Lifan KPR 165R Carb NBF2 ২২০০ কিলোমিটার রাইড - সুরঞ্জিত গাইন
This page was last updated on 27-Jul-2024 01:04pm , By Raihan Opu Bangla
আমি সুরঞ্জিত গাইন। আমি বর্তমানে খুলনার গল্লামারি এলাকায় বসবাস করি। ছোটবেলা থেকে বাইক প্রিয় না হলে ও বড় হওয়ার সাথে সাথে বন্ধুদের বাইক দেখে খুব উৎসাহ পেতাম। এক সময় এক বন্ধুর বাইক দিয়ে চালানো শিখে গেলাম। আমি আপনাদের সাথে আমার প্রথম বাইক Lifan KPR 165R Carb NBF2 নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করব।
Lifan KPR 165R Carb NBF2 ২২০০ কি.মি. রাইড অভিজ্ঞতা
আগেই বলে রাখি আমি একজন ছোটখাটো ইউটিউবার কিন্তু একটা বাইক কেনার মত সামর্থ্য আমার ছিলনা। যখনই ভাবলাম একটা বাইক আমার খুবই প্রয়োজন সে সময় আমার হাতে মাত্র লক্ষ টাকা। কিন্তু আমার পছন্দ ছিল একটা স্পোর্টস বাইক কিন্তু এই কম টাকার ভিতরে একটা স্পোর্টস বাইক পাওয়া খুবই অসম্ভব একটি ব্যাপার। আমি অনলাইনে সার্চ করতে থাকি হঠাৎ এক সময় দেখলাম Lifan KPR বাইকটি । আমার খুবই ভালো লাগে এরপরে বাইকটির ডিটেলস জানতে থাকি এবং দেখি বাইকটি বেশ ভালো ।
আমি যখন বাইকটি কিনব ভাবলাম ঠিক সেই সময়ই করোনার জন্য সব দোকান বন্ধ থাকায় আমি বাইকটি কিনতে পারবোনা ভেবেছিলাম। কিন্তু অনলাইন থেকে খুলনার একটা শো-রুম এর নাম্বার নিয়ে আমি তাদেরকে কল করি কল করার পর তারা আমাকে জানায় যে আমার জন্য শো-রুম খুলবে অল্প কিছু সময় এর জন্য। তাদের সময়মতো আমি শো-রুম এ যাই এবং Lifan KPR 165R Carb NBF2 বাইকটি ক্রয় করি। এত কম টাকায় এত ভালো একটি বাইক পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত।
বাইকিং ভালোবাসি এই কারণে যে সবাই যখন বাইক রাইড করে তাদেরকে অনেক সুন্দর লাগে আমি সেটা দেখতাম এবং মনের ভিতর একটা আনন্দ জাগতো যে আমার যদি একটা বাইক থাকতো। আর সেই ইচ্ছে থেকেই বাইক কেনার আগ্রহ হয়ে উঠে। আমি বাইকটি বেছে নিয়েছিলাম তার একটাই কারণ বাইকটির লুকিং এবং বাইকটি দেখতেও খুব ভালো লাগে ও আমার সাথে কমফর্টেবল মনে হয়। যেদিন বাইকটি কিনতে যাই তার আগের রাতে আমার ঘুম হয়নি আমার ওয়াইফ আমাকে বলেছিল তুমি ঘুমাচ্ছো না কেন কিন্তু আমি জানি আমি একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে আমার কাছে একটা বড় জিনিস অনেক বেশি মূল্যবান হয়। সকাল হতে না হতেই ভাবতেছিলাম কখন ১০টা বাজবে দশটা বাজলেই আমি শোরুমে যাব। দশটা বাজার সাথে সাথে আমি আমার ওয়াইফ কে নিয়ে শোরুমে যাই, যেহেতু বাইকটা আমি অনলাইনে আগেই দেখেছি সেহেতু আমার বাইকটা কমই দেখা লাগলো আমি তাদেরকে টাকা পেমেন্ট করলাম। বাইকটি বুঝে নিলাম ।
আমার বাইক চালানোর পেছনের মূল কারণ হলো আমি একজন ইউটিউবার আমার চ্যানেলের নাম ডিএমসি বিডি নানা কারণে আমাকে শুটিং করতে বাইরে যেতে হয় তাই দ্রুত যাতায়াত করার জন্য বাইকটি কেনা। এক কথায় বলতে গেলে বাইকটি সকল ফিচারস আমার জন্য অনেক ভালো মনে হয়েছে। প্রতিদিন যখন মনে করে বাইকটা চালাব বা কোথাও যাব তখন মনটা আনন্দে ভরে যায় কারণ বাইক চালাতে আমার অনেক ভালো লাগে।
লক ডাউন এর জন্য এই পর্যন্ত আমার বাইক সার্ভিসিং করা হয়নি তবে আমি আমার বাইকে কোন সমস্যা দেখছি না। আগেই বলেছি লকডাউন এর প্রথম মাসেই আমার বাইক টি কেনা। এই পর্যন্ত আমি বাইকটি ২২০০ কিলোমিটার রাইড করেছি। বাইকটিতে আমি সর্বোচ্চ স্পিড পেয়েছি ১৩৪ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা তবে আমার এক ভাই ১৩৮ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা পর্যন্ত পেয়েছে ।
প্রতিদিন আমি আমার বাইকের যত্ন করে থাকি। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে একবার বাইকের কাছে যাই এবং বাইকটি রাইড করার পরে ফিরে এসে অবশ্যই ভালো করে বাইকটি পরিস্কার করি। সপ্তাহে একবার বাইকটি ওয়াস করি। আমি Petronas Sprinta F300, 20W-40 ব্যবহার করি। এই পর্যন্ত আমি আমার বাইকের কোন পার্টস পরিবর্তন করিনি । বাইকটি মডিফাই ও করিনি।
বাইকটির কিছু ভালো দিক -
- স্মুথনেস
- রেডি পিকাপ
- লুকস
- লং রানে বেশ ভালো পার্ফরমেন্স দেয়
- লিকুইড কুল ইঞ্জিন
বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
- মাইলেজ তুলনামূলক কম
- সিটি রাইডে টার্নিং ইস্যু
- অতিরিক্ত জ্যামে বাইকিটির ট্যাংক কিছুটা গরম হয়
- চেইন দ্রুত লুজ হয়
- পেছনের লুকস ভালো লাগেনা
বাইকটি দিয়ে লম্বা দূরত্ব বলতে আমি সর্বোচ্চ ১০০কিলোমিটার রাইড করেছি। বাইকটি সম্পর্কে আমার এই পর্যন্ত মতামত হচ্ছে আমি এখন পর্যন্ত বাইকটির কোন খারাপ দিক লক্ষ্য করিনি । তবে আমার মনে হয় বাইকটি আমাকে নিরাশ করবেনা । ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃ সুরঞ্জিত গাইন
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।