position sensor

কার্বোরেটর টাইপ বাইকগুলোতে পিকাপ কয়েল থাকে এই বাইকটিতে পিকাপ কয়েল এর জায়গায় Crank position sensor দেওয়া আছে । এই সেন্সরটি ২ টি কাজ করে । ১- আরপিএম ডিটেক্ট করে ইসিইউকে দেয় ২- ক্রাংক সেপ ১ সাইকেলে ৭২০ ডিগ্রি ঘুড়ে ১ বার পাওয়ার উৎপাদন হওয়ার পরে কতটুকু ঘুরলো এটা কাউন্ট করে । বাল্ব কখন ওপেন হবে এবং বন্ধ হবে এর অবস্থানকে নির্নিয় করার জন্য ক্রাংক পজিশন সেন্সর কাজ করে ।

 

8-Side stand sensor

এই সেন্সরটির মাধ্যমে যখন সাইড স্টান নামানো থাকে তখন বাইকটির মিটারে একটি সিগ্নাল দিবে এবং সাইড স্টান নামানো অবস্থায় বাইক স্টার্ট নিবেনা এবং স্টার্ট নেওয়া অবস্থায় সাইড স্টান নামানো হলে বাইকের স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাবে ।


9-oxygen sensor

অক্সিজেন সেন্সর মূলত নিষ্কাশন গ্যাসে অক্সিজেনের পরিমাণ নির্ধারণ করে এবং এটি ইঞ্জিন ECU এর সংকেত দেয়। ECU ইঞ্জিন নিষ্কাশন গ্যাসে অক্সিজেনের পরিমাণ নির্ধারণ করে এবং সেই অনুযায়ী ইনজেক্টরের মাধ্যমে ইনজেকশনের জ্বালানির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।

 

10-Engine oil temperature sensor

কার্বোরেটর বাইকে শীতের সময় যখন বাইক স্টার্ট দিতে যাবেন তখন দেখবেন বাইক সহযে স্টার্ট নিচ্ছেনা । এই বাইকের Engine oil temperature sensor ইসিউকে ইঞ্জিন এর অয়েল এবং ইঞ্জিন এর টেম্পারেচার ডিটেক্ট করে পাঠায় । এবং ইসিউ তখন নির্নয় করে এই টেম্পারেচারে বাইকটিকে স্টার্ট করার জন্য কি পরিমান ফুয়েল দরকার হবে তখন ইসিউ ফুয়েল এর পরিমান বাড়িয়ে দেয় এবং ইঞ্জেকটরে ফুয়েল সাপ্লাই দেয় কতক্ষন ধরে এই ফুয়েল সাপ্লাই হবে সেটাও নির্নয় করে দেয় ।

 

এছাড়া বাইকটিতে রয়েছে ৫ টি Actuator -

1. Purge valve 2. Ignition coil (H. T coil) 3. Idle air control valve 4. Fuel pump 5. Injector এক্সচুয়েটর এর প্রতিটি জিনিষ ইসিউর সিগ্নাল এর উপর কাজ করবে ।

 

বাইকটিতে আরো একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেটা হয়তো এখন পর্যন্ত আপনারা অন্য কোন বাইকে দেখতে পাননি । সেটি হচ্ছে অটো সেল টেকনোলজি । বাইক চালাতে চালাতে আপনার হয়তোবা কোন কারনে এক্সেলেটর থেকে হাত সরাতে হয়ে পারে । গিয়ারে থাকলে কি হবে ! বাইকটি বন্ধ হয়ে যেতে চাবে অথবা স্পিড কমে ধাক্কাতে শুরু করবে কিন্তু এই বাইকের ক্ষেত্রে আটো সেল টেকনোলজি থাকার কারনে তা হবেনা থ্রটল ছেড়ে দেওয়ার পরেও প্রতিটা গিয়ারে একটা এভারেজ স্পিডে বাইকটি একটা নির্দিষ্ট স্পিডে চলতে থাকবে । ধন্যবাদ।