কাওয়াসাকি জেড১২৫ ভার্স কেটিএম ১২৫ ডিউক কম্পারিজন রিভিউ
This page was last updated on 13-Jul-2024 01:15pm , By Ashik Mahmud Bangla
কাওয়াসাকি জেড১২৫ ভার্স কেটিএম ১২৫ ডিউক কম্পারিজন রিভিউ। ১২৫সিসি নেকেড স্ট্রিট সেগমেন্টে সম্প্রতি দুটো সম্পূর্ণ নতুন মোটরসাইকেল দিয়ে কাওয়াসাকি ও কেটিএম মোটরসাইকেলের অভিষেক ঘটলো। আর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মডেলদুটো বাংলাদেশের বাজারে চলে এসেছে। সেইসাথে ইতিমধ্যেই তাদের বাজার দখলের প্রতিযোগীতাও শুরু হয়ে গেছে। তো দুটো মোটরসাইকেলের তুলনামুলক ফিচার আলোচনা নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন। চলুন প্রতিযোগীতার সেই আগুন আরো একটু উষ্কে দেয়া যাক।
নেকেড স্পোর্ট ডিজাইন ও এ্যাপিয়ারেন্স
কাওয়াসাকি জেড১২৫ ভার্স কেটিএম ১২৫ ডিউক দুটো বাইকই তাদের ক্যাটাগরীতে একদম ব্র্যান্ড-নিউ এন্ট্রি। আর এদুটো মডেল দিয়েই কোম্পানীদুটো এই ১২৫সিসি স্ট্রিট-ফাইটার সেগমেন্টে প্রবেশ করলো। তবে এইদুটো বাইকই বলা যায় তাদের ১২৫সিসি ইঞ্জিন ও অন্যন্য পেরিফেরাল সহ তাদের উচ্চতর মডেলগুলোর মিনিয়েচার।
সেইসূত্রেই বলা যায় কাওয়াসাকি জেড১২৫ তাদের জেড২৫০এসএল মডেলটির ক্লোন। আর অপরদিকে কেটিএম ১২৫ ডিউক হলো ২০০ ডিউক এর কপি। আর একারনেই নতুন এই মোটরসাইকেল দুটির অবয়ব আমাদের মোটরসাইক্লিস্টদের কাছে অনেকটাই পরিচিত।
তো কাওয়াসাকি জেড১২৫ টপ-টু-বটম নিয়ে এসেছে কাটিং-এজ ও শার্পার প্রফাইল। এর শার্পার সিঙ্গেল-পিট হেডল্যাম্প, টেইলল্যাম্প, সবকিছুই কাওয়াসাকির জেড স্টাইলিংয়ের সাথে আইকনিক। আর এর ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট-ক্লাষ্টার, এক্সটেন্ডেড ট্যাঙ্ক-কাওলিং, আর স্প্লিট-সিট সবই ট্রু স্ট্রিটফাইটার এ্যাপিয়ারেন্সে তৈরী।
জেড১২৫ বেশ আকর্ষনীয় শেডে নেকেড আর এক্সপোজড টিউবুলার স্টিল ফ্রেমে তৈরি। এর এক্সটেরিয়রে বেশ এ্যাগ্রেসিভ বডিওয়ার্কের সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। সেইসাথে নতুন কালার ও শেডের সমন্বয়েও এটিকে একটি রিফ্রেশড লুক দেয়া হয়েছে। তবে যাই হোকনা কেন এটি পুরোপুরি জেড২৫০এসএল এর একটি ক্লোন।
আর অপরদিকে কেটিএম ১২৫ ডিউক পুরোপুরি ভারতীয় ভার্শনের ২০০ ডিউকের কপি, যা আমরা আগেই বলেছি। এই মডেলটিও এক্সপোজড আর স্পোর্টি ট্রেলিস-ফ্রেম ও নেকেড বোনে তৈরি। আর এর ইঞ্জিনটিও বেশ এক্সপোজড। এতে গতানুগতিক সাইলেন্সার বাদ দিয়ে আন্ডার-বেলী একজষ্ট রাখা হয়েছে।
এর সিঙ্গেল হেডল্যাম্প আর কম্প্যাক্ট টেইলল্যাম্প এর উচ্চতর মডেলের মতোই আইকনিক। আর এর সিটটিও স্প্লিট টাইপের আর ফুয়েল-ট্যাঙ্কটিও কোনাকার ধারযুক্ত। সেইসাথে বাইকটির বডি-প্যানেল বেশ কম্প্যাক্ট। আর তা নতুন কালার ও শেডের সমন্বয়ে একটি রিফ্রেশড লুক পেয়েছে। তো বাইকটি এর অন্য মডেলের কপি হলেও সবমিলিয়ে একটি আলাদা পরিচিতি পেয়েছে।
ফ্রেম, হুইল, ব্রেক ও সাসপেনশন সিস্টেম
কাওয়াসাকি জেড১২৫ ভার্স কেটিএম ১২৫ ডিউক দুটো বাইকই বেশ প্রতিযোগীতামুলক ফ্রেম, হুইল, ব্রেক ও সাসপেনশন প্রফাইল নিয়ে তৈরী। আর দুটো মোটরসাইকেলই তাদের উচ্চতর মডেলগুলির স্ট্রাকচার ও ফিচার নিয়ে তৈরী।
কাওয়াসাকি জেড১২৫ মুলত জেড২৫০এসএল মডেলটির সব ফিচার নিয়ে তৈরি। এটি সেই একই টিউবুলার ডায়মন্ড স্টিল-ফেম, সাব-ফ্রেম, ও সুইংআর্ম সমন্বয় করেছে। তবে ভিন্ন মডেল বিধায় অবশ্যই বাইকটির কিছু ডাইমেনশনে ভিন্নতা রয়েছে।
বাইকটির চাকায় রয়েছে জোড়াকৃত ১০-স্পোক এ্যালয়-রিম আর টিউবলেস টাইপের টায়ার। টায়ারগুলি সামনে 100/80-17 আর পেছনে 130/70-17 মাপের। আর দুটো চাকার ব্রেকই ভেন্টিলেটেড হাইড্রলিক ডিস্ক ব্রেক। সেইসাথে বাড়তি হিসেবে রয়েছে ডুয়্যাল-চ্যানেল এবিএস এনহ্যান্সমেন্ট।
জেড১২৫ বাইকটির সামনে রয়েছে ৩৭মিমি আপরাইট টেলিস্কোপিক ফর্ক সাসপেনশন। এর ট্রাভেল ১১০মিমি। আর পেছনে রয়েছে ইউনি-ট্র্যাক মনো সপেনশন্। এটি একটি গ্যাস-চার্জড সাসপেনশন, আর এর ট্রাভেল মোটামুটি ১২০মিমি।
আর অপরদিকে ১২৫ ডিউকে ২০০ডিউকের মতো একই ফ্রেম, সাব-ফ্রেম, হুইল, ব্রেক ,আর সাসপেনশনের সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। এটির ফ্রেমটিও ম্যাট পাউডার-কোটেড ট্রেলিস-ফ্রেম। এটিও এক্সপোজড, আর এর সুইংআর্মটিও বাড়তি স্টিফনেস নিশ্চিত করে ডিজাইনকৃত।
১২৫ ডিউকে রয়েছে আলাদা ১০-স্পোক এ্যালয়-রিম আর টিউবলেস টাইপ টায়ার। এর টায়ারগুলো বেশ চওড়া, আর তা সামনে 110/70-17 আর পেছনে 150/60-17 সাইজের। আর এর দুইচাকাতেই রয়েছে চওড়া পরিধির হাইডুলিক ডিস্ক ব্রেক। সেইসাথে সমন্বয় করা হয়েছে সিঙ্গেল-চ্যানেল এবিএস।
আর সাসপেনশনের ক্ষেত্রে ডিউক অনেকটাই এগিয়ে। এতে রয়েছে WP সাসপেনশন। বাইকটির সামনে রয়েছে ৪৩মিমি ইউএসডি ইনভার্টেড টেলিস্কোপিক-ফর্ক সাসপেনশন, যার ট্রাভেল ১৫০মিমি। আর এর পেছনে রয়েছে মনো্ সাসপেনশন। এটির ট্রাভেলও ১৫০মিমি। তো বলা যায় ১২৫ ডিউকের সাসপেনশন বাইকটির একটি অন্যতম উল্লেখযোগ্য ফিচার।
স্ট্রিটফাইটার ইরগনোমিক্স ও রাইডিং ক্যারেক্টারিস্টিক্স
কাওয়াসাকি জেড১২৫ ভার্স কেটিএম ১২৫ ডিউক দুটো বাইকই নেকেড স্ট্রিটফাইটার ক্যাটাগরির দুটো বাইক। আর সেকারনেই দুটোতেই সিটি-রাইডিং, আপরাইট কমিউটিং ফিচার, আর ফান-প্লেয়িং ফিচার সমন্বয় করা হয়েছে।
কাওয়াসাকি জেড১২৫ এ রয়েছে স্পোর্টি-আপরাইট রাইডিং ইরগনোমিক্স আর সিটিং পশ্চার। এতে রয়েছে সিঙ্গেল-পিস পাইপ হ্যান্ডেলবার আর স্পোর্টি-আপরাইট রাইডার স্প্লিট সিট। এর কন্ট্রোল লিভার ও প্যাডেলগুলোও বেশ আরামদায়ক স্পোর্টি-আপরাইট পজিশনে বসানো।
তো, কিছুটা লো-মাউন্টেড হ্যান্ডেলবারসহ সব মিলিয়ে জেড১২৫ কিছুটা এ্যাগ্রেসিভ আপরাইট-রাইডিং মোড সাপোর্ট করে। আর এটি রাইডারকে দেয় কিছুটা এ্যাগ্রেসিভ স্ট্রিটফাইটিং এ্যাটিচ্যুড, আর নিম্বল ও কম্ফোর্টেবল রাইডিং এক্সপেরিয়েন্স।
অপরদিকে, কেটিএম ১২৫ ডিউক এ পুরোপুরি আপরাইট রাইডিং পশ্চার ও ইরগনোমিক্সের সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। এতেও পাইপ হ্যান্ডেলবার ও আপরাইট স্প্লিট সিট রয়েছে। সেইসাথে বাইকটির কন্ট্রোল লিভার ও প্যাডালগুলোও আরামদায়ক আপরাইট পজিশনে সমন্বয় করা।
আর এর পাইপ-হ্যান্ডেলবারটি কিছুটা আপার পজিশনে মাউন্ট করা থাকায় এটি চালককে অনেকটাই বাড়তি কনফিডেন্স দিতে পারে। সবমিলিয়ে বাইকটির সার্বিক সেটআপ অবশ্যই যেকোন রাইডারকে ভালো খারাপ যেকোন রাস্তায় কিছুটা ভিন্নধর্মী ও বেটার হ্যান্ডেলিংয়ের এক্সপেরিয়েন্স দেবে।
কাওয়াসাকি জেড১২৫ ভার্স কেটিএম ১২৫ ডিউক - ইঞ্জিন ও পারফর্মেন্স
কাওয়াসাকি জেড১২৫ ভার্স কেটিএম ১২৫ ডিউক দুটো বাইকেই একই ডিসপ্লেসমেন্ট ও একই টাইপের ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। দুটোই ৫৮.০মিমিX৪৭.২মিমি বোর ও স্ট্রোকের ১২৫সিসির সিঙ্গেল-সিলিন্ডার, ফোর-স্ট্রোক, লিকুইড-কুল্ড ইঞ্জিন। তবে জেড১২৫ এর কম্প্রেশন ১১.৭:১ হলেও ডিউকের কম্প্রেশন অফিশিয়ালী প্রকাশিত হয়নি।
এই দুটো ইঞ্জিনেই রয়েছে ইসিইউ নিয়ন্ত্রিত ইলেকট্রনিক ফুয়েল-ইনজেকশন সিস্টেম। আর ৬-স্পিডের এই দুটো ইঞ্জিনই মোটামুটি একই রেটিংয়ের পাওয়ার ও টর্ক উৎপাদন করে। এখানে কাওয়াসাকি জেড১২৫ মোটামুটি ১১.০কিলোওয়াট পাওয়ার ও ১১.৭এনএম টর্ক উৎপাদন করে। আর কেটিএম ১২৫ ডিউক ও প্রায় ১১.০কিলোওয়াট পাওয়ার ও ১২.০এনএম টর্ক উৎপাদন করে।
তো সবমিলিয়ে দেখা যায় দুটো বাইকের ইঞ্জিনের ক্ষমতায় ও পারফর্মেন্সে তেমন বিশেষ কিছু পার্থ্যক্য নেই। তবে বুকিশ-রেটিং যা-ই হোকনা কেন তাদের থ্রটল-রেসপন্স, এক্সিলারেশন, আর রিয়েলটাইম পারফর্মেন্সে রেভলাইন অনুসারে কিছু পার্থক্য অবশ্যই আছে। কেননা তাদের ইসিইউ-ম্যাপিং অবশ্যই এক নয়। আর সেই সাথে তাদের হুইল, ব্রেক, সাসপেনশন, ও ওজনের পার্থক্যতো রয়েছেই। এটাই আসলে তাদের মধ্যে পার্থক্য নির্ধারক বিষয়।
Kawasaki Z125 VS KTM 125 Duke – Specification Comparison
Specification | Kawasaki Z125 | KTM 125 Duke |
Engine | Single Cylinder, Four Stroke, Liquid Cooled Engine | Single Cylinder, Four Stroke, Liquid Cooled Engine |
Displacement | 125cc | 124.71cc |
Bore x Stroke | 58.0mm x 47.2mm | 58.0mm x 47.2mm |
Valve System | DOHC 4-Valve | DOHC 4-Valve |
Compression Ratio | 11.7:1 | Not Found |
Maximum Power | 11.0KW (15PS) @ 7,700RPM | 11.0kW (15HP) |
Maximum Torque | 11.7NM (1.2kgfm) @ 10,000RPM | 12NM |
Fuel-Supply | Fuel Injection with 28mm Throttle Body | Fuel Injection |
Ignition | Electronic | Electronic, Bosch EMS |
Starting Method | Electric Start | Electric Start |
Clutch Type | Wet, Multiple-Disc | Wet, Multiple-Disc |
Lubrication | Forced Lubrication, Wet Sump | Wet Sump |
Transmission | 6 Speed; 1-N-2-3-4-5-6 | 6 Speed; 1-N-2-3-4-5-6 |
Dimension | ||
Frame Type | Tubular Diamond Steel Frame | Steel Trellis Frame, Powder Coated |
Dimension (LxWxH) | 1,935mm x 740mm x 1,015mm | Not Found |
Wheelbase | 1,330mm | |
Ground Clearance | 185mm | 175mm |
Saddle Height | 815mm | 818mm |
Weight | 146Kg (Kerb) | 141Kg (Dry) |
Fuel Capacity | 11Liters | 10.2 Liters |
Wheel, Brake & Suspension | ||
The suspension (Front/Rear) | 37mm Telescopic Fork with 110mm Travel / Uni-Track Gas Charged Mono Shock Absorber with 120mm Travel | WP 43mm Upside Down Telescopic Fork, 150mm Travel / WP Mono Shock Absorber, 150mm Travel |
Brake system (Front/Rear) | 290mm Petal Disk with Dual Piston Clipper /220mm Petal Disk with Dual Piston Clipper Dual-Channel ABS | 300mm Hydraulic Disk Brake /230mm Hydraulic Disk Brake BOSCH Single Channel ABS |
Tire size (Front / Rear) | Front: 100/80-17M/C 52S Rear: 130/70-17M/C 62S Both Tubeless | Front: 110/70-R17 Rear: 150/60-R17 Both Tubeless |
Electrical & Other | ||
Battery | 12V, MF | 12V |
Headlamp | Bulb | LED |
Tail Lamp | Bulb | LED |
Speedometer | Digital with Analog Rev | Fully Digital |
*All the specifications are subject to change upon company rules, policy, offer & promotion. BikeBD is not liable for the changes.
কাওয়াসাকি জেড১২৫ ভার্স কেটিএম ১২৫ ডিউক - রুল দ্যা রোড উইথ এ্যটিটিউড
তো বন্ধুরা, মোটামুটি এই ছিলো আমাদের কাওয়াসাকি জেড১২৫ ভার্স কেটিএম ১২৫ ডিউক বাইক দুটোর ফিচার পর্যালোচনা। দুটো বাইকই স্ট্রিটফাইটার ক্যাটাগরীভুক্ত তথা স্ট্রিট-নেকেড ফিচার ও ইরগনোমিক্স সমন্বিত। তবে তাদের সার্বিক ফিচারে দৃশ্যমান পার্থক্য অনেকটাই স্পষ্ট।
আর সেইসাথে তাদের রাইডিং টেষ্ট আর কন্ট্রোলিং বিহেভিয়র অনেকটাই আলাদা। আর দুটো বাইকেই রয়েছে নিজস্ব কিছু এ্যাডভান্সমেন্ট ও ব্যক-ল্যাগ। তো সেকারনেই পছন্দের বিষয়টি অবশ্যই আপনাদের। তো বেছে নিন আপনার পছন্দের বাইকটি আর আপনার পথে রাজত্ব করুন। ধন্যবাদ সবাইকে।