Yamaha FZS V2 বাইক নিয়ে মালিকানা রিভিউ - মিশু
This page was last updated on 18-Nov-2023 07:32am , By Shuvo Bangla
আমি মোঃ সোয়েব খান মিশু। আজকে আমি আমার Yamaha FZS V2 বাইকটির সম্পর্কে আপনাদের সাথে ছোট একটা রিভিউ দিতে যাচ্ছি। আমি বর্তমানে অনার্স ৩য় বর্ষে অধ্যয়নরত অবস্থায় আছি। সেই সাথে আমি আবার ভ্রমণ পিপাসু একজন মানুষ।
Yamaha FZS V2 বাইক নিয়ে মালিকানা রিভিউ
এজন্য বিভিন্ন সময় অনেক জায়গায় যেতে হয়। তাই বাইকটি আমার নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। কেন আমি এই বাইকটি নিলাম ? কারন ১৫০ সিসি সেগমেন্ট এর ভিতর বাইকটি দেখতে ও কন্ট্রোলিং সিস্টেমটা আমার কাছে বেস্ট মনে হয়েছিলো। এই বাইকের বিষয়ে অনেকেই কাছেই শুনেছি সবাই এক সুরে ভালো বলেছে। এছাড়া বাইকটির দাম একটু বেশি হলেও সবদিক দিয়েই এটা সেরা। তাই নিঃসন্দেহে বাইকটি নেওয়া যাওয়া।
বাইকটি ক্রয় করেছি মাত্র ৬ মাস এর কিছু দিন বেশি হলো । বাইকটার সাথেই আমার ইতিমধ্যে সফর হয়েছে যশোর টু মাওয়া ও নড়াইল, সাতক্ষীরা, বাগেরহাটসহ আরো বিভিন্ন জায়গায়। যেহেতু আমি একজন ভ্রমন পিপাসু মানুষ। বাইকটি নিয়ে যখন আমি বিভিন্ন কাজের উদ্দেশ্য রওনা হই তখন বাইকটি চালিয়ে আমি বেশ আনন্দ উপভোগ করি।
বাইকে পিলিয়ন নিয়ে চলার সময় আমার কাছে তেমন কোনো রকম সমস্যা অনুভব হয়নি । তবে বাইকে একের অধিক পিলিয়ন না উঠানোয় ভালো। এ নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলে থাকে। তবে এক কথায় আমি বলবো এই বাইকটির কন্ট্রোলিং ও ব্রেকিং সিস্টেম আমার কাছে সেরা মনে হয়েছে। আমি স্পিড ৮০+ রেখে ব্রেক করেছি তখনও কোনো রকম স্লিপ করেনি। বাইকটির সাউন্ড কোয়ালিটি অনেক স্মুথ।
লং ট্যুর এর সময় কোনো রকম ব্যাক পেইন অনুভূতি হয়নি। মজার বিষয় হলো বাইকটি ৯০+ স্পিড ওঠার পরেও কোনো রকম ভাইব্রেশন ফিল হয় না। আমি বাইক খুব বেশি স্পীডে চালাই না। কারণ একটি দূর্ঘটনা সারাজীবনের কান্না। যদিও এই বাইক নিয়ে আমি খুলনা-রুপসা বাইপাস সড়কে ১০৭+ স্পিড উঠাতে সক্ষম হই একজন পিলিয়নসহ।
বাইকটিতে রেয়ার টায়ার ১৪০ সেকশন টায়ার ব্যবহার করার জন্য স্লিপ কাটার সম্ভাবনা অনেকটায় কম। বাইক এর টায়ার এর সাইজ সামনের চাকা ১০০ / ৮০ - ১৭ এবং রেয়ার টায়ার ১৪০ / ৬০ - ১৭ । বাইকের দুটি টায়ারই টিউবলেস টায়ার। তাছাড়া বাইক এর লাইটিং সিস্টেম মোটামুটি ভালো। রাত্রে লাইটিং সিস্টেম এর জন্য অনেক সময় বিপদের সম্মুখীনে হতে হয়। কিন্তুু এলইডি লাগালে আর বেশি সমস্যা হয় না। কেননা দূর পথে বা হাইওয়ে তে খুব একটা আলো দেখা যায় না। অবশ্য কোম্পানি চাইলে আরো ভালো লাইট দিতে পারতো।
বাইকের হর্ন মোটামুটি বেশ ভালো। তবে আমি ৩ জন নিয়েও চালিয়েছি, তাতে কোন রকম সমস্যা হয়নি। বাইকটিতে ১৪৯.৭ সি সি এর ইঞ্জিন রয়েছে বাইক এর সিসি অনুযায়ী বাইক এর ওজন আমার কাছে ঠিকই মনে হয়েছে । বাইক এর ওজন ১৩৩ কেজি । বাইক অনুযায়ী বাইকের ওজন আমার কাছে ঠিকই মনে হয়েছে। বাইকটিতে শুধুমাত্র সেলফ স্টার্ট দেওয়া আছে। তবে সাথে যদি কিক স্টার্টও থাকতো তবে আরো বেশি ভালো হতো।
আমার বাইকটি ইয়ামাহা শো-রুম থেকে নতুন কিনেছিলাম। সেদিনের অনুভূতির কথা ভাষায় বলে প্রকাশ করা যাবে না। স্বপ্নের বাইক চালিয়ে একাই শো-রুম থেকে বাসায় আছি। আমি বর্তমানে বাইকটি ১২০০০+ কিলোমিটার চালিয়েছি। এখন পর্যন্ত আমার বাইকের কোনো কিছুই বদলাতে হয়নি। আমি নিয়মিত ইয়ামাহার শো-রুম থেকে বাইকটি সার্ভিস করিয়েছি।
বাইকের সামনে ও পিছনে হাইড্রোলিক ব্রেক দুটো ভালো হওয়ায় বেশ স্পিডেও এ সহজে স্লিপ করে না। তবে আমার কাছে বাইকের রেডি পিকআপ খুব বেশি ভালো লাগেনি আর একটু বেশি হলে খুবই ভালো হতো। আমি বাইকে সব সময় ইঞ্জিন অয়েল হিসেবে Yamalube 10 W 40 ব্যবহার করছি। বাইকের সাসপেনশন এক কথায় অসাধারণ, অনেক মজবুত ও শক্তিশালী।
রাস্তা যেমনই হোক কোনো সমস্যা নাই, ভাঙ্গা রাস্তাতেও ভালই ফিডব্যাক পেয়েছি। বাইকে তেমন কোনো ঝাঁকি অনুভব হয়না। আমি আমার বাইকে কখনই খোলা তেল ব্যবহার করিনা, আমি বেশির ভাগ সময় অকটেন ব্যবহার করি তবে সময় বিশেষ পেট্রোলও নেওয়া পড়ে। বাইক এ ডিজিটাল মিটার রয়েছে যেখানে স্পিড, ফুয়েল এবং আরপিএম দেখা যায়। বাইকটি তে ১২ লিটার ফুয়েল নেওয়া যায়।
বাইকটি ৫ গিয়ার এর করা হয়েছে। আমি বাইকেব সবসময় ইয়ামাহা কোম্পানীর একই গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করার কারনে বাইকটি থেকে ভালো ফিডব্যাক পেয়েছি। বাইকটি মানুষ এর কাছে অনেক আকর্ষণীয়। এয়ার কুলিং ইঞ্জিন হওয়ায় অনেকক্ষণ চলার পরও বাইকের ইঞ্জিন খুব বেশি গরম হয় না। ১২০ অফিসিয়াল টপ স্পিড। তবে আগেই বলেছি আমি খুব স্পীডে বাইক রাইড করিনা। আর সাবধানতার সাথে বাইক চালানোয় উত্তম।
পরিশেষে বলবো সব দিক বিবেচনা করে এই সেগমেন্ট এ অন্য যেকোনো বাইক এর তুলনায় Yamaha Fzs অন্যতম সেরা একটি বাইক। আমার ব্যক্তিগত অভিমত থেকে বললাম। সবাইকে রিভিউ টা পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃ মোঃ সোয়েব খান মিশু