লিফান কেপি১৫০ - ৩০ হাজার কিমি টেষ্ট-রাইড রিভিউ

This page was last updated on 06-Jul-2024 08:16am , By Shuvo Bangla

লোকমুখে বেশ প্রচলিত একটা যায় যে চায়না বেশী দিন যায়না; আর বাইকের ক্ষেত্রে প্রায়ই এই উক্তির সম্মুখীন হতে হয় যে চায়নিজ বাইক ঠুনকো জিনিষ আর মোটেও বেশী দিন টিকেনা। অথচ যে ব্যাক্তিটি এই মন্তব্য করছেন প্রায়ই দেখা যায় তার হাতের ইলেকট্রনিক গ্যাজেট, পরিধেয় পোশাক সহ অনেক কিছুই হয়তো চায়নায় তৈরী। তাহলে চায়নীজ বাইক কি দোষ করলো। তবে হ্যাঁ বিষয়টি তে আসলেই কিছু সত্যতা আছে। কারন কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের সস্তা বাজেটে তৈরী নিম্নমানের পন্য ও বাইক বাংলাদেশের বাজারে আনার কারনেই চায়নীজ বাইক নিয়ে আমাদের অনেকের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। তবে আমাদের টীম-বাইকবিডির প্রায় ৩০ হাজার কিমি টেষ্ট-রাইডের পর সম্পূর্ন চায়নীজ বাইক লিফান কেপি১৫০ নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতাটুকু এপর্যন্ত সম্পূর্ণ ভিন্ন।। চলুন তাহলে আমাদের ঘটনা বহুল লিফান কেপি১৫০ ৩০ হাজার কিমি টেষ্ট-রাইড রিভিউ এর গল্পে ঢুকে পড়ি।

Lifan KP 150 এর ভিডিও রিভিউ

আপনারা জানেন লিফান কেপি১৫০ একটি দৃষ্টিনন্দন আর বেশ আগ্রাসী স্পোর্টি লুকের বাইক। এর চমৎকার ডিজাইনের কাউলিং যুক্ত ফুয়েল ট্যাংক, ফাঁপানো একজস্ট, Y শেপের সিলভার কালার সাইড প্যানেল, সেগমেন্টেড আরামদায়ক সিট; সব মিলিয়ে বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ ডিজাইনের বাইক। আর বাইকটির হেডলাইটের নীচে দুটো নীল রঙের পার্কিং লাইট রয়েছে, যা সন্ধায় অথবা রাতে আনেকটা এলিয়েন লুক দেয়।

এছাড়াও বাইকটির দুই হ্যান্ডেলবারে বসানো কন্ট্রোল সুইচ গুলো যথেষ্ট ভালো মানের। বাইকটির রাইডিং পজিশন আপ-রাইট, আর স্যাডল-হাইট একটু বেশি। বাইকটিতে রয়েছে ১৪৯সিসির সিঙ্গেল সিলিন্ডার এয়ার-কুলড ফোর-স্ট্রোক ইঞ্জিন, যা কিনা ৮৫০০আরপিএম এ প্রায় ১২.৮বিএইচপি সর্ব্বোচ্চ শক্তি আর ৬০০০আরপিএম এ সর্ব্বোচ্চ১২.০এনএম টর্ক উৎপাদন করতে পারে। পাওয়ার আর টর্ক রেটিং দেখে অনেকের মনে হতে পারে লিফান কেপি১৫০ কি আর করতে পারে? সেক্ষেত্রে উৎসাহীদের জন্য আমন্ত্রন রইলো বাজারের অন্যতম দ্রুতগতির বাইক টিভিএস অ্যাপাচী আরটিআর এর সাথে লিফান কেপি১৫০ এর একটা ড্রাগ রেস দেয়ার জন্যে।

Also Read: ২ লক্ষ টাকার মধ্যে লিফান বাইক এর দাম | বাইকবিডি September 2023

আমাদের টেষ্ট রাইডের লিফান কেপি১৫০ টির পথযাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের ১৮ই জানুয়ারী, যখন এটি রাসেল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড এ এ্যাসেম্বেল করা হয়েছিল। মাত্র ২০০কিমি বয়সে এটি এর প্রথম দীর্ঘ ট্যুরের জন্য চট্টগ্রামের পথে নামে। সম্পূর্ণ নতুন ইঞ্জিন নিয়ে বাইকের পূর্ন সক্ষমতা প্রদর্শন করা কঠিন হলেও সেই ট্যুরে বাইকটি অন্যান্য ভারতীয় ও জাপানী বাইকের সাথে একই কাতারে লেগে ছিল।

ঠিক তার দুদিন পরেই বাইকটি সেইন্টমাটিনের সমুদ্র-সৈকতের লবনাক্ত এলাকায় চালিয়ে দেখা হয়। পরীক্ষাটি সচেতনভাবেই করা হয়েছিল যাতে লবনাক্ত পরিবেশ আর পানিতে বাইকটির বিশেষ যন্ত্রাংশ সমূহে তথা ইঞ্জিনে কতটা ক্ষতি করতে পারে আর এর সহনক্ষমতাই বা কেমন। এছাড়াও শুরু থেকেই নানা রকম পরীক্ষার মাধ্যমে ধারনা পাবার চেষ্টা করা হচ্ছিল যে বাইকটির ক্লাচ-প্লেট, গিয়ার, সুইচ আর কেবল সমূহ কতটা মানসম্পন্ন। আর তা অন্তত ২৫হাজার কিমি পর্যন্ত মাত্রাতিরিক্ত অত্যাচারের চাপ নিতে পারবে কিনা। কেননা নিশ্চিত হবার পরেই না হয় বলা যাবে এই চায়নীজ বাইক আসলেই মান-সম্পন্ন। তাই ঠিক তার পরের দিনই টেকনাফ হতে বান্দরবন হয়ে ঢাকা প্রায় ৫০০কিমি একটানা বাইকটি চালানো হয়।

সেই পরীক্ষামূলক লম্বা ট্যুরে লিফান কেপি১৫০ এর সবকিছুই অত্যন্ত উপভোগ্য ছিল আর আমরা বেশ পরিস্কার ধারনা পেয়েছিলাম যে বাইকটি নিয়ে আশা করার অনেককিছুই আছে। এর কয়েকদিনের বিরতির পর আমরা টীম বাইকবিডি টেষ্ট-রাইড রিভিউ এর জন্য বাইকটি পাই, আর প্রায় ২০০০কিমি বয়সে বাইকটি আমাদের টেষ্ট-রাইডার ওয়াসিফ আনোয়ার এর কাছে দেয়া হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরীক্ষার জন্য। তিনি বাইকটি নিয়ে তারপর একেরপর এক স্মরনীয় কিছু স্ট্রেসফুল ট্যুর সম্পন্ন করেন। প্রথমবার তিনি লিফান কেপি১৫০ নিয়ে সিলেট ট্যুরে যান। আর সিলেটের জাফলং বাইপাস সড়কে কেপি১৫০ দিয়ে ১২৬কিমি/ঘন্টা গতি তোলেন। এই ট্যুরের ছয়মাস পরেই তিনি আরো একটি বড় ও স্ট্রেসফুল ট্যুরে যান যেটা ছিল ঢাকা-বিছানাকান্দি-ঢাকা প্রায় ২০ঘন্টায় ৬০০কিলোমিটারএর ট্যুর। এই ট্যুরে লিফান কেপি১৫০ এর সাথে ইয়ামাহা এফজেডএস, হোন্ডা ট্রিগার ও সুযুকি জিএস বাইক ও ছিল। ফলে একই সাথে পাশাপাশি তুলনামুলক বিচারের সুযোগ হয়েছিল, আর কেপি১৫০ অন্যান্য বাইকগুলোকে পিছনে লেগে থাকার জন্য তাদের সামর্থের সর্বোচ্চ ব্যবহারে বাধ্য করেছিল।

এর সাথে সাথেই আমরা বাইকবিডি ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছিলাম যে লিফান কেপি১৫০ যথেষ্ট সামর্থসম্পন্ন একটি বাইক। আর বাইকটির বিশ হাজার কিমি এর ইঞ্জিন ওয়ারেন্টি পার করা সামান্য বিষয় মাত্র। কিন্তু আমাদের রাইড-ফ্রিক টেষ্টরাইডার ওয়াসিফ আনোয়ার বাইকটিকে এর সহনক্ষমতার সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত চালিয়ে দেখতে চাইলেন। তাই ২০১৪ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর তিনি সীমানার খোঁজে বেড়িযে পড়লেন যেটা তার নিজেরতো বটেই উপরোন্ত কেপি১৫০ এর সামর্থ যাচাইয়ের মাহেন্দ্রক্ষন ছিল। কেপি১৫০ তখন কেবল ৮০০০কিমি ছুঁই ছুঁই, আর ওয়াসিফ আনোয়ার একটানা চালিয়ে ২৪ ঘন্টায় ১১৫০কিমি এর রাইড শেষ করেন। এই রাইডে ঢাকা থেকে শুরু করে তিনি উত্তরবঙ্গের বাংলাবান্ধা সহ কয়েকটি জেলার উপর দিযে আবারো ঢাকায় ফেরত আসেন।

এই ট্যুরের অভিজ্ঞতায় তিনি জানান যে বাংলাবান্ধার ৪৮কিমি ফাঁকা মসৃন রাস্তায় সর্বোচ্চগতিতে চালানোর সময় তিনি কেবল ট্যাপেট এর বাড়তি গুঞ্জন পেয়েছিলেন, তবে ইঞ্জিন নিয়ে কোন প্রকার সমস্যা অনুভব করেননি। আর তিনি নিশ্চিত করেছেন যে এই চরম স্ট্রেসফুল ট্যুরে তিনি মেরূদন্ডে, কাঁধে অথবা হাতে কোন ব্যথা অনুভব করেননি। তবে পেছনের সাসপেনশনের অল্প নমনীয়তার কারনে উচ্চগতিতে ভাঙ্গা রাস্তা ও পাথরের উপর দিয়ে ধেয়ে চলার সময় ঝাঁকুনি অনুভব করেছেন।

এরপর ওয়াসিফ আনোয়ার সমুদ্র-তট, সমতল আর অফ-ট্রাকে তার চালনা ও নিরীক্ষা শেষ করে পাহাড়ী রাস্তার দিকে লিফান কেপি১৫০ নিয়ে অগ্রসর হন। পাহাড়ী পথের ট্যুরে তিনি প্রথমে খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি-বান্দরবন এলাকা ও পরে রাঙ্গামাটির সাজেকে ভ্রমন করেন। দুটো ট্যুরেরই অভিজ্ঞতায় তিনি বলেন উচু পাহাড়ী রাস্তায় বাইকটি একদম ভারসাম্যপূর্ণ ছিল। আর এর সামঞ্জস্যপূর্ণ গিয়ার রেশিও এর কারনে বাইকটির পাহাড়ে আরোহনের ক্ষমতাও উপভোগ করার মতোই অসাধারন ছিল। আর কার্যকরী টায়ার গ্রিপের কারনে এর পাহাড়ী রাস্তায় উচ্চগতিতে কর্ণারিং ও অসাধারন ছিল। সেইসাথে পাহাড়ী ঢালে নেমে আসার সময়ে ব্রেকিং ও ছিল চমৎকার।

এইসব রোমাঞ্চকর দূর্বার ট্যুর আর সময়ের সাথে সাথে বাইকটি প্রায় ২৫ হাজার কিমির কাছাকাছি এসে বেশ খানিকটা পুরোনো হয়ে গেল। কেননা এতে ইচ্ছেকৃত অত্যাচার যথেষ্ট পরিমানই ছিল, আর তা ছিল কেবল বাইকটির সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্যেই। ফলে দেখা গেল টপ স্পিড খানিকটা কমে গেল, প্রতিবার ইঞ্জিন ড্রেইনের সময় তেল ১০০-২৫০মিলি কম পাওয়া গেল। তবে আমাদের টেষ্ট-রাইডার ওয়াসিফ আনোয়ার বাইকটির উপর চাপ আরো খানিকটা বাড়াতে চাইলেন, আর তা আরেকটি একট্রিম ষ্ট্রেসফুল লঙ-রাইডের মাধ্যমে। আর তার ২০১৪ সালের ৫ই সেপ্টেম্বরে করা ২৪ঘন্টার এক্সট্রিম রাইডের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আবারো পথে নামলেন। আর তা ঢাকা-বাংলাবান্ধা-ঢাকা রুটে। এবার তিনি লিফান কেপি১৫০ দিয়ে মাত্র ১৫ ঘন্টায় ১০০০ কিমি রাইড সম্পন্ন করেন।

ওয়াসিফ আনোয়ারের ভাষায়, “আমি সত্যিই আবাক হয়েছিলাম যে বাইকটি এই পরিমান নিষ্পেশন ও অত্যাচার সহ্য করে টিকে ছিল। আমি তো ভেবেছিলাম এটাই হবে এই কেপি১৫০ এর শেষ যাত্রা”। এই ট্যুরের পরও বাইকটি অনেক ট্যুর ও টেষ্ট ইভেন্ট পার করেছে, আর প্রায় ৩০ হাজার কিমি পার করেছে। তবে শেষ পর্যন্ত কেবি-রাইডার দের ষ্টান্ট-শো এর পর হার্ট সাজারী তথা পিষ্টন, ভালভ প্রভৃতি বদলাতে হয়েছে। তবে এখনো বাইকটির আরো পথচলা বাকি…


বাইকটির ৩০ হাজার কিমি চলা পর্যন্ত বদলানো যন্ত্রাংশের তালিকা

  • ব্যাটারী-১ টি
  • ব্রেক সু-৩ বার (সামনের আর পেছনের)
  • ব্রেক ডিস্ক-১ বার
  • এক্সেলাটের কেবল-১বার
  • চেইন স্প্রোকেট-২ বার (১৪ হাজার ও ২৫ হাজার কিমিতে)
  • হর্ণ-১ বার
  • স্পার্ক প্লাগ ও এয়ার ফিল্টার- ১ বার (১৫ হাজার কিমিতে)

বাইকটির টেষ্ট-রাইডার ওয়াসিফ আনোয়ার বাইকটিতে কোনরকম টেকনিক্যাল মডিফিকেশন করাননি। তবে বাইকটির অন্যতম সুবিধাজনক দিক হলো এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ হোন্ড সিবি ইউনিকর্ন এর সাথে মেলে। লিফান যদিও এর বাহ্যিক চেহাড়া কারো সাথে মিলিয়ে তৈরী করেনি তবে এর বেশ কিছু যন্ত্রাংশ যেমন চেইন স্প্রোকেট, এয়ার ফিল্টার, সাসপেনশন, প্লাগ অন্য জাপানী বাইকের সাথে মাপে মিলে যায়।

ওয়াসিফ আনোয়ারের ভাষায়, লিফান কেপি১৫০ এর সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হলো এর এক্সিলারেশন। আর ত্বড়িত-গতি শব্দটাও এর জন্য আক্ষরিকভাবে প্রযোজ্য।  আর এর ব্রেক এর লাগাম লাগানোর জন্যই তৈরী; আর সেটা বাজাজ পালসার অথবা অ্যাপাচী আরটিআর এর চেয়ে অনেক দ্রুত ও কার্যকরীভাবে কাজ করে।

লিফান কেপি১৫০ এর সার্বিক মূলায়ন:

  • বেশ চমৎকার স্টাইলিশ লুক, সুন্দর গ্রাফিক্স আর সুন্দর ডিজাইন। পুরো বাইকের বাহ্যিক ফিনিশিঙ যথেষ্ট ভালো।
  • অনেক আকর্ষনীয় বৈশিষ্টপূর্ণ; যেমন: দুচাকাতেই ডিস্ক ব্রেক, পেছনে মনো সাসপেন্শন, ফাঁপানো একজষ্ট, টিউবলেস টায়ার, বৈশিষ্টপূর্ণ সম্পূর্ণ ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট প্যানেল।
  • অসাধারন এক্সিলারেশন আর টপ স্পিড, যা কিনা এর সাথের প্রতিযোগীদের ড্রাগ রেসে হারিয়ে দেবে।
  • পরিমার্জিত ইঞ্জিন; এমনকি উচ্চগতিতে দীর্ঘ সময় চালালেও কেবলমাত্র সামান্য ঝাঁকুনি দিতে পারে। আর ৪৫০০ আরপিএম এ ইঞ্জিন খুব চুপচাপ থাকে তাবে উচ্চ আরপিএম এ আগ্রাসী ভাল্লুকের মতো চমৎকার ভারী আওয়াজ করে।
  • উচ্চ গতি ও এক্সিলারেশনের তুলনায় অপেক্ষাকৃত ভালো মাইলেজ দেয়।
  • বাইকটির হর্ণ মোটেও ভালো না। ডাবল হর্ণ হলে ভালো হতো।
  • এয়ার ফিল্টারের অবস্থানগত কারনেই হয়তো খুব তাড়াতাড়ি তা ময়লায় ভরে যায়।
  • হ্যান্ডেলবারের ঘুর্ণনসীমা বেশ চাপা; আরো খানিকটা বিস্তৃত হলে শহরে চলার জন্য আরো ভালো হতো।
  • বাইকটিতে কোন কিকার নেই, কেবলমাত্র সেলফ স্টার্টার রয়েছে।
  • চেইন স্প্রোকেট বেশ খানিকটা দুর্বল মনে হয়েছে; কেননা তা ১৪-১৫ হাজার কিমিতেই বদলাতে হয়েছে।
  • তবে ১৩৪ কেজির হালকা ওজন আর ১৫/৪৫ দাঁতের স্প্রোকেটের কারনে এতে গতি তোলা সহজ হয়েছে।
  • খুচরা যন্ত্রাংশ রাসেল ইন্ডাষ্ট্রিজ এর সব শো-রুমে পাওয়া যায়। আর যে কেউ চাইলে অন্য বাইকের চেইন স্পোকেট, প্লাগ, ব্রেক প্যাড প্রভৃতিও এতে ব্যবহার করতে পারবেন।
  • পেছনের সাসপেনশন আরো খানিকটা ভালো হওয়া দরকার ছিল। কেননা আমাদের রাস্তাঘাট সবসময়ই ভাঙ্গা থাকে।

লিফান কেপি১৫০ এর কর্মক্ষমতার চিত্র:

  • সর্বোচ্চ গতি ১২৬কিমি/ঘন্টা। তবে টেষ্ট রাইডার ওয়াসিফ আনোয়ার বিশেষ কিছু সময়ে বাইকটি ১৩০কিমি/ঘন্টা পর্যন্ত গতি তুলতে পেরেছিল।
  • খুব আগ্রাসী রাইডিং এ বাইকটি ঢাকা শহরের রাস্তায় ৩৫-৩৮কিমি/লিটার মাইলেজ দেয়, তবে স্বাভাবিক চালনায় সহজেই ৪০-৪২কিমি/লিটার দেয়। আর হাইওয়েতে আমরা ৪২-৪৫কিমি/লিটার মাইলেজ পেয়েছি।

তো বন্ধুরা, আমাদের ৩০ হাজার কিমি লিফান কেপি১৫০ আর এর পথচলায় যে মানুষটি ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে ছিলেন সেই দুধর্ষ টেষ্ট রাইডার ওয়াসিফ আনোয়ার এর নিজ বক্তব্যেই তার লিফান কেপি১৫০ ৩০ হাজার কিমি টেষ্ট-রাইড রিভিউ এর গল্পটি শেষ করা যাক… আমি খুব সত্যিকার অর্থে বিশ্বাস করি যে লিফান কেপি১৫০ নি:সন্দেহে এর অর্থমূল্যের যথার্থ ব্যবহার। অনেকেই বলে থাকেন যে মেড ইন চায়না বেশি দিন যায়না; তাদের অবগতির জন্যই বলতে হয় যে বাজাজ, টিভিএস আর হিরো বাইকগুলোর অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ ও যন্ত্রাংশ চায়নায় উৎপাদিত ও সংযোজিত। আর লিফান চায়নার নিজস্ব ব্রান্ডেড বাইক; যা আমাদের বাজারের জন্য আনা ফ্রানটিক, সিজেড বা তথাকথিত চায়নীজ বাইক নয় যারা ভোক্তার বাইকের ১০ হাজার কিমি না চলতেই বাজার থেকে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলে। হ্যাঁ আমি স্বীকার করি যে এই বাইকগুলো বেশ যত্ন সহকারে মেইনটেইন করা দরকার, তবে একই কথা বাজারে প্রচলিত আন্যান্য বেশীরভাগ বাইকের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আর আমার মতে বাজারের আন্যান্য প্রচলিত ১৫০ সিসির বাইকগুলো এর থেকে অনেক বেশী কিছু যে দিবে তা কিন্তু নয়।