Bajaj Pulsar 150AS নিয়ে ভ্রমন কাহিনী লিখেছেন মেহেদী হাসান
This page was last updated on 23-Nov-2023 05:35am , By Shuvo Bangla
ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। ঈদ বাইকারদের জন্য আলাদা ভাবে খুশি নিয়ে আসে। কারণ, এই সময় বাইকাররা নানা ধরনের প্ল্যান সাজিয়ে রাখে। তবে বাইকারদের সবচেয়ে বেশি ভ্রমন সম্ভবত ঈদের সময় হয়। আর তাই আমিও আমার Bajaj Pulsar 150as নিয়ে ট্যুরে যাবার প্ল্যান করলাম।
Bajaj Pulsar 150AS নিয়ে ভ্রমন কাহিনী লিখেছেন মেহেদী হাসান
Also Read : Bajaj Pulsar N250 Price in Bangladesh
ঈদ এর ছুটি এবং বার্ষিক ছুটি মিলিয়ে ১টি ভ্রমন পরিকল্পনা সাজিয়েছিলাম। আমি আর আমার স্ত্রী এই ভ্রমনের প্ল্যান করেছি। যেহেতু আমি আগে এভাবে ভ্রমন করিনি, তাই শুরু করলাম পড়াশুনা। নেট ঘেঁটে ইউটিউব এ টিউটেরিয়াল দেখে প্লান সাজিয়ে ফেললাম। এখানে বলে রাখি আমার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট। আমাদের কাপড়ের ব্যাগ আগেই ছোটভাই এর মাধ্যমে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। তবে যেদিন ভ্রমন করব সেদিন ছোট ব্যাগে সংগে ফার্স্ট এইড বক্স, হালকা খাবার, গ্লুকোজ, স্যালাইন, জরুরি ওষুধ, নিয়াছিলাম।
আমার বাইকটি হচ্ছে Bajaj Pulsar 150AS। তাই ট্যুরে যাবার ১ সপ্তাহ আগে বাইক সার্ভিস সেন্টার থেকে চেক করিয়াছি, মোবিল পাল্টেছি, টায়ারে জেল ভরেছি। ভ্রমনের জন্য যা যা দরকার তৈরি করেছি আরও প্রয়োজনীয় সম্ভব্য সব কিছু করেছি। আমার এই প্ল্যান সাজাতে আমার স্ত্রী আমাকে সাহায্য করেছে। আমরা সেপ্টেম্বরের ১ তারিখে যাত্রা শুরু করেছিলাম। পদ্মা পার হতে একটু কষ্ট হয়েছে। তারপরে বৃষ্টি একটু ভুগিয়েছে। আমি বৃষ্টির জন্য ৫০/৬০/৭০ স্পিডে এ বাইক চালিয়েছি। যাত্রা পথে ৫ বার বিরতি দিয়েছি। আমার স্ত্রী হেল্পারের ভুমিকায় ছিল। সে অনেক help করেছে। সকাল ৬ টায় রওনা করে বিকাল ৪ টায় বাড়ি পৌঁছেছি। রাস্তায় মানুষের ভোগান্তি দেখে সত্যি অনেক কষ্ট হয়েছে।
Also Read: মাহির জামানের Bajaj Pulsar 150AS এর মালিকানা রিভিউ
তারপর সেপ্টেম্ববের ৭ তারিখে মানে ঈদের পর আমরা Bajaj Pulsar 150AS নিয়ে কুয়াকাটার দিকে রওনা হলাম। সেদিনও বৃষ্টির ছিল। অনেক কষ্ট করে আস্তে আস্তে চালিয়ে গেলাম। লেবুখালি ফেরির আগে ও পরে ৫ কিলো এবং কুয়াকাটার আগের ১৫ কিলো রাস্তা অনেক ভাঙ্গা এবং গর্ত আছে। বাইক নিয়ে যখন সাগরের পাড়ে গেলাম। আমার সব কষ্টই সার্থক হয়ে গাল। নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হচ্ছিল। ওখানে আমার মামা শ্বশুর আগে থেকে হোটেল বানানিতে আমাদের জন্য রুম ঠিক করে রেখেছিল। বাইক নিয়ে পুরা সমুদ্র সৈকত এবং আশাপেশের এলাকা, দর্শনীয় স্থান গুলো ঘুরে দেখলাম। সে যে কি আনন্দ তা বলে বোঝাতে পারব না।
দুদিন পর ০৯/০৯/২০১৭ তারিখে আমরা আবার বাগেরহাটের দিকে রওনা করলাম। যথারীতি বৃষ্টি আমাদের যাত্রায় আবার ব্যাঘাত করল। বৃষ্টিতে কিভাবে রাইড করতে হয় তা আগে থেকেই শিখে গিয়েছিলাম। তাই খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। যেটুকু শুকনা রাস্তা পেয়েছিলাম ৭০/৮০/৮৫ স্পিডে বাইক চালিয়ে এসেছি।তারপর বাগেরহাট এসে এখানকার ও আশেপাশের অনেক দর্শনীয় স্থান, আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে ঘোরাঘুরি করেছি। অবশেষে ১৭/০৯/২০১৭ তারিখে ঢাকায় ফিরতি যাত্রা শুরু করে দিলাম। এবার কিন্তু আবহাওয়া বেশ ভালো ছিল। মেঘলা আবহাওয়া, শুকনা আর ফাকা রাস্তা। আমি ড্রাইভ করছিলাম আর আমার স্ত্রী হেল্প করছিল। সেই সময়টা দারুন ছিল। আমি প্রায় 70/80/90 স্পিডে বাইক চালিয়েছি। এভাবেই উড়তে থাকলো আমাদের ব্লু লেডি bajaj pulsar 150AS। এই ভ্রমনে bajaj pulsar 150AS যে একটা ট্যুরিং বাইক তা আমি উপলব্ধি করলাম। আর আমার টাকাটা যে ঠিক জায়গায় খরচ করেছি সেজন্য আরও ভাল লাগছিল।
Bajaj Pulsar 150AS নিয়ে মাওয়া পর্যন্ত আমাদের জার্নিটা ছিল অসাধারণ। মাওয়া এসে একটা ঠ্যালা ফেরি পেলাম। ফেরিতে উঠলাম সাড়ে ৩টার সময় এবং ফেরি থেকে নামলাম প্রায় সাড়ে ৭ টায়। ফেরি পার হয়ে মহা বিপদে পড়ে গেলাম। চারিদিকে যেমন অন্ধকার তেমন ধুলার ঝড়। কিছুটা ভয়ে ভয়ে ৪০/৪৫/৫০ স্পিডে চালিয়ে বাসায় আসলাম। এই ট্যুর থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। যেমন, বাইকাদের কে অবশ্যই ফিট থাকতে হবে। বাইকের ব্যাপারে সাধারন জ্ঞান থাকতে হবে এবং প্রচুর পড়াশুনা করতে হবে। ক্লান্ত হওয়ার আগেই বিশ্রাম নিতে হবে। এছাড়াও আরও অনেক কিছু। আমি যে পড়াশুনা গুলো করেছিলাম তা আমার অনেক উপকারে এসেছে। এমন কোন পরিস্থিতিতে আমি পড়িনি যার ব্যাপারে আমি না শিখে গিয়েছি। তাই শত প্রতিকুলতার মাঝেও আমি অনেক নিরাপদ আর আনন্দঘন একটি সফল ট্যুর আল্লাহার অশেষ রাহমতে শেষ করলাম যা আমাদের স্মৃতির মনসপটে অম্লান হয়ে থাকবে।
লিখেছেনঃ Adv Mehedi Hassan