প্রাত্যহিক চলাফেরায় বাহন হিসেবে মোটরসাইকেলের দুর্বলতাসমূহ

This page was last updated on 29-Nov-2023 02:03pm , By Saleh Bangla

মোটরসাইকেল রাইডিং বেশ এক্সাইটিং একটি একটিভিটি, যা ফান-রাইড বা অ্যাডভেঞ্চার রাইডের ক্ষেত্রেও অনন্য, যা কিনা অন্যসব স্পোর্টস ইভেন্টের সাথে ঠিক মেলানো যায় না। আর ফ্লেক্সিবল মোবিলিটির কারনে বিশ্বব্যাপী ব্যাক্তিগত বাহন হিসেবেও মোটরসাইকেল অত্যন্ত জনপ্রিয়। আর সবদিক বিচারে মোটরসাইকেলই প্রাত্যহিক চলাফেরায় তুলনামূলকভ‍াবে বেশি সময় সাশ্রয়ী এবং অর্থ-সাশ্রয়ী। সুতরাং, মোটরসাইকেল ব্যবহারের সুবিধা অনেক; কিন্তু আজ আমরা এখানে তুলে ধরবো প্রাত্যহিক চলাফেরায় বাহন হিসেবে মোটরসাইকেলের দুর্বলতাসমূহ। চলুন সেসব বুলেট আকারে দেখে নেয়া যাক।

প্রাত্যহিক চলাফেরায় বাহন হিসেবে মোটরসাইকেলের দুর্বলতাসমূহ

>> মোটরসাইকেল ব্যবহারের অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই বলতে হয়, মোটরসাইকেল একটি দুই-চাকার বাহন হওয়ায় এর ব্যালান্স, কন্ট্রোল, ও রাইডিং রাস্তায় ছুটে চলা অন্য যেকোনো যানবাহনের চেয়ে আলাদা। এটি ভালোভাবে ও নিরাপদে চালাতে গেলে অবশ্যই কিছু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হয় ও দক্ষতা বাড়াতে হয়; এবং সেইসাথে নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাইডিংয়ে নিবিষ্ট মনোযোগও ধরে রাখতে হয়। সোজা কথায়, এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ বাহন; তাই লোকেরা বলে গাড়ি চালানোর চেয়ে মোটরসাইকেল চালানো অনেক বেশি বিপজ্জনক।

>> মোটরসাইকেল রাইডিংয়ের ক্ষেত্রে প্রতিকুল আবহাওয়ার প্রভাব একটি গুরুতর সমস্যা। কেননা, মোটরসাইকেল হলো একটি খোলা বাহন যেখানে অন্যান্য গাড়ির মতো কোন কেবিন নেই বা কোন আবরণও নেই। তাই একজন রাইডারকে বৈরী আবহাওয়ার প্রভাব সরাসরি মোকাবেলা করতে হয়। যেকারনে বৃষ্টি, ঝড়, ঠান্ডা, তুষারপাত বা গরম সূর্যালোকের মতো আবহাওয়ায় একজন রাইডারকে বেশ সংগ্রাম করতে হয়। এছাড়াও ধুলো, ময়লা, এবং রোদে পোড়া মোটরসাইকেল রাইডারের জন্য একটি নৈমিত্তিক সমস্যা

>> মোটরসাইকেল তুলনামূলকভাবে বেশ ছোট একটি বাহন, যাতে অন্যান্য যানবাহনের তুলনায় রাইডার ও প্যাসেঞ্জার বসার ব্যবস্থা বেশ সীমিত। আর অন্যান্য যানবাহনের তুলনার এর স্টোরেজ ও ক্যারিং ক্যাপাসিটিও অনেক কম; যা কিনা প্রাত্যহিক চলাফেরায় মোটরসাইকেল ব্যাবহারের অন্যতম সমস্যা হিসেবে বিবেচিত। ফলে যারা সচরাচর গৃহস্থালি পণ্য বহন করেন তাদের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার বেশ অসুবিধাজনক।

>> মোটরসাইকেল আকারে বেশ ছোট হওয়ায় রাস্তায় তা রাস্তার ট্রাফিকে অন্যান্য যানবাহনের কাছে মোটামুটি কমই দৃশ্যমান হয়। ফলে মোটরসাইকেল হাইওয়েতে অন্যান্য দ্রুতগামী যানবাহন চালকদের কাছে প্রায়ই তেমন জোড়ালো মনোযোগ আকর্ষণ করেনা। তাই এসব রাস্তায় মোটরসাইকেল ব্যবহার বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।

>> মোটরসাইকেল রাইডিংয়ে ন্যূনতম নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য একজন রাইডারকে কমপক্ষে একসেট সাধারন সেফটিগিয়ার বা রাইডিংগিয়ার পরা আবশ্যক। এছাড়াও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ এবং মৌসুমী আবহাওয়ার সাথে মোকাবিলা করার জন্য একজন রাইডারকে সেই অনুযায়ী রেইনগিয়ার, শীতের পোশাক, বা গ্রীষ্মের পোশাকও পরতে হয়। ফলে মোটরসাইকেল ব্যবহারে একজন রাইডারকে বাড়তি পোশাক পড়ার ঝামেলায় যেতে হয় যা অন্যান্য যানবাহনে চড়ার জন্য করতে হয় না। 

>> একটি মোটরসাইকেলের বেশিরভাগ যন্ত্রপাতী এবং কন্ট্রোলিং বা হ্যান্ডলিং মেকানিজম সবসময় উম্মুক্তই থাকে। সেইসাথে এর অনেকগুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতীও উম্মুক্ত অবস্থায় থাকে। ফলে এসবে সহজে ধুলো-ময়লা, সূর্যালোক, ও আর্দ্রতার প্রভাব পড়ে; এবং একটি মোটরসাইকেলে অন্য যেকোন ধরনের গাড়ির তুলনায় দ্রুত মরিচা ধরে বা তা সহজে নষ্ট হয়। তাই একটি মোটরসাইকেল সচল রাখতে অন্য যেকোনো যানবাহনের তুলনায় ঘন ঘন রক্ষণাবেক্ষণ ও যত্ন প্রয়োজন হয়।

 

সবশেষে, ছোট বাহন হওয়া সত্ত্বেও একটি মোটরসাইকেল চালানোর জন্য যেমন অনেক বেশি অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, সেইসাথে রাস্তায় গভীর মনোযোগের প্রয়োজন হয় তেমনি পাবলিক রোডে বৈধভাবে মোটরসাইকেল চালানোর জন্য সরকার অনুমোদিত ড্রাইভিং লাইসেন্সেরও প্রয়োজন হয়। কিন্তু একজন সাধারন ব্যাক্তিকে অন্যকোন যানবাহনে চড়তে এমন কোন নিয়মের মধ্য দিয়ে যেতে হয়না। সুতরাং কেউ চাইলেও একটি মোটরসাইকেল যখন তখন ব্যবহার শুরু করতে পারে না। তো এই ছিলো প্রাত্যহিক চলাফেরায় বাহন হিসেবে মোটরসাইকেলের দুর্বলতাসমূহ নিয়ে আমাদের আলোচনা; ধন্যবাদ।