TVS Apache RTR 160 4V ৩০,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - মাছুম আহমেদ
This page was last updated on 18-Jan-2025 06:46pm , By Raihan Opu Bangla
TVS Apache RTR 160 4V প্রায় ১৮ মাস ধরে রাইড করছি। মধ্যবিত্ত হিসেবে অনেক শখের একটা বাইক। যদিও এর আগে TVS Apache RTR 150 দুই বছরে ৪১ হাজার কিলো চালিয়েছি। শুধু এই দুটো বাইকই আমার নিজের নামেই চালিয়েছি। আর অন্যান্য বাইক আমার ফ্যামিলির ছিলো মানে বড় ভাইয়ের।
TVS Apache RTR 160 4V ৩০,০০০ কিমি রাইড রিভিউ
TVS Apache RTR 160 4V মাত্র ১৪ টি জেলা ভ্রমণ করেছি । এর মধ্য কিছু কিছু জেলা একাধিক বারও গিয়েছি। জেলা গুলো হচ্ছেঃ
- সুনামগঞ্জ
- হবিগঞ্জ
- মৌলভীবাজার
- বি-বাড়ীয়া
- কুমিল্লা
- চট্রগ্রাম
- বান্দরবান
- খাগড়াছড়ি
- রাংগামাটি
- কক্সবাজার
- চাদঁপুর
- নরসিংদী
- ঢাকা
- কিশোরগঞ্জ
অনেক সুবিধা আর অসুবিধায় অতিক্রম করেছি এই পথঃ প্রথম ২ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত সবার মতই ব্রেকিং মেনে চলেছি। আর এই সময় আমি TVS Bike কোম্পানির রিকমেন্ড অনুযায়ী 10w30 গ্রেডের মবিল ব্যবহার করেছি। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত 10w40 গ্রেডের GTX মবিল ব্যবহার করে যাচ্ছি। প্রতি ১২০০ কিলো থেকে সর্বোচ্চ ১৫০০ কিলোর মধ্যেই মবিল চেঞ্জ করার চেষ্টা করছি। ভালো ব্রেকিং এর জন্যে ২ হাজার কিলোমিটারের পরে আমি পিছনের স্টক টায়ার চেঞ্জ করে ১৪০-৬০/১৭ CEAT টায়ার লাগিয়েছি। যদিও আহামরি কোন কিছু না, তবে কিছুটা কনফিডেন্স পেতাম। আর এই ৩০ হাজার কিলোমিটারের পর স্টক টায়ার সহ টোটাল ৩ নাম্বার টায়ার চলছে পিছনে। তবে এখন পর্যন্ত ফ্রন্ট টায়ার স্টকই আছে আর চেঞ্জ করার সময় হয়ে গেছে মনে হচ্ছে।
Also Read: After Budget TVS Motorcycle Price In Bangladesh 2015
সার্ভিসিংঃ মিটারে যখনি সার্ভিসের সিগনাল দিতো সময় করে তখনই সার্ভিসিং করে নেয়ার চেষ্টা করেছি এবং মাঝে মাঝে তাই করেছি।
পার্টসঃ ৩০ হাজার কিলোর মধ্যে যেগুলো পরিবর্তন করেছি তার মধ্যে বল রেসার ৩ নাম্বারটা চলছে। প্রথমটা ৮ হাজারেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ২য় টা ১৭/১৮ হাজারের মধ্যে হবে। আর বর্তমানে চেঞ্জ করা ফরজ হয়ে আছে।
মবিল ফিল্টারঃ প্রতি একটা মবিল চেঞ্জ করার পরে ২ টায় চেঞ্জ করেছি (দাম কম তাই করেছি)।
এয়ার ফিল্টারঃ ৪ থেকে ৫ টা হবে সঠিক মনে নেই। তবে প্রথম টা ৪ হাজার কিলোর পরে চেঞ্জ করেছি। এয়ার ফিলটার মাইলেজের উপরেও প্রভাব ফেলে। সুতরাং এয়ার ফিল্টার ফ্রেশ রাখা ভালো।
Also Read: Tvs bike showroom in Beanibazar: Central Auto Musume
চেইন সেটঃ প্রায় ২০ হাজার কিলোমিটার পরে টোটাল চেইন সেট চেঞ্জ করেছি। যদিও এর মধ্যে শুধু সামনের চেইন স্পোকেট টা ২ বার চেঞ্জ করেছি।
ব্রেক পেডঃ এটা আসলে চালালেই বুঝা যায় কখন চেঞ্জ করতে হবে। তাছাড়া সার্ভিসিং এ গেলে আপনাকে বলে দিবে অথবা আপনি নিজেই জিজ্ঞেস করে নিবেন। তবে আমি কত বার করেছি ভুলে গেছি কিন্তু কাদাঁ, বালু,বৃষ্টিতে কম লাস্টিং করে। তাছাড়া ভালই।
Click To See TVS Apache RTR 160 4V Review By BikeBD
ব্রেক ডিক্সঃ এখন পর্যন্ত স্টক গুলাই আছে। তবে পিছনেরটি মূমূর্ষ অবস্থায় আছে। চেঞ্জ করতে হবে।
ওয়েল সিলঃ সামনের বাম পাশের জাম্পারের সিলটা চেঞ্জ করেছি।
হেড সিলিন্ডার সিলঃ ১৬/১৭ হাজার কিলোতে একবার চেঞ্জ করেছি।
ব্যাটারিঃ স্টক টাই আছে, শুধু সার্ভিসের সময় চার্জ দিয়ে নিতাম। A7 ফগ লাইট ব্যবহার করছি।
প্লাগঃ একবার চেঞ্জ করেছি।
মাইলেজঃ প্রথম ৯/১০ হাজার কিলো পর্যন্ত আমি ৪০/৪০+ ও পেয়েছি। তারপর একবার টানাটানি করে সাজেক যাওয়ার পর থেকে আজও পর্যন্ত ৩০/ ৩৫ এর উপরে উঠেই না। যতই ভদ্র ভাবেই রাইড করি না কেন। তবে ৪ ভাল্পের এতো পাওয়ার ফুল একটা বাইকে ৩০/ ৩৫ যাওয়াটাই স্বাভাবিক। যারা কিনবেন তারা বুঝে শুনে কিনবেন।
এবার আসি অভিজ্ঞতায়ঃ আমি ভালো ব্রেকিং এর জন্যে পিছনের টায়ার চেঞ্জ করেছি আর সামনে পিছনে একি সাথে ব্রেক ধরি যেটা ৬০ঃ৪০ রেসিওর মত। মানে সামনে ৬০%, পিছনে ৪০%। আর ইঞ্জিন ব্রেক তো অভ্যাস হয়ে গেছে। আর এই ব্রেকিং এর জন্যে উৎসাহ দিয়েছে Nahid Talukdar ভাই আর Deejay Liton ভাই। আল্লাহর রহমতে ব্রেকিং এর জন্যে এখন পর্যন্ত কোন সমস্যায় পরি নি। নাম্বার প্লেটের উপরে যে লাইট আছে সেটা ২ হাজার কিলোর মধ্যেই কোথায় যেন হারিয়ে গেছে আমি নিজেও জানি না।
Also Read: Tvs bike showroom in Monohordi: Rini Motors
তবে পরে নতুন কিনে লাগিয়ে নিছি। পিছনের কেলিপারের প্লাস্টিক কাভারটাও নিজে নিজে কোথায় হারিয়ে গেছে সেটাও জানি না। সেটাও নতুন কিনে লাগিয়েছি। প্রথম লটের বাইক গুলো এমনই নাট বল্টু একটু লুজ থাকতো। যেটা Daulat DK ভাইও ভালো করে প্রকাশ করেছিলো এক সময়। তবে বর্তমানের ফিটিংস গুলো কেমন, নতুন যারা চালায় তারাই বলতে পারবেন। একবার ঢাকা যাওয়ার সময় নরসিংদী যাওয়ার পরে বাইক আর স্টার্ট নিচ্ছিলো না। পরে সেখানে TVS সার্ভিস সেন্টারে ধাক্কা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর চেক করে দেখলো কার্বোরেট আর ইঞ্জিনের সংযুক্ত কারী পাইপ (মনে হয় হুইস পাইপ) এটা ছুটে গেছে। এটা ছুটে যাওয়া অস্বাভাবিক।
যদিও এমন কাহিনী আমার সাথে আরো দুইবার হয়েছে, কপাল ভালো Nahid Talukdar ভাই সাথে ছিলো। তখন বাইকে প্রতি খুব বাজে ধারনা হয়েছিলো। পরে সিলেট এসে সার্ভিস সেন্টারে পার্মানেন্ট সমাধান খুজে বের করেছি। এখন আর সমস্যা হচ্ছে না। ২৫ হাজার কিলোতে এসে সাইলেন্সারে কিসের যেন শব্দ হতো, বুঝতে পারতাম না। তারপরেও রাইড করতাম। ২৭ হাজারে এসে সার্ভিস সেন্টারের সহযোগিতায় বুঝা গেলো, সাইলেন্সার শেষ। পরে ২৯ হাজারে এসে রাজু ভাইয়ের সহযোগিতায় কোম্পানি থেকে চেঞ্জ করে দিয়েছে।
Also Read: TVS Apache RTR150 VS Apache RTR160 Comparison Review
সার্ভিস সেন্টারের কাজঃ আমি যেখানে করাই সেটাকে ১০ এর মধ্যে ৯ দেয়া যায়।
পার্টসের মুল্যঃ ইন্ডিয়ান কোম্পানির অন্যান্য বাইকের (যেমন বাজাজ) পার্টসের দামের তুলনায় বেশি মনে হচ্ছে। যদি কতৃপক্ষ দাম কিছুটা কমায়, আমরা মধ্যবিত্তরা উপকৃত হতাম।
উপসংহারঃ ১৬০ সিসি সেগমেন্টের বাইকের মধ্যে TVS Apache RTR 160 4V অন্যতম একটি বাইক মনে হয়েছে। তবে ইয়ং বয়সের নতুন বাইকাররা না নেওয়াই উত্তম মনে করছি। কোম্পানি আরো সচেতনতার সাথে (নাট বল্টু টাইট দিয়ে) মার্কেটে ছাড়া উচিৎ। আর যারা নিবেন অবশ্যই ভালো করে চেক করে নিবেন। যারা চেক করতে দিবে না, সেই শো-রুম থেকে বাইকও নিবেন না। বিঃদ্রঃ সম্পূর্ন নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছি। যেহেতু আমি বাইক ইঞ্জিনিয়ার না, সেহেতু অনেক পার্টসের সঠিক নাম ভুল হতেও পারে। তার জন্যে ক্ষমা পার্থী।
লিখেছেনঃ মাসুম আহমেদ
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।