বাইক নিয়ে ভয়ংকর তিন্দু ভ্রমনের অভিজ্ঞতা - সৈয়দ শাহেদ

This page was last updated on 30-Jul-2024 09:38am , By Shuvo Bangla

তিন্দু বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলায় অবস্থিত। "তিন্দু " অনেকের কাছে এটা ভয়ংকর তিন্দু নামেও পরিচিত। থানচি থেকে ডিম পাহাড়ের গা ঘেষে সোজা ৭.৮ কিলোমিটার এর দূরত্ব নিয়ে সাঙ্গু নদীর তীরে চারদিকে পাহাড়ে ঘেরা ছোট্ট একটা পাহাড়ি গ্রাম তিন্দু।

বাইক নিয়ে ভয়ংকর তিন্দু ভ্রমনের অভিজ্ঞতা

তিন্দু গেইট

শুনতে মাত্র ৭.৮ কিলোমিটার হলেও পাহাড়ি রাস্তায় আমাদের মত শহুরে মানুষের ধারনা পালটে দেবার যথেষ্ট সক্ষমতা রাখতে পারে এই রাস্তা। ঢালু , পিচ্ছিল আর শুধুমাত্র ইট বিছানো এ রাস্তা অনেক অভিজ্ঞ বাইক রাইডাদের মনে ভয় এনে দিতেই পারে, তবে আমার এই লেখার অভিজ্ঞতা বর্ষা কালের , অন্য ঋতুতে কি রকম হয় তা জানা নেই!

অচেনা পথ হওয়ায় এ রাস্তার দৈর্ঘ্য মনে হচ্ছিল অশেষ! বিশেষ কারন বসত আমাকে তিন্দুতে নেমেই আবার সাথে সাথে উপরে যাওয়া লেগেছিলো। দ্বিতীয়বার যখন নামতে যাবো তখন ইতিমধ্যে সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত!

তিন্দু বান্দরবান

চারিদিকে অন্ধকার আর পাহাড়ি ঝি ঝি পোকা সহ নাম না জানা বিভিন্ন তীব্র শব্দে মনে হচ্ছিল আমার চলমান মুহূর্ত বাদে পুরো পৃথিবী মনে হয় থেমে আছে!!

Also Read: ঢাকা থেকে বান্দরবান, আলি কদম, ডিমপাহাড়, কক্সবাজার, টেকনাফ- প্রথম কিস্তি

আবারও ধীরে ধীরে নামলাম তিন্দুর বুকে। সাঙ্গুর খরস্রোতা পানির সাথে পাথরের সংমিশ্রণে যে স্রোতের শব্দের সৃষ্টি হয় তা তিন্দুর বুকে নেমে আসার পর মনে হচ্ছিল এতক্ষনের সকল কষ্ট মুছে দেবার জন্য এটাই যথেষ্ট। পাহাড়ি পরিবেশ উপভোগ করার জন্য একটা রাত সেখানে থেকেছি।

তিন্দু সাঙ্গু নদী

ফোনে নেটওয়ার্ক নেই! সোলার বিদ্যুৎতে আলো জ্বলছে, তাই অযথা ফোনের চার্জ নস্ট না করে অফ করে রেখে দিলাম। কত বছর পরে ফোন অফ করে নিশ্চিন্ত মনে আছি তা সঠিক জানা নেই। কিছুক্ষণ এভাবে চলার পরে বুঝতে পারলাম নেটওয়ার্ক বিহীন জীবন আমরা উপভোগ করতেই ভুলে গেছি।

কখনো নিজেদের মধ্যে হাসাহাসি, কখনো গান এর মাঝে পাহাড়ি দিদির হাতের ডিম ভুনা, আতপ চালের ভাত, আলুভর্তা, আর ডাল আমাদের আশার থেকেও বেশি পাওনা ছিলো। বাঁশের চাটাই দিয়ে তৈরি ঘরে ঘুমানোর ব্যাবস্থা হলো।

তিন্দু

শুয়ে শুয়ে অনুভব করলাম কোটি টাকার বাড়ীর থেকেও এতে শান্তির কোন কমতি নেই। এরপর পাহাড়ি নিরবতা। সুন্দর একটা রাত শেষ করে সকালে ঘুম ভাঙলো বৃষ্টির শব্দে! সব কিছু গুছিয়ে ফিরতে হবে এবার, তবে এই ঝুম বৃষ্টিতে এই রাস্তায় বাইক নিয়ে ফেরা এক প্রকার অসম্ভব!

Also Read: চন্দ্রঘোনা থেকে বগালেক - একদিনের দুঃসাহসিক ট্যুর!

দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে উপরের পাহাড়ের গায়ে লেগে থাকা মেঘ দেখছিলাম। স্থানীয় পাহাড়ি রাও নিষেধ করলো যেতে। অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই! অতঃপর দুপুরের দিকে রওনা দিলাম এবং ভিন্ন একটা শ্বাসরুদ্ধকর অভিজ্ঞতা শেষ করে ঠিক ভাবেই ফিরতে পেরেছি।

তিন্দু ভ্রমন

এ এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা ছিলো আমার জীবনে। আমি লেখক বা প্রো কোন বাইকার নই  নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম শুধু তাই সমালোচনা থেকে দূরে রাখবেন । ধন্যবাদ ।

লিখেছেনঃ সৈয়দ শাহেদ

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইক নিয়ে ভ্রমন কাহিনী লিখে পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।