ড্রাইভিং লাইসেন্স ও বাইকের স্মার্ট রেজিস্ট্রেশন কার্ড হারিয়ে গেলে কি করবেন?

This page was last updated on 19-Mar-2025 12:07pm , By Badhan Roy

প্রতিদিন আমাদের কাছে অনেক মানুষ জানতে চান তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা বাইকের স্মার্ড রেজিস্ট্রেশন কার্ড কোন কারনে হারিয়ে ফেললে পুনরায় কিভাবে উত্তোলন করবেন, জিডির কপি দিয়ে বাইক চালানো যাবে কিনা, বিষয়টি অনেক জটিল এবং সময়সাপেক্ষ ব্যাপার কিনা, বিআরটিএ অফিসে অনেকবার ঘুরতে হবে কিনা এবং দালালের খপ্পরে পড়তে হবে কিনা।

জ্বি সমস্যাটি যথেষ্ট গুরুতর। আর তাই আজকে আমরা আপনাদের জানাবো কিভাবে খুব সহজেই নিজে নিজে কোন প্রকার ভোগান্তি ছাড়া আপনার হারানো লাইসেন্স এবং স্মার্ট রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও এ সম্পর্কিত অন্যান্য ডকুমেন্টস সহজেই পুনরায় উত্তোলন করতে পারবেন ও তার সাধারণ পদ্ধতি।

 বাইকের স্মার্ট রেজিস্ট্রেশন কার্ড হারিয়ে গেলে কি করবেন

ড্রাইভিং লাইসেন্স ও বাইকের স্মার্ট রেজিস্ট্রেশন কার্ড হারিয়ে গেলে কি করবেন?

লাইসেন্স বা রেজিস্ট্রেশন ডকুমেন্টস হারানোর পরে সর্বপ্রথম যে কাজ টি আপনাকে করতে হবে সেটা হচ্ছে নিকটস্থ থানায় সাধারণ ডায়রী (জিডি) করতে হবে। অনেকেই ভেবে থাকেন জিডির কপি দিয়ে রাস্তায় বাইক চালানো যায় যা একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা, ট্রাফিক সার্জেন্ট অথবা মোবাইল কোর্ট আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে। 

জিডি করার পরে জিডির কপি নিয়ে আপনাকে যেতে হবে নিকটস্থ ট্রাফিক বিভাগের অফিসে। ট্রাফিক অফিসে জিডির কপি দেখিয়ে আবেদন করার পরে তারা ভেরিফাই করবেন আপনার লাইসেন্স বা বাইকের উপর কোন প্রকার মামলা, জব্দ বা ওয়ারেন্ট ইস্যু করা আছে কি না। এরকম কোন সমস্যা না থাকলে ট্রাফিক অফিস থেকে একটি ক্লিয়ারেন্স দিবে।

 Also Read: Motorcycle Price In Bangladesh

ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড হারিয়ে গেলে করনীয়

উপরে বর্ণিত প্রাথমিক কাজ শেষ হলে আপনার মোবাইল ফোন বা ডেস্কটপের ব্রাউজার ওপেন করে https://bsp.brta.gov.bd/ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে বিএসপি পোর্টালে আপনার একাউন্টে লগইন করতে হবে। লগইন করার পর যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স হারিয়ে থাকেন তবে ড্রাইভিং লাইসেন্স অপশনে যেয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রতিলিপি অপশনে ক্লিক করবেন। এরপর ড্রাইভিং লাইসেন্সের নাম্বারটি লিখে অনুসন্ধান অপশনে ক্লিক করবেন। 

এরপর দেখতে পাবেন সেকশন এ তে ছবি সহ আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর অধিকাংশ তথ্য স্ক্রিনে দেখা যাবে। রক্তের গ্রুপ, পেশা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং লাইসেন্স প্রথম ইস্যুর তারিখ টি সঠিকভাবে ইনপুট করতে হবে। এরপর একটু নিচের দিকে স্ক্রল করলে সেকশন বি দেখা যাবে। সেকশন বি তে আপনার আবেদনের কারন (হারানো/ক্ষতিগ্রস্থ) অপশন থেকে হারানো সিলেক্ট করতে হবে। 

এরপর আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র, ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স এবং জিডির কপির স্ক্যান করা ফাইল পর্যায়ক্রমে আপলোড করতে হবে। আপলোড করার পরেই নিচে দেখতে পাবেন স্মার্ট কার্ড ডাকযোগে প্রাপ্তির ঠিকানা নামে অপশন আছে, সেখানে আপনি যে ঠিকানায় ডাকযোগে আপনার নতুন স্মার্ট কার্ডটি ডেলিভারি নিতে চান সেই ঠিকানা টি পর্যায়ক্রমে এন্ট্রি করবেন। এরপরে সবার নিচে অনলাইন ফি জমা অপশন টিতে ক্লিক করে পরের ধাপে যেতে হবে। 

পরের ধাপে গেলে আবার ও আপনাকে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর সব তথ্য দেখানো হবে এবং একটু নিচের দিকে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সের নতুন প্রতিলিপির জন্য নির্ধারিত ফি দেখানো হবে। তার নিচে ফি জমা দিন অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। পরের ধাপে মোবাইল নাম্বার অপশন টিতে আপনার মোবাইল নাম্বার টি লিখতে হবে এবং তার নিচ থেকে কোন পদ্ধতিতে আপনি টাকা জমা দিতে চান সেই অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে। 

এক্ষেত্রে বিকাশ, নগদ, ডাচ-বাংলা ব্যাংক অথবা সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে আপনি এই পেমেন্ট সম্পন্ন করতে পারবেন। এরপরে I agree অপশনে টিক দিয়ে নিশ্চিত অপশনে ক্লিক করার পর পেমেন্ট সম্পন্ন হবে। পেমেন্ট সম্পন্ন হওয়ার পরে ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনের ধাপ অপশনে লাইসেন্স ফি পেইড লেখার পাশে পেমেন্ট এর তারিখ দেখতে পারবেন।

এরপর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই BRTA approval completed and e-paper license generated অপশন টি থেকে আপনার জন্য নতুন ইস্যু করা ই-পেপার ড্রাইভিং লাইসেন্স টি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিলেই আপনি বাইক চালাতে পারবেন। স্মার্ট কার্ড তৈরী হওয়ার পর বিআরটিএ থেকে আপনার দেওয়া ঠিকানায় ডাকযোগে ডেলিভারি দিয়ে দেওয়া হবে এবং আপনাকে একবারের জন্যেও বিআরটিএ অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।

 

বাইকের স্মার্ট রেজিস্ট্রেশন কার্ড হারিয়ে গেলে করনীয়

বাইকের স্মার্ট রেজিস্ট্রেশন কার্ড হারিয়ে গেলে উপরে বর্ণিত একই ভাবে জিডি করে ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স সংগ্রহ করার পর বিএসপি পোর্টালে লগইন করে বিভিন্ন সেবার ফি অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। এরপর আপনার বাইকের রেজিস্ট্রেশন নাম্বারের শেষ ৪ ডিজিট, ইঞ্জিন নাম্বার ও চ্যাসিস নাম্বার ইনপুট করে অনুসন্ধান বাটনে ক্লিক করতে হবে। 

তথ্যগুলো সঠিক হলে সাথে সাথেই নিচে আপনার বিস্তারিত তথ্য দেখা যাবে এবং তার নিচে এগিয়ে যান বাটনে ক্লিক করতে হবে। পরের ধাপে পৃথকীকৃত ফি প্রদানের ক্ষেত্র নির্বাচন অপশন থেকে ইস্যু অফ ডুপ্লিকেট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট এবং ফাইনান্সিয়াল এসিস্টেন্ট ফান্ড এই ৩ টি অপশনে টিক দিতে হবে। এরপর নিচে একটু স্ক্রল করলে আপনার বাইকের সিসি অনুযায়ী নির্ধারিত ফি দেখা যাবে এবং এগিয়ে যান অপশনে ক্লিক করতে হবে। 

পরবর্তী পেজে আবারো আপনাকে নির্ধারিত ফি দেখাবে এবং ফি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে ফি জমা দিন অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর একই ভাবে বিকাশ, নগদ, ডাচ-বাংলা ব্যাংক অথবা সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে এই পেমেন্ট অনলাইনে সম্পন্ন করতে হবে। পেমেন্ট করার পর রিসিপ্ট গুলো দেখার এবং প্রিন্ট করার অপশন আসবে, সেগুলো ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে হবে। 

এরপর জিডির কপি, ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স এবং প্রিন্ট করা রশিদ গুলো নিয়ে বিআরটিএ অফিসে গেলে অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই আপনাকে নতুন একনলেজমেন্ট স্লিপ দেওয়া হবে যেটি দিয়ে আপনি বাইক চালাতে পারবেন। স্মার্ট কার্ড তৈরি হলে বিআরটিএ থেকে আপনাকে মেসেজ দিবে তখন কার্ড টি অফিসে যেয়ে সংগ্রহ করতে হবে। 

 

এভাবেই নিজে নিজে খুব সহজেই হারানো লাইসেন্স বা রেজিস্ট্রেশন ডকুমেন্ট উত্তোলন করতে পারবেন। আগের মত ভোগান্তি এবং দালালের খপ্পরে পড়ার দিন শেষ নতুন বাংলাদেশে।