TVS Radeon ১৪০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - সাহেল
This page was last updated on 31-Jul-2024 12:08pm , By Shuvo Bangla
আমি জুবের আহমেদ সাহেল সুনামগঞ্জ থেকে আজ শেয়ার করবো TVS Radeon বাইকের মালিকানা রিভিউ । আমার পড়াশোনা ঢাকাতে হলেও করোনার জন্য দীর্ঘ সময় বাড়িতে থাকতে হয়েছে। মূলত গ্রাম এলাকায় ব্যাবহার করার জন্য বাইকটা নেয়া। ভেবেছিলাম পরে শহরে চলে আসলেও যেন ব্যবহার করতে পারি সেই চিন্তা থেকেই রেডিয়ন বাইকটা পছন্দ করা।আমার জীবনের বাইক চালানো শুরু হয় বিভিন্ন কমিউটার সেগম্যান্ট এর বাইক দিয়ে। আমার আব্বাই আমাকে এই বাইকটা কিনে দেয়। গ্রামে কাচা পাকা রাস্তায় চালানোর জন্য মূলত বাইকটা নেয়া। বাইকটা আমি প্রথম দেখি ফেসবুকে পরিচিত এক বড় ভাইয়ের কাছে,যখন দেখি তখন আমার বাইকটা দেখে অনেক পছন্দ হয়। বাইকটিতে রয়েল এনফিল্ড এর একটা ভাব আসে, সাউন্ড টাও সুন্দর।
২০২০ সালের ২৮ শে ডিসেম্বর টিভিএস এর শোরুম থেকে আমার জীবনের প্রথম বাইকটি কিনি। বাইকটি বেগুনি কালার এর , টিভিএস শোরুম থেকে বাইকটির দাম নিয়েছিলো ৯৬,০০০ টাকা। বাইকটি কিনতে আমি আমার দুই ভাগিনাকে নিয়ে গেছিলাম । আমার বাসা থেকে শোরুম ৬৫ কিলোমিটার দূরে। রিমোট এরিয়া বলা চলে।
প্রথম দিন ই ৭০ কিলোমিটার রাইড করে বাড়ি ফিরি। আমি নতুন বলে নিজে চালিয়ে এতটা পথ আসার সাহস করিনি। বাইকের প্রথম ৩০০০ কিলোমিটার আমি ব্রেক ইন পিরিয়ড মেইনটেইন করি খুব সুন্দর ভাবে । ৪ বার ইঞ্জিন অয়েল এবং ১ বার এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন করি। গ্রামে খুব সাচ্ছন্দ্যে বাইকটা চালাই। ছোট ছোট রাইডের জন্য পারফেক্ট একটা বাইক।ব্রেক ইন পিরিয়ড এর সময় ৫০-৫৫ মাইলেজ পেতাম পরে ৫৫-৬০ মাইলেজ পাই । এখন বাইক ১৪,০০০ কিলোমিটার রানিং এখনো সেইম পারফর্মেন্স পাচ্ছি। বাইকের ব্রেকিং ড্রাম হলেও, খুব স্পিডিং করিনা বলে আমার চলে যায়। বাইক নিয়ে ডে লং ট্যুর দিয়েছি ২৫০-৩০০ কিলোমিটার আর লং ড্রাইভে টানা ২-৩ দিন ৬০০-৭০০ কিলোমিটার চালানো হয়েছে।
গ্রামে ৪৫-৫০ মাইলেজ পাই , হাইওয়েতে ৫৫-৬০। বাইকের টপ স্পিড চেক করছিলাম ৯৫। বাইকে এখন পর্যন্ত নতুন লাগিয়েছি ক্ল্যাচ ক্যাবল,চাকায় জেল দিয়েছি, এয়ার ফিল্টার, প্লাগ চেঞ্জ করেছি। মডিফাইড করে ছিলাম হেডলাইট , মিটার, লুকিং গ্লাস, ফগ লাইট। আবার খুলে ফেলেছি। আল্লাহর রহমতে কোনো এক্সিডেন্ট হয়নি। কন্ট্রোলিং মোটামুটি , যখন বাইক নিয়ে বের হই তখন স্টার্ট দিয়ে ইঞ্জিন ২-৩ মিনিট হিট করে রাখি তার পর বের হই।
বাইকে এখনো পর্যন্ত মেজর কোনো প্রব্লেম পাইনি, বাইকে বৃষ্টি কাদা লাগলে তখনি ধুয়ে ফেলি, গ্রামে পেট্রোল শহরে গেলে অকেটেন ব্যাবহার করি । টিভিএস এর ইঞ্জিন অয়েল 10W30 গ্রেড ব্যবহার করি । বাইকে অফিসিয়াল সবগুলো সার্ভিস করানো হয়েছে । একবার মাস্টার সার্ভিস করা হয়েছে।
TVS Radeon বাইকের কিছু ভালো দিক -
- যাবতীয় সকল কাজে ব্যবহার করা যায়।
- ফুয়েল ইফিসিয়েন্সি ভালো
- ইঞ্জিন পাওয়ার খুব ভালো
- শহরে এবং গ্রামে দুই জায়গাতে মানানসই
- কম মেইনটেইন করলেই হয়
TVS Radeon বাইকের কিছু খারাপ দিক -
- লং রাইডে ব্যক পেইন হয়
- ড্রাম ব্রেক এ তেমন কনফিডেন্স পাইনা
- হিটিং ইস্যু আছে
- মাইলেজ মাঝে মধ্যে কম পাই
- হেড লাইটে আলো কম
যদি কারো কমিউটার বাইক নেওয়ার চিন্তা ভাবনা থাকে এই সেগমেন্ট এর, লুকিং এবং পারফর্মেন্স মিলিয়ে তাহলে অবশ্যই সাজেস্ট করবো টিভিএস কোম্পানির রেডিয়ন বাইকটি নিতে কারন এর পারফরম্যান্স তুলনামূলক অন্যান্য বাইকগুলো থেকে ভালো। বর্তমানে বাইকটি বাজারে ১,১৮,০০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। পরিশেষে একটি কথা বলবো ধীরে সুস্থে বাইক চালান। যত গতি তত গতি। সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। আপনার অপেক্ষায় আপনার পরিবার পরিজন বসে আছে। প্রোপার সেইফটি নিয়ে বাইক রাইড করুন, ট্রাফিক আইন মেনে চলুন। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ জুবের আহমেদ সাহেল