Yamaha FZS FI V2 ১৫,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - আলামিন
This page was last updated on 18-Jul-2024 02:10pm , By Raihan Opu Bangla
আমি আলামিন হোসাইন । আমি আজ আপনাদের কাছে আমার Yamaha FZS FI V2 বাইকটির বিষয়ে ছোট একটি রিভিউ বা ইউজার এক্সিপিরিয়েন্স শেয়ার করবো । আমার Yamaha FZS FI V2 বাইকটি বর্তমানে চলেছে প্রায় ১৫,০০০ কিলোমিটার । আমি মানিকগঞ্জ থাকি এবং এটি আমার জীবনের প্রথম বাইক। বাইকটি দিয়ে কলেজে যাতায়াত এবং শখের কারনেই বাইকটি ক্রয় করা ।
Yamaha FZS FI V2 ১৫,০০০ কি.মি. ইউজার এক্সিপিরিয়েন্স
ছোট থেকেই আমার বাইকের প্রতি একটা আগ্রহ ছিল! এখন বড় হওয়ার পরেও সেই আগ্রহ কমেনি । বাইকিং জগতে আর কিছু না পেলেও কিছু সুন্দর মুহুর্ত এবং কিছু ভালোবাসার ভাই পেয়েছি যা আমাকে বাইকিং জগৎ কে ভালোবাসতে বাধ্য করেছে ।
বাইকটিকিভবেবেছেনিলাম- আসলে ছোট থেকেই ইয়ামাহার প্রতি একটা ভালোবাসা কাজ করতো । Yamaha FZS FI V2 বাইকটি পছন্দ করার একমাত্র কারন হচ্ছে এর লুকস এবং ব্রেকিং সিস্টেম, যা এক কথায় মুগ্ধ করার মত।
বাইকটি আমি যখন ক্রয় করি তখন বাইকটির মূল্য ছিল ২ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা। এবং ১০ বছরের পেপার্স সহ মূল্য ছিল ২ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা । আমার বাইকটি মিরপুর ক্রিসেন্ট এন্টারপ্রাইজ থেকে ক্রয় করি ।
বাইকটিকিনতেযাবারদিনেরঘটনা- বাইকটি আমার বাবা হুট করেই আমাকে কিনে দেয়। কারন বাবা জানতো Yamaha FZS FI V2 আমার পছন্দের বাইক। একদিন হুট করে এসে বললো রেডি হও তোমার পছন্দের বাইকটি আনতে যাবো।
বাইকটি যখন প্রথম হাতে পাই আগে বাবাকে দেই চালানোর জন্যে বাবা চালানোর পরে আমি চালিয়ে বাসা পর্যন্ত নিয়ে আসি। সেই অনুভূতির কথা বলে বোঝানো যাবেনা যে নিজের বাইক নিজে চালাচ্ছি । এবং বাবা খুশি হয়ে আমার বাইক ফুল ট্যাংক ফুয়েল দিয়েছিলেন।
Click To See Yamaha FZS FI V2 Test Ride Review In Bangla – Team BikeBD
Yamaha FZS FI V2 বাইকটিতে আছে ডিজিটাল স্পিডোমিটার, ১২ লিটার এর বড় ফুয়েল ট্যাংক, ১৪০/৬০/১৭ সেকশনের রেয়ার টায়ার এবং ১০০/৮০/১৭ সেকশনের ফ্রন্ট MRF টিউবলেস টায়ার ।
আর বাইকের লুকসের কথা না বললেই নয়, এক কথায় আকর্ষনীয় লুকসের অধীকারি Yamaha FZS FI V2 বাইকটির ব্রেকিং সিস্টেমে রয়েছে ২৮২ মিঃমিঃ ডিক্স ব্রেক এবং পিছনে রয়েছে ২২০ মিঃমিঃ রেয়ার ডিক্স ব্রেক। আসলে বাইকটি সব বয়সের মানুষের কথা চিন্তা করে তৈরি করা হয়েছে। ব্রেকিং এক কথায় অসাধারন।
সার্ভিসিং- আমি আমার বাইকটি ইয়ামাহার অথোরাইজ সার্ভিস পয়েন্ট এর দক্ষ মেকানিক দিয়ে সার্ভিস করাই এবং আলহামদুলিল্লাহ অন্য কাউকে আমার বাইক কখনো দেখাতে হয়নি। প্রতি মাসেই বাইকের রেগুলার চেকাপ করিয়েছি এবং টুরের আগে পরে ভালো করে মাস্টার সার্ভিস করিয়ে নিয়েছি ।
মাইলেজ নিয়ে কথা বলতে গেলে এর প্রশংসা করতেই হয়ে। প্রথম ২৫০০ কিলোমিটার এ বাইকটির মাইলেজ পেয়েছিলাম ৪০/৪১ এর মত এবং ৩০০০ কিলোমিটার এর পর তা সিটি তে ৪৩/৪৪ এবং হাইওয়েতে ৪৫-৪৬ পেয়েছি।
বাইকটিরযত্নএবংমেইন্টেনেন্স- আসলে হাই মেইন্টেনেন্স বাইক এর মধ্যে এটি একটি। কারন এর পার্টস এর দাম একটু বেশি। আমার বাইকের কখনো বড় কোন কাজ করাতে হয়নি এখন পর্যন্ত । প্রতি ১২০০/১৩০০ কিলোমিটার পরপর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি যার কারনে আমার বাইকটির ইঞ্জিন এখনো আগের মতই পাওয়ার সাপ্লাই করে। শুধু নাট বোল্ট গুলো টাইট করিয়ে নেই প্রতি মাসে।
বাইকেব্যাবহৃতইঞ্জিনঅয়েলনামওগ্রেড- প্রতিটি বাইকের নির্দিষ্ট গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল থাকে এবং Yamaha FZS FI V2 এর ইঞ্জিন অয়েল গ্রেড হচ্ছে 10W40। আমি ১০,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত Motul এর 10w40 গ্রেডের মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি এবং এরপর থেকে সেমি সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি। যার কারনে আমার বাইক থেকে অনেক কম ভাইব্রেশন ফিল হতো।
বাইকেরযেসবপার্টসপরিবর্তনকরাহয়েছে- আমি বাইকের স্টক হেডলাইট পরিবর্তন করি । কারন রাতের বেলায় হাইওয়েতে এর আলো পর্যাপ্ত নয় । এর এয়ার ফিল্টার ১ বার পরিবর্তন করেছি ১০,০০০ কিলোমিটার পরপর এবং একটি স্পার্ক প্লাগ ও পরিবর্তন করি । বাইকের ফ্রন্ট এবং রেয়ার ব্রেক-সু পরিবর্তন করা হয়েছে এবং সামনের অয়েলসিল পরিবর্তন করেছি । আমি আমার বাইক স্টক রাখতেই ভালোবাসি তাই আজ পর্যন্ত কোন কসমেটিকস মডিফাই করিন।
Yamaha FZS FI V2 বাইকটির কিছু ভালো দিক-
- বাইকটির লুক
- বাইকটির মাইলেজ
- বাইকটির ব্রেকিং
- ১৪০ সেকশনের প্রশস্ত টায়ার
- এর সাসপেনশন্স খুবই আরামদায়ক
Yamaha FZS FI V2 বাইকটির কিছু খারাপ দিক-
- বাইকটির স্টক হেডলাইট অনেকটা দূর্বল
- FI ইঞ্জিন হওয়াতে ভালো ফুয়েল ব্যাবহার করতে না পারলে পাওয়ার লস করে পার্ফরমেন্স কমে যায়
- এর অয়েলসিল দূর্বল মনে হয়েছে আমার কাছে যা ১৪০০০ কিলোমিটারেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে
- বাইকটির টার্নিং রেডিয়াস একটু বেশি
- রেডি পিকাপ তুলনা মূলক কম
বাইকটি নিয়েআমারভ্রমন- আমি আমার বাইক নিয়ে দেশের অনেক জায়গায় গিয়েছি এর মধ্যে, বরিশাল, ভোলা, টাংগাইল, কিশোরগঞ্জ এর নিকলি, সিলেট, সাজেক, কক্সবাজার, সহ আরো অনেক জায়গা। বাইকটি কখনো আমাকে ভ্রমনের সময় হতাশ করেনি।
বাইকটিনিয়েআমারচূরান্তমতামত- বাইকটি আসলে সব বয়সের লোক দের কথা চিন্তা করে বানানো। কিন্তু এর হেডলাইট, অয়েলসিল এবং পার্টস প্রাইজ আমাকে হতাশ করেছে।
বাইক টি আলহামদুলিল্লাহ আমার অনেক পছন্দের একটি বাইক। অনেকেই বলে আমার বাইকের ইঞ্জিন সাউন্ড এত স্মুথ কেন ,আসলে আমি প্রথম থেকেই সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যাবহার করে আসছি যার কারনে আমার বাইকের ইঞ্জিন অনেক স্মুথ এবং অনেক কম ভাইব্রেশন এবং সুন্দর সাউন্ড প্রডিউস করে থাকে।
এই বাইকটির ব্রেকিং এবং কন্ট্রোল বেশি ভালো হওয়াতে সকল বয়সের লোক এই বাইকটি বেশি পছন্দ করে থাকে। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ আলামিন হোসাইন
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।