Suzuki Gixxer বাইক নিয়ে ১ লক্ষ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - শোভন

This page was last updated on 29-Jul-2024 10:03am , By Shuvo Bangla

আমি জাহিদ হাসান শোভন । দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে Suzuki Gixxer বাইকটি ব্যবহার করছি । বাইকটি এখন ১ লক্ষ কিলোমিটার রানিং । আজ আপনাদের Suzuki Bike এর সাথে এই ১ লক্ষ কিলোমিটার পথ চলার গল্প শেয়ার করবো ।

suzuki gixxer

আমি যশোর জেলার ঝিকরগাছা বসবাস করি । আমার লাইফের প্রথম বাইক এটি তবে বাইক চালানো শিখেছি Honda 80 বাইকটি দিয়ে ।ছোটবেলা থেকেই বাবার বাইকের ওপর বসে ঘোরা থেকে ভালোবাসা জন্মেছে সেখান থেকেই শুরু।

কিভাবে বেছে নিলাম -
ওই সময়ের সবথেকে আপডেট বাইক ছিলো এটি এবং যতদূর শুনছিলাম (শোনা কথা সঠিক কিনা জানিনা ) ১৮ বছর পর নাকি সিজুকি কোম্পানি এই বাইকটি বের করে, যার জন্য ভাবছিলাম নিশ্চই এই বাইকটার পারফর্মেন্স অনেকটা ভালো হবে ।

suzuki gixxer bike odo meter

Suzuki Gixxer বাইকের দাম ছিল তখন ২,৫৭,০০০ টাকা । বাইকটি আমি ২০১৬ সালের জুলাই মাসে যশোর সুজুকি শোরুম থেকে ক্রয় করি , দিনটি ৭ম তম রোজার দিন ছিলো।

suzuki gixxer black red

ক্রয় করার দিনের ঘটনা -
দীর্ঘ ১ মাস ১০ দিন ধৈর্য ধরার পর বাইকটি কিনতে পেরেছিলাম। সেদিন সাথে ছিলো আমার আব্বু, চাচ্চু আর আমার দুইটাবন্ধু। আমার চাচ্চু এবং বাবা দুইজনই বাইকার যার জন্য বাইক সম্পর্কে তারা খুবি ভালো জানতেন এবং আমাকে আগে থেকেই ব্রেকিং পিরিওড সম্পর্কে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন।

প্রথম চালানোর অভিজ্ঞতা -

Suzuki Gixxer প্রথম চালাই আমার বন্ধুরটা। সেই সময়ের সবথেকে আপডেট বাইক ছিলো এটা। বাইকের টর্ক বেশি থাকাতেই বাইকটি চালিয়ে খুবি পছন্দ হয় আমার।বাবা বলেছিলো অন্য বাইক নিতে কিন্তু আমি বলেছিলাম আমার এইটাই লাগবে।

ফিচার -
ডিক্স ব্রেক এর বাইক, কম্ফোর্ট, মাইলেজ প্রথম থেকে অনেক ভালো পেয়েছি যা আজ পর্যন্ত কখনোই নিরাস করেনি আমাকে ।


সার্ভিস -
বাইক কেনার পর ৫ টা ফ্রি সার্ভিস পেয়েছিলাম কিন্তু শুধু প্রথমটাই সুজুকির সার্ভিস সেন্টার থেকে করিয়েছিলাম বাকিটা আমার চাচ্চুর নিজস্ব ওয়ার্কসপ থাকায় সেখান থেকেই করাতাম। আগেই বলেছি আমার চাচ্চু একজন বাইকার সাথে একটা বাইক ওয়ার্কসপ এর মালিক। সুতরাং যতবার দরকার হয়েছে সেখান থেকেই করিয়েছি ।

মাইলেজ -
১০০০ কিলোমিটার পার হবার পর যখন লং ট্যুরে যেতাম তখন আনুমানিক ৫০+ মাইলেজ পেতাম আর সিটিতে ৪৫ মতো, আবার ২৫০০ কিলোমিটার পার হবার পর এই পর্যন্ত এভারেজে ৪৫ পেয়েছি

suzuki gixxer bike

ভ্রমন করা স্থান সমুহ-
বরিশাল, রংপুর, খুলনা, রাজশাহী বিভাগ সহ বেশ কয়েকটি জেলাতে ঘুরেছি এই বাইকটি নিয়ে। লং ট্যুরে মাইলেজ পেয়েছি পার লিটারে প্রায় ৫০ এবং টপ স্পীড পেয়েছি ১২৮ । আল্লাহর রহমতে খুব ভাল সার্ভিস পেয়েছি রাস্তায় কখনো নিরাশ করেনি কন্ট্রোলিং ও অনেক ভাল পেয়েছি সব মিলিয়ে আমি অনেক বেশি সন্তুষ্ট।

suzuki gixxer bike price

ইঞ্জিন অয়েল-
ব্রেকিং পিরিয়ড পার করেছি (super 4t) দিয়ে। তারপর ২০০০ কি,মি (kixx) ইঞ্জিন অয়েল ব্যাবহার করি,পারফর্মেন্স বেশি ভালো পেতামনা এবং ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করার সময় খেয়াল করতাম ইঞ্জিন অয়েল পরিমানে কমে যেতো। এর পর থেকে (motul full synthetic) ইঞ্জিন অয়েল ব্যাবহার করা শুরু করি।

তারপর থেকে আমার বাইকে খুব কম পারফর্মেন্স ড্রপ পেয়েছি যেটাতে কোম সমস্যা মনে হয়নি আমার ।

suzuki gixxer bike pic

বাইকের পার্টস পরিবর্তন -
৮০০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত টুকি টাকি সার্ভিসিং, ক্লাচ প্লেট, ক্লাচ কেবল, চেইন স্প্রোকেট, টায়ার, এক্সিলেটর কেবল, ব্যাটারি এবং হ্যান্ডেল বার ছাড়া কিছু পরিবর্তন করা লাগেনি পরে গিয়ে ইঞ্জিনের পিস্টন ও ভালভ চেঞ্জ করেছি আর বাকি সব স্টক (সাসপেনশন, মিটার,সাইড কিট)

বাইকে কোন মডিফাই করা নাই । সর্বোচ্চ স্পিড পেয়েছি ১২৮ ।

Suzuki Gixxer বাইকের কিছু ভাল দিক -

  • মাইলেজ
  • কন্ট্রোলিং
  • মোটা টায়ার
  • স্পীড
  • ব্যালেন্সিং

Suzuki Gixxer বাইকের কিছু খারাপ দিক -

  • হেডলাইটের আলো কম
  • কম গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স
  • হার্ড ক্লাচ ও গিয়ার

suzuki gixxer red black

Also Read: সর্বশেষ ১৫৫সিসি বাইক নিউজ বাংলাদেশ

বাইকটি নিয়ে আমি ১ লক্ষ কিলমিটার রাইড করেছি । অনেক সৃতি বাইকটির সাথে । ১ লক্ষ কিলোমিটার পথ চলায় বাইকটি আমাকে কখনো হতাশ করেনি । এর পার্ফরমেন্স আমাকে মুগ্ধ করেছে । অনেকটা পথ চলেছি সুজুকির সাথে ইচ্ছে আছে আরো অনেকটা পথ চলবো । ধন্যবাদ ।

লিখেছেনঃ জাহিদ হাসান শোভন 
 
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।