Yamaha FZS FI V3 ১০,০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - দূর্জয়

This page was last updated on 29-Jul-2024 09:51am , By Shuvo Bangla

আমি দূর্জয় সাহা । আমি শেরপুর বসবাস করি । পরাশুনা করি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ। আমার Yamaha FZS FI V3 বাইকটি নিয়ে ১০,০০০ কিলোমিটার চালিয়েছি, আমি বাইকটি এফ.এম.মটরস, জামালপুর থেকে কিনেছিলাম ।

yamaha fzs fi v3 bike headlight

ABS ব্রেকিং বাইকটিকে করেছে অনেক বেশি আকর্ষণীয়। ছোটবেলা থেকেই বাবাকে দেখতাম বাইক চালাতো, বাসায় সবসময় দেখতাম তার প্রিয় Yamaha RX-100 বাইকটি। সেখান থেকেই এই ইন্জিন চালিত দ্বীচক্রযানের প্রতি ভালোবাসা জাগে।

যখন আমি পঞ্চম শ্রেণীর বৃত্তি পরীক্ষা দেই তখন থেকেই আমি বাইক চালানো শেখার জন্য মনোনিবেশ করি। আমার উচ্চতা বেশি ছিলো তাই খুব তাড়াতাড়িই বাইক চালানো শিখে ফেলি। নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ করার ইচ্ছা ছিলো অনেক আগে থাকেই।

yamaha fzs fi v3 blue

ছোটবেলায় ভাইয়াকে দেখতাম বন্ধুদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় তারা গ্রুপ ট্যুর দিতো। বিষয়টা আমার কাছে ছিলো অনেক বেশি এডভেঞ্চারাস, সেখান থেকেই বাইকিং এর প্রতি একটু একটু করে মনে ভালোবাসা জাগতে থাকে।

ইউটিউবে একদিন দেখলাম Yamaha Bike জানুয়ারী মাসে ভারতে Yamaha FZS FI V3 বাইকটি লঞ্চ করে, তখন থেকেই আমি এই বাইকটি পছন্দ করি এবং অপেক্ষা করতে থাকি।

কিট যুক্ত বাইক আমার পছন্দ না আর আমি চাচ্ছিলাম একটা ইউনিক বাইক কিনার জন্য,আর তখন এই বাইকটি Yamaha সবেমাত্র লঞ্চ করেছিলো, তাই আমি এই বাইকটি প্রিবুকিং এর মাধ্যমে কিনে ফেলি।

yamaha fzs fi v3 bike

বাইকটি যখন ক্রয় করি তখন দাম ছিল ২,৭৫,০০০ টাকা । বাইকটি আমি Yamaha Showroom জামালপুর এর FM Motors থেকে ক্রয় করি ।

কোনোকিছু পেতে হলে একটুতো কষ্ট করতেই হয়, আমার বেলায়ও তেমনটিই ঘটেছিলো। আমি বাইক কেনার ইচ্ছা পোষণ করি। প্রথমে তারা রাজি না হলেও পরবর্তীতে আমার এইস.এস.সি.পরীক্ষা দেওয়ার পর আমাকে বাসা থেকে বাইকটি কিনে দেয়।

শখের কোনো জিনিস কিনতে গেলে মনে অন্যরকম একটা আনন্দ কাজ করে। সকাল থেকেই আমি খুবই তোরঘোরের মধ্যে ছিলাম কখন যাবো এমনকি এর জন্য আমি আগের রাত পুরোটাই জেগে ছিলাম।

yamaha fzs fi v3 pic

বাইকটি যখন প্রথম স্টার্ট করি তখন মনে হচ্ছিলো দুনিয়ার সমস্ত সুখ আমার হাতের মুঠোয় তখন। আমি প্রথম দিন বাইকটি নিয়ে পুরো শহরটা প্রদক্ষিন করি।

Also Read: ইয়ামাহা ফেবুলাস ফেব্রুয়ারি অফার

আমার পরিবারের সবারই এই বাইকটি পছন্দ ছিলো। মাস্কিউলার ফুয়েল ট্যাংক, এলইডি হেডলাইট, ওয়াইড সীট, ABS ব্রেকিং সিস্টেম, কম্ফোর্টনেস, ডিজিটাল স্পিডোমিটার ও ওডোমিটার, ইলেক্ট্রিক স্টার্ট।

yamaha fzs fi v3 price

প্রতিদিন নিত্যপ্রয়োজনে আমি বাইকটি নিয়ে বের হই এবং প্রত্যেকবারই আমি আমার রাইডিং উপভোগ করি। ৫বার সার্ভিস করিয়েছি আমিন এন্টারপ্রাইজ, ময়মনসিংহ থেকে । YDT এর মাধ্যমে তারা বাইকটিতে প্রব্লেম দেখে পরে তার সমাধান করে দিয়েছিলো।


মাইলেজ ২৫০০ কিলোমিটার পূর্বে প্রায় ৩৮ পেয়েছি ২৫০০ কিলোমিটার পরে ৪০-৪৫ পেয়েছি । যথাসময়ে মবিল,মবিল ফিল্টার, এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন করি , চেইন পরিষ্কার এবং লুব করাই,মরিচা রোধে ফুয়েল ট্যাংক ফুল রাখার চেষ্টা করি।

মতুল এর 7100 সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েলটি ব্যবহার করি । এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র সামনের চাকার ব্রেক সু , পেছনের চাকার ব্রেক সু ,এয়ার ফিলটার পরিবর্তন করেছি ।

যমুনা সেতুতে সর্বোচ্চ গতি পেয়েছি ১১০। টপ স্পিডে ব্যালেন্সিং ABS ব্রেকিং অনেক ভালো পেয়েছি ।

Yamaha FZS FI V3 বাইকের কিছু ভালো দিক -

  • ভেজা রাস্তায় সামনের চাকা কখনো স্কিড করবে না ।
  • ABS এর জন্য আপনি কম্ফোর্ট ব্রেকিং পাবেন ।
  • সীট অনেকটা ওয়াইড।
  • LED হেডলাইট।
  • ফুয়েল ক্যাপাসিটি ১২.৮ লিটার।

Yamaha FZS FI V3 বাইকের কিছু খারাপ দিক -

  • স্পিড উঠতে একটু সময় লাগে।
  • শুরুরদিকে ইঞ্জিন একটু গরম হবে।
  • প্রাথমিক পর্যায়ে মাইলেজ কম পাওয়া যায়।
  • হাইওয়েতে লাইটের তীব্রতা কম লাগে আমার কাছে।

কিছুদিন আগে আমি শেরপুর-যমুনা সেতু গিয়েছিলাম, ট্যুর শেষে আমার বাইকের তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি, চালানোর সময় খুব স্মুথ লাগে, ভাইব্রেশন খুব কম হয়। ট্যুর শেষে আমার বাইককের মবিল কোয়ালিটিও তেমন খারাপ হয়নি।

yamaha fzs fi v3 blue colour

পরিশেষে আমি বলতে চাই ABS ব্রেকিং সিস্টেম যা আপনাকে যেকোনো ইমারজেন্সি পরিস্থিতিতে যেকোনো দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে পারে যদি আপনি সঠিকভাবে ব্রেক করতে পারেন যা আপনি হাইড্রলিক ব্রেক অথবা অন্যকোনো ব্রেক থেকে হয়তোবা তেমনটা পাবেন না।

এইসকল ফিচারগুলো এই বাইকটাকে অন্য বাইক থেকে আলাদা করেছে এবং আমি মনে করি ১৫০সিসি সেগমেন্টের মধ্যে এবং হাইওয়ে রাইডিং এর জন্য Yamaha FZS V3 আমার কাছে সেরা বাইক।

ধন্যবাদ বাইকবিডিকে এধরণের কন্টেস্ট আয়োজন করার জন্য, এবং সকল বাইকারকে অনুরোধ করব বাইক চালানোর সময় হেলমেট, সেফটিগার্ড পরে বাইক চালাবেন। ধন্যবাদ ।

লিখেছেনঃ দূর্জয় সাহা
 
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।