Yamaha Fazer ২৫,০০০কি:মি মালিকানা রিভিউ লিখেছেন জহির আহমেদ
This page was last updated on 28-Jul-2024 06:21pm , By Saleh Bangla
আমি জহির আহমেদ জনি, মাস্টার্সে পরতেছি নর্দান ইউনিভার্সিটিতে আমি সাভারে বসবাস করি। আজ আমি শেয়ার করছি আমার Yamaha Fazer নিয়ে কিছু জানা-অজানা কথা। আমি ২০১২ সাল থেকে বড় ভাইয়ের বাইক চালাতাম, যেটা ছিল হিরো এসপ্লেন্ডার। ২০১৪ সালের কথা নিজের বাইকের জন্য বায়না ধরি, মোটরসাইকেল কোনটা নিবো তা নিয়ে নানান গবেষণা করে ঠিক করি Yamaha Fazer নিবো। বাসা থেকে কিনে দিতে রাজি হয় তবে পালসার ১৫০ সিসি। বাসা থেকে বলে ফেজারের বডি কিট প্লাস্টিক তাই ফেজার দেয়া যাবে না। আমি জিদ ধরি ফেজারই লাগবে এবং বাসা থেকেও একটি সময় রাজি হয় এবং কিনে দেয়।
Yamaha Fazer পছন্দের কিছু কারন:
Yamaha Fazer চমৎকার স্পোর্টস লুক আমার অনেক ভালো লাগত। মোটা চাকার বাইক আমার খুব পছন্দ ছিল। অনেক ভাল ভারসাম্য রক্ষা করা যায়। যেকোনো রাস্তায় চলার উপযোগী। আরামদায়ক একটি বাইক এবং লং ট্যুরের জন্যও ভাল। তিন বছরে মাত্র ২৫,০০০ কি: মি: রাইড করেছি। লংট্যুর ছাড়া তেমন একটা বাইক চালাই না। বাসা থেকে বাইক বের করলে বড়োজোর ৮-১০ কি: মি: চালানো হয়।
Yamaha Fazer FI V2 2017 Edition Price In Bangladesh
Yamaha Fazer নিয়ে যেসব জায়গা ঘুরে বেরিয়েছিঃ
* বান্দরবন ( সণ মন্দির, নীলাচল,নীলগিরি,থানচি- আলিকাদম ) * রাঙামাটি ( সাজেক ভ্যালী ) * খাগড়াছড়ি ( শহর এবং আলুটিলা গুহা ) * কক্সবাজার * ময়মনসিংহ ( বিরিশিরি, মুকতাগাছা ) * জামালপুর * মধুপুর * সিলেট ( জাফলং, বিছানাকান্দি ) * কুয়াকাটা Yamaha Fazer এর কিছু দিকঃ আমি যখন ফেজার নতুন কিনে আনি সেই অবস্থায় মাইলেজ যেমন ছিল এখনো তেমনই আছে। সিটিতে ৩৩-৩৪ এবং হাইওয়েতে ৩৭-৩৮ মাইলেজ পাচ্ছি। বাইকের টপ স্পীড তুলেছিলাম ১২৪ kmph। নতুন অবস্থায় ১১৫-১১৭ এক টানেই উঠতো, তার পর আস্তে আস্তে স্পীড বাড়তো। তবে এখন ১০৮-১১০ এক টানেই উঠে, তারপর আস্তে আস্তে স্পীড বারে।
Yamaha Fazer এর ভালো দিকঃ
১. কম্ফোর্টঃ ফেজারের সিটিং পজিশন, হ্যান্ডেল বেশ আরামদায়ক। অনেক সময় ধরে চালালেও হাতে কোন ব্যাথা হয় না। একটি কথা না বললেই না, লং ট্যুরের জন্য বাইক কম্ফোর্টএবল হওয়াটা খুব জরুরি আর কম্ফোর্ট এর কথা চিন্তা করলে ফেজার অতুলনীয়। 2) কর্নারিং: আমি কর্নারিং করতে ভালবাসি এবং ফেজার একটি স্মুথ বাইক হওয়াতে সবচেয়ে বেশি কম্ফোর্ট ফিল করি কর্নারিং করে। 3) ব্রেকিং: ফেজারের ব্রেকিং সিস্টেম খুবই ভাল, ইমার্জেন্সি মোমেন্টে বেশ কনফিডন্সের সাথেই ব্রেক করা যায়। ২৫,০০০ কিলোমিটারের পথ পারি দিতে অনেক বারই ৮০-৯০ kmph স্পীডে ইমার্জেন্সি ব্রেক করতে হয়েছে। বাইকের স্পীড ১০০ kmph এর বেশি হলেও ইমার্জেন্সি ব্রেকিং দারুন কাজ করে। এক কথায় ফেযারের ব্রেকিং সিস্টেম অসাধারণ।
Also Read: ACI Motors Reduced The Price of Yamaha R15 V2, R15S
যেকোনো রাস্তায় চলার উপযোগী Yamaha Fazer । এই জিনিসটি আমার সব চাইতে ভালোলাগে ফেজারের, আমি যে এলাকায় বসাবাস করি রাস্তা ঘাট তেমন ভাল না। তা ছাড়া দেশের সবচাইতে খারাপ রাস্তার জন্য পরিচিত, ময়মনসিংহ - বিরিশিরি এবং সিলেট -বিছানাকান্দি কোন প্রকার সমস্যা ছাড়াই আল্লাহর রহমেতে পার করেছি । তাছাড়া দেশের সব চাইতে বড় দুটি পাহাড়ি রাস্তা সাজেক ভ্যালী এবং থানচি - আলিকাদম পার করেছি কোনপ্রকার সমস্যা ছাড়াই।
Yamaha Fazer খারাপ দিকগুলো
১. মাইলেজ: যদিও মাইলেজ খুব একটা কম না, তারপরও আর একটু বেশি হলে লং ট্যুরের ক্ষেত্রে সুবিধা হতো। ২. হেডলাইট: আমার কাছে মনে হয়েছে ফেজারের হেড-লাইটের আলো কিছুটা কম রাতের বেলা সাচ্ছন্দে রাইড করার জন্য আরও বেশি আলো দরকার ছিল। ৩. রেডি পিকআপ: রেডি পিকআপ আরও একটু বেশি হলে ভালো হতো, তুলনা মুলক কিছুটা কম, তাই বলে যে একদম কম তাও না, চলার মতো। ৪. পিলিয়ন: যদিও ২ জনের বেশি নিয়ে বাইক চালানো ঠিক না, তবুও এলাকায় বাইক চালালে বন্ধু-বান্ধবের জন্য বাইকে ৩ জন নিতেই হয়। সিট ছোট হওয়াতে ফেজারে ২ জনের বেশি নেয়া বেশ কষ্টসাধ্য। ৩ জন নিয়ে বেশিক্ষণ বাইক চালাতে গেলে চালকের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।
বাংলাদেশের সেরা কয়েকটি ট্যুরিং মোটরসাইকেল
Yamaha Fazer বাইকের বর্তমান অবস্থাঃ
বাইকের বর্তমান অবস্থা খুবই ভাল, লুক আগের মতই আছে কারন আল্লাহর রহমতে কোন প্রকার দুর্ঘটনার শিকার হয় নাই। মাইলেজ নতুনের মতই আছে। বাইকে বড় ধরনের কোন কাজ করাতে হয়নি। তবে বাইকের টপ স্পীড একটু কমে গেছে। সব কিছু মিলিয়ে আমি আমার বাইক নিয়ে সন্তুষ্ট। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার Yamaha Fazer নিয়ে রিভিউ পড়ার জন্য। আশা করি ভাল আপনাদের সবার ভালো লেগেছে। আমার জন্য দোয়া করবেন। যাতে নিরাপদে পথ চলতে পারি এবং ভবিষ্যতে আমার আরও অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারি। সবাই ভাল থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ । Safe Ride, Enjoy the Life.