TVS Apache RTR 150 মালিকানা রিভিউ - মেহের রাব্বি
This page was last updated on 29-Jul-2024 04:52pm , By Raihan Opu Bangla
আমি মেহের রাব্বি । আমার বাসা কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি গেইট, গ্রাম তুলাতলী। আমার জীবনের প্রথম বাইক TVS Apache RTR 150 । আজ আমি আমার বাইকটির ব্যাপারে কিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করব ।TVS Apache RTR 150 বাইকটি ১৭-০৯-২০১৬ তারিখে ক্রয় করেছি। এটার সাথে আমার চার বছরের সম্পর্ক, এই বাইক আমার অনেক শখের বাইক। অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে, এই বাইক কিনার জন্য আমি অনেক স্বপ্ন দেখি সেই ক্লাস ৮ থেকে। এক প্রকার ফ্যামিলির সাথে যুদ্ধ করে বাইক কেনা অনেক কষ্ট করে মা-বাবা কে রাজি করিয়েছি।
TVS Apache RTR 150 আমার অনেক পছন্দের বাইক, আম্মুর ও এই বাইক অনেক পছন্দ। বাইকের প্রতি আমার ছোট বেলা থেকেই দূর্বলতা। সুতরাং যাকে বাইক চালাতে দেখতাম খুব ভাল লাগতো। তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করতাম। কীভাবে চালাতে হয় একটা আইডিয়া নিয়ে নিতাম। ছোট বেলায় বাইকের ইঞ্জিন সাউন্ড শুনলে হার্টবিট অটোমেটিক বাড়তো। খুব ভাল লাগতো আমার এবং দেখতে ও যেতাম এটা কি বাইক। বাইকিং ভালোবাসি কারণ একজন সাথে আরেকজনের পরিচয় হয় এবং আন্তরিকতার সৃষ্টি হয় এই বাইকের মাধ্যমেই।
আমার দুইটা বাইক পছন্দ ছিল Bajaj Pulser 150 এবং TVS Apache RTR 150 । আমার Bajaj Pulser 150 পছন্দ করার কারণ আমার কাজিনের Bajaj Pulser 150 বাইক ছিল, দেখতেও আকর্ষনীয়। Tvs Apache RTR 150 ভাল লাগতো তখন RTR নীল কালার বাংলাদেশে প্রথম আসছিলো শো-রুম গুলোতে। তখন নীল কালার RTR দেখে ভাল লাগে । আর আমার ছোট ভাইয়ের এবং বাবার নীল কালার পছন্দ, তাই কোন কিছু চিন্তা না করেই এই বাইক নিয়ে নিলাম। আমি এই বাইকটি বেছে নেয়ার কারণ হল আমি ইউটিউব রিভিউ দেখে ছিলাম এটার ছিল রেডি পিকাপ + গতি। আর গাড়ো নীল হওয়ার কারণে বেশ সুন্দর লাগতো। লুকিং এর দিক দিয়ে Bajaj Pulser 150 থেকে সেরা লাগতো।
বাইকটির দাম ছিল ২,১২,০০০ টাকা। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট নিশ্চিন্তপুর হাজী টিভিএস থেকে কিনেছিলাম। এই বাইকটি কেনার জন্য দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করেছি। কিছু টাকার সমস্যার কারণে এই অপেক্ষা। আমার বাবা দেশের বাইরে থাকতো । ১৭-০৯-১৬ ইং এই তারিখে বাবা বাইকের জন্য টাকা পাঠিয়ে ছিল। কখন বাইক কিনতে যাব ঠিক এইদিন চলে যাই বাইক কিনতে। আমার মা ও সম্মতি দেয় বাইক কেনার জন্য।
Click To See TVS Apache RTR 150 Price In Bangladesh
এই বাইক দিয়েই আমি চালানো শিখেছি অনুভূতি ছিল অন্যরকম। প্রথম বার চালানোর সময় মনে হয়েছে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় সুখ এটাই। প্রতিদিন বাইকটি চালানোর সময় খুব স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। বাইকটি যানজট থেকেও বাচিয়ে দেয়। যেখানে সেখানে খুব সহজেই যেতে পারি। আমার বাইক অন্যান্য বাইকের তুলনায় খুব কমই সার্ভিসিং করিয়েছি প্রায় ১৬ বার হবে। প্রথমত টিভিএস সার্ভিসিং সেন্টারে করিয়েছি ৪-৫ বার, তাদের সার্ভিসিং তেমন ভাল হত না।
এরপর বাকি গুলো বাইরের গ্যারেজ এ করিয়েছি। প্রথম দিকে ২৫০০ কিলোমিটার পূর্বে মাইলেজ ছিল ৩৫-৩৮ কিলোমিটার প্রতি লিটার এবং পরে ৪০-৪৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পেয়েছি। বাইকে ছোট খাটো কোন সমস্যা হলে সাথে সাথে গ্যারেজে নিয়ে যাই এবং সমস্যা সমাধান করে নিয়ে আসি । ধূলোবালি পরলে সাথে সাথে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নেই । বাইকে কাঁদা ধূলোবালি বেশি পড়লে মাসে ৪-৫ বার নিজে বা কোন কোন সময় গ্যারেজে ওয়াস করতাম । আমার বাইকে ব্যবহার করা ইঞ্জিন ওয়েলের নাম Castrol 10w30 ।
বাইকের যে যে পার্টস পরিবর্তন করেছি -
- পিছনের টায়ার
- সামনের হেডলাইট + এলইডি লাইট মটোলেড
- এয়ার ফিল্টার, অয়েল ফিল্টার
- ক্লাচ এবং ক্লাচ ক্যাবেল
- ব্রেক সু
আমার বাইকে সর্বোচ্চ স্পিড ১২১ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা, আরো সম্ভব হতো । কিন্তু রোডের কন্ডিশন ভাল ছিল না। তাই স্পীড তুলতে পারিনি। তবে টপ স্পীডের দিকে না তাকানোই ভাল। তারচেয়ে সেফ রাইড করা উচিত।
Click To See TVS Bike Price In Bangladesh
বাইকটির কিছু ভালো দিক -
- রেডি পিকাপ
- মাইলেজ খুব ভালো
- ইঞ্জিন পাওয়ার
- লুকিং
- টপ স্পিড
বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
- টায়ার এর মান ভালো না স্কিড করে
- ব্রেকিং এর মান ভালো না
- অন্যান্য বাইকের তুলনায় ভাইব্রেশন বেশি
- সাসপেনশন দূর্বল
- স্টক হেডলাইটের আলো কম
এই বাইকটি দিয়ে আমি ট্যুর দিয়েছি টেকনাফ, কক্সবাজার, ঢাকা, মানিকগন্জ, সোনারগাঁও, চট্টগ্রাম, সীতাকুণ্ড, খৈয়াছড়া, গুলিয়াখালি, পতেঙ্গা। এই বাইকটি নিয়ে আমার চূড়ান্ত মতামত এবং পরামর্শ হচ্ছে, যারা নতুন বাইক চালায় বা শিখবে তাদের জন্য এই বাইক নয়। কারণ আমি নতুন অবস্থায় এই বাইক দিয়ে এক্সিডেন্ট করেছি এবং পরে গিয়েছি ব্রেকিং খারাপ এর কারণে। এছাড়া এর ইঞ্জিন যথেষ্ট ভাল, এর ইঞ্জিন সাউন্ড সহজে নষ্ট হয় না। সঠিক যত্ন করলে ১০ বছর ও চালানো যাবে এই বাইক । ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃ মেহের রাব্বি
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।