ভারতে মোটরসাইকেল শিল্পে নতুন নীতিমালা ২০১৭ : বাংলাদেশেও কি এর প্রভাব পড়বে?
This page was last updated on 18-Aug-2024 01:13pm , By Shuvo Bangla
বাংলাদেশের বাজারে মূলত ভারত ও চিন থেকে মোটরসাইকেল আমদানি হয়। সরাসরি জাপান থেকে মোটরসাইকেল আমদানি দিন দিন কমছে এবং থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া থেকে খুবই নগণ্য পরিমাণ বাইক এদেশে আসে। আর ভারত সরকার তাদের দেশের মোটরসাইকেল শিল্পের জন্য নতুন নীতিমালা ২০১৭ প্রণয়ন করেছে।চলুন দেখি নতুন এই নীতিমালা বাংলাদেশের বাজারে কতোটুকু প্রভাব ফেলবে।
ভারতে মোটরসাইকেল শিল্পের জন্য নতুন নীতিমালা প্রণয়ন
বিএস৪ স্ট্যান্ডার্ড ইঞ্জিন : নতুন নীতিমালার প্রথম কথাই হচ্ছে সব বাইকে আবশ্যিকভাবে বিএস৪ স্ট্যান্ডার্ডের ইঞ্জিন ব্যবহার করতে হবে। বিএস (ভারত স্টেজ এমিশন স্ট্যান্ডার্ডস) হচ্ছে ভারতের এমিশন স্ট্যান্ডার্ড ইনস্টিটিউট, যেটা মোটরসাইকেল ইঞ্জিন থেকে দূষিত বায়ু নির্গমনের হার নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। নতুন বিএস৪ স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলতে হলে সব বাইকেই কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও অন্য বিষাক্ত বায়ু নির্গমনের হার কমাতে হবে। প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আগামী পহেলা এপ্রিল থেকে সব বাইকে বিএস৪ মানের ইঞ্জিন বাধ্যতামূলক। যদিও ইউরোপের দেশগুলোতে আগে থেকেই ইউরো-৪ এমিশন স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলা হয়। ভারতে নতুন নীতিমালা অনুযায়ী বাইকের ইঞ্জিনের ক্ষমতা ভেদে বিষাক্ত বায়ু নির্গমন ২৩-৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে।
এএইচও (অটোমেটিক হেডলাইট অন): নতুন মডেলের বাইকের কল্যাণে বেশ কিছু বাইকারই হয়তো নতুন এই প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হয়ে গেছেন, যারা এখনো জানেন না, তাদের বলছি, বাইকের হেডলাইট সবসময়ই অন থাকতে হবে, ইগনিশন চালু করলেই লাইট অন হয়ে যাবে। যেমন : ইয়ামাহা এম স্ল্যাজ, হোন্ডা সিবিআর১৫০আর (২০১৬), হোন্ডা সিবিআর১৫০আর স্ট্রিটফায়ার। যদিও এর ফলে বাইকের ব্যাটারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবুও প্রায় সব দেশেই এটা আজকাল স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয়। কারণ হেডলাইট অন থাকলে রাস্তায় বাস-ট্রাক ড্রাইভাররা সহজেই আপনাকে দেখতে পাবেন।
নতুন নীতিমালার সুবিধা:
- পরিবেশ দূষণ কমবে।
- নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার।
- অনেক কোম্পানিই নতুন রঙ ও গ্রাফিক্সের বাইক বাজারে আনবে।
- হাইওয়েতে চলার জন্য এএইচও বেশ ভালো।
বিএস৪ স্ট্যান্ডার্ডের অসুবিধা
- কার্বুরেটর বিশিষ্ট ইঞ্জিনের শক্তি উৎপাদন কমে যাবে।
- বাইকারের জন্য এএইচও একটা বিরক্তির কারণ হয়ে যাবে, কারণ মানুষ বারবার হেডলাইট বন্ধ করতে বলবে।=
- ভারতে বাইকের দাম বেড়ে গেছে, বাংলাদেশেও তা বাড়তে পারে।
ভারত থেকে মোটরসাইকেল আমদানিকারক কোম্পানির তালিকা
পরিবেশক বা বাংলাদেশে নিবন্ধিত | ব্র্যান্ড |
বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেড | হোন্ডা |
এসিআই মটরস | ইয়ামাহা |
র্যাংকন মোটরবাইকস লিমিটেড | সুজুকি |
উত্তরা মটর লিমিটেড | বাজাজ |
নিলয় মটরস লিমিটেড | হিরো |
টিভিএস অটো বাংলাদেশ | টিভিএস |
রাভানা অটোমোবাইলস | মাহিন্দ্রা |
কবে নাগাদ এই মোটরসাইকেল বাংলাদেশে আসবে তা সঠিক জানতে পারিনি। তবে ধারণা করছি, আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যেই বাংলাদেশেও এই বাইকগুলো চলে আসবে। কারণ ভারতে এপ্রিল থেকে নীতিমালা বাস্তবায়ন শুরু হবে। অবশ্য অনেক কোম্পানি এরই মধ্যে তাদের আপগ্রেডেড বাইক ভারতে বাজারজাত শুরু করেছে। আর ভারতের মোটরসাইকেল শিল্পের জন্য ঘোষিত নতুন এই নীতিমালা ২০১৭ বাংলাদেশের মোটরসাইকেল শিল্পেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। আশা করি নতুন প্রযুক্তির মোটরসাইকেলের জন্য আমাদের বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না।