TVS Apache RTR 160 4V ২৫০০ কিলোমিটার রাইড - মিল্টন মল্লিক
This page was last updated on 28-Jul-2024 08:36am , By Raihan Opu Bangla
আমি মিল্টন মল্লিক । আমার বাইকের নাম TVS Apache RTR 160 4V । আমার বাইকটি বর্তমানে ২৫০০ কিলোমিটার রাইড করা হয়েছে । আজ আমি আমার বাইকটির ব্যাপারে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
আমি চন্দনাইশ থানার দোহাজারী এলাকায় বসবাস করি। আমি ২০১৫ সালে তে ৮০ সিসি এর একটি সেকেন্ড হ্যান্ড বাইক ক্রয় করেছিলাম নাম Hero Honda । চালানো শেখার জন্য আসলে আমি বাইকটি কিনেছিলাম। এক বছর পর অবশ্য আমি বাইকটা বিক্রি করে দিয়েছিলাম। আমি বাইকিং কেনো ভালোবাসি তা আসলে বলে বুঝাতে পারবো না।ছোট বেলা থেকেই শখ ছিল কোন একদিন আমার ও একটি বাইক থাকবে আমিও আমার বাইক নিয়ে সারা দেশ ঘুরে বেড়াবো। সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় আমার এখন বাইক আছে ।
Click To See TVS Apache RTR 160 4V Price In Bangladesh
আমার মা আমাকে অনেক হেল্প করেছে বাইকটা নেওয়ার জন্য। মা আমাকে কিছু টাকা দিয়েছে বাকী টাকা আমার নিজের উপার্জিত টাকা। আর আপনারা হয়তো জানেন নিজের ইনকাম দিয়ে বাইক কিনার অনুভুতিটা কেমন । আমি প্রথম থেকেই আর টি আর এর ভক্ত ছিলাম। যদিও তখন আমার বাইক কিনার মতো সামর্থ ছিল না । যখন থেকে বাইক কিনবো ভাবছিলাম তখন থেকে আমি BikeBD.com এর ফ্যান পেইজ মিয়মিত ফলো করি ।
বাইক বিডিতে TVS Apache RTR 160 4V বাইকটির পোষ্ট গুলো ভালো ভাবে ফলো করতাম । এই বাইকের লুকটা আমার অসাধারন লাগে। তাই আমি আরটিআর ৪ভি বাইকটি বেছে নিলাম । আরটিআর ৪ভি বাইকটি আমি বেছে নেওয়ার কারন হচ্ছে, এই বাইকটির টপ স্পিড, রেডি পিকাপ এবং দাম কমের মধ্যে স্পোর্টস বাইকের লুক দিয়েছে এক কথায় বাইকটি আমার অসাধারন লাগে । আমি বাইকটি কিনেছি এক লক্ষ একাত্তোর হাজার সাত শত সাতষোট্টি টাকা দিয়ে ।
আমার বাইকটি আমি চন্দনাইশ থানার হাসিমপুর এলাকার বার আউলিয়া টিভিএস শো রুম থেকে কিনেছি । বাইক কিনতে যাওয়ার আগের দিন রাতে ঘুম হয়নি । জীবনে প্রথম বার শো রুম থেকে বাইক নিবো । সকাল সাতটায় ঘুম থেকে উঠে বন্ধুদের ফোন দিয়েছি । বাইক কিনতে আমরা ৮ জন গিয়েছিলাম ।
শো-রুমে ৮-১০ টা বাইক ছিল একটা বেছে নিলাম । প্রথম দিন আমি বাইক চালাইনি, কারন ইচ্ছে ছিল মায়ের থেকে আর্শিরবাদ নিয়ে আমি আমার বাইকে উঠবো। আমার এক বন্ধু ছিল সে রাইড করে বাসায় নিয়ে আসলো। মা তো দেখে মহা খুশি মায়ের পায়ে ধরে নমস্কার করে বাইকে উঠলাম ।
আমি আসলে সখ করে বাইক নিয়েছি। আমার ইচ্ছে আমি আমার এই বাইক নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে-বেড়াবো । যখন বাইক নিয়ে বের হই তখন কোন না কোন এক জায়গার উদ্দেশ্য নিয়ে বের হই আর আপনারা তো জানেন ই বাইক নিয়ে ঘুরার সময় মনের অনুভুতি কেমন হয় । নিজেকে কেন জানি সুখী মনে হয় । আমার বাইকটি আমি ৪টি সার্ভিসিং করিয়েছি এবং আমি যে শো-রুম থেকে বাইক কিনেছি সেই শো-রুমের সার্ভিস সেন্টার থেকে করিয়েছি।
আমি চারটা সার্ভিসিং করিয়েছি প্রতিবার ইঞ্জিন অয়েল এবং ১ বার ইঞ্জিন অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করিয়েছি । আমার এই বাইক তো কিনেছি ৭ মাস হয় এবং লকডাউনের কারনে তেমন রাইড করতে পারিনি এখন আমার বাইক ২৫০০ কিলোমিটার রানিং এখন পর্যন্ত আমি ৩০ কিলোমিটার প্রতি লিটার করে মাইলেজ পাচ্ছি ।
বাইক রাইড শেষে ইঞ্জিন ভালো ভাবে ঠাণ্ডা হওয়ার পর কাদা-ময়লা যা লাগে তা পানি দিয়ে ভালো ভাবে পরিষ্কার করে শুকনো কিছু দিয়ে মুছে ফেলি । আমি টিভিএস এর রিকমেন্ড ইঞ্জিন অয়েল tru4 ব্যবহার করি । ইঞ্জিন অয়েল গ্রেড 10w30।আমার বাইকের কোন পার্টস পরিবর্তন করতে হয়নি শুধু ইন্জিন অয়েল এবং অয়েল ফিল্টার নিয়মিত পরিবর্তন করে থাকি । কোন কিছুই মোডিফাই করা হয়নি। এই বাইটি দিয়ে আমি কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ রোডে সর্বোচ্চ ১১২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা স্পীড তুলেছি।
বাইকটির কিছু ভালো দিক -
- রেডি পিক আপ
- টপ স্পীড
- লুক
- পাওয়ারফুল ইঞ্জিন
- পলিয়ন সীট কম্ফোর্টেবল
বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
- সিঙ্গেল ডিস্কের ব্রেকিং একটু দূর্বল
- মাইলেজ
- ১২০০ এমএল ইঞ্জিন অয়েল দিতে হয়
- সহজে টার্ন করা যায় না
- যাদের হাইট কম তাদের এই বাইক রাইড করতে একটু কষ্ট হবে
আমি যত ট্যুরে গিয়েছি তার মধ্যে মনে রাখার মতো ট্যুর ছিল বান্দরবান থেকে মিলনছড়ি হয়ে নীলগিরি হয়ে থানছি, আলি কদম ডীম পাহাড়, ফ্যাঁসিয়া খালি দিয়ে চকরিয়া থেকে কক্সবাজার।
এতো সুন্দর রাস্তা কি বলবো যদি কারো কর্নারিং করার ইচ্ছে থাকে তাহলে আমি তাদের বলবো একবার অন্তত ফ্যাঁসিয়া খালির রোড গুলা আর ডিম পাহাড় ঘুরে আসুন । সব মিলিয়ে অসাধারন একটা ট্যুর ছিল । শেখার মতো দেখার মতো অনেক কিছুই ছিল এই ট্যুর এ। যারা টপ চান, রেডি পিকাপ, লুকস চান তাদের জন্য TVS Apache RTR 160 4V বাইকটি খুব ভালো হবে ।
মাইলেজ এর কথা চিন্তা করলে এই বাইক না নেওয়াই ভালো । যারা ৫ ফিটের নিচে তাদের এই বাইকটি না নেওয়াই উত্তম। আমি নিজে যা উপলব্ধি করেছি তা লিখেছি। যদি ভুল কিছু লিখে থাকি তাহলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন দয়া করে । ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃ মিল্টন মল্লিক
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে