কেনো BRTA থেকে রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাওয়া যাচ্ছে না?

This page was last updated on 08-Jul-2024 11:45pm , By Saleh Bangla

বেশ কিছুদিন ধরেই বাইকাররা একটি অভিযোগ করছেন, যে তাদের নতুন কেনা বাইকের রেজিস্ট্রেশন এর টাকা এবং ডকুমেন্ট জমা দেবার পরেও তারা BRTA থেকে রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাচ্ছেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই অভিযোগটি করছেন সেসব বাইকাররা, যারা বাইক শোরুম এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন এর টাকা দিয়েছেন। বাইকারদের বাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর না পাওয়ার অভিযোগটি অনেকাংশেই সত্য। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা, টীম বাইকবিডি একটি অনুসন্ধান চালাই, এবং এই অনুসন্ধানে পাওয়া যায় চমকপ্রদ কিছু তথ্য। 

 প্রথমত, BRTA থেকে নতুন বাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর না পাওয়ার পেছনে একটি কারন হচ্ছে, বর্তমানে বিআরটিএ তে একজন ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থাকেন। আমরা অনেকেই হয়তো জানি, যে বিআরটিএ তে বাইকের রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত কাজে দালালরা অনেক সক্রিয় ছিলো, কিন্তু বর্তমানে ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থাকার কারনে দালালরা বিআরটিএ তে কোনপ্রকার কার্যক্রম চালাতে পারছে না, সকল অফিশিয়াল কার্যক্রম নিয়মানুযায়ী এবং সিরিয়াল অনুযায়ী হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, বর্তমানে বিআরটিএ তে কোন বাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর পেতে হলে সেই বাইকসহ বাইকের মালিকের অর্থাৎ যার নামে বাইকটি রেজিস্ট্রেশন হয়েছে, তার উপস্থিত থাকতে হবে। তার উপস্থিতি ছাড়া বাইকের নম্বর দেয়া হবে না। তৃতীয়ত, বর্তমানে ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই, এমন কারো নামে বাইক রেজিস্ট্রেশন দিচ্ছে না বিআরটিএ। অর্থাৎ, বাইক যার নামে রেজিস্ট্রেশন হবে, তার একটি সঠিক মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে। এই সকল সক্রিয়তা এবং নিয়মের পেছনে প্রভাবক হিসেবে ধরা হচ্ছে সম্প্রতি “নিরাপদ সড়ক চাই” দাবীতে হয়ে যাওয়া ছাত্র আন্দোলনকে। এই আন্দোলনের কারনে সড়ক, পরিবহন, এবং নিরাপত্তা বিভাগে এসেছে প্রচুর পরিবর্তন। 

 রেজিস্ট্রেশন নম্বর না পাওয়ার পেছনে কারনগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলে প্রথমেই ম্যাজিস্ট্রেট সক্রিয় থাকার কারনে দালালদের নিস্ক্রিয়তার বিষয়টি। বাংলাদেশের অনেক মোটরসাইকেল কোম্পানির মোটরসাইকেল ডিলাররাই বিভিন্ন দালাল এর মাধ্যমে বিআরটিএ থেকে বাইকের রেজিস্ট্রেশন করিয়ে থাকে, এবং বর্তমানে দালালরা কোনপ্রকার কাজ না করতে পারায় এসব ডিলার থেকে বাইক কেনা ক্রেতারা তাদের বাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাচ্ছেন না। BRTA এর নতুন একটি প্রটোকল হচ্ছে কোন বাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেয়ার সময় সেই বাইক এবং বাইকের মালিকের উপস্থিত থাকতে হবে। এর পেছএন একটি কারন হচ্ছে, অনেকেই কারচুপি করে বিভিন্ন অবৈধ বা হাই সিসির বাইক বিআরটিএ থেকে রেজিস্ট্রেশন করে ফেলে, ফলে তার অবৈধ বাইকের একটি বিআরটিএ রেজিস্ট্রেশন নম্বর থাকে। এই ধরনের কারচুপি এবং সকল দূর্নিতী বন্ধ করার লক্ষ্যে এই নিয়ম করা হয়েছে, এবং ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থাকার কারনে এবং বাইকের মালিক বাইকসহ উপস্থিত থাকার কারনে বর্তমানে অবৈধ বাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর বের করা সম্পূর্ন অসম্ভব। 

 সম্প্রতি হয়ে যাওয়া ছাত্র আন্দোলন আমাদের সবাইকে এবং প্রশাসনকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে আমাদের দেশের বাইকসহ অন্যান্য যানবাহন চালকদের মধ্যে একটি বড় অংশেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। এই ব্যাপারটি প্রতিরোধ করতে বিআরটিএ বর্তমানে নতুন নিয়ম জারি করেছে, যে মোটরসাইকেল যেই ব্যক্তির নামে হবে সেই ব্যক্তির অবশ্যই একটি বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই এমন কেউ নিজের নামে বাইক রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন না, এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাবেন না। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সর্বত্র বাইকাররা অভিযোগ করছিলেন, যে তারা তাদের নতুন বাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাচ্ছেন না। এই কারনগুলোর কারনেই মূলত তাদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর আসতে দেরী হচ্ছে, এবং হয়তো শীঘ্রই বৈধ এবং লাইসেন্সধারী সকল বাইকচালকদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর চলে আসবে। এবং, আমরা আশা ক্রুবো বাংলাদেশের মোটরসাইকেল ডিলাররা বাইকের রেজিস্ট্রেশন এর জন্য সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার করবে, এবং নিশ্চিত করবে যাতে করে বাইক ক্রেতারা কোনপ্রকার ভোগান্তিতে না পড়েন।