হোন্ডা কাব ৫০ বনাম হোন্ডা ওয়েভ আলফা - দুই প্রজন্মের লড়াই

This page was last updated on 18-Aug-2024 03:32am , By Shuvo Bangla

বর্তমানে অনেকে হোন্ডা কাব ৫০ দেখলে তাচ্ছিল্য করে। কিন্তু,  সকলের উচিত তাচ্ছিল্য না করে এই বৃদ্ধ অথচ এখনও সচল বাইকটিকে সম্মান দেওয়া । জেনে অবাক হবেন যে, ১৯৫৮ সালে তৈরী এই ছোট মোটরসাইকেলটি বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত একটি বাইক। হোন্ডা কাব ৫০ বাইকটি এখন পর্যন্ত প্রায় ৮৮ মিলিয়ন ইউনিট বিক্রি হয়েছে!  ৫০ বছর আগের তৈরী এই বাইকটি এখনও তার সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এর দীর্ঘস্থায়ীত্ব অত্যন্ত বেশি, দেখভাল করতে কোন ঝামেলায় নেই-তার ওপর যেকোন রাস্তায় চলার জন্য উপযোগী একটি বাইক হোন্ডা কাব ৫০। খুব অল্পদিনেই বাইকটি ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়ার মত দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। প্রচুর বিক্রি হওয়ায় সইচিরো হোন্ডা নিজে এর তদারকি শুরু করেন। ক্রেতাদের প্রতিক্রিয়া ও মতামতের ভিত্তিতে এর ইঞ্জিনকে আরও উন্নত করা হয়। রাস্তা, মাঠ, ধুলো, কাদা, বৃষ্টি, অতিরিক্ত তাপমাত্রা, তুষার কোন কিছুই এর গতি রোধ করতে পারে নি। 

honda-kab-50-bnam-h

ডিসকাভরী চ্যানেল একে নিয়ে অনুষ্ঠান করেছে ২০০৬ এ “গ্রেটেস্ট এভার সিরিজ” শিরোনামে। একে নিয়ে গানও হয়েছে ১৯৬৪ সালে, যার নাম “লিটল হোন্ডা”। আরও কোন মোটরবাইক নিয়ে এমনটা হয়েছে কিনা বলে আমার জানা নেই। বিখ্যাত ব্রিটিশ সংবাদ পত্র এর বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছে, “দুনিয়ার সবচেয়ে মহান যন্ত্র: হোন্ডা কাব ৫০ সৌন্দর্য আর দীর্ঘস্থায়ীত্বের প্রতীক-একে একটি খালে ফেলে দিন, ১০ বছর পর এটাকে পানি থেকে উঠিয়ে চালানো শুরু করুন-দেখবেন ঠিকই চলছে।”

হোন্ডা ওয়েভ আলফা এর সর্বশেষ বিক্রয়মূল্য দেখতে এখানে ক্লিক করুন 

honda-wave-alpha-specification

এই হোন্ডা সুপার কাব সিরিজের বেশ কয়েক রকম সিসি’র বাইক আছে এবং এখনও এটি ১৫ টি দেশে তৈরী হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এই সিরিজের বাইকগুলো এখনও দেখা যায় না। তাহলে এখন কথা হচ্ছে, বর্তমান প্রজন্ম কি হোন্ডা কাবের স্বাদ অনুভব করতে পারবেনা? না, দু:খ পাওয়ার কিছু নাই। হোন্ডা বর্তমান প্রজন্মের জন্যে নিয়ে এসেছে হোন্ডা ওয়েভ আলফা। তাহলে দেখা যাক বর্তমান প্রজন্মকে হোন্ডা কি উপহার দিয়েছে - হোন্ডা ওয়েভ আলফা বাংলাদেশে আসার যদিও অনেক বছর হয়নি তবু বলবো এর স্থায়িত্ব হোন্ডা কাব ৫০ এর তুলনায় কোন অংশে কম হবে না।   তাছাড়া এর যন্ত্রাংশ বেশি শক্তিশালী এবং আরও উন্নত। এখন দেখা যাক হোন্ডা সুপার কাব আর ওয়েভ আলফা যন্ত্রাংশের তুলনা মূলক বিশ্লেষণ:

 

honda-wave-alpha-test-ride

DescriptionHonda Wave AlphaHonda Super 50 CUB
Weight98kg itself69 kg
Fuel capacity3.6 liters3.0 liter
engine4 strokes, 1 cylinder, air-cooled, OHC4 strokes, 1 cylinder, air-cooled, OHC
Cylinder Capacity97.10 cc49.5 cc
Maximum power  6.84 HP (5.2 kW)) @ 8000 RPM3.6 kW/4.8 hp@10000rpm
Maximum torqueNm 7.34 / 5,500 rounds / minute
Engine Oil capacity  0.9 liter
Starting systemElectric / Pedal footPedal foot
Transmission4 speed3 speed
SuspensionTelescopic (front), Twin Shocks (rear)Swing arm
BrakeExpanding Drum in both wheelDrum, 110 mm
Front Wheel2.25-172.25*17
Rear Wheel2.25-172.50*17
Fuel Consumption55 km110 km

হোন্ডা এভ আলফা এর টীম বাইকবিডি রিভিউ দেখতে এখানে ক্লিক করুন

 

honda-cub-50-vs-honda-wave-alpha

শহরের ভীড়ে হোন্ডা ওয়েভ আলফা চালানোর মজাই আলাদা। এর টর্ক (টেনে নেওয়ার শক্তি) বেশি হওয়ায় চট করে গতি তোলা যায়। আর যেহেতু এটি বেশ স্লিম ফিগারের তাই খুব সরু গলি দিয়েও সহজেই বের হওয়া যায়। এর ব্রেকিং বেশ ভাল। ইঞ্জিন ব্রেকও ভালয় কাজে লাগে। হোন্ডাওয়েভআলফা সর্বোচ্চ গতিবেগ ১০২ কি:মি:; তবে ৮৫ পর গতি তুলতে বেশ সময় লাগে। এর ওজন কম বলে অনেক ১০০ সি.সি মোটরসাইকেলই এর কাছে হার মানতে বাধ্য হয়।

Honda Wave Alpha Test Ride Review By Team BikeBD

https://www.youtube.com/watch?v=heFNuzyXujo উভয় বাইকেরই ক্লাচ সিস্টেম হচ্ছে অটো। এরমানে হচ্ছে গিয়ার শিফটিং এর সময় আপনাকে পুরোপুরি থ্রটল কমিয়ে দিতে হবে। হেডলাইট থ্রটল কমানো বাড়ানোর উপর নির্ভরশীল। ডাইরেক্ট লাইট হলেই হয়ত ভাল হতো। সেই সাথে এর ফুয়েল ক্যাপাসিটি বাড়ানো দরকার ছিল। সবমিলিয়ে বলতে পারি দৈনন্দিন কাজের জন্য এই বাইক খুবই উপযোগী। আর এর দীর্ঘস্থায়ীত্ব সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নাই। ধরা যায় এর প্রথম প্রজন্মের হোন্ডা কাব ৫০ এর সব গুনাগুনই এর মধ্যে বিদ্যমান। আশা করা যায়, এর পূর্বপুরুষ অর্থাৎ হোন্ডা কাব ৫০ এর মতো হোন্ডা ওয়েভ আলফাও নিজের বংশের মান-মর্যাদা ধরে রাখতে সক্ষম হবে। লেখক: মুহাম্মাদুল্লাহ চৌধুরী