TVS Apache RTR 150 অর্ধ লক্ষ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - ফয়েজ

This page was last updated on 30-Jul-2024 09:20am , By Raihan Opu Bangla


আমি ফয়েজ আহমাদ, আমার বাসা কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানায়। আমি একজন দন্ত চিকিৎসক। আমার বাইকের নাম TVS Apache RTR 150।  আমার এই বাইকটি নিয়ে আপনাদের সাথে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।

TVS Apache RTR 150 অর্ধ লক্ষ কিলোমিটার রাইড রিভিউ

tvs apache rtr 150 bike
আমি এই বাইকটি পুরাতন ক্রয় করেছি ২৫/১২/২০১৮ সালে, এটি আমার কাছে চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয় ছিল। অনেক বাইক পছন্দের তালিকায় থাকলেও মধ্যবিত্ত হওয়ার ফলে স্বাদ্ধের মধ্যে সবচাইতে প্রিয় এবং ভালোবাসার বাইক হলো এই TVS Apache RTR 150


আমি যখন বাইকটি ক্রয় করি তখন বাইকটি ২৭ হাজার কিলোমিটার রানিং ছিল আর বর্তমানে ৫২ হাজার কিলোমিটার এর কিছু বেশি।  এই ২৫ হাজার কিলোমিটার রাইডিং এর মধ্যে তৈরি হয়েছে অনেক অভিজ্ঞতা এবং স্মৃতি।
 
পুরাতন বাইক কেনার ফলে নাম পরিবর্তনের জন্য পোহাতে হয়েছে অনেক ভোগান্তি। যখন রাস্তায় সর্বপ্রথম বাইকটি দেখি এর আউট লুক দেখে খুব পছন্দ হয় এবং আমিও স্বপ্ন দেখতে শুরু করি যে ইনশাআল্লাহ একদিন এমন একটি বাইক আমার ও থাকবে।
 
আলহামদুলিল্লাহ আজ আমার সেই প্রিয় বাইকটি আমার কাছে আছে। যাই হোক এত অল্প বাজেটে পারফমেন্সের দিক দিয়ে আমি মনে করি আমার বাইকটিই সেরা। বাইকটির লুক যেকোন মানুষের নজর কারে, আর এই নজর কারা থেকেই বাইকটি ক্রয় করি।

tvs apache rtr 150 blueআমার বাইকটি যখন প্রথম মালিক কিনেছিলো তখন তার মূল্য ছিলো ২,০৪,৯৯৯ টাকা এবং ২০,০০০ টাকা অফারে উনি ক্রয় করেছিলেন কুমিল্লার ক্যান্টমেন্টের হাজি টিভিএস শো রুম থেকে, যা পরবর্তীতে আমি ১,২০,০০০ টাকা দিয়ে ক্রয় করি।

 
বাইক ক্রয় করা নিয়ে জড়িত আছে অনেক ঘটনা, যেহেতু মধ্যবিত্ত তাই পরিবার থেকে বাইক কিনে দিবেনা, তাছাড়া বাইক এক্সিডেন্টের খবর টিভিতে দেখে তারা বাইক কিনে দিতে নিরুৎসাহিত হয়ে যায়।


কাজের জন্য প্রয়োজন দেখিয়ে অনেক কষ্টে রাজি করাই পরিবারের লোকদেরকে। তাও বাজেট ছিলো ১ লক্ষ টাকা মাত্র, যেহেতু আমার পছন্দ Apache কিন্তু এই টাকায় নতুন Apache বাইক পাবোনা তাই সেকেন্ড হেন্ড বাইক কিনতে হলো। আর এই বাইকটির প্রথম মালিক ছিলো আমার কাজিন।
 
তো প্রথম যেদিন বাইক কিনি সেদিন বাইক কিনে বাসায় ফিরতে রাত হয়ে যায়, সেদিন মাত্র ৮ কিলোমিটার রাইড করেছিলাম। ওই রাতে আমার ঘুম হয়নি, রাত ৩ টায় ঘুম থেকে উঠে গিয়ে বাইকের দিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম ইসস কখন সকাল হবে আর কখন আমার প্রিয় বাইকে ইচ্ছেমত ঘুরে বেরাবো.!!
 
সকাল হতেই বাইক নিয়ে বেরিয়ে পরি, সেদিন প্রায় ৮০ কিলো রাইড করেছিলাম। আমার বাইকটি নীল কালারের, এর পেছনের চাকার সাইজ ১২০-৮০/১৭ যা আমি নিজে ইন্সটল করছি। এবং লুকিং গ্লাস ও আমি ইনেস্টল করি ।


TVS Apache RTR 160 Review By Team BikeBD


বাইক ক্রয় করার পর আমি ২০০০ কিলোমিটার রাইড করে সার্ভিসিং করাই গৌরিপুর টিভিএস সার্ভিস সেন্টারে, আমি প্রায় নিয়মিত সার্ভিসিং করাতাম, মাঝে মাঝে লোকাল মেকানিক দিয়েও টুকিটাকি সার্ভিসিং করিয়েছি। তখন মাইলেজ পেতাম লিটারে ৩৫-৩৭।


Also Read: TVS Motorcycle দিচ্ছে মেট্রো এবং এপাচি বাইকে দুর্দান্ত ক্যাশব্যাক অফার!

 
আমি আমার বাইক নিয়মিত পরিষ্কার রাখি এবং বাসায় নিজে ওয়াশ করার জন্য ওয়াশ মেশিন কিনে এনেছি, আমি আমার বাইকে Motul 10w40 গ্রেডের ফুল সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি এবং প্রতি ৩০০০ কিলোমিটার পর পর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি। এই ইঞ্জিন অয়েলের বর্তমান বাজার মূল্য ১০৫০ টাকা।tvs apache rtr 150
এখন পর্যন্ত আমি বাইকটির সামনের এবং পেছনের চাকার ব্রেক সু, এল ই ডি লাইট, পেছনের টায়ার এবং ব্যটারি পরিবর্তন করেছি। বাইকটিতে আমার টপ স্পিড ১০৫ , আমি ওভার স্পিড ভয় পাই। স্বাধারনত আমি ৫০-৬০ স্পিডে বাইকটি চালিয়ে থাকি।
 
TVS Apache RTR 150 বাইকটির কিছু ভালো দিক -
  • দেখতে চমৎকার এবং স্টাইলিশ।
  • রাইড করে আমি কমফোর্টেবল মনে করেছি।
  • সাউন্ড খুব ভালো ।
  • কম দামে ভালো জিনিস।
  • রেডি পিকাপ ।
TVS Apache RTR 150 বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
  • ইঞ্জিনের ভাইব্রেশন ।
  • টায়ার গ্রিপ ভালো না ।
  • TVS এর স্পেয়ার পার্টস এর দাম অন্যান কোম্পানির থেকে বেশি।
  • সিংগেল রাইডে হাই স্পিডে ব্যালেন্সিং ভালো লাগেনি ।
  • বাইকটা বেশি হালকা লাগে।
বাইক দিয়ে অনেক যায়গা ভ্রমন করেছি , তবে বেশির ভাগ সময় চেম্বারে যাওয়া আসার কাজে ব্যবহার করি । বাইকটি নিয়ে আমার লম্বা দূরত্বের ভ্রমন দাউদকান্দি টু হাজিগঞ্জ এবং দাউদকান্দি টু কুমিল্লা শহর। এছাড়াও আমি আমার বাইকটিতে আমার প্রিয় বাবা-মা এবং আমার স্ত্রীকে নিয়ে ভ্রমন করেছি, আলহামদুলিল্লাহ ভ্রমনে আমি আমার বাইক থেকে ভালো পারফমেন্স পেয়েছি।


সবশেষে বলবো TVS কোম্পানির তৈরি এই  TVS Apache RTR 150 বাকটির শক্তিশালী ইঞ্জিন ও আকর্ষণীয় লুক এবং সব দিক বিবেচনা করে আমার কাছে একটি সেরা বাইক মনে হয়েছে। যারা বাইকটি ক্রয় করবেন বলে ভাবছেন অথবা পছন্দ করেন তারা নিঃসন্দেহে বাইকটি ক্রয় করতে পারেন। ধন্যবাদ।
 

লিখেছেনঃ ফয়েজ আহমাদ

 

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।