বাংলাদেশে ১৬৫সিসি মোটরসাইকেল এর লঞ্চিং ডেট, বিক্রয়মূল্য ও বিস্তারিত
This page was last updated on 08-Jul-2024 08:55pm , By Shuvo Bangla
গত ১৭ই জুলাই ভোরে আমরা বাংলাদেশে মোটরসাইকেল আমদানীর সিসি লিমিট ১৫৫ সিসি থেকে বাড়িয়ে ১৬৫ সিসি হবার সংবাদ প্রকাশ করি। তখন থেকেই সকলেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন বেশকিছু বিষয় জানার জন্য, যেমন, ১৬৫ সিসির কি কি বাইক বাংলাদেশে আসতে পারে ? সেগুলো কখন আসবে এবং দাম কিরকম হবে ? এসকল প্রশ্নের উত্তর দিতে আমাদের আজকের আয়োজন। চলুন আলোচনা করা যাক বাংলাদেশে ১৬৫সিসি মোটরসাইকেল সমূহের আনুমানিক মূল্য এবং লঞ্চিং ডেট সম্পর্কে।
বাংলাদেশে ১৬৫সিসি মোটরসাইকেল সম্পর্কে বিস্তারিত
বাংলাদেশে এসে গেছে Yamaha R15 V3! ফার্স্ট ইম্প্রেশন ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন
বাংলাদেশে ১৬৫সিসি মোটরসাইকেল এর পারমিশন আপাতদৃষ্টিতে খুব বেশিকিছু না হলেও আমরা খুশি, যে বাংলাদেশের মোটরসাইকেল এর ইন্ডাস্ট্রীতে বিপ্লব ঘটছে। আশা করা যায়, যে ধীরে ধীরে আমরা বাংলাদেশে বেশি সিসির মোটরসাইকেল চালানোর সুযোগ পাবো, এবং, একই সাথে বাংলাদেশে মোটরসাইকেল এর মূল্য ধীরে ধীরে কমে আসবে এবং বড় বড় মোটরসাইকেল কোম্পানি বাংলাদেশেই মোটরসাইকেল উতপাদন করবে। বাংলাদেশে ১৬৫সিসি মোটরসাইকেল আমদানীর অনুমতি দেয়া হয়েছে। এবং, এই ক্রমধারাতেই আশা করি আমরা নিচের ৫টি মোটরসাইকেল বাংলাদেশে উপভোগ করতে পারবো।
লঞ্চিং এর আনুমানিক সময়ঃ নভেম্বর-ডিসেম্বর, ২০১৭ আনুমানিক মূল্যঃ ২,২০,০০০ – ২,৪০,০০০ টাকা হোন্ডা সিবি হর্নেট নিয়ে বর্তমানে উপমহাদেশ এর বাজারে প্রচুর গুঞ্জন চলছে এবং বাইকটি বেশ ভালোভাবেই বাংলাদেশের বাইকারদের মনে আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। অন্যতম কারন হচ্ছে, এটা হোন্ডা ইন্ডিয়া এর প্রথম বাইক যেটা দেখতে আক্রমনাত্মক এবং, এটা ইয়ামাহা এফজেডএস, সুজুকি জিক্সার এর মতো প্রিমিয়াম সেগমেন্ট এর বাইক। বাংলাদেশে Honda CB Hornet এর সাথে CBS (কম্বো ব্রেকিং সিস্টেম) এবং AHO – অটোমেটিক হেডলাইট অন সিস্টেম আনা হবে কিনা এই বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই, তবে আমরা জানার চেষ্টা করেযাচ্ছি। আশা করা যায় Honda Livo এর মতো হোণ্ডা সিবি হর্নেটও একটি গেমচেঞ্জার হবে।
লঞ্চিং এর আনুমানিক সময়ঃ অক্টোবর – নভেম্বর, ২০১৭ আনুমানিক মূল্যঃ ২,২৫,০০০ – ২,৫০,০০০ টাকা বাজাজ পালসার এএস১৫০ বাংলাদেশে বাজাজ পালসার ১৫০ এর মতো জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। এমনকি, পালসার এএস১৫০ এতোটাই অজনপ্রিয় হয়ে গিয়েছিলো যে ভারতে এটার প্রোডাকশন বন্ধ করে দেয়া হয়, এবং এর পরিবর্তে লঞ্চ করা হয় নতুন বাজাজ পালসার ১৬০এনএস।
এটা বাজাজ পালসার ২০০ এনএস এর ছোটভাই, এবং বাইকটিতে বাজাজ এর সম্পূর্ন নতুন অয়েল কুলড ইঞ্জিন রয়েছে। আমাদের মতে, এর চেহারা এবং আক্রমনাত্মক স্টাইলিং এর জন্য এটা বাংলাদেশে পালসার এএস১৫০ এর চাইতে বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করবে।
লঞ্চিং এর আনুমানিক সময়ঃ অক্টোবর – নভেম্বর, ২০১৭ আনুমানিক মূল্যঃ ২,০০,০০০ – ২,৩০,০০০ টাকা নিজের অধিক গতি এবং ভালো মাইলেজ এর জন্য টিভিএস এপাচি আরটিআর বাংলাদেশে প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এছাড়াও এই বাইকটির আরেকটি সুবিধা হচ্ছে এর উচ্চতা, যার ফলে অনেক তূলনামূলক খাটো রাইডারও খুব সহজেই বাইকটা রাইড করতে পারেন । বর্তমানে টিভিএস ইন্ডিয়া ভারতে নতুন TVS Apache RTR 160 2018 মডেল এর টেস্ট করছে।
আমরা নিশ্চিত নই যে টিভিএস বাংলাদেশ কি সেই বাইকটির জন্য অপেক্ষা করবে নাকি তারা টিভিএস এপাচি আরটিআর ১৬০ এর বর্তমান মডেলই বাংলাদেশে লঞ্চ করবে, তবে আমাদের অনুমান হচ্ছে টিভিএস এপাচি আরটিআর ১৬০ ২০১৭ মডেল এই বছরের শেষের দিকেই বাংলাদেশে লঞ্চ করা হবে।
লঞ্চিং এর আনুমানিক সময়ঃ আগস্ট, ২০১৭ আনুমানিক মূল্যঃ ৫,৪০,০০০ – ৫,৬০,০০০ টাকা Yamaha R15 V3 বাংলাদেশে ইয়ামাহা এর এর একমাত্র পরিবেশক এসিআই মোটরসের দ্বারা লঞ্চ হবে না। তবে, ERS Global, একটি মোটরসাইকেল আমদানীকারক কোম্পানি, ইয়ামাহা আর১৫ ভি৩ বাংলাদেশে আমদানী করবে।
Yamaha R15 V3 এর সমস্যা হচ্ছে এটা ১৫৫.১ সিসি। ফলে, যদিও বাংলাদেশে স্যাম্পল হিসেবে এক ইউনিট আমদানী করা হয়েছে, আমদানীকারক নিয়মের বেড়াজালে বাইকটির কোনপ্রকার রোড পারমিট দিতে পারছে না। আমরা আশা করবো যে কেবলমাত্র আমদানীকারকেরাই নয়, বরং এসিআই মোটরসও বছরের শেষের দিকে এই বাইকটি বাংলাদেশে আনার ব্যবস্থা করবে।
লঞ্চিং এর আনুমানিক সময়ঃ ডিসেম্বর, ২০১৭ আনুমানিক মূল্যঃ ৪,০০,০০০ – ৪,২৫,০০০ টাকা ইয়ামাহা আর১৫ ভি৩ এর মতোই ইয়ামাহা ভিক্সিয়ন একই ১৫৫.১ সিসির ইঞ্জিন ব্যবহার করে। সম্পোর্ন নতুন ডিজাইন এবং ১৯.১ বিএইচপি শক্তিসম্পন্ন ইঞ্জিনের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই এই বাইকটি বাংলাদেশের বাইকপ্রেমীদের আরাধ্য বস্তু হয়ে উঠেছে। এছাড়াও বাইকটিতে ভ্যারিয়েবল ভালভস একুটেশন এবং এসিস্ট স্লিপার ক্লাচ রয়েছে। ইয়ামাহা ভিক্সিয়ন বাংলাদেশে কারা আনবে বা কবে আসবে – এই সংক্রান্ত যেকোন সংবাদ পাবার সাথে সাথেই আমরা সকলকে জানিয়ে দেবো।
সত্যি বলতে, আমরা এই নতুন নিয়মটি নিয়ে সামান্য হতাশ। সরকার চাইলেই হয়তো মোটরসাইকেল এর সিসি লিমিট ২৫০ সিসি পর্যন্ত করতে পারতো। অনেকেই হয়তো বলবেন, যে আমাদের দেশে বেশি সিসির বাইক চালানোর রাস্তা নেই। কথাটা অনেকাংশে সত্যি হলেও, ২৫০ সিসি ইঞ্জিন এর সম্পূর্ন ৩০ বিএইচপি শক্তি সবসময় ব্যবহার করার প্রয়োজন সবসময় নেই। বেশি সিসির শক্তিশালি মোটরসাইকেল চালানোর জন্য বাংলাদেশের বাইকারদের উচিত তাদের রাইডিং স্টাইল পরিবর্তন ক্রয়া এবং তাদের সঠিক লাইসেন্স এবং সর্বদা সেফটি গিয়ার পড়া প্রয়োজন।
আশা করবো আগামী ২০১৮-২০১৯ বাজেটে সরকার ২৫০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল এর অনুমতি দেবে এবং একইসাথে বাংলাদেশে মোটরসাইকেল এর উপর ট্যাক্স কমানোর সিদ্ধান্ত নেবে। গত বেশকিছুদিন ধরেই বাইকপ্রেমীরা আমাদেরকে বাংলাদেশে ১৬৫সিসি মোটরসাইকেল এর দাম ও লঞ্চিং ডেইট সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। আমরা আশা করবো এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম হয়েছি। এছাড়াও আমরা একটা কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই যে এই লঞ্চিং ডেইট এবং আনুমানিক মূল্যগুলো কেবলমাত্রই অনুমান, যা ভারতীয় মোটরসাইকেল এর বাজার গবেষনা করে নিরূপন করা হয়েছে। যেকোন প্রকার ভুলের জন্য বাইকবিডি কোনপ্রকার দায় গ্রহন করবে না। সর্বদা হেলমেট পড়ে বাইক চালান, এবং গতিসীমার মধ্যেই থাকুন। হ্যাপি রাইডিং!