বাইক চালানো রোগে আক্রান্ত হলিউড বলিউড এর নায়করা
This page was last updated on 28-Jul-2024 12:30pm , By Saleh Bangla
মোটরসাইকেল আমাদের অনেকের দৈনন্দিন চলাচলের বাহন, আবার অনেকের কাছেই এটা একটা প্যাশন। একটা শখ, লাখ টাকা দামের শখ। কারো কারো চোখে এটা আবার একটা রোগও বলা যায়। মা বাবার চোখে বাইকের প্রতি ছেলের প্যাশনটা একটা রোগ। আবার গার্লফ্রেন্ডের কাছে, স্ত্রীর কাছে বয়ফ্রেন্ড বা স্বামীর বাইকের প্যাশনটাও একটা রোগ। ছেলে বুড়ো সবাই এই রোগে যেকোনো সময় আক্রান্ত হতে পারে। কেউ হয়তো ছোটোবেলা থেকেই সিনেমা দেখে স্বপ্ন দেখেছে সেও একদিন টার্মিনেটর সিনেমার আর্নল্ডের মত বাইক চালাবে। অথবা ম্যাট্রিক্সের কিয়ানুর মত কিংবা ধুমের জন আব্রাহাম, ঋত্বিক রোশন এবং আমির খানের মত। কেউ আবার পঞ্চাশ পার করেও এই রোগে আক্রান্ত হয়।
বাইক চালানো রোগে আক্রান্ত হলিউড বলিউড এর নায়করা
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা কিয়ানু রিভসও এই রোগে আক্রান্ত। ২০০৭ সালে গার্ড হুলিঙ্গার নামক এক ব্যক্তির সাথে দেখা হয় রিভসের। রিভস তখন ভালো দেখে একটা কাস্টম বাইক খুঁজতেছিল। কোথাও মন মত পাচ্ছিলো না। দুজনে মিলে তখন নিজেরাই কাস্টম বাইক বানানোর জন্য ওয়ার্কশপ বানায়। গার্ড আর রিভস দুজনে মিলে ডিজাইন করে প্রতিটা বাইক বানায়। তাদের বানানো বেশিরভাগ বাইকই ক্রুজার টাইপের।
আসলে ক্রুজারের উপর রিভসের কিছুটা দুর্বলতা আছে। তাদের ওয়ার্কশপের নাম "Arch Motorcycles Company Ltd"। প্রতিটা মোটর সাইকেলের আলাদা আলাদা নাম দিয়ে বানায় ওরা। ব্র্যান্ডের নাম হয় "Arch"। সাধারণত ফরমায়েশি কাজ করে তারা। মানে কারো কাছ থেকে অর্ডার পেলে ওদের পছন্দানুযায়ী ডিজাইনে বানিয়ে দেয়। এ কারণে Arch ব্র্যান্ডের এই বাইক সাধারণ বাজারে পাওয়া যায় না। প্রতিটা বাইক বানাতে তাদের খরচ হয় ৭০-৮০ হাজার ইউএস ডলার। বিক্রি হয় ৮০-৯০ হাজার ডলারে।
অভিনয়ের বাইরে জনের সব থেকে বড় প্যাশন হলো বাইক। যখনই অবসর পান বেরিয়ে পড়েন বাইক নিয়ে। ইন্ডিয়ান সেলিব্রেটিদের মধ্যে সব থেকে বেশি বাইকের কালেকশনটাও জনেরই। তার এই প্যাশনের জন্য কাছের বন্ধু থেকে শুভাকাঙ্ক্ষীরাও তাকে বিভিন্ন অকেশনে বাইক কিংবা বাইকের এক্সেসরিজ গিফট করেন। নিজের কেনা প্রথম বাইক ছিল ইয়ামাহা রাজদূত ৩৫০। ইয়ামাহা আর ওয়ান, সুজুকি জিএসএক্স-আর ১০০০, ইয়ামাহা ভিম্যাক্স (দেসি বয়জ মুভিতে যেটা দেখিয়েছিল), ডুকাটি ডিয়াভেল, এপ্রিলিয়া আরএসভি৪ (এপ্রিলিয়া উপহার দিয়েছিল), রাজপুতানা লাইট ফুট, এবং ইয়ামাহা ভিম্যাক্স (৬০ তম অ্যানিভার্সারি উপলক্ষে ইয়ামাহা উপহার দিয়েছিল এটা) বর্তমানে তিনি ইয়ামাহা ইন্ডিয়ার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।
কিউবান বিপ্লবী নেতা আর্নেস্তো চে গ্যাভারাকে সবাই চেনেন। বেশিরভাগই তাকে চেনেন তার বিপ্লবের জন্য, একজন সল্য চিকিৎসক থেকে বিপ্লবী হওয়ার গল্প থেকে। কতিপয় লোক অবশ্য তাকে মডেল হিসেবেও চেনে। সেই কতিপয় লোকজন আবার টিশার্ট থেকে শুরু করে মাথার ব্যান্ডানায় পর্যন্ত চে'র ছবি ব্যবহার করেন। তবে যারা প্রকৃত চে'কে চেনেন তারা এটাও জানেন যে তিনি বাইকের উপর বসে পুরো দক্ষিণ আমেরিকা চষে বেড়িয়েছেন। তার এই কাহিনী নিয়ে মোটরসাইকেল ডায়ারি নামের একটা সিনেমাও আছে।
এছাড়াও সেলিব্রেটিদের মধ্যে বাইকের প্রতি প্যাশনেট আছে রায়ান গসলিং, বেন এফ্লেক, ব্র্যাডলি কুপার, ব্র্যাড পিট, অ্যাঞ্জেলিনা জুলি, মাইলি সাইরাস, ডেভিড ব্যাকহাম, জাস্টিন টিম্বারলেক, জর্জ ক্লুনি, অর্লান্ডো ব্লুম, জাস্টিন বিবার, মিশেল রডরিগেজ। ইন্ডিয়ানদের মধ্যে আছে সালমান খান (সুজুকি ইন্ট্রুডার এম১৮০০আরজেড, সুজুকি হায়াবুসা), জন আব্রাহাম (আগেরগুলো সহ কাওয়াসাকি নিনজা জিজিআর ১৪০০, মাহিন্দ্রা মোজো, সুজুকি হায়াবুসা) সঞ্জয় দত্ত (হার্লে ড্যাভিডসন ফ্যাটবয়), সাইফ আলি খান (হার্লে ড্যাভিডসন আয়রন ৮৮৩), আক্ষয় কুমার (হোন্ডা সিবিআর), আর মাধবন (বিএমডব্লিউ কে১৬০০জিটিএল), বিবেক ওবেরয় ( ডুকাটি ১০৯৮, ইয়ামাহা ভিম্যাক্স), গুল পানাগ (রয়াল এনফিল্ড বুলেট),
এম এস ধনি (বাইকের প্রতি তার প্যাশনেট নিয়ে এই লোকটার উপরও ফুল একটা ফিচার লেখা যাবে। বাইক চালানো তার সবথেকে বড় প্যাশন। তার কালেকশনে রয়েছে কনফেডারেট হেলক্যাট এক্স১৩২, হার্লে ড্যাভিডসন ফ্যাটবয়, ডুকাটি ১০৯৮, কাওয়াসাকি নিনজা এইচ২, ইয়ামাহা রাজদূত আরডি৩৫০, সুজুকি শোগান, রাজদূত), অজিত কুমার (দক্ষিণের অভিনেতা, ভেদালাম সিনেমার জন্য বাংলাদেশেও বেশ পরিচিত।
তার কালেকশনে রয়েছে এপ্রিলিয়া ক্যাপনার্ড, বিএমডব্লিও এস১০০০ আর আর, বিএমডব্লিও কে১৩০০ এস, কাওয়াসাকি নিনজা জিএক্স ১৪ আর), রনবিজয় সিং ( এমটিভি রোডিজের বদৌলতে অনেকেই তাকে চেনেন। তার রয়েছে কাওয়াসাকি নিনজা), শাহিদ কাপুর( হার্লে ফ্যাটবয়), উদয় চোপড়া (বিএমডব্লিও এস১০০০ আর আর) বাংলাদেশিদের মধ্যেও অনেকে আছেন। সেটা নিয়ে আরেকদিন লিখব। কষ্ট করে পুরোটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃ মাসুম আহমেদ আদি