Yamaha FZS Fi ১০,০০০কিমি মালিকানা রিভিউ লিখেছেন - সাজিদ রহমান
This page was last updated on 13-Jul-2024 03:48am , By Saleh Bangla
গত বছর ডিসেম্বরের ৩ তারিখ কাজিপাড়া ক্রিসেন্ট এন্টারপ্রাইজ থেকে Yamaha FZS Fi বাইকটি কিনি। আব্বুকে সাথে নিয়ে গিয়েছিলাম। এলিগেটর গ্রিনটা আব্বুর পছন্দ ছিল আমারও। সেদিন ব্যাগ খুলে ১০০০ টাকার নোটের ৩টা বান্ডিল আমার হাতে দিয়ে বলেছিল, "দুই চাকার উপর উঠলে কখনও অন্যমনস্ক হওয়া যায় না, সাবধানে চালাইও। তোমার আম্মু খুব দুঃশ্চিন্তা করে।"
Yamaha FZS Fi ১০,০০০কিমি মালিকানা রিভিউ
যাই হোক, কয়েকটাদিন খুব ই আনন্দে কাটছিল আমার Yamaha FZS Fi নিয়ে যখন প্রায় ৪০০ কিমি চালালাম, তখন বাড়ি যাওয়ার সময় হয়ে এসেছিল। ব্রেকইন পিরিয়ডে লং রাইড দেয়ার সাহস ছিল না তাই লঞ্চে তুলে চলে গেলাম। বাড়ি গিয়েই গোপালগঞ্জ এর টুংগিপাড়া গেলাম। গোপালগঞ্জ থেকে এসে মবিল ড্রেন দিলাম তারপর নতুন করে Castrol Active 20W40 দিলাম। এরপর ১০০০ কিমি তে বরিশাল রাতুল অটো থেকে আমার Yamaha FZS Fi এর প্রথম সার্ভিসিং করালাম। এরপর ডিসেম্বরের লাস্ট উইকে পরপর দুইবার কুয়াকাটা টু বরিশাল ট্যুর দিলাম।
ব্রেক ইন পিরিয়ড শেষ, তাই ধীরে ধীরে স্পিড আপ করতে শুরু করলাম। কিন্তু ৯০ পার হতেই মনে হচ্ছিল ইঞ্জিনের জান প্রান বের হয়ে যাচ্ছে, বাদ দিলাম। এ পর্যন্ত চেইন টাইট দিয়েছি ২ বার। সাউন্ড খারাপ হয়ে যেতে লাগছিল। এছাড়া কোন সমস্যা পাইনি। ঢাকায় এসে ম্যাডাম বায়না ধরল ঘুরতে যাবে, গেলাম মির্জাপুর। ফিরে এসে আবার চেইন টাইট দিলাম, হাওয়ার প্রেশার মেপে নিলাম। দ্বিতীয় সার্ভিস করালাম শোরুম থেকে। সব ই ঠিকঠাক ছিল কিন্তু ইঞ্জিন ওভারহিট হতে লাগল।সাউন্ড ও বাজে হয়ে গেল। শো-রুম থেকে সমাধান দিতে পারল না। এসিয়াই কে জানালাম। ইসমাইল ভাই ডেকে নিয়ে ট্যাপিড মিলিয়ে দিল।সাউন্ড ঠিক হল কিন্তু হিটিং ইস্যু সলভ হল না। এরপর চেইনের জন্য আবেদন করলাম।
চেইনের জন্য আবেদন করার পর তারা আমাকে ৮০০০ টাকার একটি বিল দিল এবং বেশ বাজে আচরন করল। বাধ্য হয়ে এই গ্রুপে পোস্ট করলাম। শেষে টিনা চাকমা আপু নিজে ফোন দিয়ে ডেকে নিয়ে চেইন পালটে দিল। এবার বাইকের পারফর্মেন্স বেড়ে গেল। এরপর ঢাকা টু ময়মনসিংহ, ঢাকা টু কুমিল্লা এবং কয়েকবার ঢাকা টু বরিশাল রাইড দিলাম। তৃতীয় সার্ভিসিং এ গিয়ে আবার হিটিং ইস্যু নিয়ে অভিযোগ দিলাম।
এবারও কিছু হল না। বাইক প্রায় ৮০০০+ রানিং। বেশ বিরক্ত লাগছিল।শেষমেশ ৯৮০০ তে এসে এক বড় ভাইয়ের পরামর্শে জাহিদ ভাইয়ের কাছে গেলাম। উনি Idle Rpm এডজাস্ট করলেন, এয়ার ফিলটার পালটে দিলেন এবং কিছু টুকিটাকি কাজ করলেন। বাইকটা আবার বাঘের মত গর্জন করতে লাগল। ইয়ামাহার আসল মজা পাচ্ছি এখন। ইঞ্জিন এখন আগের থেকে কম হিট হচ্ছে। আরও কয়েকদিন চালালে ফাইনাল বলতে পারব। আমি মনে করি না যে এসি আই বাজে বিল্ড কোয়ালিটির বাইক এনেছে। তবে উনাদের সার্ভিসিং এ অনেক ঝামেলা আছে, যে কারনে আমরা ভুগছি। ক্রিসেন্টের হাসান ছাড়া একজনকেও আমার দক্ষ মনে হয় নি।
প্রথম ৩৫০০ কিমি পর্যন্ত মিনারেল এর পর সিন্থেটিকে শিফট করেছি। আপাতত Motul 7100 ব্যাবহার করছি।চেইন চেঞ্জ করে দেয়ার পর টপ স্পিড ১২১ পেয়েছি। বাইকের অসাধারন ব্যালেন্স এবং ব্রেকিং এর কারনে অনেক বড় দূর্ঘটনায় অল্পতে বেচে গেছি। আমি স্পিডে রাইড করি না এবং সবসময় হেলমেট পড়ি। আমি আমার Yamaha Fzs Fi নিয়ে পুরাপুরি সন্তুষ্ট।