Yamaha FZ FI V3 ২৫০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - অনন্ত

This page was last updated on 13-Jul-2024 02:17pm , By Ashik Mahmud Bangla

আমি অনন্ত, আমার বাসা রামপুরা, ঢাকা। ছোট বেলা থেকেই একটা শখ ছিল যে আমার মামাদের মত বাইক চালাবো। কিন্তু অনেক আদরের ছিলাম তাই বাইক কিনে দিত চাইতো না। তবে অনেক জল্পনা কল্পনা শেষে বাবা রাজি হয় একটি বাইক কিনে দিতে। তাই আজ আমি আমার Yamaha FZ FI V3 এবং বাইক নিয়ে কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। 

Yamaha FZ FI V3 ২৫০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - অনন্ত

yamaha fz fi v3 price in bd তখন ২০১৪ এর শেষের দিক। বাবার কাছে অনেক কিছু নিয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবার পর আমি প্রথম বাইক Keeway RKS 125cc বাইকটি কিনি। শুরু হয় আমার প্রথম নিজের বাইক চালানোর দিনগুলো। খুব অবাক হয়ে ফেসবুকে দেখতাম কিছু সংখ্যক বাইকার ভাই দূর দুরান্তে ট্যুরে যাচ্ছেন। বিভিন্ন প্লেস এ যেয়ে ছবি তুলত সেখান থেকেই আসলে বাইকিং ও প্রকৃতির প্রতি একটা মায়া আর ভালবাসা জমতে শুরু করে। পার্ট টাইম জবের টাইট শিডিউল ও পড়াশুনার চাপে খুব একটা বেশি ট্যুর দেয়া হয়নি তখন। এরপর যখন বাইকের টুকটাক পারফর্মেন্স বুঝার ও উপভোগ করার চেষ্টা করি তখন শুরু হয় আমার বাইক চেঞ্জ। আলহামদুলিল্লাহ চারটি কোম্পানির বাইক এর মডেল চেঞ্জ করার পর আমাকে আকৃষ্ট করে YAMAHA কোম্পানি এর বাইক। প্রথম কিনি Yamaha FZS FI V2 DD (Dark Knight) বাইকটি।  বাইকটি এক কথায় আলটিমেট বক্স অফ হ্যাপিনেস এর ছোটখাটো একটা কম্বো প্যাক। যেমন লুক, মাইলেজ,  কম্ফোর্ট তিন ই যথেষ্ট ভাল পারফর্মেন্স পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ।

fzs fi v3 price পরবর্তীতে Yamaha Saluto 125cc বাইকটি কিনি এটার ব্যাপারে বলার প্রয়োজন নেই কারন এটি মাইলেজ স্টার অফ ইয়ামাহা। এই বাইকটি ৪৫০০ কিলোমিটার চালানোর পর আমি অনুভব করি ABS বাইক যখন বাংলাদেশে চলে এসেছে তবে তাই হোক শুরু হয় মিড রেঞ্জ এর ভিতর ABS টেকনোলজির একটি বাইক কেনার প্রচেষ্টা। আলহামদুলিল্লাহ আমি Yamaha FZ FI V3 Metric Black বাইকটি কিনি।

ঢাকাস্থ ACI Motors Bangladesh এর অথোরাইজড Crescent Enterprise South আউটলেট থেকে ২,৩৩,০০০ টাকা দিয়ে বাইকটি কিনি যার রেগুলার প্রাইজ ছিল ২,৫১,০০০ টাকা এবং ক্যাশব্যাক ছিল ১৮,০০০ টাকা।  আমার ভাগ্য আবার অনেক ভাল কারন যেদিন ই আমি নতুন বাইক কিনি ওই দিন ই বৃষ্টি থাকে বাইকটি নিয়ে ভিজে ভিজে বাসায় আসি। দ্বিতীয় স্টার্টটা বাসায় আম্মুর হাতে দিয়ে করাই। 

yamaha user in bd

 এখন আসি বাইকের ফিচারের কথায়। বাইকটির গ্লোসি কালার টাই আমার কাছে বেশি জোস লাগে কারন বাইকটি ওয়াস করার পর বা রোদে কিংবা আলোর পড়লে পুরাই অস্থির একটা চকচকে লুকস দেয়। হেডলাইট সম্পুর্ন এলইডি এবং AHO সিস্টেম হওয়াতে আমার কাছে বেশি ভাল লাগে ইভেন আমি এখনো হেডলাইট এর অন/অফ সুইচ ইনস্টল করি নাই। ট্যাংক এর সামনে যে ব্ল্যাক কালারের গ্রিল এয়ার ইনটেক টা লাগানো তা বাইকটির লুকস সুন্দর করে দিয়েছে। 

মিটার ডিসপ্লে টা সম্পুর্ন এলইডি  হওয়াতে সব সময় বাইকের মিটার রিডিং দেখা যায়। 149cc,  13.2 Ps power এবং 12.8 nm Torque  এর ব্লু-কোর ইঞ্জিন যা আমাকে সিটি রাইড ও হাইওয়ে রাইডে দিয়েছে অন্যরকম এক অনুভূতি। ABS এর কারনে ব্রেকিং ইফেসিয়েঞ্চি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। আমার মনে হয় কারন আমি এই সেগমেন্ট এর ভার্সন ২ বাইকটিও চালিয়েছি। ইয়ামাহার সবচাইতে বড় সুবিধা হচ্ছে FI ইঞ্জিন (ফুয়েল ইঞ্জেকশন সিস্টেম) যা মাইলেজ এর দিক থেকে বিশাল একটা সাপোর্ট দেয় আমাকে। আমি বর্তমানে সিটিতে ৩৭ কিলোমিটার প্রতি লিটার আর হাইওয়েতে ৪২ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পাচ্ছি। 

yamaha fz fi v3 user review ৭৫০০ আরপিএম এ একটু ভাইব্রেশন করে কিন্তু এইটা সহনীয়। ০-৮০ কিলোমিটার খুব স্মুথলি উঠে যায় তবে আমি মনে করি স্পিড উঠানোর থেকে স্পিড কমিয়ে আনা বেশি জরুরী। এই কাজটা করে দেয় আমার বাইকের সামনের চাকার সিঙ্গেল চ্যানেল ABS। 

একটা বাইক কেনার পর সবচাইতে বড় জিনিস হচ্ছে তার যত্ন। আমি নিজেই আমার বাইকের যত্ন করি এরপর যখনই সার্ভিস এর প্রয়োজন হয় তখনই সার্ভিস সেন্টার এ নিয়ে যাই। এছাড়া বাইক ওয়াস, নিয়মিত ইঞ্জিন অয়েল চেঞ্জ, এয়ার ফিল্টার ক্লিন ইত্যাদি মেইনটেইন্যান্স করি। আমি ইঞ্জিন অয়েল Yamalube 10w40 Semi synthetic ব্যবহার করি।

yamaha bike showroom

 আমি প্রায়ই রাতে হাইওয়েতে যাই তাই আমার বাইকের সামনে দুটি A7 ফগ লাইট লাগানো আছে। এই পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্পিড ১১৪ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা তুলতে সক্ষম হয়েছি। বাইকটি নিয়ে আমি কুমিল্লা, নোয়াখালী ট্যুর দিয়েছি। আল্লাহর রহমতে সম্পুর্ন ট্যুরে বিন্দু মাত্র আশাহত করেনি আমার FZ FI V3 বাইকটি। সর্বশেষ বলতে চাই Yamaha FZ FI V3 বাইকটি সকল দিক থেকে আসলেই প্রশংসার দাবিদার। আমি যথেষ্ট সন্তুষ্ট আমার বাইক নিয়ে। কম্ফোর্ট মাইলেজ ও লুকস এর বস FZ FI V3। সবসময় সাবধানে বাইক চালাবেন ও সার্টিফাইড হেলমেট ব্যবহার করবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।   

লিখেছেনঃ অনন্ত     আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।