Suzuki Gixxer 155cc ১৭ হাজার কিমি রাইড রিভিউ - শাহারিয়ার
This page was last updated on 29-Jul-2024 06:48pm , By Ashik Mahmud Bangla
আমি শাহরিয়ার, ঢাকা বাড্ডাতে থাকি,অনার্স ফাইনাল ইয়ার এ অধ্যায়নরত আছি । আজ আমি শেয়ার করবো আমার ১ম বাইক মানে নিজের ১ম বাইক Suzuki Gixxer 155cc বাইকের ১৭ হাজার কিমি পথ চলার গল্প ।
Suzuki Gixxer 155cc ১৭ হাজার কিমি রাইড রিভিউ - শাহারিয়ার
ছোট বেলা থেকে বাইকের প্রতি অন্য রকমের ১টা ভালবাসা ছিলো। বড় ভাইকে দেখতাম বাইক চলাতো,তার বাইক দিয়েই ১ম হাতে নেই বাইক। বাইক এমন একটা শক্তি যা ১টা মানুষকে অনেক মানুষের সাথে নতুন বন্ধুত্বের সৃষ্টি করতে সাহায্য করে আবার যেখানে ইচ্ছে সেখানে ঘুরতে চলে যাওয়া যায়, ঘুরতে পছন্দ করি বলেই বাইকিং ভালোবাসি। আমি আসলে অনেক কিছু ভেবে বাইক কিনি নাই। Suzuki Gixxer 155cc বাইকটি ১ম হতে নেই ২০১৫ সালে বড় ভাইয়ের বাইক প্রথম টেস্ট রাইডের দিন থেকেই এটার প্রেমে পরে যাই। বাইকটির যেমন তার কন্ট্রোল তেমন তার পারফরম্যান্স সব মিলিয়ে ১০০% । Suzuki Gixxer 155cc বাইকটি আমার নিজের কেনা না আমার বড় বোন আমাকে উপহার হিসেবে দিয়েছেন । সাথে ছোট বোন দুই দুলাভাই অনেক সাপোর্ট দিয়েছেন যেটা কোন দিন ভোলার নয়, আর বাকিটা আমার মায়ের ইচ্ছে।
বাবা বেচে থাকলে হয়তো সেই দিতো সেটা সে বলেছিলেন আমাকে কিন্তু সেটা আমার পরিবার বাবার অবর্তমানে দিয়ে আমাকে আমার ইচ্ছে পুরনে সাহায্য করেছেন। আর এই ভিতর কাছে না থেকেও ১টা ছোট ভাই আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন তার নাম লিখলাম না কিন্তু সে এটা দেখলে ঠিকই বুঝবে । বাইক কেনা হয়েছিলো বরিশাল থেকে যেহেতু আমার গ্রামের বাড়ি বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলার বেতাগীতে। ২লাখ ১০ হাজার টাকায় কিনেছিলাম বাইকটি আর পেপার্স বরিশাল এর করি যাতে ঢাকার সবাই দেখলেই বুঝে এটা বরিশাল এর বাইক ।
আরও পড়ুনঃ Suzuki Gixxer 155 রিভিউ – টেস্ট রাইড রিভিউ টিম বাইকবিডি
বরিশাল থেকে বাইক কিনে বাড়িতে চলে আসি। আসার পথে বাইক চালানোর অনুভুতিটা ছিল অসাধারন। অনেক আনন্দ ছিল ওই ৫০ কি মি রাইডের মধ্যে। আসার পথে ব্রেকিং এর কথা চিন্তা করে আরপিএম লিমিটের মধ্যে রেখে চলে আসি গন্তব্যে।
বাইকটির ভালো দিক গুলোর মধ্যে কিছু দিক হচ্ছে -
- ব্যালেন্স
- কর্নারিং
- মাইলেজ
- কম্ফোর্ট
- ব্রেকিং
- স্পিড
- থ্রটল রেস্পন্স আলহামদুলিল্লাহ্।
বাইকের খারাপ দিক গুলোর মধ্যে কিছু দিক হচ্ছে-
- হেডলাইটের আলো হাইওয়েতে খুবি কম।
- এই বাইকের পার্টস এর দাম তুলনামুলক একটু বেশি ।
- এর হ্যান্ডেল টি স্পোর্টস বাইক হিসেবে মানায় না ।
- পিলিয়ন সিট কম্ফোর্ট না ।
- লং রানে ১৫০ কি.মি. পর পার্ফরমেন্স ড্রপ করে।
তবে সব দিক বিবেচনা করলে বাইকটি ভালো। হঠাৎ একটু খারাপ লেগেছে ১৬,০০০ ক্রস করার পরে ফর্ক ওয়েল সিলটা কেটে যায় যেটা এতো তাড়াতাড়ি যাবে আশা করি নাই, বাকি সব দিকেই আমি সন্তুষ্ট।
কোম্পানির সব ফ্রি সার্ভিস গুলো সঠিক সময়ে করিয়ে নিয়েছি। বাইরে থেকে খুব বেশি কাজ করাইনি আর ইঞ্জিন এর সব কিছুই স্টক কখনো ইঞ্জিন খুলিনি। শুধু মাত্র একবার ট্যাপেড এডজাস্ট করিয়েছিলাম। বাইকে আমি এখনো মাইলেজ পাই সিটিতে ৩৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার আর হাইওয়েতে ৪৬ কিলোমিটার প্রতি লিটার। আমি সবসময় অকটেন ব্যবহার করি। মাইলেজ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। আমি প্রতি ৮০০ কিলোমিটার এ ইঞ্জিন ওয়েল পরিবর্তন করি আর প্রতি ২/৩ টা ইঞ্জিন ওয়েল এর পর পর অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করি। ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করি Shell 20w40 এবং দামও অনেক কম, মাত্র ৪০০ টাকা। আমি প্রতিবার ৮৫০ মিলিলিটার করে ইঞ্জিন ওয়েল দেই এবং ওয়েল ফিলটার চেঞ্জ করলে ৯০০ মিলিলিটার করে দেই ।
১০ হাজার কিলোমিটার পরে এয়ার ফিল্টার আর স্পার্গ প্লাগ চেঞ্জ করেছি ভালো পারফর্মেন্স এর জন্য। বাইকে এখন পর্যন্ত সিংগেল রাইডে পদ্মা ব্রিজের লিংক রোডে ১২৭ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা স্পিড পেয়েছি আর পিলিয়ন সহ পেয়েছি ১১৯ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। আমার বাইক ২০১৭ এর মডেল কিন্তু আমি মডিফাই করে ২০১৮ এর স্টিকার লাগিয়েছিলাম। বাইকটি নিয়ে টানা ২৫০ কিলোমিটার রাইড করেছি কোন সমস্যা ফিল করি নাই। আর প্রায়ই এই ২৫০ কিলোমিটার রাইড করা হয় ঢাকা থেকে বরগুনা অনেক সময় রাইড করেই যাওয়া হয়। প্রথম ট্যুর ছিল বরগুনা থেকে কুয়াকাটা অনেক স্মৃতি রয়ে গেছে ট্যুর টায়। বেশ ভালো পার্ফরমেন্স পেয়েছি হাইওয়েতে ।
বর্তমানে বাইকের বয়স ২বছর+ আল্লাহর রহমতে এখনো বড়ো কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি আলহামদুলিল্লাহ। ইচ্ছা আছে লাইফের প্রথম বাইকটা সারা জীবন রেখে দিবো বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা । মোট কথা আমি আমার বাইককে অনেক ভালোবাসি। Suzuki Gixxer 155cc ঘন্টার পর ঘন্টা চালাতেও আমার কখনো বিরক্ত ফিল হয়না। আর এখনো আমি খারাপ কোন দিক পাই নাই, আশা করি এভাবেই চলে যেতে পারলেই খুশি। ধন্যবাদ সবাইকে । লিখেছেনঃ শাহারিয়ার আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।