রানার চিতা এর মালিকানা রিভিউ : লিখেছেন মো. আরজু হোসেন
This page was last updated on 07-Jul-2024 03:01pm , By Shuvo Bangla
দীর্ঘ ৯ বছর ধরে প্রচেষ্টা করার পর আমি নিজের একটি বাইকের স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হই। এটাই আমার প্রথম বাইক। আমি বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে কিনে ছিলাম রানার চিতা। যদিও আমি রানার রয়েল প্লাস কিনতে চাচ্ছিলাম, তবে মায়ের রানার চিতা বাইকটাই বেশি পছন্দ হয়েছিলো। এটা আমার জন্য সত্যিই গর্বের যে আমার প্রথম বাইকটি মায়ের পছন্দে কেনা। চলুন শুরু করি আমার রানার চিতা বাইকের মালিকানা রিভিউ।
বর্তমানে বাংলাদেশে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেডের অন্যতম ফ্ল্যাগশিপ প্রোডাক্ট হচ্ছে রানার চিতা। বাইকটির বেশ কিছু ফিচার রয়েছে যা আমাকে আরো বেশি পরিতৃপ্ত করেছে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কেনো বাইকটি আমার এতো ভালো লেগেছে।
রানার চিতা এর গঠন ও আউটলুক
এই বাইকটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে এর আউটলুক। বাইকটি দেখতে সত্যিই চমৎকার। চিতা’র আয়তন হচ্ছে (দৈর্ঘ্য x প্রস্থ x উচ্চতা) ১৯৫০ মিমি x ৭৭০ মিমি x ১২৫০ মিমি। এর জ্বালানি ধারণ ক্ষমতা ১৩ লিটার, যার কারণে আমাকে ঘন ঘন পেট্রল পাম্পে যেতে হয় না।
Also Read: রানার লঞ্চ করেছে রানার বাইক আরটি
এর সামনে ও পিছনে উভয় চাকাতেই ড্রাম ব্রেক। সে কারণে পাগলের মতো না চালালে এর কন্ট্রোল নিঃসন্দেহে খুব ভালো। চাকাগুলো অ্যালয়ের। আর ১০০ সিসি বাইক হিসেবে এর ওজন মাত্র ৯৬.২ কেজি। অতিরিক্ত ফিচারের মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল স্পিড মিটার, ইমার্জেন্সি লাইট ইত্যাদি।
রানার চিতা এর ইঞ্জিন
এর ইঞ্জিনটি সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ৪-স্ট্রোক, এয়ার কুলড ও পেট্রল ইঞ্জিন। এর ডিসপ্লেসমেন্ট ১০০ সিসি। সর্বোচ্চ ক্ষমতা ৫.২ কিলোওয়াট @ ৮০০০ আরপিএম এবং টর্ক ৬.৫ নিউটন মিটার @ ৬৫০০ আরপিএম।
এর ৪টি গিয়ার রয়েছে, কিক ও ইলেকট্রিক স্টার্টিং। সিডিআই ইগনিশন ও অয়েট টাইপ ক্লাচ। এর মাইলেজ লিটারে ৫৫-৬৫ কিমি। আমি রানার চিতায় ঢাকা-কুমিল্লা মহাসড়কে পিলিয়ন নিয়ে সর্বোচ্চ ১০২ কিমি/ঘণ্টা গতি তুলেছি।
রানার চিতা নিয়ে ভ্রমণ
সিলেট, চাঁদপুর, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, ফেনী, ফরিদপুর, মাওয়া, সোনারগাঁও, ময়মনসিংহ, দোহার, বিক্রমপুর, নবাবগঞ্জ, মতলব, রামগঞ্জ, ভৈরব, গাজীপুর, পটুয়াখালী, টাঙ্গাইল ও শরীয়তপুর।
রানার চিতা এর মন্দ দিক
- ঢাকা শহরে চলার জন্য এটি খুবই ভালো একটি বাইক। কিন্তু হাইওয়েতে চলার জন্য এর সর্বোচ্চ গতি খুবই কম।
- পিছনের টায়ারটি চিকন, যার ফলে কর্নারিং করাটা সমস্যা হয়ে যায়।
- বিদ্যুতের তারগুলো ভালো না।
- বাইকের দৈর্ঘ্য খুব বেশি।
.
আমি যেভাবে রানার চিতা এর যত্ন নিই
আমি প্রতি শুক্রবার বাইকটি ধুয়ে ফেলি। প্রতি ৮০০ কিমি অন্তর ইঞ্জিন অয়েল পাল্টাই। এক মাস পর পর কার্বুরেটর পরিষ্কার করি। প্রত্যেক সপ্তাহে প্লাগ চেক করে পরিষ্কার করি। আমি এটা গর্ব করেই বলতে পারি যে, আপনি যদি যথাযথভাবে আপনার চিতার যত্ন নেন তাহলে আমার মতো আপনিও একদিন বলতে পারবেন, ‘এটা নামে চিতা না, দৌড়ায়ও চিতার মতো।’ যাহোক, আমার রিভিউয়ের শেষ পর্যায়ে আমার রানার চিতা এর কয়েকটি তথ্য জানাচ্ছি :
# কেনার তারিখ : ০৪/০৪/২০১৬ বিকাল সাড়ে ৪টা
# এ পর্যন্ত চালিয়েছি : ১৬০০০+ কিমি
#ক্রয়মূল্য : ৮২,০০০ টাকা [ততকালীন বিক্রয়মূল্য]
রিভিউটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। সাবধানে বাইক চালান। বাইক চালানোর সময় হেলমেট ও গ্লাভস পড়ুন।
লেখকঃ মো. আরজু হোসেন