TVS Apache RTR 150 DD ৪২,০০০ কিলোমিটার রিভিউ - তুহিন

This page was last updated on 30-Jul-2024 03:49pm , By Raihan Opu Bangla

আমি রাফসান খান তুহিন। মানিকগঞ্জ জেলা সদরে বসবাস করি । বর্তমানে আমি TVS Apache RTR 150 DD বাইকটি ব্যবহার করছি। এটাই আমার জীবনের প্রথম বাইক। এই বাইকটি গত তিন বছরে আমি ৪২,000 কিলোমিটার রাইড করি। বাইকটি নিয়ে আমার এই ৪২,০০০ কিলোমিটার পথ চলার বিস্তারিত গল্প আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।

TVS Apache RTR 150 DD ৪২,০০০ কিলোমিটার রিভিউ

tvs apache rtr 150 dd at bandarban     

আমার বাইক প্রেমি হওয়ার কারণ হচ্ছে আমি দুই চাকার যানবাহন খুব ভালোবাসি। ছোটবেলায় আমার বাইসাইকেল  ছিল। এই বাইসাইকেল নিয়ে অলিতে গলিতে ঘোরাফেরা করতাম। বড় ভাইদের যখন বাইক নিয়ে ঘুরতে দেখতাম তখন মনের ভিতর একটা ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষা হতো বড় হয়ে হয়তো আমারও একদিন বাইক হবে।  

আমি প্রথম বাইক চালানো শিখি আমার মামার কাছে 2013 সালে। আর শেখাটা ছিল Honda CD80 দিয়ে। শেখার পর থেকে বাইকের প্রতি আমার  আগ্রহ আরো বেড়ে যায়। কিন্তু তখন আমার বয়স কম ছিল বলে ফ্যামিলি থেকে বাইক কেনার সাপোর্ট পাইনি।   অবশেষে ২০১৭ সালে ৯ জানুয়ারি মানিকগঞ্জ ঈশান মটরস থেকে আমি আমার TVS Apache RTR 150 বাইকটি ক্রয় করি। তখন TVS Apache RTR 150 DD বাইকটির মূল্য ছিল ২,১৭,৯৯০ টাকা। 

tvs apache rtr 150 dd at sabrang 0 point

বাইক কেনার দিনটি ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির দিনের মধ্যে একটি। সেই খুশির দিনে আমার সাথে ছিলেন আমার মামা যে আমাকে বাইক চালানো শিখিয়েছিলেন এবং আমার মা। বাইকটি কিনে প্রথম মাকে নিয়ে চালিয়ে বাসায় ফিরি। সেটা ছিল আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ মুহূর্তের মধ্যে একটি যা মুখে বলে বা লিখে বোঝানোর মত নয়।   TVS Apache RTR 150 DD বাইকটি ক্রয় করার পিছনে প্রথম কারণ ছিল এর লুক। RTR এর লুকস সবসময় আমার ভাল লাগত। এছাড়াও, আমার এই TVS Apache RTR 150 DD এর বেশ কিছু ফিচার ভাল লাগে। তার মধ্যে স্পিড মিটার যাতে টপ স্পিড রেকর্ড থাকে। বাইকের সিটিং পজিশন এবং হ্যান্ডেল বার অন্যান্য বাইকের চেয়ে স্টাইলিশ যা আমার কাছে খুব ভালো লাগে।  

Click To See TVS Apache RTR 160 Test Ride Review In Bangla – Team BikeBD

 

বাইকটি নতুন কেনার পর থেকে শুরু করে প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত টিভিএস সার্ভিসিং পয়েন্ট থেকে সার্ভিসিং করিয়েছি। এর মধ্যে আটটি ফ্রি সার্ভিস ছিল।   আমি আমার বাইকের প্রথম ২০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ব্রেক ইন পিরিয়ড মেইনটেইন করেছি। তখন মাইলেজ পাচ্ছিলাম ৩৮ থেকে ৪০। ব্রেক ইন পিরিয়ড এর পরে মাইলেজ পেয়েছি ৪৩ থেকে ৪৫ কিলোমিটার যা ছিল খুবই সন্তোষজনক মাইলেজ আমার কাছে। 

tvs apache rtr 150 dd at teknaf 0 km

    

আমি সবসময় বাইকের মেইনটেনেন্স এর গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এর কারণ হচ্ছে ভালো পারফরমেন্স পেতে হলে সময় মতো মেইনটেন করতে হবে। যেমন ইঞ্জিন অয়েল সময়মতো পরিবর্তন, চেইনে গিয়ার অয়েল দেওয়া, চাকায় সঠিক হাওয়া রাখা, মাঝেমধ্যেই বাইক ওয়াশ করা ইত্যাদি। আমি ইঞ্জিন অয়েল শুরু থেকে Motul 5100 10W30 Semi Synthetic ব্যবহার করি। দাম ৮৫০ টাকা।  

  আমার TVS Apache RTR 150 DD বাইকের ৪২ হাজার কিলোমিটার পথ চলায় আমি বেশ কিছু পার্টস পরিবর্তন করেছি-

  • চেইন স্পোকেট ২ বার
  • হেডলাইট।
  • পিছনের এবং সামনের চাকার ব্রেক ব্রেক প্যাড ২ বার।
  • পিছনের টায়ার।

  আমি ৩৫ হাজার কিলোমিটার বাইক রাইড পর বাইকে হালকা স্টাইলিশ করার জন্য মার্ড গার্ড কেটে মডিফাই করেছি। এছাড়া আর তেমন কোন মডিফিকেশন করিনি। 

tvs apache rtr 150 dd at tetulia zero point

আমার বাইকে সর্বোচ্চ গতি পেয়েছি পিলিয়ন সহ ১২৪ ঢাকা চট্টগ্রাম হাইওয়েতে।   TVS Apache RTR 150 DD বাইকটিরকিছুভাল দিক-

  • রেডি পিকাপ
  • মাইলেজ।
  • স্টাইলিশ লুক।
  • ইঞ্জিন পারফরমেন্স।
  • এক্সহস্ট সাউন্ড।
  • বিল্ড কোয়ালিটি।

  TVS Apache RTR 150 DD বাইকটিরকিছু খারাপ দিক-

  • ভাইব্রেশন ।
  • ব্রেকিং ।
  • কন্ট্রোল সিস্টেম ।
  • হেড লাইটের আলো কম ।

  আমি আমার এই প্রিয় বাইকটি নিয়ে দেশের প্রায় ৩৫ টি জেলা ভ্রমন করেছি । আমাকে বাংলাদেশের মোটামুটি সব কয়টি ট্যুরিস্ট স্পট ঘুরে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে এই বাইক।      

বাইকটিনিয়েবাংলাদেশেরযেসববিভাগভ্রমন করেছি -

  • ঢাকা
  • চট্রগ্রাম
  • রাজশাহী
  • সিলেট
  • রংপুর
  • ময়মনসিংহ

বাইকটিনিয়েবাংলাদেশেরযেসবজেলাগিয়েছি- মানিকগঞ্জ, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনি, চট্রগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন, কক্সবাজার, মুন্সিগঞ্জ, গাজিপুর, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, রাজবাড়ি, ফরিদপুর, মাগুরা, যশোর, পাবনা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, পঞ্চগড়।

tvs apache rtr 150 dd

     আমরা সকল বাইকার ভাই ভাই। সুতরাং সবার প্রতি আমার অনুরোধ একে অন্যের সাথে কোন বিষয়ে প্রতিযোগীতা করবেন না। আমার জীবনে অনেক ভালো বন্ধু ও ভাই পেয়েছি এই বাইকিং এর মাধ্যমে। এই জন্য আমি নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি।   সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যেন বাইক নিয়ে বাংলাদেশের সব গুলো জেলায় ভ্রমন করতে পারি। ধন্যবাদ।   

লিখেছেনঃ রাফসান খান তুহিন  

 আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।