Yamaha MT 15 ১১,০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - ফয়সাল
This page was last updated on 31-Jul-2024 05:14pm , By Shuvo Bangla
আমি মাহমুদুল হাসান ফয়সাল। আমি ঢাকা রায়েরবাগ এলাকায় বসবাস করি । Yamaha MT 15 হচ্ছে আমার জীবনের প্রথম বাইক। এবং জীবনের প্রথম বাইক হিসেবে একটি স্পোর্টস বাইক অনেক কম মানুষ নেওয়ার সাহস করে।
Yamaha MT 15 ১১,০০০ কিমি মালিকানা রিভিউ
আমি যখন বাইকটি ক্রয় করি তখন আমি মাত্র বাইক চালানো শিখেছি ১ মাস হয়নি। আমি বিগত ৪-৫ বছর আমার অনেক বন্ধুকে বলি দোস্ত আমাকে বাইক চালানো শিখা কিন্তু খুব কম মানুষই আছে যে কিনা নিজের বাইক দিয়ে অন্যকে বাইক চালানো শেখাতে রাজি হয় ।
আমার এক ছোট বেলার বন্ধু যার সাথে আমি আর সে আমার সাইকেলে করে ঘুরেছি ওর সাথে হঠাৎ দেখা। আমার বন্ধু Apache RTR বাইক ব্যবহার করে। বন্ধুকে বললাম দোস্ত আমাকে তুই বাইক চালনো শিখাবি? ও বললো কবে শিখবি বল। হঠাৎ এক শুক্রবারে ওর কল আসে আর ও এসে আমাকে নিয়ে বাইক চালানো শিখতে চলে যায়। একটু একটু করে আমাকে বাইক চালানো শিখিয়েছে আমার সেই বন্ধু। বন্ধকে অনেক ধন্যবাদ ।
Also Read: ACI Motors Taking Pre-Booking Of Yamaha MT 15
এটলিস্ট কন্ট্রোলিং শেখার পর ১ মাসের মধ্যে আমার জীবনের প্রথম বাইক Yamaha MT 15 ক্রয় করি । Yamaha MT 15 আমার একটা স্বপ্নের বাইক যেইটা সত্যি করতে আমার আম্মুর অবদান অপরিসীম। প্রথমে আম্মুকে FZ-S v3 দেখাই কারন আমি ছোট থেকে FZ সিরিজের বাইকের ফ্যান। দেখতে কিছুটা ন্যাকেড স্পোর্টস এর মতো। কিন্তু ২য় অপশনে ছিলো Suzuki gixxer 155। এই ২টা বাইকের ছবির পাশেই ছিলো আমার কালো Yamaha MT 15 এর ছবি। আম্মু দেখে বলে এইটা কোন বাইক? আমি সব খুলে বললাম আর দাম বললাম। আম্মু বলে তাহলে ১মাস সময় দে। হঠাৎ ৮ই অক্টোবর ২০২০ এ সকাল ১২টার দিকে আম্মু বলে কিরে বাইক কিনবিনা? কবে যাবি? আমি বলি এখন বললে এখনি। সাথে সাথে চলে গেলাম ইউনিভার্স মটরসে।
Yamaha MT 15 Test Ride Review (5000 KM) -Team BikeBD
সেখানে গিয়ে আম্মুর পছন্দের Yamaha MT 15 metallic black বাইকটা দেখালাম। আম্মু বাইকটা দেখে অনেক পছন্দ করেছে। আর সেটাই হয় আমার জীবনের সব চেয়ে বড় মুহূর্তের মধ্যে একটি। বাইকের চাবি আমাকে যখন দেওয়া হয় তখন আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না এটা আমার বাইক। আমার বাইকের চাবি হাতে পাওয়ার পরে আম্মুর হাত দিয়ে বাইক স্টার্ট দেওয়াই। নতুন বাইকের একটা আলাদা ঘ্রান আছে যেইটা ভুলার মতো না। এর পর থেকে শুরু বাইক নিয়ে আমার জীবনের পথচলা। বাইক এর শো-রুম থেকে বের হয়ে সাথে সাথে যেয়ে একটা সার্টিফাইড হেলমেট ক্রয় করি । সাথে বাইকের নিরাপত্তার জন্য টুকটাক জিনিস ক্রয় করি। এরপর সব বন্ধু বড় ভাই মামা নানা সবাই দেখে বললো সুন্দর হয়েছে। সবার থেকে দোয়া নিয়ে বাইকের সাথে যাত্রা শুরু করি । অনেক কিছু ঘটে এই বাইক নিয়ে আমার জীবনে। যদি জীবনের সবচেয়ে আনন্দদায়ক কোনো মুহুর্ত থাকে সেটা হচ্ছে আমার বাইকের সাথে।
আমি আমার বাইকে একদম প্রথম থেকেই মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করতাম । প্রথমে আমি Repsol 10w40 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি । এরপর Mobil 1 সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করা শুরু করি ।
আমার বাইকের পারফর্মেন্স এর কথা আর কি বলবো। The master of torque। যতদিন যায় আমি Yamaha MT 15 চালানোর যেই আসল পাওয়ার সেটা ভালো মতো টের পাই। সিটি স্কিপিং, কর্নারিং, ক্লোজ কল বেস্ট এই বাইক দিয়ে। বাইকের টর্ক টা বেশি হওয়ার কারনে এইটার ইনিশিয়াল পাওয়ার আমার কাছে অন্য বাইকের তুলনায় একটু বেশি পাওয়ারফুল মনে হয়। It's like you can't beat this machine in the first । প্রথম দিকে আমার বাইকের মাইলেজ পেতাম ৪০ আর এখন পাচ্ছি ৩৭-৩৮ । এর থ্রটল রেস্পন্স এর কথা চিন্তা করলে মাইলেজ আমি মনে করি বেশ ভালো পাচ্ছি ।
২০১৮ তে যখন বাইকটি বাংলাদেশে প্রথম আসে তখন এই বাইকটির দিকে তাকিয়ে থাকতাম আর ২০২০ এ এসে এই বাইকটা আমার নিজের বাইক। স্বপ্ন সত্যি হয় এর বাস্তব প্রমান বুঝাতে পারলাম।
Yamaha MT 15 বাইকের কিছু সমস্যার কথা বলি -
- প্রথমতো এর পিলিওন সিট এর পজিশন। কারন পিছনে যে বসে সিট ছোট হওয়ার কারনে বসতে খুব সমস্যা অনুভব করে।
- এর পিছনের টেইল লাইটা যখনি পিলিয়ন নামতে যায় তখন ভেংগে যাওয়ার সম্ভাবনেন থাকে ।
- স্টক হর্নের সাউন্ড অনেক কম ।
Yamaha MT 15 বাইকের কিছু ভালো দিক এর কথা বলি -
- এই বাইকে কোন প্রকার ব্যাক পেইন নেই
- এর লুকস অসাধারন , বেস্ট ন্যাকেড স্পোর্টস বাইক ইন বিডি
- এর ইনিশিয়াল পাওয়ার বেশ ভালো ।
- একটা পারফেক্ট নেকেড স্পোর্টস বাইক ।
এই বাইকের ব্যাপারে যতো বলবো বলে শেষ করা যাবেনা । এইটাই ছিলো আমার বাইকের রিভিউ । চেষ্টা করেছি আমার অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করার । ধন্যবাদ ।