মোটরসাইকেল তেল বেশি খাওয়ার কারন । সমাধান কি ? জানুন বিস্তারিত

This page was last updated on 07-Jul-2024 03:46am , By Ashik Mahmud Bangla

হঠাৎ করে মোটরসাইকেল তেল বেশি খাওয়ার কারন কি? এমন প্রশ্ন আমাদের সামনে প্রায় আসে।  মেকানিকের কাছে গিয়ে কার্বুরেটর থেকে তেল কমিয়ে দিবেন ভাবছেন? ভুল সিদ্ধান্ত। বা মেকানিকের কাছে নিয়ে যাবার পরও মাইলেজ কমই থাকছে? সমস্যা কার্বুরেটরে নয়, অন্য কোথাও।

motorcycle low mileage

মোটরসাইকেল তেল বেশি খাওয়ার কারন । সমাধান কি ?

মোটরসাইকেলে প্রত্যাশিত মাইলেজ পাওয়ার জন্যে কিছু টিপস শেয়ার করছি আজকে। আপনি যদি এইগুলো মেনে চলেন এবং আপনার বাইকের ইঞ্জিনে যদি কোন সমস্যা না থাকে তাহলে আপনি বাইক থেকে ভালো মাইলেজ পাবেন।

১: চেক করুন মোটরসাইকেলের চাকা freely ঘুরছে কিনা। অনেক সময় ব্রেক অতিরিক্ত টাইট থাকার কারনে চাকা জ্যাম হয়ে থাকে। আবার চাকার বেয়ারিং ভেংগে গেলেও চাকা জ্যাম হয়ে থাকে। আর চাকা জ্যাম থাকলে একই গতিতে ইঞ্জিনে বেশি চাপ বহন করতে হবে। আর ফলাফল স্বরুপ মাইলেজ কমে আসবে।

যদি চাকা জ্যাম থাকে তাহলে অবশ্যই তার সমাধান করুন। অনেক সময় চাকার মেইন নাট মাত্রাতিরিক্ত টাইট করার কারনেও চাকা জ্যাম হতে পারে। সাবধান থাকুন কারন অতিরিক্ত টাইট নাট যেকোন সময় গোড়া থেকে ভেঙ্গে আসতে পারে। যার ফলাফল শুভ হবেনা।

২: চেইন অতিরিক্ত টাইট থাকাও চাকা জ্যামের কারন। সেই সাথে চেইন নিয়মিত পরিস্কার না করা বা লুব্রিকেন্ট না দেয়া হলেও মাইলেজে কিছু কমতি দেখা যায়। ম্যানুয়ালে উল্লেখিত মাত্রায় চেইন টাইট রাখুন।

নোটঃ অতিরিক্ত টাইট চেইন থাকলে স্প্রোকেট খুব তাড়াতাড়ি ক্ষয়ে যায় আর চলন্ত অবস্থায় ছিড়ে যাবার সম্ভাবনাও থাকে।

৩: দূর্বল পিস্টন-রিং কম মাইলেজের আরেকটি কারন। এ সমস্যা থাকলে ইঞ্জিন অয়েল পিস্টন চেম্বারে (combustion chamber) এ চলে আসে আর পেট্রলের দাহ্যগুন কমিয়ে দেয়। ফলাফলঃ কম মাইলেজ + কম শক্তি।

৪: ভালভ ক্লিয়ারেন্স মাইলেজ ও শক্তি কম দেয়ার সবচেয়ে বড় কারন বলে আমি মনে করি। (সাধারনত মেকানিকরা একে টেপিট মিলানো বলে।) অতিরিক্ত টাইট ভালভ ইঞ্জিনের শব্দ কমিয়ে দেয় ঠিকই, কিন্তু টাইমিং চেইনের উপর এর প্রভাব পড়ে। এতে করে ইঞ্জিনের মধ্যকার ফ্রিকশন বেড়ে যায়। সহজভাবে বললে ইঞ্জিন সহজভাবে ঘুরতে বাধা পায়। এতে অতিরিক্ত জ্বালানী খরচ হয়। সেই সাথে টাইমিং চেইনটাও বেশিদিন টিকেনা।

একইভাবে বেশি ভালভ ক্লিয়ারেন্সের ক্ষেত্রে early অথবা late combustion হয় যা কাম্য নয়। সোজা কথা ভালব ক্লিয়ারেন্স যতটা নিখুঁত হবে, মোটরসাইকের পারফর্মেন্স এবং মাইলেজ ততটা বৃদ্ধি পাবে।

Also Read: REV Trading: মোটরসাইকেল এক্সেসরিজের নতুন শো-রুম!

৫: কার্বুরেটর। এইবার আসা যাক এখানে। হ্যা এটা দিয়ে তেল বাড়ানো কমানো যায়। কিন্তু এখানে যত কম হাত দিবেন ততই মঙ্গল। কার্বুরেটর এবং এর adjustment স্ক্রু গুলি অত্যন্ত sensitive হয়ে থাকে। অনভিজ্ঞ মেকানিক দ্বারা কখনও কার্বুরেটর টিউন করাবেন না। এতে এটি নষ্ট হবার সম্ভাবনা বাড়ে আর তখন উচ্চমূল্যে আরেকটি কেনা ছাড়া উপায় থাকেনা।

৬: কোম্পানি নির্ধারিত গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যাবহার করুন। এতে আপনার মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের স্থায়ীত্বও বৃদ্ধি পাবে।

৭: প্রস্তুতকারক কতৃক নির্ধারিত মাপের থেকে মোটা চাকা ব্যবহার করলে মাইলেজ কমে আসে।

৮: টায়ার প্রেশার প্রস্তুতকারকের পরামর্শ অনুযায়ী রাখুন এবং প্রতি দুই সপ্তাহে একবার চেক করুন

৯: উন্নতমানের স্পার্ক প্লাগ ব্যাবহার করুন। বাজারে ngk irridium plug পাওয়া যাচ্ছে এখন।

১০: এয়ার ফিল্টারের কথা একেবারেই ভুলে গেছিলাম। অবশ্যই মনে করে প্রতি সার্ভিসিং এ এয়ার ফিল্টার পরিস্কার করুন এবং নির্ধারিত সময় পর পর বদলে ফেলুন। একটি ময়লা হয়ে যাওয়া এয়ার ফিল্টার কম মাইলেজের অন্যতম প্রধান কারন।

এসব কারন ছাড়াও RPM অতিরিক্ত বাড়িয়ে রাখা, বার বার ব্রেক করে আবার গতি বাড়িয়ে চালানো, সিগনালে স্টার্ট বন্ধ না করা, নিম্নমানের পেট্রল/অকটেন ব্যাবহার প্রভৃতি কারনেও মাইলেজ কমে আসে। ভবিষ্যতে আরও কোন কারন মনে হলে জানানোর চেষ্টা করা হবে।

আপনার মোটরসাইকেলের যত্ন নিন। সেও আপনাকে সর্বোচ্চ পারফর্মেন্স দিবে।

ধন্যবাদ।

-Mahbub Alam Mithun